OrdinaryITPostAd

গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি বা ফল খাওয়া যাবে না

আপনি যদি গর্ভাবস্থায় থেকে থাকেন এবং যদি না জেনে থাকেন গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবেনা তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য। এই পোস্টটিতে আমরা গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবেনা, কি কি ফল খাওয়া যাবেনা, চিড়া খাওয়া যাবে কিনা, মুড়ি খেলে কি হতে পারে, লেবু খাওয়া যাবে কিনা এবং বেশি ঝাল খেলে কি হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করব। গর্ভাবস্থায় সকল মা ও বোনেদের কিছু চিন্তাভাবনা থেকেই থাকে।

ছবি

তার খাদ্যাভাসে তার আগত সন্তানের কোন প্রকার ক্ষতি হচ্ছে কিনা। সন্তান সঠিকভাবে বেড়ে উঠছে কিনা সন্তানের কোনোরকম পুষ্টির ঘাটতি পরছে এ সকল বিষয় নিয়ে সকল গর্ভবতী মা ও বোনেরা চিন্তাভাবনা করে থাকে। আপনি যদি গর্ভাবস্থায় থেকে থাকেন এবং এ সকল চিন্তা ভাবনাও যদি আপনার মনে এসে থাকে তাহলে আজকের এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল। আশা করি আজকের এই পোস্টটি পড়ার পর থেকে গর্ভাবস্থায় এসকল চিন্তা আপনার মন থেকে একেবারেই দূর হয়ে যাবে। তাহলে চলুন বিষয়গুলো সম্পূর্ণভাবে তুলে ধরা যাক।

পোস্ট সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি বা ফল খাওয়া যাবে না

ভূমিকা

গর্ভাবস্থায় প্রত্যেক মেয়ের জন্য একটি নতুন অনুভূতির সৃষ্টি করে। গর্ভবতী মা তার সন্তান এর মুখ দেখার পর বিগত ১০ মাসের সকল কষ্ট ভুলে যায়। এ সময় প্রত্যেক মেয়েদের কিছু শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন ঘটে থাকে। আবার কিছু শারীরিক ও মানসিক সমস্যার সম্মুখীন ও হতে হয়। তাই এ সময় আমাদের খাদ্য নির্বাচন আমাদের ভবিষ্যৎ শিশুর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

গর্ভাবস্থায় খুবই সাবধানতার সাথে চলাফেরা করা যেমন জরুরি তেমনি সকল নিয়মকানুন মেনে খাদ্য গ্রহণ করাও গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থা বা গর্ভধারণ এমন একটি প্রক্রিয়া যা একজন নারীর মধ্যে একাধিক প্রাণ বেড়ে ওঠে। এ সময় নারী শুধু একাই নয় তার ভেতরে অন্য এক বা একাধিক প্রাণ বড় হতে থাকে। স্বাভাবিকভাবে এ সময় প্রত্যেক নারীদের খাদ্যা বেশি কিছু পরিবর্তন আনতে হয়। এসব পরিবর্তনের মধ্যে অনেক নারী তাদের পছন্দের খাবারও খেতে পারেন না।

গর্ভাবস্থায় খাদ্য নির্বাচন মা ও শিশুর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আপনি যে খাবারগুলো খাচ্ছেন তাতে কি আপনার শিশু সঠিক পরিমাণ পুষ্টি ও ভিটামিন পাচ্ছে। নাকি আপনি ভুল খাদ্যাভাস নির্বাচন করেছেন। এ সকল সম্পর্কে সকল খুঁটিনাটি বিষয় এই পোস্টটিতে আলোচনা করা হবে।
 সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার অনুরোধ রইলো

গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবেনা

গর্ভকালীন অবস্থায় এমন কিছু শাকসবজি রয়েছে যেগুলো আপনার শারীরিক ও মানসিক নানা ধরনের সমস্যার কারণ হতে পারে। শুধু আপনারও নয় এতে আপনার আগত শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশে প্রভাব ফেলতে পারে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবেনা।

করলা

করলা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হলেও গর্ভাবস্থায় এটি গর্ভবতী মা ও শিশুর ক্ষতির কারণ হতে পারে। করলায় রয়েছে গ্লাইকোলাইসিস,সে্পোনিক, মারোডিসিন যেগুলো গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর উপসর্গের প্রকাশ ঘটায়। আপনার আগত সন্তানের ও ক্ষতি হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় অবশ্যই আমাদের করলা খাওয়া যাবে না।

কাঁচা বা আধা কাঁচা পেঁপে

পেঁপে অন্যান্য সময় আমাদের জন্য পুষ্টিকর একটি সবজি হলেও গর্ভাবস্থায় এটি নানা রকম ক্ষতির কারণ হতে পারে। টিভিতে রয়েছে উচ্চমাত্রার ল্যাটেক্স। আমেরিকান গবেষক দল ইঁদুরের ওপর ল্যাটেক্স এর পরীক্ষা করে দেখেন যে লেটেক্স আমাদের জরায়ুর শক্তিশালী পেসি ও গ্রন্থি গুলোকে সংকোচন করতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞদের মধ্যে গর্ভাবস্থায় কাঁচা পেঁপে আমাদের গর্ভজাত সন্তানের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। তবে গর্ভাবস্থায় পাকা পেঁপে খাওয়া যেতে পারে কারণ টাকা পেঁপে ভিটামিন সি সহ আরো অনেক পুষ্টিগণে ভরপুর যা শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।

অঙ্কুরিত বীজ, খাদ্যশস্য ও সিম

গর্ভাবস্থায় রান্না না করা অঙ্কুরিত বীজ খাদ্যশস্য ও সিম গর্ভবতী নারীর ও নবজাতক শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় এ সকল সবজি খাওয়া যাবেনা।

সজিনা ডাটা

একটি জনপ্রিয় সবজি হলেও সজিনা ডাটা গর্ভাবস্থায় গর্ভপাতের কারণ হতে পারে।সজিনা ডাটায় রয়েছে আলফা সিটেস্টেরল যা আপনার শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি সহ আপনার আগত সন্তানের মৃত্যুর কারণও হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় সজিনা ডাটা খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে।

অ্যালোভেরা

আমাদের মধ্যে অনেকেই সৌন্দর্য বা রূপচর্চার জন্য অ্যালোভেরা মুখে লাগিয়ে থাকি কিংবা অনেকেই পেট পরিষ্কার করার জন্য অ্যালোভেরার জুস খেয়ে থাকে। অ্যালোভেরাতে এমন কিছু ক্ষতিকারক উপাদান রয়েছে যা আপনার গর্ভপাতের কারণ পর্যন্ত হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় অ্যালোভেরা না খাওয়াই উত্তম।

বেগুন

বেগুন খুবই সাধারণ এবং জনপ্রিয় একটি সবজি। আমরা অনেকেই বেগুনের নাম শুনেছি কিংবা অনেকে বেগুন খেয়েছি। কিন্তু যাদের বেগুন থেকে এলার্জি রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে বেগুন বিষের মত। বেগু‌‌নে থাকে বিভিন্ন ধরনের ফাইটোহরমোন যা গর্ভাবস্থায় মায়ের ও শিশুর ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় বেগুন এড়িয়ে চলা উচিত।

কাঁচামুলা

কাঁচা মুলা অনেকের একটি প্রিয় সবজি হতে পারে কিন্তু কাঁচা মুলাতে এমন কিছু ক্ষতিকারক উপাদান বা ব্যাকটেরিয়া থাকে যা গর্ভবতী মা ও শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় কাঁচা মুলা খাওয়া যাবে না।

গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবেনা

এতক্ষণ আমরা গর্ভাবস্থায় কোন কোন সবজিগুলো খাওয়া যাবে না সেগুলো সম্পর্কে জানলাম। আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবেনা সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানবো।

পেঁপে

গর্ভাবস্থায় আধা কাঁচা বা কাঁচা পেঁপে খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে। আধা কাঁচা বা কাঁচা পেঁপেতে রয়েছে ল্যাটেক্স নামের পদার্থ যা আমাদের পাকস্থলীতে ব্যথা সৃষ্টি করার পাশাপাশি গর্ভের সন্তানের নানাবিধ ক্ষতি করে থাকে তাই এ সময়ে কাঁচা বা আধা কাঁচা পেঁপে না খেয়ে পাকা পেঁপে খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

আনারস

আনারসে রয়েছে ব্রোমেলাইন নামক উপাদান যা আমাদের জরায়ুর পথকে কবুল করতে পারে এবং যা জরায়ুর ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়াও এই ফলটি খাওয়ার ফলে আমাদের ডায়রিয়ার মত সমস্যাতেও পড়তে হতে পারে।

আঙ্গুর

গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে শেষ তিন মাস আঙ্গুর না খাওয়া ভালো। এতে রয়েছে রেসভেরাট্রাল নামক উপাদান যা আমাদের শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করে এবং এতে রয়েছে তাপ উৎপাদনকারী উপাদান যা মা ও শিশুর শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতি করতে সক্ষম। তাই গর্ভাবস্থায় আঙ্গুর ফল খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে।

এছাড়াও গর্ভাবস্থায় কখনোই স্ট্রবেরি,চেরি, নাশপাতি, আম, তরমুজ, কমলা ইত্যাদি ফল খাওয়া যাবে না কারণ এগুলো থেকে গ্যাস্ট্রিক হওয়া সম্ভাবনা থাকে যা গর্ভাবস্থায় নানা ধরনের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই এসব ফল অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। এছাড়া আপনি যেকোনো ধরনের ফল বা সবজি খেতে পারেন তবে তা পরিমাণ মতো খেতে হবে এবং খাওয়ার আগে অবশ্যই পরিষ্কার করে এবং সবজির ক্ষেত্রে ভালোভাবে রান্না করে খেতে হবে।

গর্ভাবস্থায় যেসব খাবার খাওয়া যাবেনা

গর্ভাবস্থায় খাদ্য নির্বাচন বা খাদ্য তালিকা তৈরি করা মা ও শিশুর জন্য খুবই জরুরী। এতক্ষণ আমরা গর্ব অবস্থায় কি কি সবজি ও ফল খাওয়া যাবে না সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানলাম। আর্টিকেলটির এই অংশ আমরা জানবো গর্ভাবস্থায় কোন কোন খাবার গুলো খাওয়া নিষিদ্ধ বা কি কি খাবার খাওয়া যাবেনা সেগুলো সম্পর্কে।

Unpesteurized দুধ ও দই

গর্ভাবস্থায় অবশ্যই অবশ্যই কাঁচা দুধ কিংবা পাস্তুরিক দুধ খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে। তেমন পুষ্টিগুণ না থাকলেও এর মধ্যে থাকা বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকার ব্যাকটেরিয়া মা ও শিশুর দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির কারণ হতে পারে। এসব খাবারে সালমোলেমা,লিস্টেরিয়া,ই-কোলায়,ক্রিপ্টো স্পোরিডিয়াম সহ আরো অনেক ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া থাকে যা মা ও শিশুর জন্য ক্ষতিকর।

মুরগির মাংস

গর্ভাবস্থায় কখনোই মুরগির মাংস খাওয়া ঠিক না। মুরগির মাংস বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবী থাকে যা নবজাতক শিশুর স্বাস্থ্যের ও মানসিকতার ক্ষতি করতে পারে। মুরগির মাংস হওয়ার ফলে শিশু অন্ধত্ব, মৃগীরোগ, অক্ষমতা ও আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় ভুগতে পারে।

অপরিষ্কার ফল ও শাকসবজি

যেকোনো ধরনের ফল বা শাকসবজি খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে কেননা কাঁচা শাকসবজি ও ফলে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া বাসা বেধে থাকে যা আপনার শরীরে গেলে আপনার ও শিশুর মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।

ক্যাফিন

গর্ভাবস্থায় ক্যাফিন জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে। ক্যাফিন শিশুর শারীরিক মানসিক বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে তাই গর্ব অবস্থায় অবশ্যই কফি, কমল পানীয়, শক্তিপানিয়,সবুজ চা ও বিভিন্ন ধরনের ক্যাফিন জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।

কাঁচা ডিম

দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে গর্ভপাতের অন্যতম কারণ হিসেবে ধরা হয় ঘন ঘন কাঁচা ডিম বা কাঁচা ডিম যুক্ত খাবার খাওয়া। তাজা ডিমে সালমোনেলা ভাইরাস থাকার সম্ভাবনা থাকে যা গর্ভাবস্থায় জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে।

মৌরি বীজ

মৌরি বীজ বাধানিয়া গর্ভাবস্থায় খাওয়ার ফলে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে পারে। এ সকল মসলাগুলোতে অল্প পরিমাণে ফাইটোস্ট্রোজেন থাকে যা মহিলাদের ইস্ট্রোজেনের মত কাজ করে এবং যা জরায়ুর সংকোচনের জন্য দায়ী। সেক্ষেত্রে ডাক্তাররা সন্তান প্রসবের পর জরায়ু পরিষ্কার করতে মাসিক শুরু করতে এসব মসলা জাতীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন।

হারবাল চা

গর্ভাবস্থায় অবশ্যই আপনাকে ভেষজ চা এড়িয়ে চলতে হবে বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এটি বাজারজাত করা হয় কিন্তু হারবাল চা খাওয়ার আগে অবশ্যই আপনাকে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপর খেতে হবে।

রাস্তার খাবার

গর্ভাবস্থায় অবশ্যই আপনাকে বাইরের খাবার বা স্ট্রিট ফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা এর অধিকাংশ খাবারগুলো রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রিত ও খোলামেলা জায়গায় বিক্রি হওয়ার কারণে এগুলোতে প্রচুর পরিমাণ ব্যাকটেরিয়া ও ময়লা আবর্জনা বাসা বাঁধতে পারে যা আপনার এবং আপনার অনাগত শিশুর শারীরিক ও মানসিক সকল প্রকার স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।

লবণাক্ত খাবার

গর্ভাবস্থায় অবশ্যই মসলাদার ও লবণাক্ত খাবার খাওয়া থেকে এড়িয়ে চলতে হবে। লবণাক্ত খাবার খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণ জল শোষণ করতে পারে যা গর্ভাবস্থায় জটিলতার জন্য দায়ী।

অ্যাজিনোমোটো এড়িয়ে চলা

বেশিরভাগ চাইনিজ খাবার বা রাস্তার খাবারে অ্যাজিনোমোটো নামক পদার্থ ব্যবহার করা হয়। এই অ্যাজিনোমোটো ভ্রুনের মস্তিষ্কের বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে এবং তার মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই অবশ্যই গর্ভাবস্থায় অ্যাজিনোমোটো ডোজ সম্পর্কে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত এবং যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা উচিত।

অ্যালকোহল

গর্ভাবস্থায় অবশ্যই অ্যালকোহল জাতীয় খাবার বা অ্যালকোহল এড়িয়ে চলা উচিত। অ্যালকোহল আপনার স্বাস্থ্য এবং আপনার শিশু স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও উপকারী নয়। গর্ভাবস্থায় অ্যালকোহল খাওয়ার ফলে ব্রুনের বিভিন্ন ধরনের  সিনড্রোম প্রকাশ পেতে পারে যেমন মুখের বিবৃতি বা বুদ্ধি ভিত্তিক অক্ষমতার কারণ হয়ে উঠতে পারে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই গর্ভাবস্থায় অ্যালকোহল খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হব।

গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়া যাবে কি

আপনি কি গর্ভধারণ করেছেন এবং জানতে চাচ্ছেন যে গর্ভ অবস্থায় চিড়া খাওয়া যাবে কিনা বা কি পরিমাণ খেতে পারেন। তাহলে আপনি সঠিক পোস্টটিতে রয়েছেন। চিড়াতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন। সাধারণত সকল বয়সের গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়া উচিত। কেননা চিড়া খাওয়ার ফলে গর্ভকালীন সময়ে রক্তস্বল্পতার যে ঝুঁকি থেকে থাকে আপনি যদি প্রতিদিন চিড়া কিংবা চিড়া ভেজা পানি খেতে পারেন তাহলে তা হ্রাস পাবে।

গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় সকল নারীদের ক্ষেত্রে একটি নতুন অনুভূতি এবং ভয়ের কারণ হয়ে থাকে। এ সময় সকল মেয়েরা ভাবতে থাকে কি কি খাবারগুলো খেলে তার সন্তানের উপকার হবে আর কি কি খাবার গুলো খেলে তার সন্তানের ক্ষতি হবে। এই সকল চিন্তা ভাবনা করে অনেকে মুড়ি খাওয়া এড়িয়ে চলে। কিন্তু মুড়ি খাওয়া গর্ভবতী মায়ের বা সন্তানের জন্য কোন ক্ষতির করার বিষয় নয়। গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে সন্তান ও মায়ের দুজনেই স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং এটা গর্ভাবস্থার জন্য খুবই উপকারী। চলুন জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায়।

১/মুড়িতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বি ও খনিজ উপাদান। যা গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর শরীরে ভিটামিন বি ও খনিজ এর ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে।

২/মুড়িতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও ফাইবার। যা গর্ভকালীন অবস্থায় গর্ভবতী মা ও শিশুর হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে এবং শিশু ক্ষেত্রে হাড়কে মজবুত ও হাড়ের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৩/মুড়িতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালোরি ও শর্করা যা গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলাদের দ্রুত এনার্জি ফিরে আনতে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় প্রত্যেক মহিলাদের উচিত মুড়ি খাওয়া।

৪/গর্ভাবস্থার একটি বড় সমস্যা হচ্ছে খাওয়াতে অরুচি ও বমি বমি ভাব। সে ক্ষেত্রে একজন গর্ভবতী মা ও বোন যদি প্রতিদিন মুড়ি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন তাহলে তার মুখের রুচি ফিরে আসবে এবং বমি ভাব দূর হবে।

৫/মুড়িতে এমন কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে যেগুলো আমাদের দেহের অতিরিক্ত এসিড,গ্যাস ও বুক জ্বালাপোড়া করার অসুবিধা গুলো থেকে মুক্তি দেয়। মুড়িতে এসিডের পরিমাণ কম থাকার কারণে এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।

৬/মুড়িতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ খনিজ উপাদান,ভিটামিন এবং মিনারেল যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে। তাই সকল মহিলাদের উচিত গর্ভাবস্থায় মুড়িখার অভ্যাস গড়ে তোলা। এটি আপনার এবং আপনার আগত শিশুর দুজনের জন্যই স্বাস্থ্যকর হবে।

৭/মুড়িতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট যা আমাদের তাৎক্ষণিক শক্তি যোগাতে সাহায্য করে।

৮/মুড়িতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী নারীর হঠাৎ ওজন বেড়ে যাওয়া রোধ করে এবং গর্ভকালীন সময়ে প্রস্রাব যন্ত্রণা কিছুটা কম হয়।

৯/মুড়িতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম যা আমাদের অতিরিক্ত খাওয়া রোধ করতে সাহায্য করে এবং আমাদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

১০/মুড়িতে রয়েছে ফাইবার যা আমাদের হজম শক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে এবং গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়ার মত সমস্যা থেকে দূরে রাখতে ভালো কার্যকারিতা প্রদান করে।

গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়া যাবে কি

অনেকেই হয়তো জানেন না গর্ভাবস্থায় লেবু খেলে এর কোন উপকারিতা আছে কিনা। আপনি যদি গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়ার উপকারিতা বা গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়া যাবে কিনা সে সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আপনি সঠিক পোস্টটিতেই রয়েছেন। এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন তাহলে আশা করি আপনি জানতে পারবেন গর্ব অবস্থায় লেবু খাওয়া যাবে কিনা এবং গর্ভাবস্থায় আরও কি কি নিয়ম মেনে চলতে হয় সেগুলো সম্পর্কে। জি হ্যাঁ অবশ্যই আপনি গর্ব অবস্থায় লেবু খেতে পারবেন এতে কোন ক্ষতি নেই।তাহলে চলুন জেনে না যা গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়ার কি কি উপকারিতা রয়েছে।
  1. প্রান্তকালীন অসুস্থতার চিকিৎসা সহায়তা করে
  2. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে
  3. কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়রিয়ার মত সমস্যা থেকে স্বস্তি দেয়
  4. বদহজম নিরাময় করতে সাহায্য করে
  5. প্রতিরোধ ক্ষমতা কে শক্তিশালী করে বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা সৃষ্টি করে
  6. হাড়ের শক্তি বজায় রাখি ও হাড় গঠনে সহায়তা করে
  7. জননাঙ্গ সংক্রান্ত সকল সংক্রমণ গুলি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে
  8. রক্তের pH মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে
  9. পা ফোলা রোগ থেকে মুক্তি দেয়
  10. ডায়রিয়া প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে
  11. প্রসবকালীন শ্রম বেদনার সময় চাপ কম করে
  12. গর্ভাবস্থায় লেবু বমি বমি ভাব নিয়ন্ত্রণ করে
  13. লেবুতে থাকা ফোলেট ভ্রুনের স্নায়বিক বিকাশ করতে সাহায্য করে
  14. লেবুতে থাকা ভিটামিন সি  ভ্রুনের বিকাশ এ সাহায্য করে।

গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় ঝাল খাওয়ার ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। গর্ভাবস্থায় সকল মেয়েরাই গর্ভের সন্তান নিয়ে চিন্তিত থাকে। তাদের চিন্তার মধ্যে একটি চিন্তা হচ্ছে গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি সন্তানের জন্য কোন ক্ষতি হয়। অনেকেই গর্ভাবস্থায় ঝাল পছন্দ হওয়া সত্ত্বেও ঝাল খাওয়া বন্ধ করে দেন।

গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ঝাল খাওয়ার ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে যেমন আপনি যদি অতিরিক্ত ঝাল খান সে ক্ষেত্রে আপনার বমি বমি ভাব এবং ডায়রিয়া হতে পারে যা মা ও শিশু দুজনের জন্য খুবই ক্ষতিকর। ছাড়া অতিরিক্ত ঝাল খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে যা মোটেও ভালো বিষয় নয়।

গর্ভাবস্থায় আপনি ঝাল খেতে পারেন তবে সেটা পরিমাণ মতো এবং নিয়মমাফিক খেতে হবে। অতিরিক্ত পরিমাণে ঝাল আপনার এবং আপনার গর্ভের সন্তানের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই অবশ্যই ঝাল খাওয়ার আগে আপনার এবং আপনার সন্তানের কথা চিন্তা-ভাবনা করে তারপর ঝাল খাবেন।

লেখক এর মন্তব্য

এই পোস্টটিতে আমরা গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি বা ফল খাওয়া যাবেনা। চিড়া খেলে কি হয়, মুড়ি কি খেলে কি হয়, গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়া যাবে কিনা, গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয় এ বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আপনি যদি গর্ভধারণ করে থাকেন তাহলে অবশ্যই আশা করছি এই পোস্টে আপনার জন্য খুবই উপকারী হতে চলেছে। গর্ভাবস্থায় কি কি নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয় তার সম্পূর্ণ ধারণা এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনি পেয়ে যাবেন।

সবশেষে আপনার গর্ভকালীন সময় খুব ভালো হোক এবং আপনার আগত সন্তান সুস্থতা সাথে জন্মগ্রহণ করুক তার আশা ব্যক্ত করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি। ভালো থাকবেন। আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজিটাল ব্লগ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪