হলুদ দাঁত সাদা করার ঘরোয়া উপায় গুলো জেনে নিন
আপনার কি দাঁত হলুদ হয়ে গেছে। হলুদ দাঁত সাদা করার ঘরোয়া উপায় গুলো জানতে চান। বাপ হলুদ হওয়ার কারণে ঠিকমতো হাসতে পারেন না। হাসতে গেলে লজ্জা অনুভব হয়। তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য।এই পোস্টটিতে আমরা হলুদ জাত সাদা করার ঘরোয়া উপায় গুলো বিস্তারিতভাবে জানবো। এছাড়াও আমরা জানতে পারবো হলদেটে দাঁত সাদা করার উপায় সম্পর্কে। দাঁত সাদা করার টুথপেস্ট সম্পর্কে। দাঁত সাদা করার ঔষধের নাম।
এমনকি আমরা এও জানতে পারবো দাঁতের পাথর পরিষ্কার করার উপায় সম্পর্কে এবং দাঁতের হলুদ দাগ দূর করার কিছু উপায় সম্পর্কে। আপনার যদি এ সকল সমস্যা গুলো থেকে থাকে এবং এই সকল সমস্যা থেকে যদি আপনি পরিত্রাণ পেতে চান তাহলে অবশ্যই আজকের এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধৈর্য সহকারে মন দিয়ে পড়ুন। আজকের এই পোস্টটি পড়ার পর আশা করি আপনার দাঁতের সকল ধরনের সমস্যার সমাধান আপনি বাড়িতে বসে করতে পারবেন।
পোস্ট সূচিপত্রঃহলুদ দাঁত সাদা করার ঘরোয়া উপায় গুলো জেনে নিন
ভূমিকা
ঝকঝকে সাদা পরিস্কার ধাত আমাদের কার না পছন্দ। রূপচর্চার ক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করলেও দাঁতের ক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন অবহেলা করে থাকি। যার কারণে একটা সময় পর আমাদের দাঁত হলদে হয়ে যায় কিংবা দাঁতের হলুদ ভাব দেখা যায়। অনেকে আবার ধূমপান করার কারণে দাঁতের হলদে ভাব এবং বিভিন্ন খাবারের কারণেও দাঁতে হলদেটে ভাব দেখা দিতে পারে।
যার কারনে আমরা বন্ধু-বান্ধব এমনকি আত্মীয়-স্বজনদের মাঝেও কথা বলতে লজ্জা ভাব করি অনেকে আবার চুপচাপ বসে থাকি। আপনি যদি এ সকল সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে আপনি সঠিক আর্টিকেলটিতে রয়েছেন। এই আর্টিকেলটিতে আপনারা জানতে পারবেন কিভাবে বাড়িতে বসেই ধবধবে সাদা দাঁত আপনি পেতে পারেন খুব অল্প দিনের মধ্যেই।
তাহলে চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক ঘরে বসে কিভাবে বিভিন্ন ঘরোয়া উপায় আপনি আপনার হলদেটে দাঁত ধবধবে সাদা ও পরিষ্কার করবেন।
হলুদ দাঁত সাদা করার ঘরোয়া উপায়
দাঁতের হলদেটে ভাব দূর করার জন্য কিংবা দাঁতের হলুদ দাগ দূর করার জন্য আমাদের নিয়মিত ব্রাশ করা উচিত। কিন্তু এরপরেও যদি দাঁত এর হলুদ ভাব দূর না হয় বা দাঁত ধবধবে সাদা না হয় তাহলে আপনি নিজের ঘরোয়া উপায় গুলো ব্যবহার করতে পারেন।
লেবু
লেবু আমাদের দাঁতের জন্য খুবই উপকারী। প্রতিদিন সকালে কিংবা রাত্রে ব্রাশ করার বার আপনি যদি এক টুকরো লেবু নিয়ে দাঁতে ঘষতে পারেন তাহলে এটা আপনার দাঁত কে ধবধবে সাদা ও পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করবে। এছাড়াও লেবু তো বিদ্যমান পুষ্টিগুণগুলো আপনার দাঁতের এনামেলকে ভেতর থেকে মজবুত করতে সাহায্য করবে।
লবণ
দাঁতের গোড়া শক্ত ও মজবুত করতে এবং দাঁতকে ঝকঝকে ও সাদা করতে লবণের জুড়ি মেলা ভার। প্রতিদিন দাঁত ব্রাশ করার পর হাতের আঙুলের ডগায় অল্প পরিমাণ লবণ নিয়ে দাঁতে ঘুষতে থাকুন এতে আপনার দাঁত শক্ত ও মজবুত যেমন হবে তেমনি দাঁত হবে ধবধবে সাদা ও সুন্দর।
কলার খোসা
দাঁতকে হলুদ হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে এবং ধবধবে সাদা করতে আরও একটি ঘরোয়া হয়েছে কলার খোসা দিয়ে নিয়মিত দাঁত ঘষা। আপনি যদি প্রতিদিন ব্রাশ করার পরে কলার খোসা দিয়ে দাঁত ঘষেন পাঁচ মিনিট তাহলে সাত দিনের মধ্যে আপনার দাঁতের রং ধবধবে সাদা হবে এবং তাদের হলুদ ভাব দূর হয়ে যাবে। তবে একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন অবশ্যই গলার খোঁচা দিয়ে দাঁত ঘষার পর হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে কুলকুচি করে নিতে হবে। এটা দাঁত সাদা করতে বেশি কার্যকরী তা প্রদান করবে।
তুলসী পাতা
তুলসী পাতার নাম তো আমরা অনেকেই শুনে থাকবো। তুলসী পাতাতেও এমন কিছু পুষ্টি উপাদান ও গুণাগুণ রয়েছে জান ঘরোয়া উপায় আপনার দাঁত কে সাদা করতে সাহায্য করবে। বেশি পরিমাণ তুলসী পাতাকে ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে সেগুলো গুড়ো করে আপনি যে টুথপেস্ট ব্যবহার করেন সেই টুথপেস্টে সাথে মিশিয়ে ব্রাশ করলে আপনার দাঁতের হলদে ভাব একেবারে চলে যাবে এবং সেই সঙ্গে সঙ্গে আপনার দাঁতের যত ধরনের রোগ থাকবে সেগুলো দূর হবে।
আরো পড়ুনঃছোলা খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি
বেকিং সোডা
দাঁত সাদা করার আরো একটি ঘরোয়া উপায় হচ্ছে বেকিং সোডার ব্যবহার।আপনি যদি প্রতিদিন ব্রাশ করার সময় আপনার টুথপেস্ট এর সাথে অল্প পরিমাণ বেকিং সোডা ব্যবহার করে দাঁত ব্রাশ করতে পারেন তাহলে খুব দ্রুত আপনি ভাবতে হবে ও সাদা দাঁতের অধিকারী হতে চলেছেন।
হলুদ গুঁড়ো
হলুদ গুঁড়ো দাঁত কে পরিষ্কার করতে খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। আপনি যদি প্রতিদিন পাঁচ মিনিট ধরে এক চামচ নারকেল তেলের সাথে কিছুটা হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে ব্রাশ করতে পারেন তাহলে তা আপনার দাঁতের যে লাভ ফিরিয়ে আনতে দ্রুত কাজ করবে। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন হলুদ গুঁড়ো ও নারকেল তেল দিয়ে দাঁত ব্রাশ করার পর অবশ্যই আপনাকে সালফেট হীন টুথপেস্ট ব্যবহার করে পুনরায় ব্রাশ করতে হবে।
কমলালেবুর খোসা
দাঁত কে সাদা করতে এবং দাঁতের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে কমলালেবুর খোসা খুব কার্যকরী। আপনি যদি প্রতিদিন সকালে ব্রাশ করার পর কমলালেবুর খোজা দাঁতে ঘষতে পারেন তাহলে আপনার দাঁত সাদা ও কমলালেবুর খোসাতে ভিটামিন সি থাকার কারণে আপনার দাঁত হবে শক্ত ও মজবুত।
মাশরুম
দাঁতকে সাদা করার জন্য আরও একটি কার্যকরী খাবার হচ্ছে মাশরুম। মাশরুমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পলিস্যাকারেট যা দাঁতের ব্যাগটি রেখে ধ্বংস করে এবং ডেন্টাল প্লাক হতে বাধা সৃষ্টি করে। এবং আপনার দাঁত কে করে তুলে ধবধবে সাদা ও পরিষ্কার।
গ্রিন টি
গ্রিন টিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফ্লুরাইড এবং এর মধ্যে থাকা এন্টি অ্যাসিডিক উপাদান দাঁতের হলুদ ভাব দূর করতে এবং দাঁতের হলুদ ভাব পড়তে বাধা সৃষ্টি করে।
স্ট্রবেরি পেস্ট
আপনি যদি প্রতিদিন একটি থেকে দুটি পাতা স্ট্রবেরিকে ভালোভাবে পেস্ট করে সেটা আপনার টুথপেস্ট এর সাথে মিশিয়ে ব্রাশ করতে পারেন তাহলে আপনার দাঁত হবে প্রাকৃতিকভাবে ধবধবে সাদা এবং সুন্দর। স্ট্রবেরি মধ্যে থাকা এসিডিক উপাদান ব্লিচিং অ্যাজেন্ট হিসেবে কাজ করে। তবে অবশ্যই স্ট্রবেরি টেস্ট এবং টুথপেস্ট ব্যবহার করে ব্রাশ করার পর আপনাকে সোডার এক চিমটি বাই কার্বনেট দিয়ে ভালোভাবে মুখ খুল কুচি করার পর পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।
হলদেটে দাঁত সাদা করার উপায়
এতক্ষণ আমরা দাঁতের হলুদ দাগ দূর করে ধবধবে সাদা দাঁত-পাওয়ার ঘরোয়া উপায় গুলো সম্পর্কে জানলাম। আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা হলদেটে দাঁত সাদা করার আরো কিছু অভিনব উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
১/সুদূর প্রাচীনকাল থেকে দাঁত এর হলদেটে ভাব দূর করার একটি অভিনব উপায় হচ্ছে অয়েল পুলিং। আপনি যদি প্রতিদিন কিছু পরিমাণ তেল মুখে নিয়ে দাঁতে মাসাজ করতে পারেন কিংবা কুলকুচি করতে পারেন যেমনটা মাউথওয়াশ ব্যবহার করে করা হয় সেটা আপনার দাঁতকে ধবধবে সাদা করতে সাহায্য করবে।
আরো পড়ুনঃমিষ্টি কুমড়ার বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা
তেল হিসেবে আপনি নারিকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন কেননা নারকেল তেল অয়েল পুলিং এর জন্য সেরা। এতে আপনার দাঁত প্রাকৃতিকভাবে যেমন ধবধবে সাদা হবে তেমনি আপনার দাঁতের প্লাকের এর গঠন ও মাড়ির বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি মিলবে।
২/আপনি যদি কিছু পরিমাণ লেবুর রস এবং তাতে এক চিমটি বেকিং সোডা ব্যবহার করে নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করতে পারেন তাহলে আপনার দাঁত প্রাকৃতিকভাবে ধবধবে সাদা হবে এবং দাঁতের হলদেটে ভাব দূর হবে।
৩/অতিরিক্ত ধূমপান করার কারণে কিংবা দাঁতের অবহেলার কারণে যাদের দাঁত কালো কিংবা হলদেটে হয়ে গেছে তাদের দাঁত ঘরোয়া ভাবে ধবধবে সাদা করার একটি অভিনব উপাদান হচ্ছে অ্যাক্টিভেটেড চারকোল। এটি আপনি অনলাইন থেকে কিংবা বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক ওষুধের দোকানে পেয়ে যাবেন। সাধারণত অক্সিজেন ও ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড এর সঙ্গে কাঠ কয়লা প্রক্রিয়াজাত করার মাধ্যমে একটি অ্যাক্টিভেটেড চারকোল তৈরি করা হয়।
৪/অতিরিক্ত চা কফি যারা খেয়ে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে দাঁতে হলদে ভাব কিংবা দাঁত কালো হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা বেশি দেখা দেয়। চা, কফি ও লাইনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ট্যানিন যা আমাদের দাঁতে হলদেটে ভাব ফেলতে পারে।
এক্ষেত্রে আপনি যদি অ্যাক্টিভেটেড চারকোল ব্যবহার করে প্রতিদিন স্বাভাবিকভাবে দাঁত ব্রাশ করেন তাহলে এই অ্যাক্টিভেটেড চারকোল চা,কফি ও ওয়াইনের মধ্যে থাকা ট্যানিনকে শোষণ করে আপনার দাঁতে হলদেটে ভাব দূর করতে ও বিভিন্ন ধরনের দাগ দূর করতে সাহায্য করবে।
৫/দাঁতের হলদেটে ভাব দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলোর মধ্যে আরও একটি হচ্ছে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার। আপনি যদি ২০০ মিলি লিটার পানির সাথে দুই চামচ পরিমাণ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে 30 সেকেন্ড যাবত কুলকুচি করতে পারেন তাহলে সেটা আপনার দাঁত কে প্রাকৃতিকভাবে সাদা করতে সাহায্য করবে। তবে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার দিয়ে কুলকুচি করার সময় অবশ্যই মনে রাখবেন অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ৩০ সেকেন্ড এর বেশি মুখের মধ্যে রাখা যাবেনা।
৬/দাঁতের হলদেটে ভাব দূর করতে এবং দাঁতকে প্রাকৃতিকভাবে ধবধবে সাদা করতে আপনি ঘরোয়া ভাবে ব্যবহার করতে পারেন পাতিলেবুর রস। পাতি লেবুর রসে রয়েছে সাইট্রিক এসিড যা আপনার দাঁতের হলুদ ভাব দূর করে দাঁত কে ধবধবে সাদা করতে এবং দাঁতের এনামেলকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করবে।
দাঁত কে দীর্ঘস্থায়ী সাদা ও সুন্দর রাখতে করণীয়
ধবধবে সাদা দাঁত যেমন আমাদের কাম্য তেমনি আমাদের উচিত দাঁতের সঠিকভাবে যত্ন নেওয়া এবং দাঁত কে সকল ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা দাঁতে যাতে হলদে ভাব কিংবা কালো দাগ না পড়ে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে কিছু খাবার ও কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক দাঁতকে সুরক্ষিত রাখতে কোন কোন বিষয়গুলো আপনাকে এড়িয়ে চলতে হবে বা কোন কোন বিষয়গুলো আপনাকে মেনে চলতে হবে।
১/যাদের ধূমপান করার অভ্যাস রয়েছে তাদের দাঁতে হলদেটে ভাব দেখা দিতে পারে। সিগারেটের মধ্যে থাকার নিকোটিন দাঁতের রং নষ্ট করে দাঁতকে হলদেটে করে দেয়। তাই আপনি যদি ধূমপান করে থাকেন অবশ্যই আপনাকে ধূমপান ছাড়তে হবে।
২/যাদের পান,জর্দা, তামাক কিংবা মুক্তি খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে তাদের ক্ষেত্রেও দাঁতে হলদেটে ভাব বা কালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে এই বদভ্যাসগুলো ত্যাগ করতে হবে।
৩/যারা ওয়াইন খান তাদের দাঁত এর সাদা ভাব নষ্ট হয়ে যাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে।
৪/যারা অতিরিক্ত পরিমাণ চা কফি কিংবা সোডা জাতীয় পানি পান করে থাকেন তাদের দাঁত হলদেটে হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। সুতরাং এগুলো আপনাকে পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে।
৫/মিষ্টি জাতীয় খাবার যারা অতিরিক্ত খায় তাদের দাঁতের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে এমনকি দাঁতের রং পাল্টে যেতে পারে।
৬/এছাড়াও রঙিন খাবার খাওয়ার পর বা রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রিত কোন খাবার খাওয়ার এক ঘন্টার মধ্যে অবশ্য আপনাকে দাঁত ব্রাশ করতে হবে তা না হলে তাতে রং ধরে যেতে পারে।
দাঁত সাদা করার টুথপেস্ট
এতক্ষণ আমরা হলুদ দাঁত সাদা করার বিভিন্ন ঘরোয়া উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম আর্টিকেলে এ অংশে আমরা দাঁত সাদা করার টুথপেস্ট সম্পর্কে জানব। আমরা বিভিন্ন টুথপেস্ট ব্যবহার করে থাকি যেগুলোর মধ্যে কিছু আমাদের দাঁতের জন্য উপকারী এবং আমাদের দাঁত কে স্থায়ীভাবে সাদা করতে সাহায্য করে আবার কিছু টুথপেস্ট রয়েছে যেগুলো আমাদের দাঁতের জন্য ক্ষতিকারক।
আর্টিকেলের এ অংশে আমরা এমন কিছু তুথ পেজ সম্পর্কে জানব যেগুলো আপনার দাঁতকে ধবধবে সাদা করতে সাহায্য করবে এবং এগুলোতে রাসায়নিক উপাদানের পরিমাণ অন্যান্য টুথপেস্টের তুলনায় অনেকটা কম।
হোয়াই টেনিং টুথপেস্ট
ধবধপে সাদা ও মজবুত দাঁত পেতে আমাদের প্রতিদিন সকালে এবং রাতে দুই বেলা দাঁত ব্রাশ করা উচিত। আপনি যদি দাঁত ব্রাশ করার সময় হোয়াইটেনিং টুথপেস্ট ব্যবহার করে থাকেন এটা আপনার দাঁতকে দ্রুত সাদা করতে সাহায্য করবে। বিশেষজ্ঞদের বিভিন্ন পরীক্ষায় জানা গেছে হোয়াইটেনিং টুথপেস্টে রয়েছে শক্তিশালী ও বিশেষ রাসায়নিক উপাদান যা আমাদের দাঁতের উপরের হলদেটে ভাব এবং বিভিন্ন দাগ ছোপ ও বিবর্ণতা দূর করতে সাহায্য করে।
সারফেস হোয়াইটনার
আপনার দাঁতের উপর যদি হলদেটে ভাব কিংবা কালো দাগ থেকে থাকে তাহলে আপনি সারফেস হোয়াইটনার ব্যবহার করতে পারেন। বেকিং সোডা, সিলিকা, ক্যালসিয়াম কার্বনেট সহ বিভিন্ন ধরনের উপকরণ দিয়ে সারফেস হোয়াইটনার তৈরি করা হয়। এ সকল টুথপেস্টগুলোতে হালকা ধর্ষণ করে উপাদান থাকে যা আমাদের দাঁতের উপরিভাগের যে সকল হলদেটে ভাব কিংবা কালো দাগ হয় সেগুলো দূর করতে সাহায্য করে।
পার অক্সাইড ভিত্তিক হোয়াইটনার
পারঅক্সাইড ভিত্তিক টুথপেস্টগুলোতে প্রধান উপাদান হিসেবে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড বা কার্বামাইড উপাদান থাকে। পার অক্সাইড ভিত্তিক হোয়াইটনার গুলো আমাদের বার্ধক্য জনিত কিংবা জেনেটিক্স ও ওষুধের কারণে যে সকল গভীর দাগ সৃষ্টি হয় সেগুলো অপসারণ করতে খুবই কার্যকারী ভূমিকা পালন করে। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে এগুলোর অতিরিক্ত পরিমাণ ব্যবহারে দাঁতের সংবেদনশীলতা ও মাড়ির জ্বালাপোড়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
চারকোল ভিত্তিক হোয়াইটনার
চারকোলভিত্তিক হোয়াইটনার গুলো সাধারণত কাঠ কয়লা উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয় যার প্রধান উপাদান হচ্ছে কার্বন এবং এটি অক্সিজেন দিয়ে চিকিৎসা করে। সাধারণত আমাদের দাঁতে ধূমপান কিংবা তামাক ও পানি জাতীয় খাদ্য গ্রহণের জন্য দাঁতের উপরে যে হলদেটে ভাব কিংবা দাগের সৃষ্টি হয় সেগুলো দূর করে দাঁতকে ধপ ধাপে সাদা করতে সাহায্য করে তবে জিনগত কারণে কিংবা বার্ধক্য ও বিভিন্ন ঔষধের কারণে যে সকল দাগ হয় সে সকল দাগ অপসারণ করতে খুব একটা কার্যকারী না হতে পারে।
এনজাইম ভিত্তিক হোয়াইটনার
এনজাইম ভিত্তিক টুথপেস্ট গুলোতে সাধারণত এনজাইম থাকে। এগুলো আমাদের দাঁতের উপরে সৃষ্টি হওয়া পেলি কল গুলোকে ভেঙে দাঁত কে ধবধভাবে সাদা করতে সাহায্য করে এবং দাঁতের হলদেটে ভাব দূর করে। এনজয় ভিত্তিক হোয়াইটনার গুলো আমাদের দাঁতের হলদেটে ভাব কিংবা দাগ অপসারণ করে এমনটাই নয় এগুলো আমাদের দাঁতে নতুন করে কোন রকমের দাগ সৃষ্টি হওয়া থেকে বাধা দেয়।
আপনার দাঁতকে ধবধবে সাদা ও সুন্দর করতে টুথপেস্টে যে সকল উপাদান থাকা জরুরী।
- হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড
- বেকিং সোডা
- সোডিয়াম ট্রিপলাইফসফেট
- ফ্লোরাইড
- পটাশিয়াম নাইট্রেট
টুথপেস্ট কেনার আগে অবশ্যই টুথপেষ্টটি চেক করে নেবেন এ সকল উপাদানগুলো আপনার টুথপেস্টে রয়েছে কিনা কেননা আপনার দাঁতকে ধবধবে সাদা করতে এই উপাদান গুলো অবশ্যই জরুরী। সেলফি ক্ষেত্রে আপনি আগে থেকে বিভিন্ন টুথপেস্ট এর তৈরি করা উপাদান গুলো চেক করে তারপর বাজার থেকে পছন্দমত টুথপেস্ট কিনতে পারেন।
দাঁত সাদা করার ওষুধের নাম
আমাদের যাদের দাঁত হলুদ হয়ে গেছে তাদের অনেকের প্রশ্ন দাঁত সাদা করার কোন ওষুধ রয়েছে কিনা। দাঁত সাদা করার তেমন কোন ঔষধ নেই তবে আজকে এ আর্টিকেলটিতে এই অংশে আমরা এমন একটি দাঁত সাদা করার ঔষধ সম্পর্কে জানব যেটা আপনার উপকারে আসতেও পারে আবার নাও আসতে পারে । সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনি নিজ দায়িত্বে ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক ওষুধটি ব্যবহার করতে পারেন।
বর্তমানে ঘরে বসে দাঁত সাদা করার সবচেয়ে ভালো একটি ওষুধ হচ্ছে Lanbena(Teeth Whitening Essence)
এই ওষুধটিতে যে সকল উপাদান রয়েছে
- Water
- Alcohol
- Asarum
- Angelica dahurica
- Gleditsiae Sinensis Fructus
- Thyme
- Borax
- Menthol
এই ওষুধটি সাধারণত দাঁতের হলুদ আলাপ বা দাগ দূর করতে ব্যবহৃত হয়। যেগুলো হয়ে থাকে
- ধূমপানের কারণে
- চা পানের কারণে
- কফি পানের কারণে
- পান খাওয়ার কারণে
ব্যবহার করার কৌশল
১/ওষুধটি ব্যবহার করার পূর্বে এবং ব্যবহার করার সময় হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিতে হবে।
২/ওষুধটি কখনো ব্রাশের সাহায্যে ব্যবহার করা যাবে না।
৩/উত্তরটি সাথে যে কটন দেয়া থাকবে সে কটন বাড়তি Lanbena দিয়ে ভেজে নিতে হবে। খেয়াল রাখবে যেন খুব বেশি ভিজে না যায়। তার মানে এমন যাতে না হয় যে কটন বাট থেকে টপ করে Lanbena পড়ে যাচ্ছে। ব্যাপারটা যেন এমন হয় যে কটন বারের তুলাটা যেন কোন রকম ভিজে।
৪/কটন বারটি দিয়ে একটি একটি করে দাঁত খসে খসে পরিস্কার করুন।
৫/একটি দাঁত পরিষ্কার হতে প্রায় এক মিনিটের মত সময় লাগতে পারে।
৬/প্রথমবার ব্যবহারের ফলে যদি কোন ফল না পান তাহলে এক সপ্তাহ পর আবার ব্যবহার করতে পারেন।
৭/এক সপ্তাহের আগে দ্বিতীয়বার আর ব্যবহার করবেন না।
সতর্কতা
১/দাঁত পরিষ্কার সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে কটনবার দাঁত ছাড়া মুখের অন্য কোথাও না লাগে এমনকি দাঁতের উপরের মাংস তেও যেন না লাগে।
২/এটি খুবই পাওয়ারফুল একটি কেমিক্যাল যা আপনার মুখের যে কোন জায়গায় লাগলে ক্ষত হতে পারে।
সংরক্ষণ
১/ব্যবহার করার পর অবশ্যই ঔষধের মুখ খুব ভালোভাবে বন্ধ করে ঠান্ডা কোন জায়গায় সংরক্ষণ করুন।
২/অবশ্যই শিশুদের নাগালের বাইরে রাখবেন।
৩/ওষুধটি বাচ্চাদের দাঁতের জন্য ব্যবহার করা যাবে না।
কোথায় পাবেন
এই ওষুধটি আপনি আশপাশের যে কোন ফার্মেসী থেকে নাও পেতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনি যদি অনলাইন থেকে নিতে চান তাহলে দারাজ এর মাধ্যমে পণ্যটি ক্রয় করতে পারেন।
দাঁতের হলুদ দাগ দূর করার উপায়
বন্ধুরা ইতিমধ্যে আমরা হলুদ দাঁত সাদা করার কিংবা দাঁতের হলদেটে ভাব দূর করার বিভিন্ন ঘরোয়া উপায় গুলো জেনেছি। আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা দাঁত সাদা করার আরো তিনটি চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে জানব।
ডেন্টাল ক্রাউন
অতিরিক্ত পরিমাণ সিগারেট চা কিংবা অন্যান্য খাদ্য গ্রহণের ফলে আপনার দাঁতের রং যদি পরিবর্তন হয়ে থাকে কিংবা দাঁতের হলদেটে ভাব হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনি দন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক দাঁতের স্কেলিং কিংবা পালিশ করে দাঁতগুলোকে সুন্দর ও ঝকঝকে সাদা করতে পারেন। এছাড়াও কোন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রার কারণে যদি আপনার দাঁতের রং পরিবর্তিত হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে তাতে ভিনিয়ার কিংবা ক্রাউন করলে দাঁত সুন্দর ও ঝকঝকে হবে।
টুথ ব্লিচিং
আপনার দাঁতের দন্ত্য যদি নষ্ট হয়ে যায় কিংবা দাঁতে আঘাত লাগার কারণে যদি অন্তত ভেঙে যায় এবং তারপরে যদি রুট ক্যানেল করা হয়ে থাকে কিংবা রুট ক্যানেলের জন্য যদি আপনার দাঁতের রং পরিবর্তন হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনি টুথ ব্লিচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে দাঁত সাদা করতে পারে।
লাইট কিউর ফিলিং
যদি উপরের দুটি পদ্ধতির মধ্যে আপনার কোনোটি করা সম্ভব না হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনি লাইট কিউর ফিলিং কিংবা কালার ম্যাচিং ফিলিং এর মাধ্যমে দাঁতকে ধবসাদা ও ঝকঝকে করতে পারেন। যদিও কালার ম্যাচিং ফিলিং দন্ত চিকিৎসার অনেক আগে থেকেই ই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যবহার হয়ে আসছে কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশেও এ পদ্ধতি ব্যবহার করে দাঁত সাদা করার উপায় রয়েছে।
লেখকের মন্তব্য
এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন। এই পোস্টটি সম্পর্কে যদি আপনার কোন ধরনের মতামত থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই মন্তব্য। এরকম আরো শিক্ষণীয় বিষয়ে ও মজার মজার আর্টিকেল পড়তে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি প্রতিদিন ভিজিট করতে পারেন। সবাই ভালো থাকবেন নিজের দাঁতের যত্ন নেবেন। আসসালামু আলাইকুম।
ডিজিটাল ব্লগ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url