OrdinaryITPostAd

পিরিয়ড মিস হওয়ার আগে গর্ভবতী হওয়ার সকল লক্ষণ সমূহ

আপনার কি পিরিয়ড মিস হচ্ছে? আপনি গর্ভধারণ করেছেন কিনা সেটা কিভাবে বুঝবেন? তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্য। এই আর্টিকেলটিতে আমরা পিরিয়ড মিস হওয়ার আগে গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ সমূহ আলোচনা করব। এছাড়াও এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন পিরিয়ডের আগে সাদা স্রাব গর্ভাবস্থায় লক্ষণ কি না? সাদা স্রাব হলে কি বাচ্চা হয়? সাদা স্রাব হলে কি ক্ষতি হতে পারে?

ছবি

এছাড়াও গর্ভবতী হলে সাদাস্রাব কেমন হয় এবং আরো জানতে পারবেন সাদা স্রাব কি খেলে ভালো হয়? আপনার মনেও যদি পিরিয়ড মিস হওয়া নিয়ে এ ধরনের প্রশ্ন থেকে থাকে। পাশাপাশি গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণগুলো সম্পর্কে ধারণা না থাকে তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল। আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ার পর পিরিয়ড মিস হওয়ার আগে গর্ভবতী হওয়ার সকল লক্ষণ সমূহ এবং সাদা স্রাব সম্পর্কে সকল ধারণা আপনি পেয়ে যাবেন। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

পোস্ট সূচীপত্রঃপিরিয়ড মিস হওয়ার আগে গর্ভবতী হওয়ার সকল লক্ষণ সমূহ

ভূমিকা

গর্ভাবস্থায় প্রত্যেক নারীর ক্ষেত্রে এক আনন্দ কর অনুভূতি এবং কিছু শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। সাধারণত বিশেষজ্ঞরা গর্ভবতী হওয়ার প্রথম লক্ষণ হিসেবে পিরিয়ড মিস হওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। সাধারণত গর্ভবতী হওয়ার প্রথম সপ্তাহে কোন সুনির্দিষ্ট লক্ষণ প্রকাশ পায় না। মায়েরা গর্ভবতী হওয়ার প্রথম এক মাস বুঝতেই পারে না তিনি গর্ভধারণ করেছেন কিনা।

সেক্ষেত্রে সকল মায়েরাই প্রথমে পিরিয়ড মিস হয়েছে কিনা সে বিষয়টির প্রতি লক্ষ্য রাখেন। শুধুমাত্র পিরিয়ড মিস হলেই যে আপনি গর্ভবতী হয়েছেন এমনটা কিন্তু নয়। আরো বিভিন্ন কারণে আপনার পিরিয়ড মিস হতে পারে। কিন্তু পিরিয়ড মিস হওয়ার সাথে সাথে যদি আপনার বিভিন্ন লক্ষণ প্রকাশ পায় তাহলে আপনি গর্ভবতী হয়েছেন কিনা সেটা পরীক্ষা করতে পারেন।

আজকের এই আর্টিকেলটি যেতে আপনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে পারেন তাহলে পিরিয়ড মিস হওয়ার সাথে সাথে যে সকল লক্ষণগুলো দেখলে আপনি বুঝতে পারবেন আপনি গর্ভবতী হয়েছেন সে সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে আর্টিকেলটিতে আলোচনা করা হবে।

পিরিয়ড মিস হওয়ার আগে গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ

যদিও চিকিৎসকের মতামত অনুসারে পিরিয়ড মিস হওয়ায় গর্ভবতী হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ গুলোর মধ্যে একটি হলেও আপনার যদি অন্য কারণে পিরিয়ড মিস হয়ে থাকে কিংবা পিরিয়ড মিস হওয়ার আগে যে সকল লক্ষণগুলো আপনি আপনার মধ্যে দেখতে পেলে বুঝবেন গর্ভবতী হয়েছেন সে সকল বিষয়গুলোর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা থাকছে আর্টিকেলটির এই অংশে।

তাই আপনি যদি সচেতন থাকেন তাহলে পিরিয়ড মিস হওয়ার আগে আপনি বিভিন্ন লক্ষণ পর্যবেক্ষণ করার মাধ্যমে আপনার গর্ভধারণ নিশ্চিত করতে পারবেন। চলুন সে সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাক।

পিরিয়ড মিস হওয়া

চিকিৎসকদের মতে পিরিয়ড মিস হওয়া গর্ভবতী হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ ধরা হয়। যদি অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্কের আগে আপনার নিয়মিত পিরিয়ড হয়ে থাকে এবং যৌন সম্পর্কের পর পিরিয়ড মিস হতে দেখা যায় তবে এটা গর্ভবতী হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ প্রকাশ করে।

স্তন গুলিতে সংবেদনশীলতা

গর্ভবতী হওয়ার আরো একটি লক্ষণ হচ্ছে স্তন পরিবর্তন হওয়া। পিরিয়ডের আগে যদি আপনার স্তনের খোলা ভাব ব্যথা এবং সংবেদনশীলতা দেখতে পান তাহলে এটি গর্ভবতী হওয়ার আরেকটি লক্ষণ। এছাড়াও আপনার স্তনের আকার পরিবর্তন এবং রঙে পরিবর্তন আসতে পারে।

ক্লান্তি এবং দুর্বলতা

অসুরক্ষিত যৌন মিলনের পর যদি আপনার ঘন ঘন ক্লান্তি এবং দুর্বলতা অনুভব হয় তাহলে তা গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ হতে পারে। সাধারণত পিরিয়ড মিস হলে কিংবা গর্ভবতী হলে শরীরে প্রজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায় যার কারণে অনেক সময় মহিলারা ক্লান্তি এবং দুর্বল অনুভব করে।

মর্নিং সিকনেস

পিরিয়ড মিস হওয়ার পর যদি আপনার সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বমি বমি ভাব কিংবা বমির সমস্যা দেখা দেয় তাহলে গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায়। এটি সাধারণত বিভিন্ন ধরনের হরমোনের পরিবর্তনের কারণে হয়ে থাকে যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে মর্নিং সিকনেস বলা হয়ে থাকে।

বারবার প্রস্রাব

পিরিয়ড মিস হওয়ার পরে ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ আশা গর্ভবতী হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ। সাধারণত গর্ভবতী অবস্থায় গর্ভাশয়ের কারণে ব্লাডারে অতিরিক্ত পরিমাণ চাপ সৃষ্টি হয় যার কারণে আপনার ঘনঘন প্রস্রাবের ইচ্ছা করে এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই এটি গর্ভবতী হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ এবং এটা ক্রমাগত থাকবে।

ক্ষুধার পরিবর্তন

অসুরক্ষিত যৌন মিলনের পর যদি আপনার পিরিয়ড মিস হয় এবং পাশাপাশি যদি আপনার খাবারে


অরুচি কিংবা অতিরিক্ত খাবার ইচ্ছা হয়ে থাকে তাহলে এটি গর্ভবতী হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ ধরা হয়।

পেটে কড়কানি বা ফোলা

পিরিয়ড মিস হওয়ার আগে বা পরে যদি আপনার গর্ভধারণের নিশ্চয়তা থেকে থাকে তাহলে আপনার বিভিন্ন শারীরিক পরিবর্তন যেমন পেটে হালকা ব্যথা কড়কানি কিংবা ফোলা ভাব দেখা দিতে পারে। এটা গর্ভবতী হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ গুলোর মধ্যে একটি।

মুড সুই

পিরিয়ডের সময় মেয়েদের মুড সুইং হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু এটা যদি আপনার অসুরক্ষিত যৌন মিলনের পর দেখা যায় এবং পাশাপাশি আপনার পিরিয়ড মিস হয়ে থাকে তাহলে এটা গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ এর দিকে ইঙ্গিত করে।

মাথাব্যথা কিংবা মাথা ভারী হওয়া

সাধারণত পিরিয়ড মিস হওয়ার আগে অসুরক্ষিত যৌন মিলনের কারণে শরীরে রক্ত সঞ্চালন ও হরমোনের স্তরগুলো বৃদ্ধি পেতে থাকে যার ফলে অতিরিক্ত মাথা ব্যথা কিংবা মাথা ভারী হয়ে থাকার মত সমস্যা সৃষ্টি হয়। এ লক্ষণ সাধারণত পিরিয়ড মিস হওয়ার আগেই তীব্রভাবে প্রকাশ পায়।

গলা শুকিয়ে আসা

অসুরক্ষিত যৌন মিলনের পর যদি আপনার ঘন ঘন জল তেষ্টা পায় কিংবা গলা শুকিয়ে আছে তাহলে আপনি প্রেগনেন্সি টেস্ট করাতে পারেন। পিরিয়ড মিস হওয়ার আগে সাধারণত মেয়েদের মুখ ফোলা ভাব এবং শরীরে হাঁসফাঁস হয়ে যাওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায় যেগুলো গর্ভবতী হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ।

ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ

বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের কারণে মহিলাদের ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ কিংবা পিরিয়ড মিস হওয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে এটি পিরিয়ড মিস হওয়ার আগে বা পরে গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ করতে পারে। সাধারণত গর্ভ ধারণের প্রথম তিন মাসে ভ্যেজাইনাল ডিসচার্জ এর লক্ষণগুলো বিভিন্ন হরমোনের পরিবর্তনের কারণে মহিলাদের ক্ষেত্রে দেখা যায়।

শরীরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি

পিরিয়ড মিস হওয়ার আগে কিংবা পরে গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ হিসেবে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়াও বিভিন্ন সংক্রমণ বা সর্দি-কাশির কারণে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। সাধারণত গর্ভধারণ করলে প্রজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধির কারণে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। যদি আপনার পিরিয়ড মিস হওয়ার পরে 20 দিনের মধ্যে ওভুলেশানের কারণে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে তাহলে এটি গর্ভবতী হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ প্রকাশ করে।

ভ্যাজাইনাল ব্লিডিং

পিরিয়ডের আগে যদি আপনার ভ্যাজাইনাল ব্লিডিং,স্পটিং কিংবা ক্র্যাম্পস এর লক্ষণ প্রকাশ পায় তাহলে আপনার প্রেগনেন্সি পরীক্ষা করানো উচিত। কেননা গর্ভধারণ হলে এ সকল লক্ষণ গুলো প্রকাশ পায়।

গন্ধ সংবেদনশীলতা

অসুরক্ষিত যৌন মিলনের পর যদি আপনার পিরিয়ড মিস হয় এবং পাশাপাশি যদি আপনার ঘ্রাণ তীব্র ভাবে প্রকাশ পায়। যেমন খুব হালকা গন্ধ গুলো আপনার অসহ্য মনে হয় তাহলে আপনার প্রেগনেন্সি টেস্ট করানো উচিত। কেননা এগুলো গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ করে।

সার্ভিকাল শ্লেষ্মা বা মিউকাসের পরিবর্তন

অসুরক্ষিত যৌন মিলনের পর যদি আপনার পিরিয়ড মিস হয় এবং পাশাপাশি আপনার যোনি থেকে সাদা রংয়ের স্রাব কিংবা সার্ভিকাল মিউকাস ক্ষরণ এর লক্ষণ প্রকাশ পায় তাহলে আপনার গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সাধারণত গর্ভধারণের সময় সার্ভিকাল মিউকাস ঘন এবং ক্রিমের মতো হয়ে থাকে।

এতে ভয় পাওয়ার কিংবা ঘাবড়ানোর কারণ নেই সাধারণত ডিম্বানু নিষিক্ত হওয়ার কারণে এটা হয়ে থাকে এবং এটা গর্ভাবস্থার পুরো সময় ধরেই চলতে থাকে। স্রাব এর পরিমাণ আপনার গর্ভ অবস্থায় বৃদ্ধির পাশাপাশি স্রাবের পরিমাণ বাড়তে থাকে যাকে চিকিৎসা ভাষায় লিউকোরিয়া বলে।

অম্বল বা বুক জ্বালাপোড়া করা

পিরিয়ড মিস হওয়ার আগে গর্ভধারণের লক্ষণ প্রকাশ পেলে আপনার বুক জ্বালাপোড়া কিংবা অম্বল হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়। এগুলো সাধারণত প্রোজেস্টরণ ও রিলাক্সিন হরমোনের মাত্রার বৃদ্ধির কারণে হয়ে থাকে যার কারণে পরিপাকতন্ত্রের হজম প্রক্রিয়া ধীরগতিতে চলে।

অতিরিক্ত লালা তৈরি হওয়া

পিরিয়ড মিস হওয়ার আগে এবং অসুরক্ষিত যৌন মিলনের পর যদি আপনার লালার পরিমাণ বৃদ্ধি পায় তাহলে এটি আপনার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ করে। যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় টিয়ালিজম গ্ৰ্যাভিড্যারাম বলা হয়ে থাকে।এই লক্ষণগুলো সাধারণত অসুরক্ষিত যৌন মিলনের পর পিরিয়ড মিস হওয়ার আগে প্রকাশ পায়। যা আপনার পাকস্থলীর এসিডের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে আপনার মুখ, দাঁত ও গলা কে সুরক্ষা প্রদান করে থাকে।

উপরোক্ত লক্ষণগুলো ছাড়াও আপনার আরও বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে যেমন:
  1. স্তন নরম হতে দেখা
  2. অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়া কিংবা হ্রাস পাওয়া
  3. পায়ে খিল ধরার লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া
  4. পিঠের নিচের অংশে এবং শ্রোণীতেও ব্যাথা হতে পারে
  5. নির্দিষ্ট কিছু খাবারের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি পাওয়া
  6. পছন্দের কিছু খাবারের প্রতি অনিহা সৃষ্টি হওয়া
  7. কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া
  8. যোনিপথে হালকা রক্তক্ষরণ হওয়া
  9. মুখে অদ্ভুত ধরনের স্বাদ অনুভব হওয়া
উপরোক্ত লক্ষণ গুলো যদি আপনার পিরিয়ড মিস হওয়ার আগে কিংবা পরে অসুরক্ষিত যৌন মিলনের পর দেখা যায় তাহলে আপনার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ বলে ধরে নেওয়া হয়। তাই শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার জন্য আপনার প্রেগনেন্সি চেক করে নেওয়া উচিত।

পিরিয়ডের আগে সাদাস্রাব গর্ভাবস্থার লক্ষণ

পিরিয়ডের আগে সাদাস্রাব গর্ভাবস্থার লক্ষণ কিনা এটা নিয়ে সকল নারীর মনে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন জাগ্রত হয়। সাধারণত পিরিয়ডের আগে সকল নারীর ক্ষেত্রেই শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধির কারণে লোশন এর মত পাতলা সাদা স্রাব দেখা দেয়। কিন্তু অসুরক্ষিত যৌন মিলনের পর এবং পিরিয়ডের মিস হওয়ার আগে যদি আপনার ঘন দুধের মতো সাদা স্রাব বের হয় তাহলে সেটা আপনার গর্ভাবস্থার লক্ষণ হতে পারে।


এবং এই সাদা স্রাব আপনার পুরো গর্ভাবস্থায় জুড়ে থাকতে পারে। চিকিৎসকদের মতে পিরিয়ডের আগে যদি আপনার ঘন সাদা স্রাব দেখা দেয় পাশাপাশি গর্ভাবস্থার বিভিন্ন লক্ষণ গুলো প্রকাশ পায় তাহলে এটা আপনার গর্ব অবস্থায় কিংবা গর্ভবতী হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। পিরিয়ডের আগে সাদাস্রাব বের হওয়ার কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা বলেছেন যখন যোনিপথে কিংবা গর্ভাশয়ের মধ্যে ডিম্বানু নিষিক্ত হয় তখন যোনির ভেতর বিভিন্ন হরমোনের পরিবর্তনের কারণে পিরিয়ডের আগে সাদা স্রাব বের হয়। যাকে ডাক্তারি ভাষায় লিউকোরিয়া বলা হয়ে থাকে।

এ সময় সাধারণত পাতলা কিংবা দুধের মত সাদা ধরনের সাদা স্রাব দেখা দিতে পারে। যা আপনার গর্ব অবস্থায় কিংবা গর্ভবতী হওয়ার প্রথম স্তরের লক্ষণ। আপনার যদি ঘর বাঁচায় ডিম বানানো সিক্ত হয়ে থাকে তাহলে পিরিয়ডের আগে সাদা স্রাব দেখা দিতে পারে এতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই এটা স্বাভাবিক একটা প্রক্রিয়া। চিকিৎসকদের মতে পিরিয়ডের আগে সাদা স্রাব গর্ভাবস্থায় একটি প্রথম স্তরের লক্ষণ যা এ সময়ের শরীরে প্রজেস্টেরন ও রিলাক্সিন হরমোনের বৃদ্ধি এবং জরায়ুর বিভিন্ন পরিবর্তনের কারণে দেখা যায়।

সাদা স্রাব হলে কি বাচ্চা হয়

সাদাস্রাব সাধারণত শরীরকে ভেতর থেকে পরিষ্কার রাখার কাজ করে থাকে। জি হ্যাঁ সাদাস্রাব হলে আপনার গর্ভধারণ কিংবা বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সাদা স্রাব সাধারনত আমাদের গর্ভাশাকে রক্ষা করে থাকে সাদাস্রাবের মাধ্যমে গর্ভাশয় থেকে যাবতীয় ময়লা আবর্জনা বের করে দিতে। যেটা গর্ভাবস্থায় কিংবা বাচ্চা হওয়ার একটি প্রাথমিক লক্ষণ। যোনিপথে ঘন ঘন সাদা স্রাব বের হওয়া গর্ভাবস্থায় কিংবা বাচ্চা হওয়ার লক্ষণগুলো প্রকাশ করে।

সাদা স্রাব হলে কি ক্ষতি হয়

সাদাস্রাব বের হওয়া কিংবা ক্ষরণ হওয়া গর্ভ অবস্থায় প্রাথমিক একটি লক্ষণ হলেও। আরো বিভিন্ন কারণে সাদাস্রাব ক্ষরণ হতে পারে। পিরিয়ডের আগে কিংবা পরে যদি আপনার দুধের মত সাদা এবং পাতলা ধরনের সাদা স্রাব বের হয় তাহলে সেটি আপনার গর্ভধারণ কিংবা বাচ্চা হওয়ার লক্ষণ গুলোর মধ্যে একটি। কিন্তু সেই সাদা স্রাবে নিচের বৈশিষ্ট্যগুলো প্রকাশ পায় তাহলে সেটা আপনার ক্ষতির কারণ হতে পারে। যেমন:
  1. সাদা স্রাব থেকে অতিরিক্ত গন্ধ বের হওয়া
  2. লাল,সবুজ,হলুদ কিংবা ধূসর রঙের সাদা স্রাব বের হওয়া
  3. সাদাস্রাবের সাথে যোনিপথের আশপাশে ব্যথা কিংবা চুলকানির সমস্যা দেখা দেওয়া
  4. প্রস্রাবের সাথে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা অনুভব হওয়া
  5. যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়া করা চুলকানো এবং লালচে ভাব প্রকাশ পেলে
সাদা স্রাবের এই লক্ষণগুলো যদি আপনি আপনার মধ্যে দেখতে পান তাহলে এগুলো আপনার ক্ষতির কারণ হতে পারে যার জন্য দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এগুলো সাধারণত যোনিপথে ইনফেকশনের কারণে হয়ে থাকে।

গর্ভবতী হলে সাদা স্রাব কেমন হয়

অনেকেই পিরিয়ড মিস হলে কিংবা অসুরক্ষিত যৌন মিলনের পর যোনিপথে সাদাস্রাব মিশ্রিত হওয়ার কারণে দুশ্চিন্তায় ভুগে থাকেন। এগুলো গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে এছাড়াও বিভিন্ন কারণে সাদাস্রাব মিশ্রিত হয়। সেক্ষেত্রে আপনাকে যোনিপথে সাদাস্রাব নিঃসরণের ভাল কারণগুলো খারাপ কারণ গুলো সম্পর্কে জানা প্রয়োজন।

আর্টিকেলটির এর আগের অংশে আমরা যোনিপথে সাদা স্রাব ক্ষরণের খারাপ লক্ষণগুলো সম্পর্কে আলোচনা করেছি। সাদা স্রাবের এ সকল লক্ষণ গুলো যদি আপনার প্রকাশ পায় তাহলে সেগুলো আপনার ক্ষতির কারণ হতে পারে। আর্টিকেলটির এই অংশ আমরা জানব গর্ভবতী হলে সাদা স্রাব কেমন হয়। সাধারণত গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে সাদাস্রাব পাতলা দুধের মতো হয়ে থাকে এবং দুধের মত সাদা রং দেখা দেয়।

যেমনটা পানির মধ্যে দুধগুলে দিলে হয় সেরকম। পাশাপাশি সাদা স্রাবের হালকা গন্ধ থাকতে পারে এবং এটি পুরো গর্ভাবস্থা জুড়ে দেখা যায়। এ ধরনের সাদা স্রাব যদি আপনার মিশ্রিত হয় তাহলে ভয়ের কোন কারণ নেই এটি গর্ভবতী হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ। কিন্তু আপনার সাদা স্রাবের রং যদি পরিবর্তিত হয় কিংবা বিশ্রী গন্ধ পাশাপাশি যোনিপথে চুলকানি ও লালচে ভাব কিংবা যোনিপথ ফুলে যাওয়ার মত লক্ষণ প্রকাশ পায় সেগুলো আপনার ক্ষতির কারণ হতে পারে।

তাই সাদা স্রাবের এসকল লক্ষণ গুলো প্রকাশ পেলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন না হলে পরবর্তীতে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সাদা স্রাব কি খেলে ভালো হয়

মহিলাদের যোনিপথে সাদা স্রাব বের হওয়া একটি সাধারন ব্যাপার। সকল মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি প্রকাশ পায়। এটি কোন রোগের লক্ষণ নয় তবে যদি আপনার সাদা স্রাবের রং সাদা ব্যতীত অন্য কোন রংয়ের হয়ে থাকে পাশাপাশি যোনি পথে চুলকানি কিংবা লালচে ভাব ও ফোলা ভাবের মত সমস্যা দেখা দেয় সেগুলো আপনার জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।


এ সকল লক্ষণগুলো প্রকাশ পেলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা অতিরিক্ত পরিমাণ স্রাব বের হওয়া কিভাবে ঘরোয়া মাধ্যমে বন্ধ করা যায় সেসবগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই আপনিও যদি এ সকল সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো।

মেথি

মেথি সেদ্ধ পানি আপনার সাদা স্রাবের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করতে পারে। এর জন্য আপনাকে আধা লিটার পানিতে পরিমাণ মতো মেথি বীজ দিয়ে সেদ্ধ করতে হবে। পানির পরিমাণ অর্ধেক না হওয়া পর্যন্ত সেদ্ধ করা যেতে পারে। এরপর পানি ঠান্ডা হয়ে এলে মেথি সেদ্ধ পানি পান করতে পারেন এতে আপনার অতিরিক্ত সাদাস্রাব বের হওয়ার সমস্যা দূর হবে।

ঢেঁড়স

সিদ্ধ ঢেঁড়স কিংবা ঢেঁড়সের তরকারি আপনার সাদাস্রাবের সমস্যা ঘর হবে দূর করার ক্ষেত্রে ভালো উপকারী। পরিমাণ মতো পানিতে কয়েকটি ঢেঁড়স সিদ্ধ করে সাধ বাড়ানোর জন্য আপনি চাইলে দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন এতে আপনার সাদা স্রাবের সমস্যা দূর হবে।

ধনিয়া

কিছুটা দুনিয়া পরিমাণ মতো পানিতে ভিজিয়ে সারা রাতে রেখে দিন এরপর সকাল বেলা পাতলা কাপড় কিংবা ঝাঁকুনি দিয়ে দুনিয়া থেকে পানিটুকু খালি পেটে পান করুন এটা আপনার সাদা স্রাবের সমস্যা অনেকটা কমে আসবে।

আমলকি

ভিটামিন সি ও বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরপুর আমলকি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি আমাদেরকে শারীরিক সুস্থতা প্রদান করতে এবং সাদাস্রাবের সমস্যা দূর করতে অনেক ভালো কাজ করে। এর জন্য আপনি আমলকি বিভিন্নভাবে খেতে পারেন আমলকি কাঁচা চিবিয়ে খাওয়া যায়,আমলকি শুকিয়ে গুঁড়ো করে খাওয়া যায় এছাড়া মোরব্বা কিংবা ক্যান্ডি তৈরি করেও আমলকি খাওয়া যেতে পারে।

তুলসী পাতা

প্রাচীন যুগ থেকেই ভিন্ন ধরনের রোগের ঔষধি গুনাগুন রয়েছে তুলসী পাতার মধ্যে। আপনি যদি প্রতিদিন সকালবেলা খালি পেটে তুলসী পাতার রস কিংবা তুলসী পাতা পানিতে সিদ্ধ করে সেই পানি এবং স্বাদ বাড়ানোর জন্য পরিমাণ মতো মধু যোগ করে খেতে পারেন তাহলে আপনার সাদা স্রাবের সমস্যা দ্রুত কমে আসবে সাহায্য করবে। দ্রুত ফলাফল পাওয়ার জন্য এই মিশ্রণটি আপনাকে দিনে দুইবার পান করতে হবে। এছাড়াও আপনি চাইলে তুলসী পাতার রস দুধের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।

ভাতের মাড়

সাদাস্রাবের সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তি পেতে আপনি চাইলে নিয়মিত ভাতের মাড় খেতে পারে। যারা দীর্ঘদিন ধরে সাদাস্রাবের সমস্যায় ভুগছেন তাদের সাদা স্রাবের সমস্যা দূর করতে ভাতের মার একটি কার্যকরী উপাদান হবে।

পেয়ারা পাতা

যোনি পথে চুলকানি কিংবা অতিরিক্ত পরিমাণ সাদা স্রাবের সমস্যা দূর করতে পেয়ারা পাতা খুবই ভালো কাজ করে। এর জন্য আপনাকে কয়েকটি পেয়ারা পাতা পরিমাণ মতো পানিতে সিদ্ধ করে সেই সিদ্ধ পানি ঝাঁকুনির সাহায্যে ছেঁকে ঠান্ডা হওয়ার পর পান করতে হবে। দ্রুত ফলাফলের জন্য আপনাকে পেয়ারা পাতা সিদ্ধ পানি দিনে দুইবার পান করা উচিত। এতে দ্রুত সাদা স্রাবের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

আদা

অতিরিক্ত সাদা স্রাব বা লিউকোরিয়া থেকে মুক্তির জন্য ঘরোয়া উপায়ে চিকিৎসা হিসেবে আপনি আদা খেতে পারেন। এর জন্য প্রথমে আপনাকে আদাকে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে এরপর সেটাকে গুঁড়ো করে নিতে হবে। প্রতিদিন এক চামচ অথবা দুই চামচ পরিমাণ আগা গুঁড়ো পরিমাণ মতো পানির সাথে মিশিয়ে সেদ্ধ করতে হবে। এবং পানির পরিমাণ যখন অর্ধেক হয়ে আসবে তখন সেই পানি পরিষ্কার কাপড় কিংবা ঝাঁকুনি দিয়ে ছেঁকে প্রতিদিন ৩ সপ্তাহ পান করতে হবে। এতে আপনি দ্রুত সাদাস্রাব বা লিউকোরিয়া রোগ থেকে মুক্তি পাবেন।

অ্যাপেল সিডার ভিনেগার

আপনার অতিরিক্ত সাদাস্রাব এবং সাদা স্রাবের সাথে চুলকানি কিংবা ফোলা ভাব দূর করার জন্য অ্যাপেল সিডার ভিনেগার একটি কার্যকারী উপাদান। এর জন্য আপনাকে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহার করে আপনার যোনিপথ এর চারিপাশে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে এভাবে দিনে দুবার করে কয়েকদিন ব্যবহারের পর আপনি সাদাস্রাব এর সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

কলা

সাদা স্রাব থেকে মুক্তি পেতে আপনি যদি প্রতিদিন কলা খেতে পারেন তাহলে এটা খুব ভালো উপকারী। কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ খনিজ ও রোগ প্রতিরোধক উপাদান যা আপনার লিউকোরিয়া রোগ থেকে মুক্তি দিতে এবং সাদা স্রাবের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে। যোনির এলাকাকে সাদা স্রাবের সমস্যা থেকে দূরে রাখতে এবং লিউকোরিয়া রোগ প্রতিরোধ করতে প্রতিদিন কম করে এক থেকে দুইটি পাকা কলা খেতে পারেন।

লেখক এর মন্তব্যঃপিরিয়ড মিস হওয়ার আগে গর্ভবতী হওয়ার সকল লক্ষণ সমূহ

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে যদি আপনার কোন উপকার হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধু বান্ধব দের মাঝে শেয়ার করবেন। আর্টিকেল সম্পর্কে যদি আপনার কোন মতামত বা পরামর্শ কিংবা মন্তব্য দিয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করতে পারেন। সকলে ভালো থাকবেন।আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজিটাল ব্লগ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪