বেসন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়-মুখে বেসন ব্যবহারের নিয়ম
বেসনের নামতো আমরা অনেকেই শুনে থাকবো। কিন্তু হয়তো আমরা অনেকেই পেছনের উপকারিতা সম্পর্কে জানেনা। বিশেষ করে রূপচর্চার ক্ষেত্রে বেসনের গুরুত্ব এবং উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। আপনার ত্বকের অবস্থা যদি অনেক খারাপ হয়ে গিয়ে থাকে এবং আপনি যদি ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করে পুনরায় উজ্জ্বল,ঝলমলে ও ফর্সা ত্বক পেতে চান তাহলে বেসন আপনাকে বেশ সাহায্য করবে।
আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমরা বেসনের বিভিন্ন উপকারিতা ও ব্যবহার গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করতে যাচ্ছি। এই আর্টিকেলটি যদি আপনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে পারেন তাহলে আপনি বেসন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন। এছাড়াও জানতে পারবেন মুখে বেসন ব্যবহারের নিয়ম, বেসন মুখে মাখার উপকারিতা, বেসন ও মধুর ফেসপ্যাক, বেসন ও হলুদের ফেসপ্যাক এবং বেসন ও লেবুর ফেসপ্যাক কিভাবে বানাতে হয় সে সম্পর্কে। তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে শুরুতে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো।
পোস্ট সূচিপত্রঃবেসন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়-মুখে বেসন ব্যবহারের নিয়ম
ভূমিকা
ত্বকের যত্নে আমরা অনেকেই বিশেষ করে মেয়েরা বিভিন্ন রুটিন অনুসরণ করে চলি। এবং বাজারে বিক্রি কৃত বিভিন্ন প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু আপনি ঘরে বসে খুব সহজে ই ঘরোয়া পদ্ধতিতে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে পারেন এবং প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা হতে পারে। এর জন্য আপনাকে তেমন টাকাও খরচ করা প্রয়োজন হবে না।
শুধুমাত্র বেসন ব্যবহারের ফলে ই আপনি পেতে পারেন উজ্জ্বল,ঝলমলে,ফর্সা ত্বক। আজকে আর্টিকেলটিতে আমরা বেসনের উপকারিতা এবং বেসন ব্যবহারের বিভিন্ন নিয়ম সহ কিভাবে ঘরে বসে আপনি বেচনের বিভিন্ন প্যাক বানিয়ে মুখে মাখলে উজ্জ্বল,ঝলমলে ও ফর্সা ত্বক পেতে পারেন সেই ফেসপ্যাকগুলো সম্পর্কেও বিস্তারিতভাবে জানানোর চেষ্টা করব।
তাই ভীষণ ব্যবহারের বিভিন্ন নিয়ম কানুন গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে সম্পন্ন করার অনুরোধ রইলো।
বেসন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
সব ধরনের ত্বকের জন্য আপনি বেসনের ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে পারেন। আপনার ত্বক যদি সাধারন হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনি ব্যবহার করতে পারবেন পাশাপাশি শুষ্ক ত্বক এবং তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রেও পেছনের ফেসপ্যাক ব্যবহার করা যায়। তবে এর ক্ষেত্রে আপনাকে আলাদা আলাদা ত্বকের জন্য আলাদা আলাদা উপাদান বেসনের সাথে মেশাতে হবে।
যেমন আপনার ত্বক যদি তৈলাক্ত হয়ে থাকে তাহলে আপনি এর সাথে এলোভেরা জেল ,হলুদ বা দুধের সর মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে এই ফেসপ্যাক গুলো দারুন কাজ করে। এবং ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ বন্ধ করতে সাহায্য করে ত্বকের শুষ্কতা দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল,মেচতাহীন এবং ভেতর থেকে পরিষ্কার করে ত্বককে ফর্সা হতে সাহায্য করে।
বেসন দিয়ে ফর্সা হওয়ার বিভিন্ন উপায়
১/বেসন,পেঁপে ও কমলালেবুর রস
বেসন,পেঁপে ও কমলালেবুর রস দিয়ে ফেসপ্যাক বানানোর জন্য আপনাকে এক চামচ পরিমাণ বেসনের সঙ্গে দুই চামচ কমলা লেবুর রস এবং ৩-৪ চামচ পরিমাণ পেঁপেবাটা ব্যবহার করে একসঙ্গে ব্লেন্ডারে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। তবে খেয়াল রাখবেন যেন ফেসপ্যাকটি অতিরিক্ত ঘন না হয়। আপনি চাইলে এর ঘনত্ব কমানোর জন্য পানি ব্যবহার করতে পারেন।
এই ফেসপ্যাকটি আপনার মুখে ৩০ মিনিট লাগিয়ে রাখার পর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার মুখে জমে থাকা ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার হবে,ত্বকের উপরের অংশের মৃত কোষগুলো সরাতে সাহায্য করবে এবং ত্বককে প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা দেখাবে।
২/বেসন,টমেটো ও হলুদ
আপনার ত্বক পরিষ্কার রাখতে এবং দাগহীন ত্বকের জন্য এক চামচ পরিমাণ বেতনের সঙ্গে এক চামচ পরিমাণ হলুদ গুঁড়ো এবং সমপরিমাণ টমেটোর রস ব্যবহার করে ফেসপ্যাকটি বানান এবং বিশ্ব থেকে ২৫ মিনিট পর্যন্ত আপনার মুখে লাগিয়ে রাখার পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন এতে আপনার ত্বক প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল,মসৃণ ও ফর্সা দেখাবে।
৩/বেসন,দই ও মধু
ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে এবং ত্বকের মধ্যে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করতে বেসন,দই ও মধুর এই ফেসপ্যাক মুখে লাগাতে পারেন। এর জন্য আপনাকে দুই টেবিল চামচ পরিমাণ বেসনের সঙ্গে এক চামচ মধু এবং অর্ধেক চামচ টক দই ভালোভাবে বিলিন্ডারে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। এবং এই মিশ্রণটি আপনার মুখে 20 মিনিট লাগিয়ে রাখার পর ঠান্ডায় পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললে আপনি নিজেই এর ফলাফল বুঝতে পারবেন। আপনার ত্বক হবে কোমল,উজ্জল এবং ফর্সা।
৪/বেসন ও অ্যালোভেরা জেল
ঘরে বসে উজ্জ্বল ত্বক পেতে আপনি বেসন এবং এলোভেরা জেল এর ফেসপ্যাক তৈরি করতে পারেন। অনেক বড় বড় তারকারাও তাদের স্কিন কেয়ার এর রুটিনে বেসন এবং অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করে থাকে। এই ফেসপ্যাক্টি বানানো খুবই সহজ। এর জন্য আপনাকে একটি পরিষ্কার পাত্রীর দুই চামচ পরিমাণ বেসন এর সঙ্গে এক টেবিল চামচ পরিমাণ অ্যালোভেরা জেল ভালোভাবে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিতে হবে।
আপনি চাইলে এর সাথে অল্প পরিমাণ এক চামচ পরিমাণ গোলাপজল মিশাতে পারেন এটি আপনার ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে এবং ত্বকের উপরের স্তরে জমে থাকা ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করে ত্বককে ফর্সা হতে সাহায্য করবে। এই ফেসপ্যাকটি আপনাকে ১৫ থেকে ২০ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখার পর ধুয়ে ফেলতে হবে।
৫/বেসন ও দুধের সর
উজ্জ্বল,ঝলমলে মসৃণ ত্বক পেতে হলে আপনি ঘরোয়া পদ্ধতিতে বানাতে পারেন বেসন এবং দুধের সরের ফেসপ্যাক। একটি পরিষ্কার পাতা দুই টেবিল চামচ পরিমাণ বেসনের সঙ্গে এক চামচ দুধের সর এবং এক চামচ হলুদের গুঁড়ো ভালোভাবে ব্লেন্ড করে মিশিয়ে নিন। এবং এই ঘন পেজটি আপনার মুখে 10 থেকে 15 মিনিট লাগিয়ে রাখার পর ঠান্ডা জল দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। কিছুদিন ব্যবহারের পর আপনি নিজেই আগের ত্বক এবং এখনকার ত্বকের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারবেন। তখন উজ্জ্বল, মসৃণ ও ফর্সা।
৬/বেসন ও গোলাপজল
মুখের মেচটা দূর করতে এবং ত্বক পরিষ্কার রাখতে বিষ্নু গোলাপজলের এই মিশ্রণ আপনাকে দারুন সাহায্য করবে। একটি পাত্রে দুই চামচ পরিমাণ বেতনের সঙ্গে পরিমাণ মতো গোলাপজল মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে হাতের আঙ্গুল দিয়ে মাসাজ করুন। এবং 15 মিনিট পর ভালোভাবে পানি দিয়ে পরিষ্কার করে ফেলুন এই ফেসপ্যাকটি যদি আপনি সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনার ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে, ত্বককে উজ্জ্বল ও ফর্সা করতে আপনার দারুন কাজে আসবে।
৭/বেসন ও কাঁচা দুধের স্ক্রাব
আপনার ত্বকে প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা করতে, নরম,উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর রাখতে চাইলে আপনি বেসন ও কাঁচা দুধের এই ফেস স্ক্রাবটি ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য আপনাকে দুই টেবিল চামচ পরিমাণ বেসনের সঙ্গে পরিমাণ মতো কাঁচা দুধ একসঙ্গে মিশিয়ে ভালোভাবে ত্বকে লাগিয়ে মাসাজ করতে হবে এবং অন্তত দশ মিনিট রাখার পর ভালোভাবে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললে দারুন ফলাফল পাওয়া যায়।
৮/বেসন ও শসার স্ক্রাব
একটি শসাকে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। এরপর এক চামচ পরিমাণ ব্লেন্ড করা শসার সঙ্গে এক চামচ বেসন মিশিয়ে ভালোভাবে পেস্ট তৈরি করুন। এরপর এই পেস্ট ত্বকের উপর ভালোভাবে লাগিয়ে ত্বকের এক্সফলিয়েট করতে হালকা ভাবে হাতের আঙ্গুল দিয়ে মাসাজ করুন। এতে আপনার ত্বক কোমল ও স্বাস্থ্যকর হবে এবং পাশাপাশি আপনার ত্বক দিয়ে উজ্জ্বল ও ফর্সা হতে সাহায্য করব। দ্রুত ফলাফলের জন্য আপনাকে এই ফেস প্যাকটি সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করতে হবে।
৯/বেসন ও হলুদ
সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির কারণে আমাদের ত্বকের যে সানট্যান বা মুখে কালচে দাগ, ব্রণ এর মত সমস্যাগুলো সৃষ্টি হয় এই সমস্যা দূর করতে দারুন কাজে আসতে পারে। আপনি যদি প্রতিদিন 10 থেকে 20 মিনিট এই ফেস ফ্যাক্টরি মুখে লাগিয়ে রাখতে পারেন তাহলে প্রাকৃতিকভাবে আপনার জেল্লা ফিরিয়ে আনতে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এবং মুখে প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা রাখতে সাহায্য করবে।
আপনি চাইলে ঘরে বসেই এই ফেসপ্যাকটি বানাতে পারেন। এর জন্য প্রয়োজন হবে আপনার তিন টেবিল চামচ পরিমাণ বেসন, এক চামচ পরিমাণ হলুদ গুঁড়ো এবং তিন টেবিল চামচ পরিমাণ টক দই ভালোভাবে ব্লেন্ডারে একসঙ্গে ব্লেন্ড করে নিয়ে একটি ঘন প্যাক তৈরি হবে এই ব্যক্তি আপনাকে আপনার মুখে কিংবা ত্বকে ব্যবহার করতে হবে।
সপ্তাহে অন্তত দুইদিন যদি আপনি ফেসপ্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনার ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখবে টকদের মধ্যে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড এবং আপনার সূর্যের কারণে ত্বকের ক্ষতি হয়ে যাওয়া দূর করতেও এটি সাহায্য করবে এবং ত্বককে উজ্জ্বল, মসৃণ, ফর্সা দেখাবে।
১০/বেসন ও লেবুর রস
লেবুর মধ্যে থাকা সাইট্রিক এসিড আমাদের ত্বককে এক্সফলিয়েট করতে সাহায্য করে পাশাপাশি মুখের দাগ ঝোপ বা ত্বকের দাগ ঝোপ দূর করতে ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে ভীষণ ও লেবুর রসের এই ফেসপ্যাক দারুন কার্যকরী।
ঘরে বসেই এই ফেস প্যাক টি বানানোর জন্য আপনার প্রয়োজন হবে দুই টেবিল চামচ পরিমাণ বেসন এবং সমপরিমাণ লেবুর রস একসঙ্গে ভালোভাবে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিয়ে ত্বকে লাগিয়ে হাতের আঙ্গুল দিয়ে অল্প কিছুক্ষণ মেসেজ করার পর ভালোভাবে পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেললে প্রাকৃতিকভাবে তথ্য উজ্জ্বল রাখতে এবং ত্বকের মধ্যে জমে থাকা ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করতে সাহায্য করবে। দ্রুত এবং ভালো ফলাফলের জন্য আপনাকে সপ্তাহে অন্তত দুইদিন ব্যবহার করতে হবে।
মুখে বেসন ব্যবহারের নিয়ম
বন্ধুরা আমরা ইতোমধ্যেই বেসন ব্যবহারের বিভিন্ন নিয়ম এবং বেসন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। উপরোক্ত ফেসপ্যাক গুলো আপনি আপনার মুখে ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাবেন। এছাড়াও উপরোক্ত নিয়মগুলো অনুসরণ করে আপনি যদি ফেসপ্যাক গুলো রেগুলার ব্যবহার করেন তাহলে এর যেমন কিছু উপকারিতা রয়েছে তেমন এর কিছু ক্ষতিকর দিকও রয়েছে।
প্রতিদিন মুখে বেসন ব্যবহারের ফলে আপনার যে সকল ক্ষতি হতে পারে তা আমরা আর্টিকেলটির এই অংশে আলোচনা করব। তাই উপরের নিয়ম গুলো অনুসরণ করে ফেসপ্যাক ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে নিবেন। এতে আপনি ক্ষতি হওয়ার হাত থেকে বেঁচে যাবেন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক উপরের নিয়ম গুলো ব্যবহার করে ফেসপ্যাক বানিয়ে মুখে ব্যবহারের সময় আপনাকে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে তাহলো।
১/আপনার ত্বক যদি অতিরিক্ত তৈলাক্ত হয় তাহলে আপনি বেসনের সঙ্গে মুলতানি মাটি ব্যবহার করেও ফেসপ্যাক বানাতে পারেন। বেসন এবং মুলতানি মাটির এই পেস্ট আপনার ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল নিঃসরণকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করতে সাহায্য করে। আপনি চাইলে তো একটা ভাব দূর করতে এই নিয়মটা অনুসরণ করতে পারেন।
২/অবশ্যই উপরুক্ত বেসনের যে কোন ফেসপ্যাক ব্যবহারের পর আপনি নির্দিষ্ট সময় ধরে রিলাক্স করুন। এই সময়টুকু অন্য কোন কাজ করতে যাবেন না।
৩/সপ্তাহে অন্তত একবার ব্যবহার করলেও আপনি ভালো প্রকার পাবেন তবে অতিরিক্ত ব্যবহার করতে যাবেন না এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
৪/অবশ্যই ফেসপ্যাক গুলো শুকিয়ে যাবার পর ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ধুতে হবে।
আরো পড়ুনঃশরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব হলে করণীয়
৫/ফেসপ্যাক ব্যবহার সিসি মুখ ধোয়ার পর ভালো টোনার বা মশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত।
৬/আপনার ত্বকের ধরনের উপর ভিত্তি করে ফেসপ্যাক তৈরি করে ব্যবহার করুন।
৭/বেসনের ফেসপ্যাক দীর্ঘক্ষণ ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বকের ক্ষতি হতে পারে তাই ফেসপ্যাক মুখে লাগানোর 8 থেকে 10 মিনিট পর ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৮/অনেকের ধারণা ফেসপ্যাক যতক্ষণ মুখে লাগিয়ে রাখা যাবে তত বেশি উপকার পাওয়া যাবে এটা মোটেও করবেন না এতে আপনার ত্বকের ক্ষতি হতে পারে।
৯/উপরোক্ত ফেসপ্যাক গুলো সরাসরি মুখে ব্যবহারের পূর্বে একবার টেস্ট করে নেবেন যদি জ্বালাপোড়া করে তবে সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা জল ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলুন এবং আপনি চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।
১০/বেসনের সাথে সব রকমের উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করবেন না নির্দিষ্ট উপাদান এবং প্রয়োজনীয় উপকরণ ব্যবহার করে ফেসপ্যাক তৈরি করে মুখে লাগাবেন এতে আপনার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম।
উপরোক্ত নিয়মগুলো ব্যবহার করে ফেসপ্যাক বানানোর পূর্বে অবশ্যই এ বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন আশা করি এতে আপনি কোন রকম ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার হাত থেকে বেঁচে যাবেন পাশাপাশি আপনার ত্বক উজ্জ্বল,ঝলমলে এবং ফর্সা থাকতেও সাহায্য করবে।
বেসন মুখে মাখার উপকারিতা
বন্ধুরা এতক্ষণ আমরা বেসন দিয়ে ফর্সা হওয়ার বিভিন্ন উপায় এবং মুখে বেসন ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। আর্টিকেলটির এ অংশে আমরা জানবো মুখে বেসন মাখার ফলে আপনার মুখের কি কি উপকারিতা বা ত্বকের কি কি উপকারিতা আপনি পাবেন সেই উপকারিতা গুলো সম্পর্কে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক ভীষণ মুখে মাখার বিভিন্ন উপকারিতা গুলো সম্পর্কে।
রোদে পোড়া ভাব দূর করতে
প্রচন্ড সূর্যের তাপে আমাদের ত্বকে কালচে দাগ দেখা দেয়। এই রোদের পোড়া কালচে দাগ দূর করতে আপনি চাইলে বেসনের সঙ্গে অল্প পরিমাণ দুধ মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও যাদের ত্বকই লাগতো তারা ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করতে এবং মুখের ট্যান দূর করতে বেসনের সঙ্গে টক দই ব্যবহার করে ফেসপ্যাক তৈরি করতে পারেন।
ব্রণের সমস্যা দূর করতে
ত্বকে অতিরিক্ত তেল মিশ্রণের কারণে মুখে ব্রনের মত সমস্যার সৃষ্টি হয়। আপনি যদি মুখে বেসন ব্যবহার করতে পারেন তাহলে বেসনের মধ্যে থাকা শোষণ ক্ষমতা এই অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ হওয়া বন্ধ করে ব্রণের সমস্যা প্রতিরোধ করবে।
শুষ্ক ত্বকে পুষ্টি জোগাতে
শুষ্ক ত্বকে পুষ্টি যোগানোর ক্ষেত্রে আপনি দুধের সঙ্গে ভীষণ মিশিয়ে ত্বকে লাগাতে পারেন এতে ত্বকের আদ্রতা বজায় থাকবে এবং আপনার ত্বকে প্রয়োজনীয় পরিমাণ পুষ্টি পাবে।
এক্সফলিয়েশন করতে
ত্বকের যত্নে অনেকে এক্সফলিয়েশন করে থাকে। আপনি চাইলে ত্বকের যত্নে রাসায়নিক উপাদান ব্যবহারের পরিবর্তে প্রাকৃতিক স্ক্রাব হিসেবে বেসনের ব্যবহার করতে পারেন।
তারুণ্য ধরে রাখতে
বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের মুখে বিভিন্ন কালচে দাগ ও বলিরেখা দাগ দেখা দেয়। এবং বার্ধকের ছাপ পড়তে থাকে। বেসনের মধ্যে থাকা আন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান আমাদের ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং ত্বকের উপরের স্তরের মৃত কোষ কে পরিষ্কার করতে কার্যকারী।
এছাড়াও বেসন মুখে মাখার ফলে আরো যে সকল উপকারিতা গুলো আপনি পাবেন তা হচ্ছে
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য
- মুখের ও ঘাড়ের ট্যান দূরীকরণ
- ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং পুষ্টি জোগাতে
- মুখের অতিরিক্ত লোম দূর করতে
- ত্বকের ব্রেক আউট প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে
- ওপেন পোরসের সমস্যাগুলো দূর করতে সাহায্য করে
- ত্বকের মধ্যে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে
- বেসনের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ প্রতিরোধ করে
- মুখের মেছতা দূর করতে সাহায্য করে
- যেকোনো ক্ষতের দাগ দূর করতে বেসন ও কচি ডাবের পানি একসঙ্গে ব্যবহার করলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।
- ত্বকের ফেটে যাওয়া দাগ দূর করতে বেসনের পেস্ট ভালো কাজ দেই।
- ত্বকের মৃত কোষ কে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে
- বেসনের মধ্যে থাকা অ্যালকালাইজিং উপাদান ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য রক্ষা করে।
- ত্বকের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে
- অতিরিক্ত তেল নিঃসরণের সমস্যা প্রতিরোধ করে
- ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে
এছাড়াও ত্বকের জন্য আরো বিভিন্ন উপকারী উপাদান রয়েছে বেসনের মধ্যে। তাই আপনি যদি ত্বকের যত্নে নিয়মিত বেচন ব্যবহার করেন তাহলে ভালো উপকারিতা পাবেন। তবে অবশ্যই পিছন ব্যবহারের পূর্বে বিভিন্ন নিয়ম গুলো জেনে নেওয়ার জন্য সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরুতেই শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
বেসন ও মধুর ফেসপ্যাক
ত্বকের যত্নে এবং পক্ষে পরিষ্কার রাখতে বেসন ও মধুর ফেসপ্যাক বেশ কার্যকারী। বেসন ও মধুর এই ফেস প্যাক ত্বকের জন্য মশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। ত্বককে নরম রাখতে এক চামচ পরিমাণ বেসনের সঙ্গে এক চামচ পাতি লেবুর রস ও সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিন।
এরপর এই ফেসপ্যাক টি মুখে লাগিয়ে ফেলুন এবং কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর ফেসপ্যাকটিস শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করুন কয়েকদিন ব্যবহারে আপনি আপনার মুখের কালচে দাগ এবং ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
এছাড়াও অনেকেই কাজের কারণে বাড়ির বাইরে বের হয় এবং সূর্যের অতিরিক্ত তাপের কারণে ত্বকের বিভিন্ন রকম ক্ষতি হতে পারে। এই ক্ষতি থেকে মুক্তির জন্য সানস্ক্রিন হিসেবে বেসন ও মধুর ফেসপ্যাক বেশ কার্যকরী। সপ্তাহে অন্তত দুই দিন ব্যবহারে আপনার ত্বক হবে উজ্জ্বল,দাগ হীন ও সুন্দর।
বেসন ও হলুদের ফেসপ্যাক
আপনার প্রতিদিনের রূপচর্চার রুটিন এ যদি আপনি বেসন ও হলুদের এই ফেসপ্যাকটি যুক্ত করতে পারেন তাহলে আপনার ত্বক বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাবে। হলুদের মধ্যে থাকা কারকিউমিন উপাদান আমাদের ত্বককে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে এছাড়া হলুদের মধ্যে রয়েছে এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান যা আমাদের ত্বককে ব্যাকটেরিয়া ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে দূরে রাখে এবং প্রাণবন্ত রাখতে সাহায্য করে।
এছাড়াও হলুদের এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান আমাদের ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিনের রূপচর্চার রুটিন এ বেসন এবং হলুদের ফেসপ্যাক রাখা খুবই জরুরী। এতে ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং ত্বক হয় উজ্জ্বল ও দাগহীন।
বেসন ও লেবুর ফেসপ্যাক
প্রতিদিনের রূপচর্চার রুটিন আপনি চাইলে বেসন ও লেবুর রসের ফেসপ্যাক যুক্ত করতে পারেন। এতে আপনার ত্বক থেকে অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব কমাতে ত্বককে এক্সফোলিয়েটর হিসেবে কাজ করতে এবং ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করবে।
এর জন্য আপনাকে দুই চামচ পরিমাণ বেতনের সঙ্গে আধা চামচ হলুদ এবং আধা চামচ লেবুর রস ও আপনি চাইলে গোলাপের জল একসঙ্গে মিশিয়ে ব্লেন্ডারে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে এই ফেসপ্যাকটি বানিয়ে নিতে পারেন। এবং ৮ থেকে ১০ মিনিট রাখার পর যখন যখন এই ফেসপ্যাকটি শুকিয়ে যাবে তখন পরিষ্কার জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
এতে আপনার ভাল উপকার হবে পাশাপাশি আপনার ত্বকে ভেতর থেকে পরিষ্কার রাখতে এবং বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে নিখুঁত ত্বক প্রদানে সাহায্য করবে।
লেখকের মন্তব্যঃবেসন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়-মুখে বেসন ব্যবহারের নিয়ম
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে যদি আপনার কোন উপকার হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করে জানিয়ে দিবেন। আর্টিকেলটি সম্পর্কে যদি আপনার কোন মতামত বা মন্তব্য থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করতে পারেন। রূপচর্চা নিয়ে আরো অন্য কোন বিষয় সম্পর্কে যদি জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই যোগাযোগ করবেন। সকলে ভালো থাকবেন ।আসসালামু আলাইকুম।
ডিজিটাল ব্লগ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url