OrdinaryITPostAd

খালি পেটে কলা খেলে কি হয়-কলা খাওয়ার উপকারিতা

আপনি যদি সকালে খালি পেটে কলা খেয়ে থাকেন কিংবা সকালে খালি পেটে কলা খাওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমরা সকালে খালি পেটে কলা খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানব। এছাড়াও আমরা কলা খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা এবং বেশি কলা খেলে কি হয় সে সম্পর্কেও আলোচনা করব।

ছবি

তাই আপনি যদি সকালে খালি পেটে কলা খাওয়ার চিন্তাভাবনা করে থাকেন কিংবা আগে থেকেই খান তাহলে অবশ্যই আপনার কলা খাওয়ার উপকারিতা ও এর অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে জানা জরুরী। আপনি যদি সকালে খালি পেটে কলা খাওয়ার উপকারিতা বা অপকারিতা গুলো সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো।

পোস্ট সূচিপত্রঃখালি পেটে কলা খেলে কি হয়-কলা খাওয়ার উপকারিতা

ভূমিকা

কলা আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য একটি উপকারী ফল। কলার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে যেগুলো আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং শরীরে পুষ্টির চাহিদা কমাতে সাহায্য করে। কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম এর মত উপাদান। এছাড়াও কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ভিটামিন বি ও ভিটামিন বি-৬।

এছাড়াও একাধিক পরিমাণে পুষ্টি উপাদান। যা আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন উপকারিতা দিয়ে থাকে। আমরা অনেকে ই সকালে খিদে লাগলে ফল হিসেবে কলা খেয়ে থাকি কিন্তু সকালে খালি পেটে কলা খেলে কি হয় সে সম্পর্কে আপনাদের জানা জরুরী। এতে করে আপনি কলা খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। 

আপনি ফল খান কিংবা অন্যান্য খাবার খান সব খাবারেরই কিছু উপকারিতা রয়েছে পাশাপাশি কিছু অপকারিতা রয়েছে। ট্রিপটোফ্যান সমৃদ্ধ কলা সকালে খালি পেটে খাবার ফেলে কি কি হয় বা কলা খাওয়ার উপকারিতাই বা কি? বেশি কলা খেলে কি হয় এগুলো সম্পর্কে জানতে অবশ্য সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল।

খালি পেটে কলা খেলে কি হয়

আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা সকালে খালি পেটে কলা খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবো। তাই সকালে খালি পেটে কলা খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ আর্টিকেল দিয়ে ধৈর্য সহকারে পড়ুন।

উপকারিতা

পুষ্টিগুণে ভরপুর: কলা অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে। পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে একটি মাঝারি আকারের কলার মধ্যে ১০৫ গ্রাম ক্যালরি, ২৮ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৩ গ্রাম ফাইবার, ১ গ্রাম প্রোটিন সহ ১৪ গ্রাম শর্করা থাকে। এছাড়াও কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি,ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম পটাশিয়াম সহ শরীরের জন্য উপকারী আরো অনেক পুষ্টি উপাদান। তাই সকালে খালি পেটে কলা খেলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়।

হজম শক্তি বৃদ্ধি করে: কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা আমাদের পরিপাকতন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে খাদ্য হজম হতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যাগুলো দূর করে। খালি পেটে কলা খেলে আপনি বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যা গুলো থেকে মুক্তি পাবেন।

শক্তি বৃদ্ধি করে: কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট ও শর্করা যা আমাদের তাৎক্ষণিক শক্তি প্রদানে সাহায্য করে। অনেকে আবার কলা কে প্রকৃতির এনার্জিবার বলে থাকেন। আপনি যদি সকালে ব্যায়াম করার আগে খালি পেটে কলা খেতে পারেন তাহলে আপনার তাৎক্ষণিক শক্তি জোগাতে এবং এনার্জিটিক রাখতে কলা বেশ উপকারী।

মেজাজ ভালো রাখে: আমাদের শরীরের মধ্যে সেরোটোনিন নামক এক ধরনের হরমোন রয়েছে যা আমাদের মেজাজ ভালো রাখতে এবং বিষন্নতা দূর করতে সাহায্য করে। কলার মধ্যে থাকা ট্রিপটোফ্যান উপাদানটি আমাদের মস্তিষ্কের সেরোটোনিন হরমোনের মাত্রাকে বাড়িয়ে তুলে এবং মেজাজ ভালো রাখে।


পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে আপনি যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে একটি করে কলা খান তাহলে আপনার শরীরে ২৭ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম এর ঘাটতি পূরণ হবে যা আপনার মন ভালো রাখতে এবং ঘুমের ক্ষেত্রে ভালো সাহায্য করবে।

ওজন কমাতে সহায়তা করে: কলাই ক্যালরির পরিমাণ কম থাকায় এবং ফাইবার বেশি থাকার কারণে আমাদের শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমতে দেয় না পাশাপাশি অতিরিক্ত ক্ষুধা লাগার প্রবণতাকে কমিয়ে আনে। আপনি যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কলা খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার ওজন কমাতে এবং শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণে কলার উপকারিতা তুলনাহীন।

কিডনি সুস্থ রাখে: আমাদের কিডনি সুস্থ রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পটাশিয়ামের উপস্থিত থাকা জরুরী। আপনার শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে যেমন ক্ষতি হয় তেমনি পটাশিয়ামের মাত্রা কমে গেলেও কিডনির নানা ধরনের জটিলতা দেখা দেয়।

সকালে খালি পেটে কলা খেলে কলার মধ্যে থাকা পটাশিয়াম আমাদের শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং কিডনির কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। পাশাপাশি পটাশিয়াম আমাদের কিডনি রোগের ঝুঁকি কমাতেও বেশ কার্যকরী। তাই সকলের প্রতিদিন সকালে খালি পেটে একটি করে কলা খাওয়ার অভ্যাস করা উচিত।

রক্তস্বল্পতা দূর করে: কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন যা আমাদের রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে রক্তস্বল্পতা দূর করে। বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে রক্তস্বল্পতা বা অ্যানিমিয়ার মত সমস্যাগুলো দূর করতে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কলা খাওয়া উচিত।


অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতার কারণে যারা শরীরে অধিক পরিমাণ ক্লান্তি অনুভব করেন বা শ্বাসকষ্টের সমস্যা সৃষ্টি হয় তারা চাইলে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কলা খেতে পারেন। এছাড়াও কলার মধ্যে থাকা আয়রন আমাদের রক্তের লোহিত রক্ত কণিকা গঠনে এবং কলার মধ্যে থাকা ভিটামিন বি-৬ রক্তে গ্লুকোজের মেটাবলিজমের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেশ কার্যকরী।

স্মৃতিশক্তি বাড়াই: কলার মধ্যে থাকা ভিটামিন বি-৬ ও ম্যাগনেসিয়াম আমাদের মস্তিষ্কের হরমোন গুলোর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। তাই যাদের পড়াশুনায় মন বসে না কিংবা কাজে মন দিতে সমস্যা হয় তারা চাইলে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কলা খেতে পারেন।

মানসিক চাপ কমায়:কলার মধ্যে থাকা ট্রিপটোফ্যান উপাদান আমাদের মস্তিষ্কের সেরোটোনিন হরমোনের মাত্রা কে বাড়িয়ে তুলে এবং কলার মধ্যে থাকা পটাসিয়াম ও ভিটামিন বি-৬ উপাদান আমাদের মানসিক চাপ কমাতে এবং মস্তিষ্কের নার্ভের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: উচ্চ রক্তচাপ আমাদের হৃদরোগের বিভিন্ন সমস্যার অন্যতম একটি কারণ। কলার মধ্যে রয়েছে উচ্চমাত্রায় পটাশিয়াম যা আমাদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। তাই আপনি যদি সকালে খালি পেটে কলা খেতে পারেন তাহলে আপনার হৃদরোগের ঝুঁকির সম্ভাবনা কমে আসবে।

অপকারিতা

প্রিয় পাঠক আপনারা এতক্ষণ সকাল বেলা খালি পেটে কলা খাওয়ার উপকারিতা গুলো সম্পর্কে জানলেন। কিন্তু সকালে দীর্ঘদিন খালি পেটে কলা খেলে কিংবা অতিরিক্ত কলা খেলে এর বিভিন্ন অপকারিতা প্রকাশ পায়। সকালে খালি পেটে কলা খেলে ছোট বড় মাঝারি ধরনের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। একজন সুস্থ মানুষের দিনে ২ থেকে ৩ টির বেশি কলা খাওয়া উচিত নয়। তাই অবশ্যই আপনাকে সকালে খালি পেটে কলা খাওয়ার আগে এর সকল উপকারীতা ও অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে জানতে হবে।

অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক

ওজন বৃদ্ধি করে: কলা যেমন আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে তেমনি সকালে খালি পেটে অতিরিক্ত কলা খাওয়ার ফলে আপনার ওজন বেড়ে যেতে পারে। বিশেষ করে যারা অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগছেন তারা সকালে খালি পেটে অতিরিক্ত কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন এতে আপনার ওজন কমার পরিবর্তে বেড়ে যেতে পারে। আপনি চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সকালে খালি পেটে কলা খেতে পারেন।

কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা: কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে স্টার্ট যা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যাকে বাড়িয়ে তুলে। তাই যারা সকালে খালি পেটে দুইটির বেশি কলা খেয়ে থাকেন তারা একটু সতর্ক হয়ে খাবেন কেননা স্টার্চ এর পরিমাণ বেড়ে গেলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যা দেখা দিতে পারে এছাড়াও যারা পাইলস বা অর্শ রোগের সমস্যায় রয়েছেন তারা সকালে খালি পেটে কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।

পেটের সমস্যা:আপনি যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে নিয়ম মেনে পরিমান মত কলা খেতে পারেন তাহলে আপনার গ্যাস সহ পেটে যাবতীয় সমস্যা কমে আসবে। কিন্তু আপনি যদি সকালে খালি পেটে অতিরিক্ত পরিমাণখোলা খেয়ে থাকেন তাহলে কলার মধ্যে থাকা ফাইবার আপনার দেহে অতিরিক্ত পরিমাণ বেড়ে যাবে যার কারণে বদ হজম,কোষ্ঠকাঠিন্য ও আরো বিভিন্ন ধরনের পেটের সমস্যায় আপনাকে ভুগতে পারে।

ব্লাড সুগার বেড়ে যাওয়া: যে সকল রোগীরা ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছেন তারা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া সকালে খালি পেটে কলা খাবেন না। এতে আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে যার কারণে আপনার ডায়াবেটিস এর সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে এবং আপনার ওষুধের ডোজ বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে। তাই ডায়াবেটিসের রোগীদের সকালে খালি পেটে কলা খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।


দাঁতের সমস্যা: সকালে অতিরিক্ত কলা খাওয়ার ফলে দাঁতের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। কলার মধ্যে মিষ্টির পরিমাণ কিছুটা বেশি, যা দাঁতের ক্ষয় হওয়ার কিংবা দাঁতে ক্যাভিটির সমস্যাগুলো বাড়িয়ে তোলে। তাই আপনি যদি অল্প বয়সে দাঁতের অসুখের খপ্পরে পড়তে না চান তাহলে সকালে খালি পেটে অতিরিক্ত কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

মাইগ্রেনের সমস্যা: যারা মাইগ্রেনের সমস্যায় ভুগছেন তারা সকালে খালি পেটে কলা এড়িয়ে চলুন। সকালে খালি পেটে কলা খেলে কলার মধ্যে থাকা টাইরামাইন নামক উপাদান মাইগ্রেনের সমস্যাকে আরো বৃদ্ধি করতে পারে।

হাইপারক্যালিমিয়া: সাধারণত রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে হাইপারক্যালিমিয়ার সমস্যা দেখা দেয়। যার কারণে রোগীরা সহজে ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং হৃতিস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে যায়। কলার মধ্যে থাকা পটাশিয়াম আপনার শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা কে অতিরিক্ত বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই সকালে খালি পেটে অতিরিক্ত কলা খাওয়ার ব্যাপারে বিশেষ সতর্কতা পালন করা উচিত।

ক্লান্তি হতে পারে: কলার মধ্যে থাকার ট্রিপটোফ্যান অ্যামাইনো এসিড আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা রাশ করতে পারে। যার কারণে আমাদের অতিরিক্ত ক্লান্তি এবং ঘুম বেশি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। তাই আপনার যদি এই সমস্যাগুলো সৃষ্টি হয় তাহলে তৎক্ষণাৎ সকালে খালি পেটে কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি: কলার মধ্যে উপস্থিত ভিটামিন বি-৬ আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে যতটুকু কার্যকরী এর পরিমাণ যদি শরীরে মাত্রাতিরিক্ত হয় তাহলে ক্ষতির পরিমাণ তার চেয়ে অনেক বেশি। তাই সকালে খালি পেটে অতিরিক্ত কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন অন্যথায় হিতে বিপরীত হতে পারে।

এলার্জির সমস্যা: অনেকের কলা খাওয়ার ফলে এলার্জির সমস্যা সৃষ্টি হয়। যার কারনে গলা জ্বালা করা কিংবা ঠোঁট ফুলে যাওয়ার মত সমস্যা দেখা দেয়। তাই যাদের কলা খাওয়ার ফলে এলার্জির লক্ষণ প্রকাশ পায় তারা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া সকালে খালি পেটে কলা খাবেন না।

শ্বাসকষ্ট: কলাতে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান থাকায় তা আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী। তবে কিছু কিছু রোগী আছে যাদের জন্য সকালে খালি পেটে কলা খাওয়ার ফলে বিভিন্ন অপকারিতা প্রকাশ পায়। যেমন যে সকল রোগীদের শ্বাসকষ্টে সমস্যা রয়েছে কিংবা শ্বাস যন্ত্রের সমস্যা রয়েছে তারা যদি সকালে খালি পেটে অতিরিক্ত মাত্রায় কলা খেয়ে থাকে তাহলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।

কলা খাওয়ার উপকারিতা

প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আমরা জানলাম সকালে খালি পেটে কলা খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায় এবং কি কি ক্ষতি হয় সে সম্পর্কে। আর্টিকেলটির এ অংশে আমরা কলা খাওয়ার সকল উপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই কলা খাওয়ার সকল উপকারিতা গুলো সম্পর্কে জানতে সম্পন্ন আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করে: কলার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন যা আমাদের শরীরে ফ্রী রেডিক্যাল গুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে যা ক্যান্সার কোচ সৃষ্টির জন্য অন্যতম। বিশেষ করে কলার মধ্যে থাকা ভিটামিন সি এবং ফ্ল্যাভোনয়েড আমাদের শরীরে ক্যান্সার কোষ গুলোকে বাসা বাঁধবে দেই না এবং ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।

হাড় মজবুত করে: কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম যা আমাদের হারের শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাই আপনি যদি প্রতিদিন অন্তত একটি করে কলা খেতে পারেন তাহলে আপনার হার মজবুত হবে এবং অস্টিওপোরোসিস এর মত রোগের ঝুঁকি কমে আসবে।

ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে: ভিটামিন এর ঘাটতি পূরণে কলা বেশ কার্যকারী একটি ফল। প্রতিদিন কলা খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে ভিটামিন বি-৬ এর ৫ শতাংশ ঘাটতি পূরণ হয় এছাড়াও শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য প্রাকৃতিকভাবে ইনসুলিন উৎপন্ন করতে সাহায্য করে এবং হিমোগ্লোবিন ও অ্যামিনো অ্যাসিড গঠিত বেশ কার্যকারী। এছাড়াও কলা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে ভিটামিন সি এর ১৫ শতাংশ ঘাটতি পূরণ হয়।

পেশি গঠনে সহায়তা করে: কলার মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের পেশির গঠন মজবুত করতে এবং এসিতে টান লাগার সমস্যা প্রতিরোধে বেশ কার্যকারী।

ডায়রিয়ার জন্য উপযোগী: কলাই উপস্থিত প্রতিরোধী স্টার্চ পরিপাকতন্ত্রের প্রক্রিয়াকে সচল করতে এবং বৃহদান্তে গিয়ে স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া গুলোকে সঠিকভাবে খাদ্য পরিপাকে সহায়তা করে। যখন ডায়রিয়ার সমস্যা হয় তখন কলা খেলে শরীরের অপক্ষয়িত খনিজ পদার্থ পূরণে সাহায্য করে।

চুলের যত্নে: কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম ও ভিটামিন যা আমাদের চুলের ফলিকল গুলোকে শক্তিশালী করতে এবং চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এছাড়াও কলার পেস্ট চুলে লাগাতে পারেন তাহলে চুলের মসৃণতা ও উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।

ত্বকের যত্নে: কলার মধ্যে থাকা ভিটামিন সি ও এন্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও কলার মাখন টকে লাগালে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় এবং ত্বকের কোমলতা ফিরে আসে।

লিউকোমিয়া প্রতিরোধ করে: কলাতে রয়েছে লেকটিন নামক প্রোটিন যা ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষ লিউকোমিয়ার বৃদ্ধি প্রতিরোধে বেশ কার্যকারী।

চোখের সমস্যা দূর করে: আমাদের চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন এর প্রয়োজন রয়েছে। কলার মধ্যে টাকা ভিটামিন আমাদের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে এবং চোখের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন এর ঘাটতি পূরণে বেস কার্যকরী।

পেট পরিষ্কার রাখে: কলার মধ্যে দেখা ফাইবার আমাদের হজম শক্তিকে বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য ও গ্যাস্ট্রিকের মতো সমস্যাগুলো দূর করে পরিপাকতন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে: কলা মিষ্টি জাতীয় ফল হওয়ার সত্বেও ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য কলা খাওয়া নিষিদ্ধ নয়। কলার মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি প্রতিহত করে এবং শরীরে প্রাকৃতিকভাবে ইনসুলিন উৎপাদনের মাত্রা কে বাড়িয়ে তোলে। তাই ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য প্রতিদিন পরিমাণ মতো কলা খেলে বেশ উপকারিতা পাওয়া যায়।

লবণের ভারসাম্য বজায় রাখে:আমাদের অনেকেরই লবণ খাওয়ার প্রবণতা বেশি যার কারণে আমাদের শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায় যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বিভিন্ন ক্ষতির কারণ হতে পারে বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কলার মধ্যে থাকা পটাশিয়াম সোডিয়াম এর বিরুদ্ধে কাজ করে এবং হৃদরোগ ও স্ট্রোকের মত সমস্যার ঝুঁকি কমায়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: কলার মধ্যে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান গুলো আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান এবং ভিটামিন সি আমাদের কোষ গুলোকে অক্সিডেটিভ ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে এবং শ্বেত রক্ত কণিকার পরিমাণ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে যা প্যাথোজেন এর বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং আমাদের শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

প্রদাহ কমায়: প্রতিদিন কলা খাওয়ার ফলে কলার মধ্যে থাকা প্রদাহ বিরোধী উপাদান গুলো আমাদের শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। কলার মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও নির্দিষ্ট কিছু এনজাইম আমাদের শরীরে প্রদাহর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং ব্যথা ও ফোলা ভাব দূর করে।

সুস্থ গর্ভধারণ এ সমর্থন করে: হাজারো পুষ্টিগুণে ভরপুর কলা গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের এবং শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি এবং মায়ের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। কলার মধ্যে রয়েছে উচ্চমাত্রায় ফোলেট যা ভ্রূণের সঠিক বিকাশে সাহায্য করে এবং নিউরাল টিউব ত্রুটির ঝুঁকি কমিয়ে থাকে। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা এবং গর্ভাবস্থায় সাধারণ অস্বস্তি যেমন পায়ে ব্যথার সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।

আলসার প্রতিরোধ করে: যাদের পেটে আলসারের সমস্যা রয়েছে তারা প্রতিদিন কলা খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন। কলার মধ্যে থাকা মিউসিলেজ পাকস্থলীর প্রাচীরে ক্ষতিগ্রস্ত মিউকাস পর্দা কে সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে এবং আলসারের সমস্যা প্রতিরোধ করে থাকে।

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে: কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমানে ফাইবার যা পাকস্থলীর কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং পেটে অতিরিক্ত গ্যাস সৃষ্টি হওয়ার প্রবণতা কমিয়ে আনে। তাই যারা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত কলা খেতে পারেন এতে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে অনেকটা মুক্তি পাওয়া যাবে।

বেশি কলা খেলে কি হয়

প্রতিটি খাবারের কিছু উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। যদিও কলার মধ্যে থাকা পোস্ট উপাদান গুলো আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু অতিরিক্ত কলা খাওয়ার ফলে এই পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা বেশি কলা খেলে কি কি সমস্যা হতে পারে সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরুতে শেষ পর্যন্ত ধৈর্য সহকারে পড়ার অনুরোধ রইলো।

পেট ব্যথা:আমরা বাজার থেকে যে কলা গুলো কিনি তার অধিকাংশই রাসায়নিক পদার্থের সাহায্যে পাকানো হয়ে থাকে যার কারণে যখন আমরা বেশি পরিমাণে কলা খেয়ে ফেলি তখন আমাদের পেটের ব্যথার সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও কলার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে শর্করা থাকার কারণে আমাদের পেটের ব্যাথা হতে পারে।

কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা: কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার যা আমাদের হজমে সাহায্য করে। কিন্তু পরিপাকতন্ত্রের যদি এই ফাইবারের পরিমাণ অতিরিক্ত বেড়ে যায় তাহলে হজম প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটে যার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই বেশি কলা খাওয়া থেকে সতর্ক হওয়া উচিত।

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা: কলাতে রয়েছে ফ্রুক্টোজ ও ফাইবার যা পরিমাণ মতো খেলে তেমন কোনো সমস্যা দেখা যায় না। তবে এই দুটি উপাদান একসঙ্গে বেশি পরিমাণ বেড়ে গেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ডায়াবেটিসের ঝুঁকি: কলাই শর্করার পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি। তাই আপনি যদি বেশি পরিমাণে কলা খেয়ে ফেলেন তাহলে আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাবে এবং ইনসুলিন উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটবে যার কারণে ডায়াবেটিসের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

অনিদ্রার সমস্যা: বেশি পরিমাণে কলা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের ঘুমের হরমোন গুলোর নিয়ন্ত্রণ বিঘ্ন ঘটে যার কারণে আমাদের অনিদ্রায় সমস্যা বা ঘুম না হওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। তাই বেশি পরিমাণ কলা খাওয়ার ক্ষেত্রে বা রাতে কলা খাওয়ার ক্ষেত্রে বেশ সতর্ক হওয়া উচিত।

ঠান্ডা লাগা: বেশি পরিমাণ কলা খাওয়ার ফলে আমাদের ঠান্ডা লাগার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই যাদের আগে থেকে ঠান্ডা লেগে আছে তাদের ক্ষেত্রে বেশি পরিমাণ কলা না খাওয়াই ভালো বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে বেশি পরিমাণ কলা খাওয়ার ব্যাপারে সচেতন হওয়া উচিত।

ডায়রিয়ার সমস্যা: অতিরিক্ত পাকা কলার মধ্যে ছত্রাক বাসা বাঁধতে পারে যা আমরা সহজে খালি চোখে দেখতে পাই না। এই কলা খাওয়ার ফলে পেটে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণের কারণে ডায়রিয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।

কিডনির সমস্যা: কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম যা শরীরে বেশি পরিমাণে বেড়ে গেলে সরাসরি কিডনিতে প্রভাব দেখা যায়। তাই কিডনির সুরক্ষায় বেশি পরিমাণ কলা খাওয়া উচিত নয় বিশেষ করে যারা আগে থেকে কিডনি সমস্যায় ভুগছেন তারা সম্পূর্ণভাবে কলা এড়িয়ে চলুন।

লেখকের মন্তব্যঃখালি পেটে কলা খেলে কি হয়-কলা খাওয়ার উপকারিতা

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে যদি আপনার কোন উপকার হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন। আর্টিকেলটি সম্পর্কে যদি আপনার কোন মতামত বা মন্তব্য থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করতে পারেন। সকলে ভালো থাকবেন। আসসালামু আলাইকুম।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ পোস্টটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। অবশ্যই যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজিটাল ব্লগ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪