OrdinaryITPostAd

চিয়া সিড খাওয়ার সকল নিয়ম ও উপকারিতা গুলো বিস্তারিত জানুন

আপনি কি চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম ও এর উপকারিতা গুলো সম্পর্কে জানতে চান। চিয়া সিড খাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। কিন্তু মনে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন জাগছে। প্রশ্নগুলি কি এমন। চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম কি বা এর উপকারিতাই বা কি? এছাড়াও আরো প্রশ্ন হচ্ছে চিয়া সিড খাওয়ার পরিমাণ কতটুকু কিংবা গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম বা এর উপকারিতা কি বা অপকারিতা রয়েছে কিনা খেলে কি হয়।

ছবি

এছাড়াও চিয়া সিড খাওয়ার উপযুক্ত সময় কোনটি ওজন কমাতে চিয়া সিড কোন ফলাফল দেয় কিনা। আপনার প্রশ্নগুলো যদি এরকম হয় তাহলে আপনি সঠিক আর্টিকেলটিতেই রয়েছেন। আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ যদি আপনি পড়তে পারেন তাহলে উপরোক্ত সকল প্রশ্নের জবাব আশা করি আপনি পেয়ে যাবেন। তাহলে চলুন এ সকল বিষয়গুলো জেনে নেওয়া যাক।

পোস্ট সূচীপত্রঃ চিয়া সিড খাওয়ার সকল নিয়ম ও উপকারিতা গুলো বিস্তারিত জানুন

ভূমিকা

চিয়া সিড আমাদের শরীরের জন্য এবং স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে খুবই কার্যকরী একটি উপাদান। প্রতিদিন নিয়ম মেনে পরিমান মত চিয়া সিড খেলে তা আমাদের শরীরকে যেমন ভালো রাখবে তেমনি বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই থেকে আমাদের দূরে রাখবে এবং চিয়া সিড ওজন কমাতেও বিশেষভাবে সহায়তা করে থাকে। চিয়া সিড খুবই পুষ্টিকর একটি খাবার।

চিয়া সিডে রয়েছে দুধের চেয়ে ৫ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম,কমলা লেবুর চেয়ে ৭ গুন বেশি ভিটামিন সি, পালং শাকের চেয়ে ৩ গুণ বেশি পরিমাণে রয়েছে আয়রন, একটি কলার যে প্রায় ২ গুন পরিমাণে রয়েছে পটাশিয়াম, একটি মুরগির ডিমে যে পরিমাণ প্রোটিন থাকে তার চেয়ে ৩ গুণ বেশি প্রোটিন রয়েছে এছাড়াও স্যামন মাছের চেয়ে ৮ গুণ বেশি ওমেগা-৩ উপাদান রয়েছে। এছাড়াও চিয়া সিডে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফ্যাটি এসিড, কোয়েরসেটিন,কেম্পফেরল, ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড ও ক্যাফিক এসিড নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় বিভিন্ন ধরনের খাদ্য আঁশ।

পুষ্টিকর এই খাবারটি সপ্তাহের প্রতিদিনই খাওয়া যাবে তবে সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন খেলেই শরীরের জন্য বেশ উপকারিতা পাওয়া যায়।

চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম

চিয়া সিট খুবই পুষ্টিকর খাবার আপনি চিয়া সিট নিয়মিত খেতে পারেন। এছাড়াও আপনি যদি প্রতিদিন সকালে অথবা রাতে খাবার পর ১ থেকে ২ চামচ চিয়া সিড অল্প পরিমাণ পানিতে ভিজিয়ে ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর সেগুলো খেতে পারেন তাহলে তা আপনার শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ যেমন এসিডিটি,হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করবে। সাধারণত শুকনো চিয়া সিডের কোন স্বাদ থাকে না। চিয়াসিড আপনি অন্য সকল প্রকার খাবারের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। আপনাদের জানার সুবিধার্থে চিয়া সিড খাওয়ার কিছু নিয়ম নিচে বর্ণনা করা হলো।

সালাদের সাথে

প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সালাদ রাখা খুবই জরুরী। সালাদের রয়েছে অনেক ধরনের পুষ্টিগুণ এবং এই সালাদের সাথে আপনি যদি চিয়া সিট নিচে খান তাহলে সেটা আপনার উপকারিতা আর‌ও বৃদ্ধি করবে।


বিভিন্ন ড্রিংস বা জুসের সাথে

অতিরিক্ত গরমে সবারি ঠান্ডা জুস কিংবা শরবত খেতে পছন্দ। আপনারা বিভিন্ন ধরনের ড্রিংকস কিংবা ফলে জুস এর সাথে চিয়া সিড নিচে যদি খেতে পারেন তাহলে অতিরিক্ত গরম থেকে কিছুটা শান্তি পাবেন। অনেক দিছে মানুষজন শরবতের সাথে চিয়া সিড মিশিয়ে খেতে খুবই ভালবাসে।

স্মুথির সাথে মিশিয়ে

অনেকেই চিয়া সিড শরবত ও জুসের পাশাপাশি স্মুথির সাথে মিশিয়ে খেতে ভালোবাসে। আপনারা সচার সাথে টক দই ও অন্যান্য যেকোনো ফল এবং চিয়া সিড একসাথে মিশিয়ে স্মুতির মিশ্রণ তৈরি করে খেতে পারেন।

নারকেল পানির সঙ্গে

পরিমাণ মতো নারকেল পানি ২ কাপ ও দুই চা চামচ চিয়া সিডের বীজ ২০ থেকে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে খেতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম

চিয়া সিডের নিজস্ব কোন স্বাদ নেই। তবে চিয়া সিড প্রচুর পুষ্টিগুণে ভরপুর। তাই গর্ভাবস্থায় মহিলাদের চিয়া সিড খুব একটা পছন্দ হয় না। কিন্তু চিয়া সিড গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর জন্য খুবই উপকারী। সেক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন রেসিপি বানিয়ে কিংবা বীজের গুরো করে গর্ভাবস্থায় মাকে খাওয়াতে পারেন।
নিচে কয়েকটি রেসিপি বানিয়ে গর্ব অবস্থায় চিয়া সিট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানানো হলো আপনারা চাইলে এই রেসিপিগুলো ব্যবহার করে গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড  খেতে পারেন।

ঘন করার বস্তু

চিয়া সিড প্রচুর পরিমাণ জল শোষণ করে। এটি কর্ণ-ফ্লাওয়ার এর প্রতিস্থাপন হিসেবে ব্যবহার করা যায়। আপনি ডাল ফলের রস,ডাল কিংবা তরকারি ঘন করতে চিয়া সিড ব্যবহার করতে পারেন।

ডিমের বিকল্প

চিয়া সিড আপনি ডিমের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। যে সকল রেসিপিগুলো রান্না করার জন্য ডিমের প্রয়োজন হয় কিংবা বিভিন্ন ধরনের ডিমের তরকারি রান্না করার জায়গায় আপনি চিয়া সিডের বীজ ব্যবহার করতে পারেন এতে আপনার তরকারির সাদ বৃদ্ধি পাবে এবং গর্ভাবস্থায় যে কোন গর্ভবতী মহিলার মুখের স্বাদ বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। চিয়া সিডের বীজ কুকিজ, রুটি, কেক ও রাস্ক এর মত রেসিপি গুলোতে খাওয়ার ক্ষেত্রে ডিমের জায়গায় ব্যবহার করতে পারেন।

সকালের খাবারে

গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েরা সাধারণত সকালবেলা সিরিয়াল কিংবা ওটস এর মত খাবার খেয়ে থাকে। আপনি চাইলে গর্ভাবস্থায় সিরিয়াল ওটস এর সাথে চিয়া সিড মিশিয়ে খেতে পারেন এতে আপনার পুষ্টিগুণ যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনি আপনার খাবারের মান ভালো হবে। এছাড়াও চিয়া সিডের বীজ গুঁড়ো করে সকালে রুটির আটার সাথে মিশিয়ে রুটি করে বানিয়েও খেতে পারেন।

দুপুর/রাতের খাবার

রাতের বেলা ভাত কিংবা রুটি রান্নার ক্ষেত্রে কিংবা তরকারি রান্নার ক্ষেত্রেও আপনি চিয়া সিড  ব্যবহার করতে পারেন এতে খাবারের পুষ্টিগুণ ও গুণগত মান বৃদ্ধি পাবে।

বিশেষ দ্রষ্টব্য গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের যেকোনো নতুন খাবার খাওয়ার আগে অবশ্যই বিশেষ সচেতনতা পালন করতে হবে। চিয়া সিড প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ রয়েছে তবে গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মা ও গর্ভস্থ শিশুর জন্য পরিমিত পরিমাণ চিয়া সিডের এর বীজ খাওয়া উচিত।

চিয়া সিড খাওয়ার পরিমাণ

আপনি যদি চিয়া সিড খাওয়ার পরিকল্পনা করে থাকেন তাহলে আপনার মাথায় একটি প্রশ্ন অবশ্যই আসবে প্রশ্নটি হচ্ছে প্রতিদিন কি পরিমান চিয়া সিড খাওয়া যেতে পারে। চিয়া সিড খুবই পুষ্টিকর একটি খাবার এটি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখা যেতে পারে। তবে সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ দিন খেলেও এর উপকারিতা পাওয়া যায়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে প্রতিদিন কি পরিমান চিয়া সিড খাওয়া যাবে।


বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুসারে একজন সুস্থ স্বাভাবিক ব্যক্তির দৈনিক 100 গ্রাম এর বেশি চিয়া সিড খাওয়া উচিত নয়। অবশ্যই চিয়া সিড খাওয়ার আগে নরমাল পানিতে ৩০ মিনিট ভিজে রাখতে হবে তাহলে এর প্রোটিনের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে এবং তা আপনার জন্য খুবই পুষ্টিকর হবে। এছাড়াও আপনি যেকোনো ধরনের ফলের শরবত, স্মুদি, টক দই, কাস্টার্ড অথবা অন্যান্য যে কোন খাবারের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।

চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা

এতক্ষণ আমরা চিয়া সিড খাওয়ার বিভিন্ন নিয়ম গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানলাম। আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা চিয়া সিড খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা গুলো সম্পর্কে জানব। চিয়া সিড খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা গুলো জানার প্রথমে আপনাদের কাছে অনুরোধ অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন। তা না হলে সম্পূর্ণ বিষয়গুলো ভালোভাবে বুঝতে আপনার অসুবিধা হতে পারে।

ওজন কমাতে সাহায্য করে

চিয়া সিডে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার ও খাদ্য আঁশ। যা আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে আরো উন্নত এবং ধীরগতির করে। এছাড়াও অতিরিক্ত খাওয়া সমস্যা থেকে দূরে রাখে এবং ক্ষুধা কম লাগার কারণে দ্রুত ওজন কমায় ও ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ

অন্যান্য সকল প্রকার খাদ্যের তুলনায় চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণ এন্টি অক্সিডেন্ট হয়েছে। যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। চিয়া সিডের মধ্যে থাকা ক্লোরোজানিক এসিড রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে, এর মধ্যে থাকা ক্যাফেইক অ্যাসিড বিভিন্ন প্রবাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।

চিয়াসের এর মধ্যে থাকা কোয়ারসেটিন হৃদরোগ ও অস্টিওপোরোসিস এর ঝুঁকি কমায়। এছাড়াও এর মধ্যে রয়েছে ক্যাম্পফেরল ক্যান্সার সহ বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে মুক্তি দেয়। এছাড়াও চিয়াসীদের মধ্যে রয়েছে মাইরিসেটিন যা এলার্জির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়

হৃদপিন্ডের বিভিন্ন ধরনের রোগের জন্য দায়ী হলো এলডিএল কোলেস্টেরল। রক্তে যখন এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায় তখন বিভিন্ন ধরনের হৃদরোগ হয়ে থাকে। চিয়া চিঠি রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ওমেগা-৩ যা আমাদের রক্ত থেকে খারাপ কোলেস্টেরল অর্থাৎ এলডিএল কোলেস্টেরল কমিয়ে ভালো কোলেস্টরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তাই বিভিন্ন হৃদরোগের আক্রান্ত ব্যক্তিদের বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন চিয়া সিড খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে

চিয়া সিডের বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড ও এন্ড্রঅক্সিডেন্ট উপাদান যা আমাদের মস্তিষ্কের কোষ গুলোর বিকাশ ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে দারুন কাজ করে।

রক্তে শর্করা কমায়

রক্ত আমাদের দেহের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। রক্ত যেমন আমাদের কোন গুলোকে জীবিত রাখতে সাহায্য করে তেমনি হৃৎপিণ্ডের কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু আমাদের রক্তে যদি সরকারের পরিমান বৃদ্ধি পায় তাহলে তার ডায়াবেটিসের মতো ভয়াবহ রোগের কারণ হতে পারে।

চিয়া সিড রক্তের মধ্যে থাকা অতিরিক্ত শর্করার পরিমাণ কমাতে এবং রক্তনালী থেকে চর্বি কমিয়ে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি থেকে আমাদের রক্ষা করে। প্রতিদিন চিয়া সিড খাওয়ার ফলে তা আমাদের দেহ থেকে অতিরিক্ত গ্লুকোজ নিঃসরণ কমিয়ে রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

হাড় মজবুত করে

মানব দেহের হাড় শক্ত ও মজবুত করার জন্য প্রয়োজন ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম। চিয়া সিড ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়ামের একটি ভালো উৎস। চিয়া চীনের মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম আমাদের বোন মিনারেল ডেন্সিটির মাত্রা উন্নত করে হাড়কে মজবুত ও শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। কৃত্তিম ক্যালসিয়াম গ্রহণের চেয়ে প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় চিয়া সিড গ্রহণ করলে প্রাকৃতিকভাবে আমাদের শরীরে হাড়ের গঠন শক্তিশালী ও মজবুত হয়।

এছাড়াও চিয়া সিট আমাদের অস্থি ও অস্থিমজ্জার বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ ও ক্ষত হওয়ার হাত থেকে সুরক্ষা প্রদান করে।


কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়

তুলুন বা মলা চাই আমাদের দেহের অতিরিক্ত ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থ গুলো মলের মাধ্যমে বাইরে বের করে দেই। কিন্তু আমাদের কলম যদি পরিষ্কার না থাকে তাহলে এর মধ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়া গুলো কোলনে আক্রান্ত করতে পারে এবং ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ রোগ হতে পারে। চিয়া সিডের মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের কোলন পরিষ্কার রাখতে এবং মলাশয়কে ক্যান্সারের হাত থেকে রক্ষা করতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।

ইমিউনিটি বৃদ্ধি করে

চিয়া সিডের মধ্যে থাকা পোস্টটি উপাদান গুলো আমাদের ইমিউনিটি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে থাকা বিভিন্ন পুষ্প উপাদান গুলো আমাদের হৃৎপিণ্ড উপহারকে মজবুত করার পাশাপাশি আমাদের শারীরিক দুর্বলতার কমায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

দেহের ক্ষতিকর বা টক্সিক পদার্থ দূর করে

চিয়া সিডের মধ্যে থাকা ভিটামিন, মিনারেল ও খনিজ পদার্থ গুলো যেমন আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগের সাথে লড়াইয়ের শক্তি প্রদান করে তেমনি এর মধ্যে থাকা বিভিন্ন এসিড উপাদান গুলো আমাদের দেহ থেকে অতিরিক্ত ক্ষতিকারক বর্জ্য পদার্থগুলো বের করতে সাহায্য করে এবং আমাদের শরীরকে সুস্থ ও সফল রাখে।

হজম শক্তি বৃদ্ধি করে

চিয়া সিডের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার ও খাদ্য আঁশ। যা আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে সাহায্য করে এবং ক্ষুধামন্দা, অনিদ্রা ও পুষ্টিহীনতার মত সমস্যাগুলো থেকে দূরে রাখে।

চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে

চিয়া সিডের বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড যা আমাদের চুলের ফেলিকল গুলোকে ভেতর থেকে শক্তিশালী ও মজবুত করে চুলকে লম্বা ও স্বাস্থ্যকর করতে সাহায্য করে।

ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে

চিয়া সিডে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান যা আমাদের ত্বকের মৃত কোষ গুলোকে জীবিত করতে সাহায্য করে এবং ত্বকের কোষ গুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও ত্বকের বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ ও বয়স বাড়ার সাথে সাথে ঝিঁঝিঁপোড়া ও বলিরেখা দাগ দূর করতে সাহায্য করে।

প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে

চিয়া সিডের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান যেগুলো আমাদের শরীরে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতিদিন ১০০ গ্রাম চিয়া সিড খাওয়ার ফলে ১৬.৫ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। যা অনেক প্রাণীজ‌‌ ও উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে পাওয়া যায় না। তাই আমাদের শরীরের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় চিয়া সিড যোগ করা উচিত।

মানসিক শান্তি নিশ্চিত করে

চিয়া সিডের মধ্যে থাকা পোস্টের উপাদান গুলো আমাদের দুশ্চিন্তা,উদ্বিগ্নতা ও ব্লাড প্রেসার ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং আমাদের দেহের তাপমাত্রা ও বিভিন্ন মেকানিজম গুলো স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। তাই চিকিৎসকরা সকল প্রকার মানসিক অশান্তি থেকে মুক্তির জন্য প্রতিদিন রাতের বেলা অথবা সকালবেলা চিয়া সিড যুক্ত পানিও পান করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখে

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত পরিমাণমতো চিয়া সিড খেয়ে থাকেন তাদের উচ্চ রক্তচাপ কিংবা নিম্ন রক্তচাপ হওয়া সম্ভাবনা খুবই কম।

অ্যানিমিয়া থেকে রক্ষা করে

চিয়া সিডের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন। যা আমাদের শরীরে লোহিত রক্ত কণিকার পরিমাণ বৃদ্ধি করে অ্যানিমিয়া অর্থাৎ রক্তশূন্যতার হাত থেকে রক্ষা করে। বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে কিংবা গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অ্যানিমিয়ার হাতে রক্ষা পাওয়ার জন্য চিয়া সিড খাওয়া উচিত।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

চিয়া সিডের বীজের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ সাইবার যা আমাদের পাচনতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে মহিলারা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগে থাকেন সেক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় খাদ্য তালিকায় চিয়া সিড রাখা যায়।

দাঁত শক্ত করে

চিয়া সিড এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন যা আমাদের দাঁত কে প্রাকৃতিক উপায় শক্ত করতে এবং মজবুত করতে সাহায্য করে।

গর্ভাবস্থায় ভ্রূণের বিকাশে সাহায্য করে

চিয়া সিড প্রোটিনের ভালো একটি উৎস। যা গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মা ও গর্ভের সন্তানের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খুবই সাহায্য করে। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় ভ্রূণের কোর্স গুলোর বৃদ্ধি অর্থাৎ মস্তিষ্কের সঠিক গঠন এবং বিভিন্ন অঙ্গাণু গুলোর গঠন সঠিকভাবে বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করে। এজন্য গর্ভাবস্থায় অবশ্যই গর্ভবতী মায়েদের খাদ্য তালিকায় চিয়া সিড এর বীজ রাখা খুবই জরুরী।

বার্ধকের ছাপ কমায়

চিয়া সিডের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান গুলো ফ্রি- রেডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। এই ফ্রী রেডিকেল আমাদের শরীরের ডিএনএ ও জীবিত কোষগুলোকে ধ্বংস করে আমাদের বার্ধককে চাপ সৃষ্টি করে। কিন্তু আপনি যদি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ৮৬ রাখতে পারেন তাহলে তা ফ্রি রেডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করবে এবং আপনার বার্ধক্যের ছাপ কমাবে।

চিয়া সিড খেলে কি হয়

চিয়া সিড খাওয়ার ফলে বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায়। চিয়া সিড প্রতিদিন খাওয়ার ফলে যে সকল উপকারিতা গুলো পাওয়া যায় সেগুলো নিচে বর্ণনা করা হলো।
  1. চিয়া সিড ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে
  2. রক্তে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়
  3. শক্তি ও কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে
  4. হাড়ের স্বাস্থ্য বা বোনস ভালো রাখতে সাহায্য করে
  5. মলাশয় পরিষ্কার রাখে এবং কোলন ক্যান্সারে ঝুঁকি কমায়
  6. মানসিকভাবে সুস্থ রাখে ডিপ্রেশন কমায় এবং ভালো ঘুমে সহায়তা করে।
  7. মানব শরীর থেকে টক্সিক বা ক্ষতিকারক পদার্থ বের করতে সাহায্য করে
  8. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরো শক্তিশালী করে ওজন কমাতে সাহায্য করে
  9. অস্থি ও অস্থিমজ্জার বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ থেকে মুক্তি প্রদান করে
  10. অতিরিক্ত খাবার প্রবণতা দূর করে এবং ক্ষুধা নিবারণ করতে সাহায্য করে
  11. শারীরিক পরিশ্রমের পর ক্লান্তি দূর করতে এবং তাৎক্ষণিক শক্তি জোগাতে সাহায্য করে
  12. মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
  13. এর মধ্যে থাকা ট্রিপ্টোফ্যান মস্তিষ্কের সেরোটোনিন হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং মেজাজ ভালো রাখে।
  14. ত্বক, চুল ও নখ সুন্দর রাখতে মধুর বিকল্প হিসেবে চিয়া সিড ব্যবহার করা যায়।

চিয়া সিড খাওয়ার অপকারিতা

প্রতিটি খাবার খাওয়ার যেমন কিছু উপকারী দিক রয়েছে তেমনি এর কিছু ক্ষতিকর দিক বা অপকারিতাও রয়েছে। চিয়া সিড খুবই পুষ্টিগুণে ভরপুর কিন্তু আপনি যদি তা পরিমাণের চেয়ে বেশি খান কিংবা অনিয়মিতভাবে খান তা আপনার বিভিন্ন রোগের কারণও হয়ে দাঁড়াতে পারে। নিচে চিয়া সিট খাওয়ার বিভিন্ন ক্ষতিকর দিক বা অপকারিতা গুলো তুলে ধরা হলো।

১/বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যারা অতিরিক্ত পরিমাণ চিয়া সিড খেয়ে থাকেন তাদের প্রোটেস্ট ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সারের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তাই পুষ্টিগুণে ভরপুর বোলে অতিরিক্ত পরিমাণ খেতে যাবেন না প্রতিদিন নিয়মমাফিক পর্যাপ্ত পরিমাণ চিয়া সিড খাওয়া উচিত।

২/চিয়া রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার যার অতিরিক্ত বৃদ্ধি আপনার পেটের নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই চিয়া সিট খাওয়ার ফলে যদি আপনার স্বাস্থ্য সমস্যা হয় তাহলে অবশ্যই বন্ধ করে দেওয়া উচিত।

৩/অতিরিক্ত চিয়া সিড খাওয়ার ফলে ওজন অতিরিক্ত মাত্রায় কমে যেতে পারে যেটা মোটেও ভালো বিষয় নয়। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রতিদিন পরিমাণ মতো নিয়মমাফিক চিয়া সিড খেতে হবে।

৪/যারা অতিরিক্ত পরিমাণ চিয়া সিড খেয়ে থাকেন তাদের রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকা বদলে কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

৫/যাদের চিয়া সিড খাওয়ার ফলে বিভিন্ন এলার্জির লক্ষণ যেমন ফুসকুড়ি চুলকানি শ্বাসকষ্টের মত সমস্যা দেখা দেয় তাদের ক্ষেত্রে চিয়া সিড খাওয়া বন্ধ করতে হবে।

৬/চিয়া সিড গর্ভবতী বা স্থান দানকারী মহিলাদের জন্য পুষ্টি একটি ভালো উৎস হলেও অবশ্যই চিয়া সিড খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

৭/চিয়া সিড বিভিন্ন ওষুধের সাথে খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কেননা আপনি যদি রক্ত পাতলা করেন ওষুধ কিংবা ডায়াবেটিসের ওষুধ খান এবং সাথে চিয়া সিড খান এতে আপনার ওষুধের বিভিন্ন ক্ষতিকারক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে তাই অবশ্যই বিভিন্ন ওষুধের সাথে চিয়া সিডের বীজ খাওয়ার পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।

চিয়া সিড খাওয়ার সময়

চিয়া সিড আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে খেতে পারি। তবে এর কিছু নিয়ম-কানুন রয়েছে যেই সময় বা নিয়মে আপনি খেলে এর উপকারিতা আরো বৃদ্ধি পাবে। যেমন চিয়া সিড খাওয়ার উপযুক্ত সময় হচ্ছে সকালবেলা খালি পেটে অথবা রাতের বেলা খাওয়ার পর ঘুমাতে যাওয়ার আগে।

আপনি যদি প্রতিদিন ১ গ্লাস পানির সাথে ২ চামচ পরিমাণ চিয়া সিডের বীজ ৩০ মিনিট ভিজে তা লেবুর রসের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন তাহলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে এবং একই সাথে তা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।

তবে চিয়া সিড খাওয়ার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন অতিরিক্ত পরিমাণ চিয়া সিড খাওয়ার ফলে আপনার বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে পারে তাই এ বিষয়ে সতর্কতা পালন করে পরিমাণ মতো নিয়মিত খাবেন।

ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম

চিয়া সিডের বীজের নিজস্ব কোন স্বাদ না থাকার কারণে আপনি এটি বিভিন্ন খাবারের সাথে খেতে পারেন। তবে ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার সময় অবশ্যই কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে আপনি যদি চিয়া সিট খাওয়ার ফলে দ্রুত ওজন কমাতে চান তাহলে আপনাকে প্রতিদিন সকালবেলা খালি পেটে অথবা রাতের বেলা খাওয়ার পর ঘুমাতে যাওয়ার আগে ১ গ্লাস পানির মধ্যে ২ চা চামচ চিয়া সিট এবং ২ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে ভালোভাবে মিশ্রণ তৈরি করে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখার পর খেলে তা দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে।

দ্রুত ওজন কমাতে চিয়া সিড এর বীজ খাওয়ার পাশাপাশি আপনি হালকা শরীরচর্চা করতে পারেন এতে আপনার দ্রুত ফলাফল পাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে।

লেখক এর মন্তব্য

এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে যদি আপনার কোন উপকার হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করবেন। এই পোস্টটি সম্পর্কে যদি আপনার কোন মতামত বা অভিব্যক্তি থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করতে পারেন। এরকম আরো শিক্ষণীয় ও মজার মজার পোস্ট করতে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইট এ ভিজিট করতে পারেন। সকলে ভালো থাকবেন। আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজিটাল ব্লগ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪