OrdinaryITPostAd

দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সারের সকল লক্ষণ সমূহ জেনে নিন

আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা দাঁতের বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় কিংবা দাঁতের মাড়ি বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় ভুগে থাকে বা ভুগছেন। এই সাধারণ সমস্যাগুলো আপনার দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সারের লক্ষণের কারণ ও হতে পারে। আপনি যদি দাঁতের কিংবা দাঁতের মাড়ির বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় ভুগে থাকেন এবং যদি জানতে চান এ সকল কারণগুলো দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সারের লক্ষণ কিনা তাহলে আপনি সঠিক আর্টিকেলটিতে রয়েছেন।

ছবি

এই আর্টিকেলটিতে আমরা দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সারের বিভিন্ন লক্ষণ এবং প্রাথমিক পর্যায়ে মুখের ক্যান্সারের লক্ষণ সহ মাড়িতে ক্ষত কিংবা ঘা হলে করণীয় ও এর ঔষধ বিভিন্ন দাঁতের মাড়ির টিউমারের অপারেশন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। আজকের এই পোষ্টটি যদি আপনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধৈর্য সহকারে পড়তে পারেন তাহলে আপনার দাঁতের সমস্যা কিংবা দাঁতের মাড়িতে সমস্যার কারণ গুলো কি কি এবং এগুলো কোন দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার কারণ হতে পারে কিংবা ক্যান্সারের লক্ষণ কিনা সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন সুতরাং সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো।

পোস্ট সূচীপত্রঃদাঁতের মাড়িতে ক্যান্সারের সকল লক্ষণ সমূহ জেনে নিন

ভূমিকা

ক্যান্সারের নাম শুনলে মানুষের মনে বিভিন্ন ধরনের ভয়ের সংঙ্কা বাধে। ক্যান্সার একটি মারাত্মক মরণব্যাধি। এই মরণব্যাধি কখন কার শরীরে বাসা বাঁধে তা বোঝা মুশকিল। জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ও হরেক রকমের নেশা দ্রব্য পান করার ফলে মানুষের শরীরে ক্যান্সারের বাসা বাঁধার পথ প্রশস্থ হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে মুখ ও গলার বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের মূল কারণ হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের নেশা দ্রব্য গ্রহণ করা।

তবে শরীর কিংবা দাঁতের ক্ষেত্রে বিভিন্ন লক্ষণ উপলব্ধি করার মাধ্যমে এ সকল ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায়ে হোদিস পাওয়া গেলে সেগুলোর ব্যাপারে বিশেষ কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করা যায়। সেসব লক্ষণ সম্পর্কে আমরা যদি অবগত না হয়ে থাকি তাহলে সামান্য দাঁতের কিংবা মাড়ির ব্যথাও ক্যান্সারের কারণ তা কিংবা ক্যান্সারের লক্ষণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমরা দাঁতের বাড়িতে ক্যান্সারের লক্ষণ এবং মুখের ক্যান্সারের লক্ষণ ও এগুলোর থেকে পরিত্রাণের বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। আলোচনা শুরু করার পূর্বে অবশ্যই আপনাদের কাছে একটা অনুরোধ সম্পূর্ণ আর্টিকেল টি শেষ পর্যন্ত পড়ুন তা না হলে আপনি সকল বিষয়গুলো ভালোভাবে বুঝতে পারবেন না। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সারের লক্ষণ

আর্টিকেলটির অংশ আমরা দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সারের বিভিন্ন লক্ষণ গুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব সুতরাং সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

দাঁতের উপরে ছাপ

দাঁতের মাড়িতে কিংবা দাঁতের মধ্যে তীব্র ব্যথা এবং বয়স বাড়ার আগেই দাঁত নড়ে যাওয়ার মত সমস্যা দেখা এগুলো কোন সাধারণ সমস্যা না। এগুলো ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। এছাড়াও যদি দাঁতের ভাঙ্গা অংশ মাড়িতে থেকে যায় সেই ভাঙ্গা অংশ থেকেও ক্যান্সারের উৎপত্তি হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুসারে ভাঙ্গা কিংবা ক্ষয়ে যাওয়া দাঁতের অংশ থেকে গালের মধ্যে ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে কিংবা মাড়িতে ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে যা পরবর্তীতে ক্যান্সারের রূপ নিতে পারে। তাই অবশ্যই আপনার দাঁতের ভাঙ্গা অংশ কিংবা খুঁজে যাওয়া অংশ যদি মাটিতে থেকে যায় সেক্ষেত্রে তার সঠিক সময়ে চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।

গলার স্বর পাল্টে যাওয়া

কোন কারন ছাড়াই হঠাৎ করে যদি আপনার গলার স্বর বদলে যায় কিংবা গলার স্বর ভেঙ্গে যায় তাহলে অবিলম্বে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বিশেষজ্ঞদের মতে দীর্ঘদিন ধরে গলা ধরে থাকা বা গলা ভেঙে যাওয়া ও নাক বন্ধ থাকাও দাঁতের মাড়িতে কিংবা মুখের মধ্যে ক্যান্সারের বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ হতে পারে। কেননা হঠাৎ করে যদি আপনার গলার স্বর ভেঙে যায় কিংবা কণ্ঠস্বর বদলে যায় সেটা ন্যাসোফারানগিল,ল্যআরআয়আনগইল কিংবা ভোকাল কডে ক্যান্সারের অন্যতম লক্ষণ বা উপসর্গ হতে পারে।

খাবার গিলতে কষ্ট হওয়া

খাবার খাওয়ার সময় সেটা শক্ত কিংবা তরল খাবার যাই হোক না কেন যদি খাবার গিলতে যাওয়ার সময় আপনার গলায় ব্যথা লাগে তাহলে সেটা গলার কিংবা এসোফাগিয়েল ক্যান্সারের লক্ষণ কিংবা উপসর্গ হতে পারি তবে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে এটা তখনই ক্যান্সারের লক্ষণ হবে যখন প্রতিবার খাবার সময় আপনার গলাতে ব্যথা কিংবা যন্ত্রণা অনুভব হবে।

মুখে দুর্গন্ধ হওয়া

প্রতিদিন দুই বার ব্রাশ করার পরও এবং ওরাল হাইজিনের সঠিকভাবে খেয়াল রাখার পরও যদি মুখের দুর্গন্ধ আপনার পিছু না ছাড়ে সেক্ষেত্রে আপনার সাবধান হওয়া উচিত। কেননা মুখের দুর্গন্ধ দাঁতের মাড়িতে কিংবা মুখের মধ্যে ক্যান্সারের লক্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও যদি বারবার আপনার মুখের আলসার হয় তাহলে ও ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত কেননা এতে মুখের ক্যান্সারের উপসর্গ প্রকাশ পায়।


মুখের মধ্যে কিংবা বাইরে শক্ত ডেলা

আপনার গলাতে কিংবা মুখের মধ্যে ও ঘাড়ের যে কোন জায়গায় যদি শক্ত ডেলা দেখতে পান তাহলে সেটা অবহেলা করবেন না। কেননা এই শক্ত ডেলা ক্যান্সারের উৎপত্তির কারণ বা লক্ষণও হতে পারে তাই অবশ্যই শক্ত ডেলা দেখা দিলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

চোয়াল নাড়াতে সমস্যা হওয়া

হঠাৎ করে যদি আপনার চোয়ালে ব্যথা হয় তা মোটেও এড়িয়ে চলবেন না কিংবা অবহেলা করবেন না কারণ এটা হাড়-মাংস বেশি কিংবা ঘাড়ের নার্ভে ক্যান্সারের উপসর্গ প্রকাশ করতে পারে।

এছাড়াও দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সারের আরো যে সকল লক্ষণ গুলো রয়েছে সেগুলো নিচে বর্ণনা করা হলো।

১/আপনার গলার ভেতরের বিভিন্ন অংশ যেমন কণ্ঠনালী বা দাঁতের মাড়িতে কিংবা মুখ ও নাকের গর্ত সাইনাস ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। আমেরিকার একটি গবেষণা অনুসারে সারা বিশ্বে ৩ লক্ষ ৫৫ হাজারেরও বেশি মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয় এবং তাদের মধ্যে ১ লক্ষ ৭৭ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেন।

২/আপনার মুখের মধ্যে যদি প্রয়োজন ঘা হয়ে থাকে কিংবা দাঁতের মাড়িতে যদি ঘা অনুভূত হয় তাহলে সেটা অবহেলা না করে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন কেননা এগুলো দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সারের পূর্ব লক্ষণ হতে পারে।

৩/বিশেষজ্ঞদের মতে মুখের কিংবা দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সারের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা পুরুষদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি। সেক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে আপনার মুখের কিংবা দাঁতের মাড়ির কোন অংশ অবাঞ্ছিতভাবে ফুলে উঠছে কিনা যদি ফুলে ওঠে তাহলে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

৪/মুখের মধ্যে কিংবা দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সারের আরো একটি লক্ষণ হচ্ছে আপনার মুখের মধ্যে কিংবা দাঁতের মাড়িতে যদি ছোট পিন্ডের মত কোন কিছু বের হয় কিংবা সেটা যদি রং পরিবর্তন হয় কিংবা তার রং যদি সাদা ও লাল হয় তাহলে সেটা মুখের ক্যান্সারের কিংবা দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সারের প্রধান লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়। এছাড়াও আপনার মুখের মধ্যে কোন নির্দিষ্ট স্থানে যদি খসখসে অনুভব হয় তাহলে সেটা মুখের কিংবা দাঁতের বাড়িতে ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।

৫/দাঁতের মাড়ি অস্বাভাবিকভাবে ফুলে যাওয়া কিংবা দাঁতের মাড়িতে রক্তক্ষরণ হওয়াও ক্যান্সার রোগের লক্ষণ হতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে আপনার মুখে হালকা ব্যথা অনুভব হবে এবং ধীরে ধীরে তা ঘা এ পরিণত হবে এবং পরবর্তীতে মুখ জোড়ে কিংবা বড় করে হা করতে অসুবিধা ব্যথা অনুভব হতে পারে।

৬/এছাড়াও হঠাৎ করে যদি আপনার পুরো মুখ কাল যে ভাব আছে এবং ঠোঁট মাঝে মাঝে অবশ হয়ে যায় এবং দাঁতের মাড়িতে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভূত হ‌ওয়া। দাঁত পড়ে যাওয়া কিংবা কনকনে ব্যথা হওয়া এছাড়াও খুব অল্প দিনের মধ্যে আপনার ওজন কমে যাওয়া এগুলো দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।

৭/আপনার পরিবারের কারো যদি ক্যান্সার থেকে থাকে কিংবা পূর্বে যদি হয়ে থেকে থাকে তাহলে আপনার দাঁতের কিংবা অন্য যেকোনো ধরনের ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়া সম্ভব না রয়েছে। বিশেষ করে ব্লাড ক্যান্সার কিংবা গলার ক্যান্সার এ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।

৮/আমাদের শরীরকে বিভিন্ন ভাইরাস জনিত কিংবা ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ থেকে বাঁচার জন্য অবশ্যই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে এতে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং সকল প্রকার ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করতে সাহায্য করবে এমনকি মাড়ির ক্যান্সার এর লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে বাধা সৃষ্টি করবে।


এছাড়াও দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সারের আরো যে সকল লক্ষণ গুলো তা এক নজরে নিচে দেওয়া হল।
  1. মুখের কিংবা দাঁতের মাড়ির ফোলা ভাব যদি একটানা ৩-৪ সপ্তাহ ধরে থাকে।
  2. ঠোঁটে,মুখে কিংবা দাঁতের মাড়িতে যদি লাল কিংবা সাদা ভাব দেখা যায়।
  3. দাঁত নড়বড়ে হওয়া কিংবা দাঁত পড়ে যাওয়া।
  4. মুখে কিংবা দাঁতের মাড়িতে টিউমার জাতীয় অনুভূত হওয়া
  5. কানের নিচের অংশে কিংবা মুখের মধ্যে ব্যথা হওয়া
  6. ঢোক গিলার সময় কিংবা খাবার গিলতে কষ্ট হওয়া
  7. দাঁতের মাড়ি ক্ষত যুক্ত হওয়া
  8. দাঁতের মাড়ি শক্ত অনুভব হওয়া
  9. হঠাৎ করেই প্রচুর পরিমাণ ওজন কমে যাওয়া
  10. কোন কারণ ছাড়াই দাঁতের মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ হওয়া।
দাঁতের মাড়ির ক্যান্সারের বিভিন্ন ধাপসমূহ

ধাপ-০: এই ধাপে মুখের কিংবা দাঁতের মাড়ির ক্যান্সারের কোষ গুলোর বিভিন্ন অস্বাভাবিক বৃদ্ধি দেখা যায়।

ধাপ-১: ক্যান্সারের যেসকল কোর্সগুলো অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল এই ধাপে সেগুলো ক্যান্সার কোষে পরিণত হয় এবং সেগুলো ছোট আকারে থাকে কিন্তু নির্দিষ্ট স্থানে থাকে।

ধাপ-২: ক্যান্সারের লক্ষণগুলো কিংবা ক্যান্সারের কোষগুলো এই অংশের টিউমারের মত আকার ধারণ করে।

ধাপ-৩: ক্যান্সারের এই ধাপে টিউমারটি চার সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে এবং তা ঘাড়ের লিম্ফ নোডের কাছাকাছি পৌঁছে যায়।

ধাপ-৪: এই ধাপে আসার পর ক্যান্সারের সকল কোষ গুলো চোরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে এমনকি ফুসফুস আক্রান্ত হতে পারে।

চিকিৎসা

১/ম্যান্ডিবুলেক্টমি: চিকিৎসার এই প্রথম অংশে ক্যান্সারের জন্য দায়ী টিউমারটিকে মাটি থেকে কেটে বাদ দেওয়া হয়।

২/পারশিয়াল  মেক্সিলেকক্টমি: মুরধা কিংবা দাঁতের মাড়ির উপরের অংশের থাকা ক্যান্সার এই অপারেশনের মাধ্যমে বাদ দেওয়া হয়।

৩/ম্যান্ডিবুলেক্টমি অপারেশনটি করতে হলে পায়ের হাড় বিশেষ করে সেগুলা থেকে হাড় নিয়ে এসে দাঁতের মাড়ির হাড় পুনরায় গঠন করতে হয় যার অপারেশনের নাম মাইক্রো ভাসকুলার সার্জারি

৪/ক্যান্সারের কোচ গুলো যদি সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ে কিংবা সেগুলো যদি আর উপরের অপারেশনগুলোর মাধ্যমে ঠিক করা না যায় সে ক্ষেত্রে সবশেষে প্যাথলজি রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে কেমোথেরাপি কিংবা রেডিও থেরাপি দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

প্রাথমিক পর্যায়ে মুখের ক্যান্সারের লক্ষণ

প্রাথমিক পর্যায়ে মুখে ক্যান্সারের বিভিন্ন লক্ষণগুলো আর্টিকেলটি এই অংশে আমরা আলোচনা করব। যে লক্ষণগুলো যদি আপনার ক্ষেত্রে পাওয়া যায় কিংবা আপনার যদি মনে হয় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক প্রাথমিক পর্যায়ে মুখের ক্যান্সারের বিভিন্ন লক্ষণ সম্পর্কে।
  1. ঘনঘন মুখে বিভিন্ন ঘা দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে
  2. মুখে রক্তক্ষরণ ও বিভিন্ন ধরনের ঘা দেখা দিতে পারে
  3. মুখের আস্তরণে চারপাশে কিংবা মুখের মধ্যে মোটা পিন্ড কিংবা ঘন চামড়া দেখা দিতে পারে
  4. দাঁত নড়বড়ে হয়ে যাও এমনকি মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ হতে পারে
  5. জিব্বা ফুলে যাওয়া এবং প্রচুর পরিমাণ ব্যথা
  6. মুখের চোয়াল শক্ত হয়ে যাওয়া এমনকি প্রচুর পরিমাণ ব্যথা হওয়া
  7. খাদ্য চর্বনে অসুবিধা ও ব্যথা হওয়া
  8. খাবার গিলতে কষ্ট হওয়া কিংবা গলা ফুলে যাওয়া
  9. অল্প দিনের মধ্যে অধিক পরিমাণ ওজন হ্রাস পাওয়া
  10. মুখে কিংবা ঠোঁটে লাল সাদা কিংবা কালো দাগ আবির্ভূত হওয়া
  11. গলার স্বর পাল্টে যাওয়া কিংবা কথা বলতে অসুবিধা হওয়া
  12. ঘা হওয়ার কারণে মুখে অস্বাভাবিক লালা তৈরি হতে পারে
  13. মুখ নাড়াচাড়া করতে সমস্যা হওয়া
  14. মুখে অস্বাভাবিকভাবে ক্ষত সৃষ্টি হওয়া
  15. কোন কারণ ছাড়াই দাঁত পড়ে যাওয়া
  16. প্রায়শ জ্বর জ্বর ভাব অনুভব করা
  17. প্রচুর পরিমাণ ক্লান্তি অনুভব করা।
  18. বিশ্রাম নেওয়ার পরও ক্লান্তি ভাব দূর না হওয়া
  19. অন্ত্র ও মূত্রাশয়ের কার্যক্রমের বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন
  20. একটানা দীর্ঘদিন কাশি এবং কণ্ঠস্বর পরিবর্তন হওয়া
  21. শরীরের বিভিন্ন স্থানে কত সৃষ্টি হওয়া
  22. শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা বা অসুস্থ অনুভব হওয়া।
  23. ত্বকে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন যেমন ত্বক কালো হয়ে যাওয়া, চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া, কিংবা লাল হ‌ওয়া, চুলকানি এমনকি মাত্রাতিরিক্ত চুলের বৃদ্ধি ও দেখা দিতে পারে।

উপরোক্ত এই লক্ষণগুলো যদি আপনি আপনার মধ্যে দেখতে পান সেক্ষেত্রে আপনার প্রাথমিক পর্যায়ে মুখে ক্যান্সারের কারণ হতে পারে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।

দাঁতের মাড়িতে ক্ষত

দাঁতের মাড়িতে ক্ষত হওয়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। আইপিএলটি এই অংশে আমরা দাঁতের মাড়িতে কতবার বিভিন্ন কারণ গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানব। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক দাঁতের মাড়িতে ক্ষত কেন হয়।

১/দাঁতের মাড়িতে ক্ষত হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে দাঁতের মাড়ির অসুখ পিরিওডেনটাল ডিজিজ যেটি সাধারণত বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে।

২/দাঁতের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের খাবার থেকে যাওয়ার কারণে এবং ঠিকমতো দাঁত ব্রাশ না করার কারণে দাঁতের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের প্লাক জমেছে গুলো পাথর এ রূপান্তরিত হতে পারে যার কারণে দাঁতের মাড়িতে বিভিন্ন ধরনের ক্ষত সৃষ্টি হয়।

৩/যারা অতিরিক্ত জোর দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করে তাদের ক্ষেত্রে দাঁতের এনামেল গুলো ক্ষয় হয়ে যাওয়ার কারণে দাঁতের মাড়িতে ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে।

৪/বিভিন্ন হরমোনের পরিবর্তনের কারণে দাঁতের পিসি গুলো সংবেদনশীল এবং অরক্ষণীয় হয়ে পড়ে যার কারনে দাঁতের মাড়িতে ক্ষত দেখা দিতে পারে।

৫/যারা নিয়মিত ধূমপান কিংবা মদ্যপান ও অ্যালকোহলের মত দ্রব্য সেবন করে থাকে তাদের ক্ষেত্রে দাঁতে প্লাক জমে থাকার কারণে ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে।

৬/খাবার খাওয়ার সময় যদি দাঁতে অতিরিক্ত পরিমাণ চাপ সৃষ্টি হয় সে ক্ষেত্রেও ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে। এ সমস্যা তাদের ক্ষেত্রে হয় যাদের দাঁত বাঁকা, তারা যখন খাবার খাওয়ার সময় দাঁতের অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে তখন দাঁত মাড়ি থেকে সরে যায় এবং মাটিতে ক্ষত সৃষ্টি হয়।

৭/ঠোঁট কিংবা জিব্বা দিয়ে অতিরিক্ত পরিমাণ চাপ সৃষ্টি করার কারণেও দাঁত মাড়ি থেকে সরে গিয়ে ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে।

৮/অনেকের দাঁত দিয়ে নখ কাটা কিংবা পেন্সিল ও কলম কামড়ানোর অভ্যাস রয়েছে। তাদের ক্ষেত্রে দাঁতে অতিরিক্ত চাপ পড়ার কারণে দাঁত সরে গিয়ে মাড়িতে ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে।

দাঁতের মাড়িতে ঘা হলে করণীয়

দাঁতের মাড়িতে কিংবা মুখের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ঘা বা ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে। এর বিভিন্ন ধরনের কারণ রয়েছে। আমাদের মুখে ঘা সাধারণত অপুষ্টিজনিত কারণে কিংবা ভিটামিনের অভাবের কারণে হয়ে থাকে। যাকে অ্যাপথাস আলসার বলা হয়। আমাদের মুখে সাধারণত ভিটামিনের ঘাটতি কিংবা অপুষ্টি জনিত ঘাটতির কারণে যে ঘা গুলো বা ক্ষত সৃষ্টি হয় তা সাধারণত ৫ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হয় এরপর এগুলো শুকিয়ে যায়।

এ ধরনের ঘা জিহ্না, ঠোঁট, মাড়ি এমনকি তালুতেও দেখা দিতে পারে। এ ধরনের ঘা মুখের মধ্যে এক বা একাধিক মাত্রায় হতে পারে। এ ধরনের ঘা মুখে হলে রোগীর খাবার খেতে অসুবিধা হয়। এছাড়াও ঝাল কিংবা গরম জাতীয় কোন খাবার খেলে তা প্রচন্ড জ্বালা সৃষ্টি করে।

অ্যাপথাস আলসার হওয়ার কারণ
  1. অপুষ্টি
  2. ভিটামিনের স্বল্পতা
  3. মানসিক চাপ
  4. মহিলাদের পিরিয়ড
  5. মহিলাদের মেনোপজ
অনেকের ক্ষেত্রে এই ঘা প্রতি তিন মাস পর পর ক্রমাগতভাবে হতে থাকে যাকে মেডিকেলের ভাষায় রিকারেন্ট অ্যাডভা টোমাটাইটিস

মুখে বা মাড়িতে ঘা বা ক্ষত সৃষ্টি হলে করণীয়
  1. প্রচুর পরিমাণ পানি পান করা
  2. প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো
  3. প্রচুর পরিমাণ টাটকা শাকসবজি ও ফল খাওয়া
  4. কোনরকম কোল ড্রিংকস কিংবা ঠান্ডা প্যাকেট জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না
  5. ঝাল ও গরম জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে
  6. প্রয়োজনে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ও ভিটামিন-১২ গ্রহণ করা যেতে পারে।

দাঁতের মাড়িতে ঘা এর ঔষুধ

এতক্ষণ আমরা দাঁতের মাড়িতে কিংবা মুখের মধ্যে ঘা হলে কি কি করণীয় সে সম্পর্কে জানলাম। এই অংশে আমরা দাঁতের মাড়িতে ঘা কিংবা মুখের ঘা এর ঔষধ সম্পর্কে জানব। দাঁতের মাড়িতে ঘা কিংবা মুখে যদি ঘা হয় সে ক্ষেত্রে আপনারা এই Mucopain Gel ওষুধটি ব্যবহার করতে পারেন।

তবে অবশ্যই ওষুধটি ব্যবহারের পূর্বে কোন অভিজ্ঞ ডাক্তার কিংবা বিশেষজ্ঞের মতামত গ্রহণ করতে পারেন।

খাবার খাওয়ার ১৫ মিনিট আগে এই ওষুধটি মুখে লাগিয়ে নেবেন। খাবার খাওয়ার সময় যদি আপনার অতিরিক্ত জ্বালা পোড়া হয় সেক্ষেত্রে আপনি খাবার ১৫ মিনিট আগে এই ওষুধটি মুখের ঘা কিংবা মাড়ির ঘা যে লাগিয়ে নিতে পারেন। এই ওষুধটি আপনার ক্ষতস্থান থেকে অবশ করে দেবে এবং একটি লোকাল এনেস্থিসিয়া হিসেবে কাজ করবে।

এ ধরনের ঘা বা ক্ষত সাধারণত ৫ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হয় তবে যদি ৩ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যেও এই ঘা ঠিক না হয় সেক্ষেত্রে এর চিকিৎসা গ্রহণ করা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে ডাক্তার আপনার এই ঘাড় কিছু নমুনা গ্রহণ করে সেগুলো পরীক্ষা করে চেক করে এগুলো সাধারণ অ্যাপথাস আলসার নাকি এগুলোর মধ্যে ক্যান্সারের কোন জীবাণু রয়েছে।

ঠিক করার এই পদ্ধতিকে বায়োপসি বলা হয়। তবে বায়োপসি মানে যে ক্যান্সার এমনটি কিন্তু নয় এটা শুধু নিশ্চিত হবার জন্য একটি পরীক্ষা মাত্র। সেক্ষেত্রে আপনার ক্ষত বা ঘা থেকে যদি ক্যান্সারের জীবাণু পাওয়া যায় তার চিকিৎসা পদ্ধতি অন্যরকম হবে।

লেখক এর মন্তব্য

এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনার যদি কোন উপকার হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আর্টিকেলটি আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন। এই আর্টিকালি সম্পর্কে যদি আপনার কোন মতামত বা মন্তব্য থেকে থাকে তবে অবশ্যই কমেন্ট করতে পারেন। এরকম আরো শিক্ষণীয় ও মজার মজার পোস্ট পড়তে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটি ভিজিট করতে পারেন। সবাই ভালো থাকবেন।ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজিটাল ব্লগ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪