কাচা বাদাম ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা গুলো সম্পর্কে জানুন
প্রিয় পাঠক ও পাঠিকা।কাচা বাদাম ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা গুলো সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। আপনি কি নিয়মিত কাঁচা বাদাম খাওয়ার পরিকল্পনা করছেন কিংবা আগে থেকে নিয়মিত কাঁচা বাদাম খেয়ে থাকেন। কিন্তু কাঁচা বাদামের উপকারিতা বা ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে অবগত নন। কিন্তু সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছেন।
তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য। এই পোস্টটিতে আমরা কাঁচা বাদাম খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো । এছাড়াও আপনি আরো জানতে পারবেন গর্ভাবস্থায় কাঁচা বাদাম খেলে কি কি উপকারিতা পাওয়া যায় এবং এর কোন ক্ষতিকর দিক বা অপকারিতা রয়েছে কিনা। সুতরাং কাঁচা বাদাম খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার অনুরোধ রইলো।
পোস্ট সূচিপত্রঃ কাচা বাদাম ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
ভূমিকা
শরীরকে সুস্থ ও প্রয়োজনীয় পরিমাণ পুষ্টি সরবরাহের জন্য ডাক্তারেরা কাঁচা বাদাম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আপনি যদি একটি হালকা ও স্বাস্থ্যকর স্নাক্স খুঁজে থাকেন তাহলে কাচা বাদাও আপনার জন্য অনেক উপকারী হবে। আমরা যদি নিয়মিত পরিমাণ মাফিক কাঁচা বাদাম খেয়ে থাকি সেটা আমাদের শরীর কে সুস্থ ও বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে থাকে।
আমাদের মধ্যে এমন অনেকে আছে যারা নিয়মিত কাঁচা বাদাম খায় কিন্তু এর উপকারিতা সবগুলো সম্পর্কে সঠিকভাবে অবগত নয়। কি ঠিক বলছি তো । তাহলে কোন সমস্যা নাই । আপনি যদি এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে পারেন তাহলে কাচা বাদাম খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিক এবং গর্ভাবস্থায় কাঁচা বাদাম খেলে কি কি উপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন ।
এছাড়াও এই পোস্টটি থেকে আপনারা জানতে পারবেন কাঁচা বাদাম কিভাবে খেলে বেশি উপকারিতা পাওয়া যায় । আপনি কাঁচা বাদাম খাবেন নাকি ভাজা বাদাম খাবেন সকালে খাবেন নাকি ভিজিয়ে খাবেন এসব বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে এই পোস্টটিতে। সুতরাং আপনাকে বিশেষভাবে অনুরোধ রইল আপনি যদি কাচা বাদাম খাওয়ার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানতে চান তাহলে অবশ্যই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
কাঁচা বাদামের যত পুষ্টিগুণ
কাঁচা বাদামের পুষ্টিগুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না। কাঁচা বাদামে রয়েছে অনেক ধরনের পুষ্টিগুণ যেগুলো আপনার শরীর ও মনকে সুস্থ এবং আপনাকে সতেজ রাখতে সাহায্য করবে। কাঁচা বাদামে রয়েছে ক্যালসিয়াম , প্রোটিন , ওমেগা ৩ ,আয়রন , ভিটামিন ই । যেগুলো আপনার হাড়ের জোড় বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে এবং এর পাশাপাশি আপনার মস্তিষ্কের ধারন ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে এছাড়াও আপনাকে ক্যান্সার জাতীয় মারাত্মক রোগ থেকেও রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
আরো পড়ুনঃ ছোলা খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি
এছাড়াও বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন , নিকোটিনক , অ্যাসিড থায়ামিন , কার্বোহাইড্রেট , ফাইবার , মিনারেল , আয়রন , ফসফরাস এছাড়া আরো অনেক পুষ্টিগুণে ভরপুর এ হালকা বাদামটি আপনার জন্য একটি দারুণ এবং পুষ্টিকর খাবার হতে পারে।
যা আপনার শরীরে পুষ্টি সরবরাহের পাশাপাশি আপনার শরীরে যদি কোন ভিটামিন বা ক্যালসিয়াম এর ঘাটতি থেকে থাকে সেটাও পূরণ করবে। ১০০ গ্রাম বাদামের মধ্যে ক্যালরি রয়েছে ৫৬৭ গ্রাম। এবং ২৫ গ্রাম প্রোটিন ও ১৬ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট সহ ৫০ গ্রাম ফ্যাট রয়েছে।
কাঁচা বাদাম খাওয়ার নিয়ম
এতক্ষণ আমরা জানলাম বাদাম এর মধ্যে থাকা বিভিন্ন পুষ্টিগুণ বা গুণাবলী সম্পর্কে। আর্টিকেলের এ অংশটিতে আমরা জানবো আপনি কোন উপায়ে বা কেমন সময় কিভাবে বাদাম খাবেন সেগুলো বিস্তারিতভাবে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক। বাদাম আমাদের শরীরে ভালো ও খারাপ কোলেস্টেরলের ভারসাম্যতা রক্ষা করে।
ছাড়া বাদামে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট , অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি প্রপার্টি এবং ভালো ফ্যাট ,প্রোটিন ও ভিটামিন ই। যা আমাদের বার্ধক্যের লক্ষণ কমায় এবং হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
১/আপনারা চাইলে কাঁচা বাদাম খেতে পারেন কিংবা ৫ থেকে ৬ বাদাম সারারাত ভিজিয়ে রেখে তারপর সকালে চিবিয়ে খেয়ে পানি খেতে পারেন।
২/বাদামের তেল দিয়ে রান্না করা যাবে না। আপনি চাইলে শুধুমাত্র স্যালাড অথবা সবজির ওপরে ছড়িয়ে বাদাম খেতে পারেন।
৩/এছাড়াও আপনি বাদাম শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিয়ে সেগুলো স্মুদি পোরিজে অথবা স্যালাডের সাথে ব্যবহার করে খেতে পারেন।
৪/বাদাম শুকিয়ে গুঁড়ো করে সেগুলো দুধের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
৫/ন্যাশনাল লাইব্রেরী অফ মেডিসিন এর তথ্য অনুযায়ী(এনএলএম) একজন মানুষ প্রতিদিন গোয়া রে ৩০ গ্রাম বাদাম খেতে পারেন।
সকালে কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
এখন আমরা কাচা বাদাম খাওয়ার বিভিন্ন নিয়ম ও কাঁচা বাদামের যত সকল পুষ্টিগুণ রয়েছে সেসবগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। এখন আমরা জানবো সকালে ভিজিয়ে কাঁচা বাদাম খাওয়ার কি কি উপকারিতা রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে। আপনি যদি কাচা বাদাম খাওয়ার বিভিন্ন উপায় ও নিয়ম গুলো সম্পর্কে এবং উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পরুন।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
বিশেষজ্ঞদের মত যাদের নিয়মিত কাঁচা বাদাম খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে তারা অন্যদের তুলনায় কম রোগাক্রান্ত হয় এবং তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি। সকালে কাঁচা বাদাম খেলে সেটা আপনার হারকে শক্তিশালী করতে এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
রক্তস্বল্পতা দূর করে
নিয়মিত সকাল বেলা কাঁচা বাদাম ভিজিয়ে খেলে এর পুষ্টিগুণ অনেক পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। কাঁচা বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন এবং ভিটামিন যা আমাদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে এবং শরীরের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে এবং রক্তের অভাব দূর করে। কাঁচা বাদাম ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় নিয়মিত সকালে ভিজে খেলে সেটা আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি
আমাদের মধ্যে যারা ডায়াবেটিসজনিত রোগে আক্রান্ত তাদের ক্ষেত্রে কাঁচা বাদাম খুবই উপকারী। আপনি যদি প্রতিদিন 50 গ্রাম কাঁচা বাদাম ভিজিয়ে খেতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনি ডায়াবেটিসের মত রোগ থেকে উপশম পাবেন।
প্রদাহ থেকে মুক্তি
শীতে গুড়ের সাথে ভেজানো কাঁচা বাদাম খেলে সেটা আপনার শরীরে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম সরবরাহ করবে। যা আপনার শরীরের ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করবে। এছাড়াও যাদের বাতজনিত ব্যথা রয়েছে তাদের জন্য এটা খুবই উপকারী। ভেজানো চিনা বাদাম খাওয়ার ফলে আমাদের দৃষ্টিশক্তি ও স্মৃতিশক্তি আরও তীক্ষ্ণ ও প্রকার হয়। এছাড়াও শারীরিক শক্তি বৃদ্ধিতে ও কাঁচা বাদামের গুরুত্ব অতুলনীয়।
কাঁচা বাদাম ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
এতক্ষণ আমরা সকালে কাঁচা বাদাম খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা গুলো জানলাম। এখন আমরা জানবো কাঁচা বাদাম ভিজিয়ে খেলে কি কি উপকারিতা পাওয়া যায় সেগুলো সম্পর্কে।
১/কাচা বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফেনোলিক যৌগ। যার ট্যানিন সহজ হজমতে চায় না। ফলে আমরা অনেকে বদহজমের শিকার হয়ে থাকি। এই ট্যানিন আমাদের শরীরের প্রোটিন পরিপাকেও জটিলতা সৃষ্টি করে। কিন্তু আমরা যদি ভিজিয়ে রেখে কাচা বাদাম খায় সেক্ষেত্রে এই ট্যানিন এর পরিমাণ কমে যায়।
২/কাঁচা বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফাইটিক অ্যাসিড আমাদের শরীরে থাকা আইরন ও জিংক এর সাথে বিক্রিয়া করে লবণ তৈরি করে যা আমাদের খাদ্যনালীতে সহজে দ্রবীভূত হতে চাই না। এই ফাইটিক অ্যাসিড আমাদের শরীরে থাকা পেপসিন ও ট্রিপসিন উৎসেচকের পরিমাণ কমিয়ে প্রোটিন পরিপাকেও বাধা সৃষ্টি করে। কিন্তু পানিতে ভিজে রাখলে বাদামের মধ্যে থাকা এই ফাইটিক এসিডের পরিমাণ কমে যায়।
৩/কিছু কিছু বাদাম রয়েছে যেগুলো অনেক শক্ত এবং এদেরকে হজম করতেও অনেক সময় লাগে সেক্ষেত্রে আমাদের হজমের অসুবিধা হতে পারে। কিন্তু আমরা যদি এই বাদামগুলো ভিজিয়ে রাখি সেক্ষেত্রে এগুলো নরম হয়ে যায় এবং হজমে দ্রুত হয়।
৪/সব রকম বাদাম ভেজানোর তেমন কোন দরকার পড়ে না। যেমন কাঠবাদাম খাওয়ার আগে অন্তত ১২ ঘণ্টা ভিজে রাখা উচিত। আখরোট,পাইননাট , হেজেল নাট এ সকল বাদামগুলো ৮ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখলেই যথেষ্ট। এবং কাজু বাদামের ক্ষেত্রে ৬ ঘন্টা রাখায় উত্তম।
গর্ভাবস্থায় কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
এখন আমরা জানবো গর্ভাবস্থায় বাদাম খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে। আমাদের মধ্যে অনেকেই মনে করেন গর্ভাবস্থায় বাদাম খাওয়া নিরাপদ নয়। কিন্তু আমরা হয়তো সঠিকভাবে জানি না গর্ভাবস্থায় বাদাম খেলে গর্ভবতী মা ও শিশুর কি কি উপকারিতা পাওয়া যায়। তাহলে চলুন গর্ভাবস্থায় বাদাম খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
১/বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার এবং ভিটামিন ই যা গর্ভাবস্থায় চুল পড়া রোধে সাহায্য করে এবং ত্বককে সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর রাখে এছাড়াও হজমে সাহায্য করে।
২/শিশুর মস্তিষ্কের সঠিক কার্যকলাপ ও বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন ম্যাগনেসিয়াম রাইবোফ্লোবিন এবং ফোলেট যার সকল কিছুই বাদামের মধ্যে ভরপুর রয়েছে।
৩/বাদামের মধ্যে থাকা ম্যাঙ্গানিজ মা ও শিশুর উভয়ের ওজন সঠিক পরিমাণ রাখতে সাহায্য করে।
৪/বাদামের মধ্যে থাকা ভিটামিন ও মিনারেল গর্ভাবস্থায় মহিলাদের বর্ধিত ক্যালোরি চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করে এবং শিশু ও মার ওজন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
৫/বাদাম গর্ভকালীন অবস্থায় ডায়াবেটিসের মতো রোগ এর ঝুঁকি প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।
৬/বাদামে রয়েছে ফাইটোকেমিক্যাল যা গর্ভাবস্থায় ভ্রূণের বিকাশে এবং গর্ভাবস্থার ফলাফল গুলিতে লাভজনকভাবে প্রভাব ফেলতে সাহায্য করে।
৭/বাদামে রয়েছে মন সেচুরেটেড ফ্যাট যা গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর হার্টের সুরক্ষা দিয়ে থাকে।
৮/গর্ভাবস্থায় শুকনো বাদাম না খাওয়ায় ভালো কেননা এতে হজমের সমস্যা হতে পারে।তার থেকে আপনি যদি বাদাম রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খান সেক্ষেত্রে আপনার বদহজমের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
৯/আপনি যদি প্রতিদিন সকালের নাস্তায় এক গ্লাস গরম দুধের সাথে বাদাম গুড়া খান সেক্ষেত্রে আপনার শরীরের সকল ধরনের পুষ্টিহীনতা দূর হয়ে যাবে।
১০/বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা গর্ভবতী মহিলাদের প্রতিদিন সেবনে শিশু ও মাকে সকল ধরনের রোগ থেকে পরিত্রাণ দিতে সাহায্য করবে।
১১/বাদামে রয়েছে পটাশিয়াম যা উচ্চমাত্রায় খনিজ উপাদান সরবরাহ করে। পটাশিয়াম এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান যা আমাদের শরীরে রক্তচাপ বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ রাখতে এবং পেশির নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় আপনার যদি রক্তচাপ বৃদ্ধি পায় সে ক্ষেত্রে হার্ট এবং কিডনির ক্ষতি হতে পারে এছাড়াও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় যা গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর।
১২/বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম যা শিশুর হাড়ের বিকাশে সাহায্য করে এবং গর্ভ অবস্থায় মায়ের হাড় ক্ষয় রোধ কমায়।
১৩/বাদামে রয়েছে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টি যা হাঁপানি ও ঠান্ডা জনিত বিভিন্ন সমস্যার ঝুঁকি কমায়। গর্ভাবস্থায় অনেকের ঠান্ডা কিংবা জ্বর জ্বর ভাব হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই সমস্যা প্রথম তিন মাস বেশি দেখা যায় সেক্ষেত্রে আপনি যদি নিয়মিত কাঁচা বাদাম খান তা আপনার শরীরকে ভেতর থেকে গরম এবং আপনাকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা থেকে দূরে রাখবে।
১৪/এছাড়া আপনি যদি নিয়মিত বাদাম খান তা আপনার জরায়ুর পেশি শক্তিশালী করে নিরাপদ প্রস্রাব করাতে সাহায্য করবে এছাড়াও প্রসব পরবর্তীকালীন সময়ে আপনার অধিক পরিমাণ রক্তপাতের সম্ভাবনা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
এখন আমরা কাঁচা বাদাম খাওয়ার বিভিন্ন উপকারী দিকগুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারব।
১/কাঁচা বাদাম আমাদের চেহারার উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং বার্ধক্যের ছাপ কমিয়ে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে সাহায্য করে।
২/কাঁচা বাদামের হয়েছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন ও মিনারেল যা আমাদের শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জগতের সাহায্য করে।
৩/যাদের ডিহাইড্রেশনের সমস্যা হয় তারা প্রতিদিন সকালে কাঁচা বাদাম পানিতে ভিজিয়ে খেলে পানি শূন্যতা কমে যায়।
৪/কাচা বাদাম আমাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে।
৫/কাঁচা বাদাম আমাদের খারাপ ও ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বজায় রাখে এবং রক্তচাপ কমায়।
৬/নারীদের ক্ষেত্রে একটা নির্দিষ্ট সময় পর পিরিয়ড হওয়া বন্ধ হয়ে যায় যাকে মেনোপোজ বলা হয়। এ সময় নারীদের ক্ষেত্রে অনেক দরকারী হরমোন উৎপন্ন হয় না এবং হাড় দুর্বল হয়ে যায় তাদের একমাত্র পুষ্টিযোগ্য খাবার হচ্ছে কাঁচা বাদাম।
৭/কাজা বাদামের রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফ্যাট কার্বোহাইডেট ও ভিটামিন যেগুলো আমাদের কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
৮/কাঁচা বাদামে রয়েছে সি-রিয়াক্টিভ প্রোটিন ও ইন্টারলিউকিন যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
৯/বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার ও আঁশ যা আমাদের হজমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
১০/নিয়মিত বাদাম খেলে তা আমাদের হৃদপিণ্ডকে সুস্থ সবল এবং সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে।
১১/নিয়মিত প্রতিদিন কাঁচা বাদাম খেলে তা আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং রক্তের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
১২/বাদাম খেলে হার ও মাংসপেশি মজবুত হয় এবং প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন পাওয়া যায়।
১৩/বাদামে থাকা প্রাকৃতিক তেল আমাদের ত্বককে সতেজ ও সুন্দর রাখতে সাহায্য করে এবং দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধ করে।
১৪/বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম,ভিটামিন এবং মিনারেল যা আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
১৫/বাদামের মধ্যে রয়েছে টাইটোফন নামক অ্যামাইনো এসিড যা আমাদের বিভিন্ন হরমোন এর ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি দিতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
কাঁচা বাদাম খাওয়ার অপকারিতা
এতক্ষণ আমরা কাঁচা বাদাম খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা গর্ভাবস্থায় বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ভেজানো বাদাম খাওয়ার উপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। কিন্তু কাচা বাদাম খাওয়ার কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে যেগুলো আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।
১/বাদাম খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা থাকলেও অতিরিক্ত গ্রহণে এর কিছু ক্ষতিকর দিক দেখা যায়। আমাদের শরীরের পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিডের প্রধান হল ওমেগা-৬। এই ওমেগা-৬ যখন আমাদের শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণ থাকে তখন সেটা ওমেগা -৩ সাথে বিক্রিয়া করে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
২/ওমেগা-৬ অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করা হলে তা আমাদের শরীরের জন্য মোটেও উপকারী হবে না বরং এগুলো আমাদের হার্টের রোগ ,আর্থ্রাইটিস , ডায়াবেটিস , এলার্জি ও অ্যাজমা রোগ সৃষ্টির মূল কারণ হতে পারে।
৩/আমাদের শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণ ওমেগা-৬ প্রবেশ করলে তা ওমেগা-৩ এর সাথে বিক্রিয়া করে এন্টি ইনফ্লামেটরি হরমোনে পরিণত হয় যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের প্রদানের কারণ হতে পারে।
৪/অতিরিক্ত বাদাম খেলে আমাদের শরীরে অতিরিক্ত ফাইটিক অ্যাসিড উৎপন্ন হয়। যেহেতু ফাইটিক অ্যাসিড সরাসরি হজম করা জায়না সে ক্ষেত্রে আমাদের হজমে বাধা সৃষ্টি হতে পারে।
৫/যারা কিডনি কিংবা গলব্লাডারের সমস্যায় আক্রান্ত রয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে কাঠ বাদাম ও কাজুবাদাম এড়িয়ে চলা উচিত। কেননা এতে বিদ্যমান অক্সালেট ও ক্যালসিয়াম কিডনিতে পাথর সৃষ্টির কারণ হতে পারে।
৬/বাদামে আধ্যাত্মিক পরিমাণ ক্যালরি থাকার কারণে তা আমাদের ওজন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
৭/এছাড়া বাদাম যদি লবণ দিয়ে ভেজে খাওয়া হয় তা আমাদের ব্লাড প্রেসার বাড়িয়ে দিতে পারে।
৮/অতিরিক্ত পরিমাণ কাঁচা বাদাম খেলে তা আমাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার কারণ হতে পারে।
৯/বাদামের অনেক ধরনের উপকারী গুণ থাকলেও অতিরিক্ত বাদামে কিংবা বাদামের খাওয়ার ফলে কিছু সাইড ইফেক্ট বা ক্ষতিকর দিক রয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে এলার্জিজনিত সমস্যা। যাদের বাদাম থেকে অ্যালার্জি হয় তাদের ক্ষেত্রে বাদাম না খাওয়ায় ভালো না হলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে।
১০/বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইটিক এসিড যা আমাদের শরীরে জিংক , ক্যালসিয়াম আয়রন এবং ম্যাগনেসিয়াম প্রসে বাধা দেয় এবং আমাদের শরীরে সঠিক পরিমাণ মিনারেল শোষণ করতে পারে না যার ফলে আমাদের এলার্জি কিংবা খাদ্যনালীতে জ্বালাপোড়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়
লেখক এর মন্তব্য
এই পোস্টটিতে আমরা বাদাম খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিক বা অপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আপনি যদি নিয়মিত বাদাম খেয়ে থাকেন কিংবা বাদাম খাওয়ার পরিকল্পনা করে থাকেন সে ক্ষেত্রে অবশ্য আপনি উপরের সবগুলো বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা রাখতে হবে।
এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে যদি আপনার কোন উপকার হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করার মাধ্যমে তাদেরও এসব বিষয়ে জানার সুযোগ করে দেবেন। এই পোস্টটি সম্পর্কে যদি আপনার কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই মন্তব্য করুন বক্সে গিয়ে আপনার মতামতটি লিখতে পারেন ।আপনাদের সকল এর মতামতের রিভিউ করা হয়। সকলে ভালো থাকবেন । ধন্যবাদ ।
ডিজিটাল ব্লগ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url