গর্ভাবস্থায় যদি পেটে চাপ লাগে তাহলে কি হয়
আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন এবং আপনার গর্ভাবস্থায় যদি পেটে চাপ লেগে থাকে কিংবা আঘাত লেগে থাকে তাহলে কি হয় সেগুলো সম্পর্কে এই পোস্টটিতে বিস্তারিত হবে আলোচনা করা হবে। গর্ভাবস্থায় আপনার যদি পেতে চাপ লাগ তাহলে কি আপনার বা আপনার বাচ্চার কোন ক্ষতি হবে এ সকল চিন্তাভাবনা সদ্য গর্ভবতী মায়ের মনে থেকেই থাকে।
আপনার ক্ষেত্রে যদি এরকম হয় তাহলে কি কি উপায় রয়েছে বা কি কি করা যায় সেগুলো সম্পর্কে এই পোস্টটিতে জানানো হয়েছে। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় কি কি সতর্কতা পালন করতে হয় এবং কান্না করলে কি হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে এ পোস্টটিতে আপনাদের জানানো হবে। আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে আশা করছি এই পোস্টটি পড়ার পর থেকে আপনার গর্ব অবস্থায় অনেক সহজ এবং সতর্কতার সাথে শেষ করতে পারবেন।
পোস্ট সূচীপত্রঃ গর্ভাবস্থায় যদি পেটে চাপ লাগে তাহলে কি হয়
ভূমিকা
গর্ভাবস্থায় মায়েদের মনের সব সময় বিভিন্ন ধরনের চিন্তাভাবনা লেগেই থাকে। আর যদি প্রথম গর্ভধারণ হয় সেক্ষেত্রে মনে তো বিভিন্ন ধরনের সংকা ও খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত টেনশন হয়ে থাকে। যেমন ধরেন হালকা পেটে চাপ লাগলে কিংবা হালকা আঘাত লাগলে মাথায় বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন ঘুরপাক খায়। গর্ভাবস্থায় সকল মায়েদের জন্যই একটি নতুন অনুভূতির প্রকাশ ঘটায়।
এ সময় গর্ভবতী মা আগত সন্তানকে নিয়ে চিন্তাভাবনা যেন শেষ হতে চায় না। আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন এবং গর্ভ অবস্থায় আপনার কি কি করণীয় বা পেতে চাপ লাগলে আপনার বাচ্চার কোন ক্ষতি হবে কিনা কিংবা আপনি যদি কান্না করেন তাহলে আপনার বাচ্চার কোন সমস্যা হবে কিনা এছাড়াও সম্পূর্ণ প্রেগনেন্সি টাইমে আপনার কি কি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে সে সম্পর্কে এই পোস্টটিতে বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। তাই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার অনুরোধ রইল।
গর্ভাবস্থায় প্রথম মাসের সর্তকতা
গর্ভধারণের প্রথম মাস খুব সতর্কতার সাথে চলাফেরা করতে হয়। এ সময় শিশুর অভ্যন্তরীণ গঠন ও শিশুর বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গড়ে উঠতে শুরু করে। এই প্রথম মাসে যে সকল সতর্কতা গুলো পালন করতে হবে বা মেনে চলতে হবে তা নিচে বর্ণনা করা হলো।
১/প্রথমেই একজন ভালো অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক চলাফেরা করতে হবে। নিয়মিত ডাক্তারের কাছে চেকআপ করার চেষ্টা করতে হবে। আপনার ব্লাড প্রেসার ঠিক আছে কিনা, পালস রেট ঠিক আছে কিনা, ওজন বৃদ্ধি পাচ্ছে কিনা এ সকল বিষয়গুলো প্রতিনিয়ত চেকআপ করতে হবে।
২/প্রথম মাসে যে সকল সতর্কতা গুলো মেনে চলতে হবে তা হচ্ছে সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে যদি আপনার বমি বমি ভাব থাকে তাহলে ব্রাশ করা যাবে না। প্রথম মাসে তরল খাবার এড়িয়ে চলতে হবে এবং শুকনো খাবার খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। যদি অতিরিক্ত পরিমাণ বমি বমি ভাব থাকে তাহলে বেশি তরল বা পানি জাতীয় খাবার খাওয়া যাবেনা। বেলা বাড়ার ব্রাশ করতে পারেন।
৩/একসাথে পেট ভরে খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে খাবার খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে হবে।
৪/খাবার খাওয়ার সাথে সাথেই শোবেন না।এতে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সহ বুক জ্বালাপোড়া করতে পারে। অন্তত আধাঘন্টা পর শুবেন। এছাড়া যদি অতিরিক্ত বুক জ্বালাপোড়া করে সেক্ষেত্রে মাথার নিচে একটি জায়গায় দুটি বালিশ ব্যবহার করতে পারেন।
৫/নিয়মিত হালকা শরীর চর্চা করার চেষ্টা করুন। নিয়মিত সকালবেলা হাঁটতে পারেন।
৬/নিজেকে হাসি খুশি রাখার চেষ্টা করুন প্রয়োজনে প্রিয় মানুষদের সাথে কথা বলুন এতে মন খুশি থাকবে।
৭/চা ও কফি ক্যাফিন জাতীয় পদার্থ থাকে তাই এ সময় এগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।
৮/আপনার যদি ধূমপান বা অ্যালকোহল খাওয়ার অভ্যাস থাকে তাহলে শীঘ্রই তা ত্যাগ করতে হবে।
৯/যদি আপনার অতিরিক্ত জ্বর আছে কিংবা অতিরিক্ত বমি বমি ভাব খাওয়াতে অরুচি ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।
১০/দীর্ঘক্ষণ ধরে না খেয়ে থাকার অভ্যাস থাকলে তা ত্যাগ করতে হবে। আপনার একবারে খেতে পছন্দ না হলে আপনি অল্প অল্প করে খেতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় প্রথম ২ মাসের সতর্কতা
গর্ভাবস্থার প্রথম ২ মাস গর্ভবতী মহিলাদের বিষের সতর্কতা পালন করতে হয়। এ সময় বিভিন্ন ধরনের হরমোনাল গত লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। যেমন ধরেন:বমি বমি ভাব,মাথা ঘোরানো,শরীর খারাপ লাগা, ক্লান্তিবোধ স্তনের পরিবর্তন, ঘনঘন প্রস্রাব,বুকে জ্বালাপোড়া, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি। গর্ভাবস্থার প্রথম ২ মাসে এ সকল লক্ষণ গুলো প্রকাশ পেতে পারে এটা স্বাভাবিক ব্যাপার এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কিন্তু এ সময় বেশ কিছু সতর্কতা ও চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়।
গর্ভাবস্থার প্রথম ২ মাসের ঝুঁকি
১/গর্ভাবস্থার এ সময় গর্ভপাতের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে। বিভিন্ন কারণে গর্ভপাত হতে পারে।যেমন: বাচ্চার জিনগত ত্রুটি, মায়ের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস,থাইরয়েড হরমোনের কারণে এছাড়াও বিভিন্ন ইনফেকশন বা সিনড্রোম এর কারণেও গর্ভপাত হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনিও যদি এ সকল সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক বিশেষ সতর্কতা পালন করতে হবে।
২/গর্ভাবস্থার প্রথম ২ মাসে যে সকল ঝুঁকি থাকে তার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে নিষিক্ত ভ্রুন জরায়ুর এর ভেতরে স্থাপিত না হয়ে বাইরে স্থাপিত হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় নিষিক্ত ভ্রুন ডিম্বনালীতে বাড়তে শুরু করে এবং তারপরে ফেটে রক্ত ক্ষরণ ঞ্জনিত লক্ষণ দেখা দেয়।
৩/এ সময় বিশেষ সতর্কতা পালন করতে হবে বিশেষ করে বাচ্চার ভ্রুণের দিকে বেশি নজর দিতে হবে কেননা এ সময় নিষিক্ত ভ্রুন বাচ্চা রূপান্তরিত না হয়ে আঙ্গুরের থোকার মত এক প্রকার টিউমার এর রূপ নিতে পারে যার চিকিৎসা না করলে পরবর্তীতে তাকে ক্যান্সারে পরিণত হতে পারে।
৪/প্রথম ২ মাস ভ্রুন গঠনের উপযুক্ত সময়। এ সময় গর্ভবতী মায়েদের বিশেষ সতর্কতা পালন করতে হবে সকল প্রকার নেশা জাতীয় দ্রব্য থেকে দূরে থাকতে হবে এবং আপনার যদি ডায়াবেটিস কিংবা অন্য কোন রোগ থাকে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মন্তব্য সতর্কতা মেনে চলতে হবে।
৫/এ সময় মোটেও স্ট্রেস বা টেনশন করা যাবে না। বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে প্রয়োজনে সকল প্রকার কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে।
৬/আপনার সন্তানের ওজন ঠিকমতো বাড়ছে কিনা সে বিষয়ে সতর্কতা পালন করতে হবে প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।
৭/গর্ভাবস্থায় আপনি স্থানীয়ভাবে ভ্রমণ করতে পারেন কিন্তু দীর্ঘ ভ্রমণের ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক সতর্কতা পালন করতে হবে এবং মেনে চলতে হবে।
৮/গর্ভাবস্থার প্রথম ২ মাস আপনাকে সকল ওষুধ পত্র ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক খেতে হবে এবং আপনি যদি অন্য কোন অসুখের কারণে ওষুধ খেয়ে থাকেন সে বিষয়ে সতর্কতা পালন করতে হবে।
৯/গর্ভাবস্থার প্রথম ২ মাস ফাস্টফুড, নরম পনির ও আন পাস্তুরাইজ দুধ বা দই ও প্রক্রিয়াজাত সকল ধরনের খাবার খাওয়া ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে।
১০/গর্ভাবস্থার প্রথম ২ বাসের মধ্যে স্তন বড় ভারী হতে পারে। আবার ইউটেরাস বড় হতে শুরু করে যার ফলে ব্লাডারে চাপ পড়ে এবং ঘন ঘন প্রস্রাব এর বেগ আসতে পারে।
গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাসের সর্তকতা
গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে গর্ভবতী মায়ের বিভিন্ন ধরনের মানসিক পরিবর্তন ও লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
সকল লক্ষণ গুলো হল
- গর্ভবতী নারীর স্তন নরম হয়ে যাওয়া
- মেজাজ সবসময় খিটখিটে থাকা
- বমি বমি ভাব ও খাওয়াতে অরুচি
- ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ
- হঠাৎ করে ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস পেতে পারে
- সব সময় ক্লান্তি বোধ করা
- বুক জ্বালাপোড়া বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা
- পায়ে খিল ধরা
- পিঠের নিচের দিকের অংশে অথবা শ্রোণীতে ব্যথা হওয়া
- টক ঝাল অথবা নির্দিষ্ট খাবারের প্রতি আকর্ষিত হওয়া
- প্রিয় কিছু খাবার সম্পর্কে অনিহা হওয়া
- কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া
প্রথম ৩ মাসের যে সকল সতর্কতা পালন করতে হবে
১/গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাস যে সকল সতর্কতা পালন করতে হয় তার মধ্যে প্রথম হচ্ছে আপনাকে খাবারের দিকে বেশি মনোযোগী হতে হবে।
২/গর্ভকালীন সময় বিভিন্ন নারীর ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকমের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। এ সময় কারো কারো খাবার ইচ্ছা অতিরিক্ত পরিমাণ বৃদ্ধি পায় আবার কারো কারো ক্ষেত্রে অরুচির সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাদের অতিরিক্ত খাবার ইচ্ছা জাগে তাদের এই ইচ্ছাকে ফুড ক্সেভিং বলা হয়। এটা তেমন কোন সমস্যা না। গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে এগুলো স্বাভাবিক। আবার এমন অনেকে আছে যারা স্বাভাবিকভাবেই খাবার দাবার খেয়ে থাকে।
৩/গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাস বিভিন্ন ধরনের হরমোনাল পরিবর্তন হতে পারে যার কারণে গর্ভবতী নারী গম্ভীর অবস্থায় থাকে কিংবা অতিরিক্ত বিরক্তবোধ ও ক্লান্তিভব থাকতে পারে।
৪/গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাসের শেষের দিকে চিকিৎসকেরা আল্ট্রাসাউন্ড করতে বলে থাকেন এতে বাচ্চার হার্টবিট ও পালস বোঝা যায়।
৫/গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাস অনেকের ক্ষেত্রে খাবার অরুচি থাকার কারণে ফলিক এসিড ও আয়োডিনের চাহিদা পূরণ হয় না সেক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে।
৬/এ সময় বাথরুমের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্ক রাখতে হবে বাথরুম যেন পিচ্ছিল বা ভেজা অবস্থায় না থাকে।
৭/টাইট ফিটিং জামা কাপড় না পরে ঢিলা ঢালা আরামদায়ক কাপড় পড়ার ব্যাপারে সতর্কতা পালন করতে হবে।
৮/আরো যে বিষয়টিত সতর্কতা পালন করতে হবে সেটি হচ্ছে গর্ভাবস্থায় গর্ভবতীর ঘর যেন খোলামেলা ও পর্যাপ্ত আলো বাতাস সম্পূর্ণ হয়ে থাকে।
৯/এ সময় ঘুমের ব্যাপারেও বিশেষভাবে সতর্কতা রাখতে হবে। রাখতে হবে যেন গর্ভবতী মা দিনের বেলা অন্তত ২ ঘন্টা এবং রাতের বেলা কমপক্ষে ৮ ঘন্টা পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম পায় এটি শিশুর বিকাশের ক্ষেত্রে খুবই জরুরী।
১০/গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাস চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক হালকা ব্যায়াম করার চেষ্টা করতে হবে।এই প্রথম ৩ মাস ভারী ব্যায়াম না করাই উত্তম।
গর্ভাবস্থার শেষ ৩ মাসের সতর্কতা
গর্ভাবস্থার শেষ ৩ মাসের সময় কালকে চিকিৎসকেরা থার্ড ট্রাইমেস্টার বা তৃতীয় ত্রৈমাসিক কাল বলে থাকে। এ সময় যে সকল সতর্কতা গুলো পালন করতে হবে তার বর্ণনা নিচে দেওয়া হল।
১/গর্ভাবস্থার এ সময় রক্তস্বল্পতা সহ বিভিন্ন ভিটামিনের অভাব দেখা দিতে পারে। তাই এ সময় আয়রন যুক্ত খাবার বেশি বেশি করে খেতে হবে। জন্য আপনি বাদাম, কলা,ডাবের পানি, পালং শাক,মটরশুটি,মসুর ডাল, সবুজ শাকসবজি, ফলমূল ইত্যাদি খেতে পারেন এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায়। এছাড়াও অত্যাধিক পরিমাণ আয়রন শোষণ করার জন্য প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি এর প্রয়োজন। ভিটামিন সি এর ঘাটতি পূরণ করার জন্য আপনি সাইট্রাস ফল খেতে পারেন।
২/এসময় ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর চাহিদা অত্যাধিক পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। আপনাকে ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিমের কুসুম, গরু ও খাসির কলিজা, মাশরুম, কমলা, মালটা ইত্যাদি খাবার আপনার খাদ্য তালিকায় যুক্ত করতে হবে। সঙ্গে আপনি ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক ভিটামিন ডি এর জন্য সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন। এছাড়াও ভিটামিন ডি এর আরেকটি ভালো উৎস হচ্ছে সূর্যের আলো আপনি সকালবেলা কিংবা বিকাল বেলা সূর্যের আলোতে কিছুক্ষণ হাটাহাটি করলে তা আপনার ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করবে।
৩/আপনার শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও শরীরের গঠন ঠিক রাখার জন্য এ সময় প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন হয়। ভাই আপনাকে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডেইরি মিল্ক,ব্রকলি, বাদাম, দই ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে যা আপনার শরীরে ভিটামিন ও ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণ করবে।
৪/আপনার শিশু স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশের জন্য সময় বাড়তি ক্যালরির প্রয়োজন পড়তে পারে তাই আপনি কিসমিস ও খেজুর খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন।
৫/মাছ ডিম ডাল এবং অন্যান্য সকল প্রোটিন জাতীয় খাবার কি পরিমান খাওয়া উচিত সেটা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এবং আপনার বাচ্চার ওজন অনুযায়ী সতর্কতা মাফিক খেতে হবে।
৬/গর্ভাবস্থার শেষ সময়ে কোষ্ঠকাঠিন্য এর মত রোগ দেখা দিতে পারে সে ক্ষেত্রে আপনাকে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার জাতীয় খাবার খেতে হবে। জন্য আপনি খেতে পারেন বাদামী চাল, শাকসবজি, মটরশুটি, নারকেল, কাজুবাদাম,চিনা বাদাম ইত্যাদি।
৭/এছাড়াও আপনার শরীরে যদি অতিরিক্ত ক্যালোরি, ভিটামিন,আইরন, এসিড এবং ক্যালসিয়াম এগুলোর অভাব থাকে তাহলে আপনি ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক ক বিভিন্ন সাপ্লিমেন্টারি গ্রহণ করতে পারেন তবে সব ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
গর্ভাবস্থায় পেটে চাপ লাগলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় পেটে চাপ লাগা কোন সাধারণ বিষয় না।এতে গর্ভপাতের সম্ভাবনা থাকে। শরীরের খেয়াল রাখার পাশাপাশি চিকিৎসকেরা গর্ভাবস্থায় যাতে পেটে আঘাত না লাগে সেদিকে নজর রাখতে পরামর্শ দেন। গর্ভাবস্থায় খুব সাবধানে চলাফেরা করতে হয়। করে বাথরুমে ও বাড়িঘরে চলার সময় যেন কোন ভেজা স্থান এ পা না পড়ে সেদিকে বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখতে হবে।
অবস্থায় পেটে আঘাত লাগলে কিংবা চাপ লাগলে তা মা ও শিশুর জন্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে। সময় মা ও শিশু উভয়ের জন্যই প্রাণহানির আশঙ্কাও থাকে। এটা নির্ভর করে আঘাত কতটুকু গুরুতর সে বিষয়ের উপর। গর্ভাবস্থায় পড়ে গেলে কিংবা পেটে আঘাত লাগলে বা চাপ লাগলে রক্তপাত হওয়ার আশঙ্কা থাকে এবং এ সময় অনিচ্ছাকৃত গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ সময় যদি আঘাত মায়ের জরায়ুতে লাগে সেক্ষেত্রে মায়ের জীবনের আশঙ্কা বেড়ে যায়। এ সময় সামান্য আঘাত ফলেও অনেক বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে তাই এ সময় বিশেষ সতর্কতা পালন করা উচিত।
গর্ভাবস্থায় কান্না করলে কি হয়
এতক্ষণ আমরা গর্ব অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে সতর্কগুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। এই অংশে আমরা আলোচনা করব গর্ভাবস্থায় কান্না করলে কি ধরনের ক্ষতি হতে পারে এবং এ ক্ষতিগুলো থেকে বাঁচার উপায় বা প্রতিকার সম্পর্কে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় কান্না করলে কি হয়।
- গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত কান্নার কারণ
- হরমোনাল পরিবর্তন
- অতিরিক্ত স্ট্রেস
- অস্বস্তিকর বা বিরক্ত লাগা
- ওজন বৃদ্ধি পাওয়া
- আবেগপূর্ণ শিল্পী বা শো দেখা
জটিলতা
১/গর্ভাবস্থায় কান্না করার ফলে শারীরিক ও মানসিক বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে।
২/উপযুক্ত সময়ের আগে শিশুর জন্ম হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
৩/গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত কান্না যার ফলে শিশুর স্বাভাবিক বুদ্ধি ও বিকাশে বাধাগ্রস্ত হয়।
৪/এমনকি জন্ম গ্রহণ করার পরেও শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে।
৫/গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত কান্না করার ফলে বাচ্চার ওজন কমতে থাকে।
৬/গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত কান্না করা মায়েদের সন্তান জন্মের পর খুব একটা প্রাণচাঞ্চল্যপূর্ণ হয় না।
প্রতিকার
১/লক্ষণগুলো দ্রুত শনাক্ত করে পরিবারের সমর্থন নিতে হবে।
২/গর্ভবতী মা যেন পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নিতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৩/প্রতিদিন প্রয়োজনীয় ও পুষ্টিকর খাবার এবং প্রয়োজনে ঘুমের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪/গর্ভবতী মায়ের ছোট ছোট ইচ্ছে গুলোকে পূরণ করা এবং তার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনার চেষ্টা করতে হবে এবং যথাসম্ভব তাকে হাসিখুশি রাখার চেষ্টা করতে হবে।
৫/গর্ভবতী মায়ের থাকার পরিবেশ যেন খোলামেলা ও আলো বাতাস পূর্ণ জায়গায় হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৬/গর্ভবতী মায়ের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখতে হবে প্রয়োজনে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
লেখকের মন্তব্য
এই পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনি যদি এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করায় তাদের এসব বিষয়গুলো সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দেবেন। এই পোস্টটি সম্পর্কে যদি আপনার কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করতে পারেন। আর আপনি যদি কোন গর্ভবতী মা ও বোন হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন আপনার গর্ব অবস্থায় এখন কেমন চলছে।
এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনি কোন উপকার পাচ্ছেন কিনা। সবাই ভালো থাকবেন। আসসালামু ওয়ালাইকুম।
ডিজিটাল ব্লগ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url