বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খোলার নিয়ম। বিস্তারিত জানুন
আপনি কি একটি বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খুলতে চান? কিংবা অ্যাপ ছাড়া বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম গুলো সম্পর্কে জানতে আগ্রহী। তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমরা বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খোলার নিয়ম সহ কিভাবে অ্যাপ ছাড়া বিকাশ একাউন্ট খোলা যায় সে বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
এছাড়াও এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং যদি কোন কারণে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ হয় তাহলে কি কি করণীয় সে বিষয়গুলো জানতে পারবেন। আরো জানতে পারবেন কিভাবে বিকাশ অ্যাকাউন্ট নাম্বার পরিবর্তন করা যায় তার বিভিন্ন নিয়ম সম্পর্কে। তাই সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচীপত্রঃবিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খোলার নিয়ম
ভূমিকা
বিকাশ বর্তমান বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল অর্থ প্ল্যাটফর্ম। যা বিভিন্ন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাজের সংস্থা করে দিয়েছে। এছাড়াও বিকাশের মাধ্যমে আমরা খুব অনায়াসে টাকা লেনদেন করতে পারি। বাংলাদেশের মধ্যে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় বিকাশের ব্যবহার করে টাকা লেনদেন করা বর্তমানে খুবই সহজ ব্যাপার।
আপনার যদি একটি বিকাশ একাউন্ট থাকে তাহলে খুব অনায়াসে আপনি পুরো সুরক্ষার সাথে টাকা লেনদেন করতে পারবেন। এছাড়াও বিকাশ অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের অফার দিয়ে থাকে সেগুলো পেতে পারেন। কিন্তু এর জন্য আপনার প্রয়োজন হবে একটি বিকাশ একাউন্ট। এখন আপনাদের অনেকেই ভাবছেন বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে।
আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমরা বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খোলার নিয়ম সহ যদি কোন কারণে আপনার বিকাশ বন্ধ হয়ে যায় তাহলে আপনার কি কি করণীয় কিংবা আপনি যদি বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে চান তাহলে আপনার কোন নিয়ম গুলো অনুসরণ করতে হবে এ সকল বিষয়গুলো আজকের এই আর্টিকেলটিতে তুলে ধরা হয়েছে।
আপনি যদি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধৈর্য সহকারে পড়তে পারেন তাহলে খুব সহজে আপনি বিকাশ একাউন্ট নাম্বার পরিবর্তন করার নিয়ম সম্পর্কেও জানতে পারবেন এবং আরও জানতে পারবেন অ্যাপ ছাড়া কিভাবে একটি বিকাশ একাউন্ট খোলা যায় তার নিয়ম সম্পর্কে। তাই সকল বিষয়গুলো জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইলো।
বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খোলার নিয়ম
বর্তমান সময়ের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য বিকাশ একটি দারুন ফিচার যুক্ত করেছে। যার মাধ্যমে আপনারা খুব সহজেই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী,ভাসমান উদ্যোক্তা ও অনলাইন ভিত্তিক উদ্যোক্তারা খুব সহজেই এবং দ্রুত তাদের গ্রাহকের কাছে পণ্য এবং সেবা পৌঁছে দেয়ার মাধ্যমে পেমেন্ট নিতে পারবেন।
অবশ্যই আপনাকে একটি বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। যার মাধ্যমে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তাদের কাস্টমারের কাছ থেকে খুব সহজেই লেনদেন করতে পারবেন। আপনারা যারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রয়েছেন তারা অনেক সময় লক্ষ্য করবেন ব্যবসার ক্ষেত্রে অনেক কাস্টমার রয়েছে যারা পার্সোনাল একাউন্টে টাকা পেমেন্ট করতে ইতস্তত বোধ করে।
যদি আপনার একটি পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট থেকে থাকে তাহলে খুব স্বাচ্ছন্দে তারা পেমেন্ট করতে পারে এবং বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে প্রতি লেনদেনের প্রতি আপনি 30 হাজার পর্যন্ত লিমিট পেয়ে থাকবেন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খোলার নিয়ম গুলো সম্পর্কে।
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট
আমরা অনেকেই জানি যে যেকোনো ধরনের অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য অবশ্যই আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজ পত্র বা ডকুমেন্ট এর প্রয়োজন পড়ে। ঠিক তেমনি বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খোলার জন্য আপনার বেশ কিছু কাগজপত্র দরকার পড়বে যেমন:
১/প্রথমে আপনাকে একটি গুগল ক্রোম ব্রাউজারে অ্যাকটিভ একাউন্ট তৈরি করতে হবে।
২/আপনি যে সিমের মাধ্যমে বিকাশ পার্সোনাল অ্যাকাউন্ট খুলবেন সেই সিমের মালিকানা প্রমাণ পত্রের প্রয়োজন হবে।
৩/জাতীয় পরিচয় পত্র যদি থাকে তাহলে ভালো তা না হলে আপনি চাইলে জন্ম নিবন্ধন ব্যবহার করেও খুলতে পারেন।
৪/আপনার একটি নিজস্ব বৈধ মোবাইল নাম্বার প্রয়োজন হবে।
৫/আপনার কয়েকটি ছবির প্রয়োজন হবে।
৬/একজন মুমিনের জাতীয় পরিচয় পত্র ও তার নিজস্ব ছবি প্রয়োজন হবে।
এই সকল ডকুমেন্টগুলো যদি আপনার কাছে থাকে তাহলে খুব সহজেই আপনি ঘরে বসে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিকাশ পার্সোনাল অ্যাকাউন্ট খুলে নিতে পারবেন। তবে বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খোলার জন্য অবশ্যই আপনাকে সকল শর্তাবলী গুলো মেনে বিকাশ পার্সোনাল অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।
বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খোলার নিয়ম
প্রথমত: আপনাকে গুগল ক্রোম ব্রাউজার ব্যবহার করে বিকাশের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের লিঙ্কে প্রবেশ করতে হবে।
দ্বিতীয়ত: বিকাশ পার্সোনাল অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে রেজিস্ট্রেশন বাটনে ক্লিক করতে হবে।
তৃতীয়ত: এরপর আপনার সামনে একটি পেজ আসবে যেখানে বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খোলার জন্য বিভিন্ন নিয়ম ও শর্ত সমূহে আপনাকে সম্মতি জানাতে হবে। এর জন্য দুটি অপশন থাকবে একটি হচ্ছে হ্যাঁ আরেকটি হচ্ছে না। আপনি যদি সকল শর্ত ও নিয়ম মেনে হ্যাঁ বাটনে ক্লিক করেন তাহলে আপনি পরের ধাপে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য প্রবেশ করতে পারবেন।
চতুর্থত: আপনি যেই বৈধ নাম্বারের মাধ্যমে বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খুলতে চান সেই নাম্বারটি বসাতে হবে এবং সেই নাম্বারটি কোন অপারেটরের মাধ্যমে পরিচালিত সেই মাধ্যমটি উল্লেখ করতে হবে। যদি আপনার নাম্বার বসানো এবং অপারেটর সিলেক্ট করা হয়ে যায় তাহলে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন।
পঞ্চমত: এরপর আপনি যে মোবাইল নাম্বারের মাধ্যমে একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে যাচ্ছেন সেই নাম্বারে ৬ ডিজিট এর একটি ভেরিফিকেশন কোড আসবে। সেই কোডটি আপনার রেজিস্ট্রেশন ফর্মে বসিয়ে পরবর্তী ধাপের জন্য ট্র্যাপ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
ষষ্ঠমত: পরবর্তী সকল ইনফরমেশন গুলো আপনাকে ফর্মে উল্লেখ করতে হবে এবং এ পর্যায়ে মূলত বিকাশ পার্সোনাল অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আপনার পার্সোনাল কিছু ইনফরমেশন প্রদান করতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই সকল বিষয়গুলো আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র এবং জন্ম নিবন্ধন অনুসারে দিতে হবে। সাবমিট বাটনে ক্লিক করার আগে অবশ্যই সকল ইনফরমেশন গুলো সঠিক আছে কিনা তা দ্বিতীয়বার চেক করার পর সাবমিট বাটনে ট্রাপ করবেন।
সপ্তমত: এরপর আপনার পাসপোর্ট সাইজের ছবি রেজিস্ট্রেশন ফর্মটিতে আপলোড করতে হবে।বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খোলার জন্য আপনার সকল ইনফরমেশন গুলো দেওয়া হয়ে গেলে এরপর আপনার কাছে একটি কনফারমেশন মেসেজ ও একটি ওয়েলকাম লেটার আসবে যেখানে আপনার দেওয়া সকল ইনফরমেশন ও স্ট্যাটাস গুলো আপনি দেখতেও পড়তে পারবেন।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খোলা সম্পূর্ণ হলে আপনাকে পরবর্তীতে অ্যাকাউন্টের পিন নম্বর সেটাপ করতে হবে। এর জন্য আপনাকে মোবাইলে ডায়াল অপশনে গিয়ে *২৪৭#ট্যাপ করে আপনার বিকাশের একাউন্ট পিন নাম্বার সেটআপ করে নিতে হবে। আপনার বিকাশ একাউন্ট পিন নাম্বার সেটআপ হয়ে গেলে আপনার বিকাশ পার্সোনাল অ্যাকাউন্ট খোলার কাজ সমাপ্ত হলো।
অ্যাপ ছাড়া বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম
প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আমরা বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খোলার নিয়ম গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা জানবো কিভাবে আপনি বিকাশ অ্যাপ ছাড়াই সম্পূর্ণ একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন সেই সম্পর্কে। বর্তমানে বিশ্বে বিকাশের গ্রাহক দিন দিন ক্রমেই বেড়ে চলেছে। খুব সহজেই গ্রাম অঞ্চল থেকে শুরু করে শহরে টাকা পাঠানোর অন্যতম একটি মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে বিকাশ।
বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য আমাদের বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড করা আবশ্যক। কিন্তু আপনি কি জানেন অ্যাপ ছাড়া বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে। কথাটি শুনে হয়তো আপনার বিশ্বাস হবে না। কিন্তু অ্যাপ ছাড়া বিকাশ একাউন্ট খোলা সম্ভব। খুব সহজে আপনার বাটন ফোন কিংবা স্মার্টফোনে অ্যাপ ব্যবহার না করেই আপনি বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবেন এবং অনায়াসে টাকা লেনদেন করতে পারবেন।
তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক অ্যাপ ছাড়া বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে।অ্যাপ ছাড়া বিকাশ একাউন্ট আপনি দুইভাবে খুলতে পারেন। একটি সরাসরি বিকাশের কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে আর অন্যটি হচ্ছে বিকাশের ইউএসএসডি কোড ডায়াল করার মাধ্যমে। আর্টিকেলের এই অংশ আমরা আপনাদের দুই পদ্ধতি সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করব।
সরাসরি কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে
১/অ্যাপ ছাড়া বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে সরাসরি বিকাশের কাস্টমার কেয়ারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
২/বিকাশ কাস্টমার কেয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন পত্র নিয়ে যেতে হবে।
৩/আপনার পাসপোর্ট সাইজের এক কপি ছবি এবং আপনি যে নাম্বারে বিকাশ একাউন্ট খুলতে চান সেই সিমটি সাথে নিয়ে যেতে হবে।
৪/আপনার যদি নিজস্ব কোন জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি যার জাতীয় পরিচয় পত্র ব্যবহার করে বিকাশ একাউন্ট খুলতে চান সেই ব্যক্তিকে অবশ্যই কাস্টমার কেয়ারে উপস্থিত থাকতে হবে।
এরপর কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য ও ডকুমেন্টগুলো জমা দেওয়ার পর খুব সহজেই আপনি অ্যাপ ছাড়া বিকাশ একাউন্ট খুলে নিতে পারবেন।
ইউ এস এসডি কোড ডায়াল করার মাধ্যমে
অ্যাপ ছাড়া বিকাশ একাউন্ট খোলার আরও একটি নিয়ম হচ্ছে ইউ এস এসডি কোড ডায়াল করে ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট খোলা। ইউ এস এসডি কোড ডায়াল করে বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য নিচের পদক্ষেপ গুলো অনুসরণ করুন।
১/প্রথমেই আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোন কিংবা মোবাইল ফোনে বিকাশের ইউএসএসডি কোড *২৪৭#ডায়াল করতে হবে।
২/এরপর আপনার সামনে অনেকগুলো অপশন আসবে এর মধ্যে থেকে একাউন্ট খুলুন অপশনটি নির্বাচন করতে হবে।
৩/আপনার একটি NID নম্বর এবং জন্ম তারিখের প্রয়োজন হবে এর জন্য আপনার NID নম্বর ব্যবহার করতে পারেন অথবা যদি আপনার না থাকে তাহলে অন্য কারো NID কার্ড এর নাম্বার ব্যবহার করতে পারেন।
৪/NID এর নম্বর ও জন্ম তারিখ প্রদান করা হয়ে গেলে আপনি যে মোবাইল নাম্বারের মাধ্যমে অ্যাপ ছাড়া বিকাশ একাউন্ট খুলতে চান সেই নাম্বারটি বসিয়ে নিশ্চিত করতে হবে।
৫/নাম্বার বসানো হয়ে গেলে আপনার ফোনে একটি OTP আসবে। যেটি আপনার কর্মে প্রদান করতে হবে।
৬/OTP বসানো হয়ে গেলে পরবর্তী নির্দেশনা বলি অনুসরণ করে খুব সহজেই অ্যাপ ছাড়া আপনি বিকাশ একাউন্ট খুলে নিতে পারবেন।
সতর্কতা:
১/অ্যাপ ছাড়া বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য আপনি যে NID নম্বর ব্যবহার করবেন তা অবশ্যই বিকাশের সাথে যুক্ত নাম্বারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।
২/আপনার মোবাইল নম্বরে আসা OTP পাঁচ মিনিটের জন্য বৈধ হবে এরপর আপনি সেই OTP ব্যবহার করতে পারবেন না।
৩/অবশ্যই আপনাকে OTP সঠিকভাবে বসাতে হবে যদি আপনি ভুল করে থাকেন তাহলে আপনাকে পুনরায় চেষ্টা করতে হবে।
৫/আপনার বিকাশ একাউন্ট খোলার কাজ সম্পূর্ণ হলে আপনার বিকাশ একাউন্টের জন্য পিন নাম্বার ভেরিফিকেশন করতে হবে।
৬/বিকাশের পিন নাম্বার আপনার পার্সোনাল নাম্বার যেটি বিকাশের মাধ্যমে লেনদেনের সুরক্ষার জন্য অবশ্যই আপনাকে গোপন রাখতে হবে।
বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম
প্রিয় বন্ধুরা এতক্ষণ আমরা বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম গুলো সম্পর্কে জানলাম। কিন্তু আপনি যদি বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে চান তার জন্য আপনাকে কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে খুব সহজে আপনি বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে পারবেন তার নিয়ম গুলো সম্পর্কে।
আপনি যদি আপনার ব্যবহৃত বিকাশ একাউন্টটি বন্ধ করতে চান তার জন্য দুটি নিয়ম অনুসরণ করতে পারেন। একটি হচ্ছে খুব সহজেই ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে পারেন এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে আপনার বিকাশ একাউন্ট খোলার সময় যে সকল তথ্য ব্যবহার করেছেন সে সকল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট নিয়ে সরাসরি কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে পারেন। আর্টিকেলটিতে এই অংশে আমরা আপনাদের দুই পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি।
ঘরে বসেই বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় নিয়ম কানুন।
ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার জন্য আপনাকে বিকাশ হেল্পলাইন এর মাধ্যমে কল করে বিকাশ প্রতিনিধির সাথে কথা বলার জন্য মেনু থেকে অপশন বেছে নিতে হবে। বিকাশ হেল্পলাইন নাম্বার ১৬২৪৭ এই নাম্বারে কল দেওয়ার জন্য অবশ্যই যে নাম্বার আপনার বিকাশ রয়েছে সেই নাম্বারটি ব্যবহার করবেন।
এরপর একজন বিকাশ প্রতিনিধি আপনার যেই বিকাশ একাউন্টটি বন্ধ করতে চান সেই বিকাশ একাউন্টটি বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য এবং যেই NID কার্ড ব্যবহার করে আপনি বিকাশ একাউন্টে রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন সেগুলো সম্পর্কে জানতে চাইবে। এরপর সকল প্রশ্নের উত্তর নেওয়ার পর বিকাশ প্রতিনিধি আপনার দেওয়া তথ্য গুলো যাচাই করে দেখবে।
যদি আপনার দেওয়া সকল তথ্যগুলো সঠিক হয়ে থাকে এবং আপনি যে বিকাশ নাম্বারটি বন্ধ করতে চান তার মালিকানা যদি আপনি হয়ে থাকেন তাহলে তারা খুব সহজে আপনার বিকাশ একাউন্টটি বন্ধ করে দিবে। এরপর আপনি চাইলে অন্য যে কোন সিমে নতুন ভাবে bkash একাউন্ট তৈরি করতে পারেন।
সরাসরি কাস্টমার কেয়ারের মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম।
কাস্টমার কেয়ারে সরাসরি যাওয়ার মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার জন্য অবশ্যই আপনাকে বিকাশ একাউন্ট খোলার সময় যাবতীয় সকল তথ্য এবং আপনার NID কার্ড যদি আপনি অন্য কারো এনআইডি কার্ড দিয়ে খুলে থাকেন তাহলে অবশ্যই সেই ব্যক্তিকে সাথে নিয়ে যেতে হবে।
এরপর বিকাশের একজন প্রতিনিধির সাথে কথা বলে আপনাকে জানাতে হবে আপনি কোন নাম্বারের বিকাশ একাউন্টটি বন্ধ করতে চান।এরপর তারা সকল তথ্যগুলো আপনার বিকাশ একাউন্টের সাথে মিলিয়ে দেখবে এবং যদি সবকিছু সঠিক হয়ে থাকে তাহলে খুব সহজেই তারা আপনার বিকাশ একাউন্টটি বন্ধ করে দেবে।
বিকাশ একাউন্ট বন্ধ হলে করণীয়
অনেক সময় পরপর তিনবার ভুল পিন ব্যবহার করার জন্য আমাদের বিকাশ একাউন্ট বন্ধ হয়ে যায় কিংবা লক করে দেওয়া হয়। এছাড়াও আপনি যদি মোবাইলে খুব কম সময়ে একই নাম্বারে বারবার রিচার্জ বা সেন্ড মানি করে থাকেন অথবা অস্বাভাবিকভাবে লেনদেন করতে থাকলেও আপনার বিকাশ একাউন্ট বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
কেননা বিকাশ রিচার্জ এর ক্ষেত্রে বিকাশের সময়সীমা 15 মিনিট নির্ধারিত করা হয়েছে আর আপনি যদি এই 15 মিনিটের মধ্যেই একাধিক নাম্বারে রিচার্জ করেন তাহলে সেটা অস্বাভাবিক লেনদেনের মধ্যে গণ্য করা হবে। এছাড়াও অনেক সময় একই জাতীয় পত্র দিয়ে পূর্বের কোন বিকাশ একাউন্ট খোলা থাকলে সে ক্ষেত্রে আপনার বিকাশ একাউন্টটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আপনার বিকাশ একাউন্ট যদি লেনদেন করা বন্ধ হয়ে যায় তাহলে আপনার করণীয় কি কি।
আপনার বিকাশ একাউন্টে যদি বন্ধ হয়ে যায় কিংবা লক হয়ে যায় তাহলে আপনি দুটি পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। একটি হচ্ছে সরাসরি বিকাশে সাপোর্ট নাম্বারে কল করার মাধ্যমে অথবা লাইভ চ্যাট করার মাধ্যমে। অথবা সরাসরি বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করার মাধ্যমে আপনার বন্ধু বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারেন। তবে যদি আপনার বিকাশ একাউন্টটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে সে বিকাশ একাউন্ট আর সচল করা যাবে না।
সরাসরি কাস্টমার কেয়ারের সাথে যোগাযোগ করে
আপনার বিকাশ একাউন্টে যদি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে আপনি আপনার বিকাশ একাউন্ট খোলার সময় যে সকল প্রয়োজনীয় তথ্য ব্যবহার করে বিকাশ একাউন্টটি খুলেছিলেন সে সকল তথ্যগুলো নিয়ে যেতে হবে। সরাসরি বিকাশ কাস্টমার কেয়ার থেকে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার জন্য যে সকল তথ্যগুলো আপনার প্রয়োজন হবে তা হচ্ছে আপনি যে NID কার্ড ব্যবহার করে বিকাশ একাউন্টটি রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন সেই NID কার্ডটি এবং যিনি এই কার্ডটির মালিক সেই ব্যক্তি।
আপনার বিকাশ একাউন্ট খোলার সময় ব্যবহৃত জন্ম তারিখ, যেই নামে বিকাশ একাউন্টটি খোলা সেই নাম, সর্বশেষ আপনি বিকাশের মাধ্যমে যে লেনদেন করেছিলেন সেটি, লেনদেন করার পর আপনার অবশিষ্ট ব্যালেন্স কত ছিল সেটা এবং আপনার পিতা ও মাতার নাম।
এ সকল তথ্যগুলো যদি আপনি বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে একজন প্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করেন তাহলে সেই প্রতিনিধি আপনার বিকাশ একাউন্টের মালিকানা পর্যবেক্ষণ করে দেখবেন এবং আপনার তথ্যগুলো যদি সঠিক হয় তাহলে আপনার বিকাশ একাউন্টটি এক্টিভ করে দেবেন।
বিকাশ হেল্পলাইনে কল করার মাধ্যমে অথবা লাইভ চ্যাট এ মেসেজ করার মাধ্যমে।
প্রথমে আপনাকে বিকাশের সাপোর্ট নাম্বারে (১৬২৪৭) কল করতে হবে অথবা লাইভে মেসেজ করতেও পারেন। এরপর আপনার বিকাহস অ্যাকাউন্টের যাবতীয় সমস্যাগুলো তুলে ধরুন যদি আপনার বিকাশ একাউন্টটি পুনরায় চালু করার অবস্থায় থেকে থাকে তাহলে বিকাশ প্রতিনিধি আপনার বিকাশ একাউন্টে যাবতীয় তথ্যগুলো আপনার কাছে জানতে চাইবেন।
যেমন আপনার এনআইডি কার্ডের নাম্বার, জন্ম তারিখ, বিকাশের মাধ্যমে সর্বশেষ লেনদেনের তথ্য এবং বর্তমান আপনার বিকাশ একাউন্টে কত ব্যালেন্স রয়েছে সেটি। আপনার দশ সকল তথ্যগুলো যাচাই করা হবে এবং আপনি যদি প্রকৃত মালিক নির্ধারিত হন তাহলে পুনরায় আপনার বিকাশ একাউন্টটি একটিভ করে দেওয়া হবে।
এবং বিকাশ লাইভ চ্যাটের মাধ্যমে আপনাকে প্রথমে একটি ফর্মে আপনার যাবতীয় সমস্যা গুলো তুলে ধরে ফর্মটি জমা করতে হবে এরপর ফরম জমা করার 12 ঘণ্টার মধ্যে বিকাশের একজন প্রতিনিধি আপনার সাথে কলে কথা বলার মাধ্যমে আপনার সমস্যাগুলো যাচাই-বাছাই করা হবে ।
আপনার বিকাশ একাউন্টটি যদি খোলার মত অবস্থায় থেকে থাকে তাহলে নতুনভাবে বিকাশ একাউন্ট একটিভ করে দেবে।আশা করি উপরোক্ত পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করে খুব সহজে আপনার বন্ধু বিকাশ একাউন্ট পুনরায় সজল করতে পারবেন।
বিকাশ একাউন্ট নাম্বার পরিবর্তন করার নিয়ম
আপনারা যারা বিকাশ একাউন্ট নাম্বার পরিবর্তন করতে চান তাহলে কিছু নিয়ম অনুসরণ এবং প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য প্রদানের মাধ্যমে খুব সহজে আপনি বিকাশের কাস্টমার কেয়ারে ফোন করার মাধ্যমে অথবা সরাসরি বিকাশের কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে আপনার বিকাশ একাউন্ট নাম্বার পরিবর্তন করতে পারেন। বিকাশ একাউন্ট নাম্বার পরিবর্তন করার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য।
১/যে NID কার্ডের মাধ্যমে বিকাশ একাউন্টটি খোলা সেই NID কার্ড টি।
২/বিকাশ একাউন্টের মাধ্যমে শেষ লেনদেনের কিছু তথ্য।
৩/বর্তমান আপনার বিকাশ একাউন্টে যেই সিমে রয়েছে সেই সিমটি।
৪/আপনি অ্যাকাউন্ট নাম্বার পরিবর্তন করে যেই নাম্বারে বিকাশ একাউন্টটি নিয়ে যেতে চাচ্ছেন সেই সিমটি।
৫/আপনার বিকাশ একাউন্টটি যার NID কার্ড ব্যবহার করে খোলা সেই ব্যক্তির উপস্থিতি।
বিকাশ একাউন্ট নাম্বার পরিবর্তন করার নিয়ম
আপনার বিকাশ একাউন্ট নাম্বার পরিবর্তন করার জন্য আপনি চাইলে সরাসরি বিকাশের কাস্টমার কেয়ারে যেতে পারেন অথবা বিকাশের হেল্প নাম্বারে কল করেও প্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করার মাধ্যমে আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য যেমন বিকাশ একাউন্টটি যে NID ব্যবহার করে খোলা সে NID কার্ডটি, আপনার বিকাশ একাউন্টটি কবে খোলা হয়েছে, আপনার পিতা এবং মাতার নাম, আপনার বর্তমান ঠিকানা ও জন্ম তারিখ।
এছাড়াও আপনি bkash এর মাধ্যমে সর্বশেষ যে লেনদেন করেছেন তার কিছু তথ্য আপনার কাছে জানতে চাইবে এরপর যদি আপনার সকল তথ্যগুলো সঠিক থাকে তাহলে খুব সহজে ই আপনি যে নাম্বার থেকে বিকাশ একাউন্টটি পরিবর্তন করে অন্য নাম্বারে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন আপনার বিকাশ একাউন্টে সেই নাম্বারে রিপ্লেস করে দেয়া হবে।
সেক্ষেত্রে আপনার আগের বিকাশ নাম্বারটি আপনার বর্তমান যে নাম্বারে বিকাশ একাউন্টে রয়েছে সেটি অ্যাকাউন্টের সাপোর্ট নাম্বার হিসেবে গণ্য হবে।
লেখকের মন্তব্যঃবিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খোলার নিয়ম
আশা করি বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং বন্ধ করার নিয়ম সম্পর্কে আপনারা বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন পাশাপাশি কিভাবে বিকাশ অ্যাকাউন্ট নাম্বার পরিবর্তন করতে পারবেন সে সম্পর্কেও আপনারা ধারণা পেয়েছেন। সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরুতে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এ আর্টিকালি পড়ার মাধ্যমে যদি আপনার কোন উপকার হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন। এরকম আরো ইনফরমেটিভ তথ্য সম্পর্কে জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। আপনার যদি কোন মতামত বা পরামর্শ থেকে থাকে এই আর্টিকেলটি সম্পর্কে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করতে পারেন। সকলে ভালো থাকবেন।আসসালামু আলাইকুম।
ডিজিটাল ব্লগ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url