বিটের উপকারিতা ও অপকারিতা-বিট ফল খাওয়ার নিয়ম
আপনি কি বিটের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো সম্পর্কে জানতে আগ্রহী? আপনি কি নিয়মিত বিট ফল খেয়ে থাকেন কিংবা বিট ফল খাওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন। তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আশা করি আপনার উপকারে আসবে। আজকের আর্টিকেলটিতে আমরা বিটের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারব।
এছাড়াও আমরা আরো জানতে পারবো বিট ফল খাওয়ার নিয়ম, বিট কি কাঁচা খাওয়া যায় এছাড়াও আমরা জানতে পারবো বিট ফল কোথায় পাওয়া যায়। তাই আপনিও যদি নিয়মিত বিট ফল খাওয়ার চিন্তাভাবনা করে থাকেন তাহলে অবশ্যই বিটের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো সম্পর্কে আপনার বিস্তারিত ধারণা থাকা উচিত। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক বিটের উপকারিতা ও অপকারিতা এছাড়াও খাওয়ার নিয়ম গুলো সম্পর্কে।
পোস্ট সূচীপত্রঃবিটের উপকারিতা ও অপকারিতা-বিট ফল খাওয়ার নিয়ম
ভূমিকা
আসছে শীতকাল আর শীত মানেই নানা ধরনের রঙিন ফল সবজির বাহার। যেগুলো আমরা সবজি কিংবা সালাদ হিসেবে খেয়ে থাকি। সকল সবজি গুলোর মধ্যে বিট ফল অন্যতম একটি সবজি। গাঢ় গোলাপি ও লালচে রঙের এই সবজিটি আমাদের দেশে খুব প্রচলিত না হলেও এর উপকারিতা গুলো জানলে আপনি অবাক হবেন।
বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরপুর বিট ফল কে সুপার ফুটো বলা হয়ে থাকে। বিটের বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে ভালগারিস। এটি মূলত একটি মূল জাতীয় সবজি। এর চোখ জুড়ানো গাঢ় গোলাপি ও লালচে রং আসে বিটা লাইন বা অ্যান্থোসায়ানিন যুক্ত রঞ্জক পদার্থের কারণে। পুষ্টিগুণে ভরপুর এই সবজি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যে এর উপকারিতা বলে শেষ করা যায় না।
পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম,জিংক, ক্লোরিন ,আয়রন,সোডিয়াম সহ হাজার পুষ্টি গুনে ভরপুর বিটের উপকারিতা অনেক। কিন্তু শুধু উপকারী তাই নয় বিটের অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে এর কিছু অপকারিতা রয়েছে যেগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই অবশ্যই বিট ফল খাওয়ার আগে আপনার এর উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানা উচিত।
বিটের উপকারিতা ও অপকারিতা
মিষ্টি সাদ যুক্ত বিটের উপকারিতা যেমন রয়েছে তেমনি এটি খাওয়ার ফলে কিছু অপকারিতাও রয়েছে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক গাঢ় গোলাপি ও লালচে রঙের ইটের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো সম্পর্কে। উপকারিতা:
হাড় মজবুত করে
হাড়ের সুরক্ষায় এবং হাড়ে সঠিক পরিমাণ পুষ্টি উপাদান দিতে বিটের উপকারিতা তুলনাহীন। বিটফল শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা কে ধরে রাখে এবং হাড়ের যাবতীয় সমস্যাকে দূর করতে সাহায্য করে পাশাপাশি হাড়কে মজবুত করতে এটি বেশ কার্যকারী।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
বিট ফল খাওয়ার ফলে ক্যান্সারের ক্ষতিকারক জীবাণুগুলো আমাদের শরীরে বাসা বাঁধতে পারে না। বিটের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান গুলো ক্যান্সার কোর্সগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে এবং ক্যান্সারকে শরীর থেকে দূরে রাখতেও এর দারুন উপকারিতা রয়েছে।
মানসিক সমস্যায়
বিটের মধ্যে থাকা বিটেইন ও ট্রিপটোফোন নামক উপাদানগুলো আমাদের মন ভালো রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত বিট ফল খাওয়ার ফলে আমাদের মানসিক অবসাদ ও ডিপ্রেশনের আশঙ্কা কমে আসে। তাই মানসিক স্বাস্থ্যের উপকারিতায় নিয়মিত বিটফল খেতে পারেন।
দৃষ্টি শক্তির উন্নতি
বিটের মধ্যে রয়েছে ক্যারোটিন ও ভিটামিন এ যা আমাদের চোখের রেটিনার ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং চোখের ছানি পড়ার মতো সমস্যাগুলো প্রতিহত করতে এটি বেশ কার্যকারী। তাই যারা চোখের যাবতীয় সমস্যায় ভুগছেন তারা চোখের উপকারিতায় বিট ফল খেতে পারেন।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
বিটফলের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে যারা নিয়মিত বিটের জুস পান করে থাকেন তাদের শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং এর মধ্যে থাকে এন্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানগুলো আমাদের শরীরের ক্ষতিকারক টক্সিক পদার্থগুলো বাইরে বের করতে সাহায্য করে এবং আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইউনিয়ন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে এর উপকারিতা রয়েছে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে
বিট ফল খাওয়ার ফলে বিটের মধ্যে থাকা নাইট্রেট উপাদান আমাদের শরীরে রক্ত চলাচল মাত্রাকে স্বাভাবিক রাখে এবং উচ্চ রক্তচাপ তথা স্ট্রোকের মতো সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি দিতে বেশ কার্যকরী।
ত্বকের জন্য
ত্বকের উপকারিতায় বিটফলের ব্যবহার রয়েছে। বিটের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি এজিং উপাদান যা আমাদের তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং ত্বকের বলিরেখা,ব্রণ,কালো দাগ ও মেছতার সমস্যা গুলো দূর করতেও বিট ফল খাওয়া যায়।
ব্যথা উপশমে
গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে যারা নিয়মিত বিট ফল খেয়ে থাকেন তাদের বাত ব্যথা বা আর্থ্রাইটিস এর মত ব্যথার উপশম করতে বিটরুটের উপকারিতা অতুলনীয়।
পেটের সমস্যা নিরাময়
যারা নিয়মিত বদহজম,কোষ্ঠকাঠিন্য ও পেটের প্রদাহের সমস্যায় ভুগে থাকেন তারা চাইলে প্রতিদিন বিট ফল খেতে পারেন এতে দারুন উপকারিতা পাওয়া যায়।
হৃদরোগের সমস্যা কমায়
বিট ফলের মধ্যে থাকা নাইট্রেট উপাদান রয়েছে। যখন আমরা বিট ফল খেয়ে থাকি তখন এই নাইট্রেট উপাদান গুলি আমাদের দেহে নাইট্রিক অক্সাইড নামক উপাদানে পরিণত হয় যার কারণে আমাদের রক্তনালী গুলো খুলে যায় এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে।
আরো পড়ুনঃশরীরের কোন ভিটামিন চুল গজাতে সাহায্য করে
নিয়মিত বিটরুট খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে রক্ত চলাচলের মাত্রা বৃদ্ধি পায় যার কারণে আমাদের হৃদপিণ্ড শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং হৃদরোগের সমস্যা গুলো ধীরে ধীরে কমতে থাকে। তাই হৃদরোগের সমস্যা গুলো থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত বিট ফল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।
স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে তুলে
নিয়মিত বিটের রস পান করার ফলে বিটের মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের শরীরে রক্ত চলাচলের মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং মস্তিষ্কে সঠিক পরিমাণ রক্ত প্রবাহ হতে সাহায্য করে। যার কারণে আমাদের মস্তিষ্কের নার্ভগুলো সুস্থ থাকে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে আসে। এছাড়াও বিটফল খাওয়ার ফলে আমাদের মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলের মাদ্রাসা স্বাভাবিক থাকার কারণে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে এর উপকারিতা রয়েছে।
চুল পড়া সমস্যা দূর করে
বিটের মধ্যে এমন কিছু খনিজ উপাদান রয়েছে যেগুলো আমাদের চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে এবং চুলের ফলিকলগুলোকে ভেতর থেকে মজবুত করে। তাই যারা চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত বিটের জুস পান করতে পারেন এতে চুল পড়া বন্ধ হবে এবং নতুন চুল গজাতে ও বিটের জুস এর উপকারিতা উল্লেখযোগ্য।
পরিপাক সমস্যা দূর করতে
বিটের মধ্যে থাকা বেটেইন নামক উপাদান আমাদের লিভারের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এবং লিভারকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। যারা নিয়মিত বিটের জুস পান করে থাকেন তাদের পেটে যাবতীয় সমস্যা দূর করতে এর উপকারিতা বলে শেষ করা যায় না।
ওজন কমায়
বিট ফল মিষ্টি জাতীয় সবজি হওয়ার সত্ত্বেও এতে তেমন ক্যালরি বা চর্বি নেই। যার কারণে এটি আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। আপনি যদি টানা একমাস অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার ও বিটের রস পান করতে পারেন তাহলে দ্রুত আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে
বিটফলে থাকা আয়রন আমাদের রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে তুলে এবং রক্তস্বল্পতা বা অ্যানিমিয়ার ঝুঁকি গুলো কমাতে এর উপকারিতা তুলনাহীন। তাই যারা রক্তস্বল্পতা সমস্যায় ভুগছেন তারা চাইলে নিয়মিত বিট ফল খেতে পারেন এতে দারুন উপকারিতা পাওয়া যায়।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখ
নিয়মিত বিট ফল খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে আসে এবং ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। যা আমাদের হৃদপিন্ডের সুরক্ষার জন্য জরুরী।
কিডনির সুরক্ষা
বিটের মধ্যে থাকা বিটাইল নামক ফাইটো নিউট্রিয়েন্ট আমাদের কিডনির প্রদাহ কমাতে এবং কিডনিতে পাথরের আশঙ্কা দূর করতে সাহায্য করে। তাই কিডনির স্বাস্থ্য উন্নত করতে নিয়মিত বিটের জুস পান করতে পারেন।
প্রিয় বন্ধুরা এতক্ষণ আমরা বিট ফল খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা গুলো সম্পর্কে জানলাম। কিন্তু বিট ফল খাওয়ার ফলে কিছু অপকারিতা রয়েছে কিংবা বিটরুট কারা কারা খেতে পারবেনা সে সব বিষয় সম্পর্কেও আপনাদের জানা জরুরী। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক বিটের অপকারিতা কিংবা কারা কারা বিট ফল খেতে পারবে না সে সম্পর্কে। অপকারিতা:
এলার্জির সমস্যা
যাদের অ্যালার্জি সমস্যা রয়েছে কিংবা যাদের ফল খাওয়ার ফলে অ্যালার্জি লক্ষণ যেমন চুলকানি, র্্যাশ এর মত সমস্যাগুলো দেখাবে তারা অবশ্যই বিটরুট খাওয়া থেকে বিরত থাকুন এতে আপনার মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
পেটের সমস্যা
বিটরুটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণ বিটরুট বা বিট ফল খেয়ে থাকেন তাহলে পেটের মধ্যে ফাইবারের মাত্রা বৃদ্ধির ফলে আপনার পেটে ব্যথা কিংবা বদহজমের মতো সমস্যাগুলো এমনকি ডায়রিয়াও হতে পারে।
কিডনিতে পাথর
বিটের মধ্যে রয়েছে উচ্চ পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন সি যা আমাদের কিডনি সুরক্ষায় কাজ করে। কিন্তু আপনি যদি নিয়মিত অতিরিক্ত পরিমাণ করে বিটের জুস কিংবা বিট ফল খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার শরীরে ক্যালসিয়াম ভিটামিন সি এর মাত্রা বৃদ্ধি পাবে যা কিডনিতে পাথরের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই বিটের অপকারিতা গুলো থেকে বাঁচতে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিটরুট খাওয়া উচিত।
রক্তচাপ অতিরিক্ত কমে যেতে পারে
বিটরুটের মধ্যে থাকা পুষ্ট উপাদান গুলো আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে কিন্তু আপনি যদি প্রথম থেকেই নিম্ন রক্তচাপের সমস্যায় থাকেন তাহলে আপনার বিটের জুস কিংবা বিট ফল খাওয়া উচিত না এতে আপনার রক্তচাপ আরও কমে আসতে পারে।
ডায়াবেটিসের সমস্যা
যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তারা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বিটের জুস কিংবা বিট ফল খাওয়ার চেষ্টা করবেন না। কেননা বিটের মধ্যে গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স এর পরিমাণ বেশি থাকার কারণে তা আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। তবে আপনার যদি ডায়াবেটিস না থেকে থাকে তাহলে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিটের জুস কিংবা বিট ফল খেতে পারেন।
প্রস্রাবের রং পরিবর্তন
অতিরিক্ত পরিমাণ বিট ফল খাওয়ার ফলে বিটুরিয়া নামক রোগ হতে পারে যার কারনে আপনার প্রস্রাবের রং পরিবর্তন হয়ে গোলাপি রং ধারণ করতে পারে। যদিও এটি মারাত্মক কোনো ক্ষতি নয় তবে দীর্ঘদিন বিটফল খাওয়ার ফলে এটি পরবর্তীতে মারাত্মক চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
গর্ভাবস্থায়
গর্ভবতী মায়েদের গর্ভাবস্থায় বিট ফল খাওয়া উচিত নয় কেননা এতে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো গর্ভবতী মায়ের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। গর্ভাবস্থায় বিট ফল খাওয়ার ফলে মাথা ঘোরা ও ক্লান্তি ভাব বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়।
ক্যালসিয়াম শোষণে বাধা
বিটের মধ্যে থাকা অক্সালেট আমাদের শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণ বেড়ে গেলে তার শরীরে ক্যালসিয়াম শোষণে বাধা সৃষ্টি করে যার কারণে হাড় কিংবা দাঁতের সমস্যা হতে দেখা দিতে পারে।
অ্যানাফিল্যাক্সিস
অতিরিক্ত পরিমাণ বিটরুট খাওয়ার ফলে অ্যানাফিল্যাক্সিস এর সমস্যা দেখা দিতে পারে যার কারণে তীব্র অ্যালার্জি হতে পারে। এছাড়াও ত্বকে লাল হয়ে যাওয়া, চুলকানি, ফুলে যাওয়া ,আম্বাত,গলা শক্ত হওয়া কিংবা হাঁপানির মত সমস্যাগুলো প্রকাশ পেতে পারে। তাই নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ বিটরুট বা বিটের ফল খেতে পারেন অতিরিক্ত পরিমাণ খাওয়ার ফলে এর অনেক অপকারিতা প্রকাশ পায়।
আয়রনের অভাব
যদিও বিটফলের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়রন রয়েছে যা আমাদের রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে কিন্তু বিটের মধ্যে থাকা আইরন খুব সহজে শোষিত হতে চাই না। তাই আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণ বিট ফল খেয়ে ফেলেন তাহলে আপনার শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা
বিটরুটের মধ্যে থাকা উপাদানগুলো অতিরিক্ত শরীরে বৃদ্ধি পেলে হরমোনের ভারসাম্যতা নষ্ট হয় যার কারণে আপনার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে।
আশা করি আপনারা বিটের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন। এখন বিটের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো জানার পর আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে বিট ফল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক বিট ফল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।
বিট ফল খাওয়ার নিয়ম
মিষ্টি স্বাদ যুক্ত এই ফল বা সবজিতে আপনি যেকোনো ভাবেই খেতে পারেন। আপনি চাইলে বিটের জুস করে পান করতে পারেন। বিটের জুস বানানোর জন্য এর সাথে চাইলে যোগ করতে পারেন গাজর,টমেটো,আপেল কিংবা ডালিমের রস। এছাড়াও খুব সহজেই বিটের সালাত বানিয়েও খেতে পারেন। তবে অনেকেই শীতকালীন সবজি হিসেবে বিটের সবজি খেতে ভালোবাসেন।
বিটের সবজি খেলেও দারুণ উপকারিতা পাওয়া যায় তবে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন নিয়মিত বিট খাওয়ার পরিবর্তে সপ্তাহে চার থেকে পাঁচ দিন বিট খাওয়ার চেষ্টা করুন এতে এর অপকারিতা গুলো খুব একটা দেখা দেবে না। তবে যারা বিটরুট কাঁচা খেতে পছন্দ করে না তারা চাইলে বিটের পাউডার ব্যবহার করতে পারেন।
প্রতিদিন এক থেকে দুই চামচ পরিমাণ বিটরুট পাউডার খাওয়ার ফলে আপনার যাবতীয় উপকারিতা গুলো পেতে পারেন। ঠান্ডা কিংবা গরম পানির সাথে প্রতিদিন এক থেকে দুই চামচ পরিমাণ বিট রোড পাউডার ভালোভাবে মিশিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করুন তবে অবশ্যই সকালে খালি পেটে খাবেন না।হালকা কিছু খাবার পর খেতে পারেন সকালে খালি পেটে খাওয়ার ফলে এর অপকারিতা গুলো প্রকাশ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়াও আপনারা চাইলে বিট রোড পাউডার স্মুদির সাথে, দুধের সাথে, দই এর সাথে এবং কি আপনারা চাইলে বিভিন্ন ফলের জুসের সঙ্গে বিটরুট পাউডার মিশিয়ে খেতে পারেন। আশা করি এটা আপনারা দারুণ উপকার পাবেন।
বিট কি কাঁচা খাওয়া যায়
জি অবশ্যই। বিট ফল আপনি কাঁচা ও খেতে পারেন আবার রান্না করে কিংবা সালাদ ও জুস হিসেবেও খেতে পারেন। এছাড়াও আপনারা চাইলে বিটের পাউডার বাজার থেকে ক্রয় করে খেতে পারেন। তবে বিট ফল কাঁচা খাওয়ায় বেশি উপকারিতা পাওয়া যায়। বিটফল কাঁচা খাওয়ার ফলে বিটের মধ্যে থাকা ভিটামিন,খনিজ,ফলেট,পটাশিয়াম, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট,মিনারেল ও ম্যাঙ্গানিজ পুষ্টি উপাদানগুলো বেশি কার্যকরী হয়।
এছাড়াও কাঁচা বিট ফল খাওয়ার ফলে শরীরে রক্ত চলাচল প্রক্রিয়া বৃদ্ধি পায় এবং হার্টের সুরক্ষায় কাজ করে। কিন্তু যারা কাঁচা বিট ফল খেতে চান না তারা চাইলে বিটের জুস কিংবা সবজি খেতে পারেন। এছাড়াও আপনারা চাইলে বিটের সালাত বানিয়েও খেতে পারেন। সুস্বাদু কাঁচা বিট খাওয়ার ফলে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে আসবে।
তবে যারা কাঁচা বিটরুট খেতে চান না তারা বিটরুটের পাউডার বাজার থেকে ক্রয় করে কিনে খেতে পারেন। বিটরুটের পাউডার আপনি দুধের সাথে, ঠাণ্ডা কিংবা গরম পানির সাথে, বিভিন্ন ফলের জুসের সাথে, এমন দই এর সাথেও মিশিয়ে খেতে পারেন।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে বিট ফল কাঁচা খাওয়ার ফলেই এর যাবতীয় উপকারিতা গুলো বেশি কার্যকরী হয়। তাই আপনি যদি বিট ফল খাওয়ার সকল উপকারিতা গুলো পেতে চান তাহলে অবশ্যই কাঁচা বিট ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন। কাঁচা বিট ফল খাওয়ার ফলে এটি আপনার স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বেশ কাজে দেবে।
বিট ফল কোথায় পাওয়া যায়
বিটফল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী এবং এর মধ্যে থাকা পোস্ট উপাদান গুলো আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য দারুন কার্যকারী। কিন্তু এখন প্রশ্ন হচ্ছে বিট ফল কোথায় পাওয়া যায়। প্রিয় বন্ধুরা বিট ফল আপনারা বিভিন্ন সবজি বাজারে কিংবা গ্রোসারিসপে পেয়ে যাবেন। এছাড়া আপনারা যদি চান তাহলে বাসার ছাদে টবে বিটরুট চাষ করতে পারেন।
এছাড়া আপনারা চাইলে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে বিটরুট চিনতে পারেন এতে আপনার অনেকটা সাশ্রয়ী হবে। কিন্তু আমরা সঠিক ভাবে জানি না কোথায় এবং কিভাবে বিটরুট ফল পাওয়া যাবে। বন্ধুরা আপনারা যদি বাজারে একটু খোঁজ নেন তাহলে খুব অনায়াসে আপনারা বিটফল পেয়ে যাবেন কিংবা যদি বাজারে না পান তাহলে বিভিন্ন অনলাইন শপিংমলেও আপনারা চেক করতে পারেন।
সরাসরি বাজারে গিয়ে যদি না পান আশা করি অনলাইনে বিভিন্ন শপিং মল গুলোতে আপনারা পেয়ে যাবেন। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অনলাইন শপিং মল দারাজ থেকেও আপনারা বিট ফল কিনতে পারেন। দারাজ থেকে বিটফল কেনার ফলে আপনারা খুব সহজেই চেক করে বিটফলগুলো হাতে পেয়ে যাবেন।
এছাড়াও আরো অনেক অনলাইন শপিংমল রয়েছে যেখান থেকে আপনারা ভালোভাবে বিচার বিশ্লেষণ করে বিট ফল চিনতে পারেন। এছাড়াও ফেসবুক পেজ থেকেও বিটফল কেনা যায়।
আপনি চাইলে ফেসবুকে সার্চ করার মাধ্যমে বিভিন্ন বিট ফল বেচার গ্রুপগুলো খুঁজে বের করে তাদের সাথে যোগাযোগ করে বিটফলের সঠিক দাম জেনে তারপর প্রয়োজনমতো বিটফল অর্ডার করতে পারেন। আশা করছি আপনারা বিফল কোথায় পাওয়া যায় সে সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন।
লেখকের মন্তব্যঃবিটের উপকারিতা ও অপকারিতা-বিট ফল খাওয়ার নিয়ম
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আশা করছি আপনি আপনার উপরোক্ত সকল প্রশ্নগুলোর উত্তর সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন অতিরিক্ত পরিমাণ বিট ফল কিংবা বিটের জুস খাওয়ার ফলে এর বিভিন্ন অপকারিতা প্রকাশ পেতে পারে।
তাই প্রতিদিন বিটরুট খাওয়ার ইচ্ছা থাকলে নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ বিটরুট খেতে পারেন এতে করে আপনি বিরুধ খাওয়ার সকল উপকারিতা গুলো পাবেন এবং বিটরুট খাওয়ার ফলে যে সকল অপকারিতা গুলো প্রকাশ পায় সেগুলো থেকেও দূরে থাকতে পারবে।
এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে যদি আপনার কোন উপকার হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন। আর্টিকেলটি সম্পর্কে যদি আপনার কোন মতামত বা মন্তব্য থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করতে পারেন। সকলে ভালো থাকবেন।আসসালামু আলাইকুম।
ডিজিটাল ব্লগ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url