প্রচন্ড মাথা যন্ত্রণা কমানোর সকল ঘরোয়া উপায়
আপনি কি প্রচন্ড মাথা যন্ত্রণায় ভুগছেন? বিভিন্ন ধরনের ঔষধ খেয়ে দেখেছেন কিংবা বিভিন্ন অবলম্বন করেছেন তাও মাথা যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না। তাহলে আপনি সঠিক আর্টিকেলটিতে রয়েছেন। এ আর্টিকেলটিতে আমরা মাথা যন্ত্রণা কমানোর ঘরোয়া উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। এছাড়াও মাথা ব্যথার সাথে সম্পর্কিত আরো অনেক বিষয় এ আর্টিকেলটিতে থাকছে আপনার জন্য।
আপনার মাথার তালুতে ব্যথা হলে কি করণীয় এবং মাথার তালুতে ব্যাথার কারণ বাকি সে সম্পর্কেও আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন। এছাড়া আরো জানতে পারবেন ঘন ঘন মাথা ব্যথার কারণ কি? এই ঘন ঘন মাথা ব্যাথা আবার আপনার কোন রোগের লক্ষণ নয় তো? জ্বর কিংবা মাথা ব্যথা হলে আপনি কোন ঔষুধ খাবেন। সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা থাকছে এই আর্টিকেলটিতে। তাহলে দেরি কেন জেনে নিন মাথা ব্যথা সম্পর্কিত সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে। চলুন শুরু করা যাক।
পোস্ট সূচীপত্রঃ প্রচন্ড মাথা যন্ত্রণা কমানোর সকল ঘরোয়া উপায়
ভূমিকা
অনেক বেশি পরিমাণ কাজের চাপ এবং কম ঘুমের কারণে অনেক সময় আমরা মাথা যন্ত্রণার সমস্যার শিকার হই। এছাড়াও যাদের মাইগ্রেন বা সাইনাসের সমস্যা রয়েছে তাদের মাঝে মধ্যেই এ ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। এমনকি প্রচন্ড ঠান্ডার কারণেও প্রচন্ড মাথা যন্ত্রণা হতে পারে। তবে মাথা ব্যথা বা মাথা যন্ত্রণা যদি একদিনের বেশি স্থায়ী হয় তাহলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। মানসিক চাপ,কম পরিমাণ পানি পান করা, নিয়মিত খাবার না খাওয়া কিংবা ঘুমের বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তনের কারণে আমরা মাথা যন্ত্রণার শিকার হই।
সাধারণ মাথা যন্ত্রণার ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল কিংবা বেদনা নাশক ঔষুধ খাওয়া যায় তবে অতিরিক্ত পরিমাণ বেদনাশক ঔষুধ বা প্যারাসিটামল স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই আপনার স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রেখে কিভাবে ঘরোয়া উপায়ে আপনি আপনার মাথা যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে পারেন সে সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলটিতে আলোচনা করা হবে। সুতরাং আপনি কিংবা আপনার পরিবারের কেউ যদি মাথা যন্ত্রণার সমস্যাই থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই এই আর্টিকেলটি আপনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
মাথা যন্ত্রণা কমানোর ঘরোয়া উপায়
আদা চা:২০১৩ সালের একটি গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেছে যারা তীব্র মাথা যন্ত্রণা সমস্যায় ভুগে থাকেন তারা যদি নিয়মিত আদা চা খেয়ে থাকেন তাহলে খুব দ্রুত মাথা যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও আদা চায়ের পরিবর্তে আপনি মধু কিংবা তুলসী মেশানো চাও খেতে পারেন। ঘরোয়া উপায়ে মাথা যন্ত্রণা থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে আপনি এ সকল জাতীয় চা এর উপর বিশ্বাস রাখতে পারেন।
গরম সেঁক: অনেকের ক্ষেত্রে ঘুম থেকে উঠার পর মাথা যন্ত্রণার সমস্যা দেখা দেয়। এটি সাধারণত মাথায় রক্ত চলাচল কমে যাওয়ার কারণে হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে আপনি যদি গরম সেঁক নিতে পারেন তাহলে আপনার মাথায় রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হবে এবং আপনার ব্রেনের মাসল গুলো রিলাক্স হওয়ার সুযোগ পাবে। এবং খুব দ্রুত আপনার মাথা যন্ত্রণা কমে আসবে। তবে গরম সেঁক নেওয়ার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন সেঁক যাতে অতিরিক্ত গরম না হয়।
এক্সারসাইজ:আমাদের সাধারণ মাথা ব্যাথা কারণ গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে মাথার রক্ত চলাচল বা রক্ত প্রবাহ কমে যাওয়া। আপনার যদি অতিরিক্ত মাথা যন্ত্রণা সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আপনি প্রতিদিন সকালবেলা আধাঘন্টা থেকে এক ঘন্টা হালকা এক্সারসাইজ করতে পারে। এতে আপনার পুরো শরীরের মাসেলগুলো তে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পাবে এমন কি আপনার মাথার বা মস্তিষ্কের মধ্যে রক্ত প্রবাহ বেড়ে যাবে যেটা আপনার মাথা ব্যথা দূর করতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। হালকা এক্সারসাইজ হিসেবে আপনি হাটা চলা করতে পারেন কিংবা হালকা ভাবে দৌড়াতে পারেন।
ম্যাসাজ: সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর আপনার যদি প্রচন্ড মাথা যন্ত্রণা হয় সে ক্ষেত্রে আপনি মাথায় ম্যাসাজ নিতে পারেন। এতে আপনার মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে এবং দ্রুত মাথাব্যথা বা মাথা যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলবে।
প্রচুর পরিমাণ জল খাওয়া: অতিরিক্ত গরমে কিংবা শরীরে পানির পরিমাণ কমে গেলে ডিহাইড্রেশন থেকেও আমাদের প্রচন্ড মাথা যন্ত্রণা হতে পারে। বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন গবেষণায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে আপনার যদি প্রচন্ড মাথা যন্ত্রণা হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে আপনি প্রচুর পরিমাণ পানি পান করুন এবং এমন সকল খাবার বা ফল খান যেগুলোতে তরলের পরিমাণ বেশি এতে দ্রুত মাথা যন্ত্রণার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত খাবার: শরীরে ম্যাগনেসিয়ামের অভাবের কারণেও প্রচন্ড মাথা যন্ত্রণা হতে পারে। ম্যাগনেসিয়াম আমাদের রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে এমনকি নার্ভের ট্রান্সমিশনের কাজেও এটি সহায়তা করে। ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিন এবং ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন এর গবেষণা অনুসারে শরীরে ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতির কারণেও মাথা যন্ত্রণা দেখা দিতে পারে।
মদ্যপান থেকে দূরে থাকুন: মদ্যপান খুবই খারাপ অভ্যাস। মদ্যপান করার ফলে আমাদের রক্তনালী বড় হয় যার কারণে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। এমনকি শরীরের বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ তৈরিতে এবং আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের ক্যান্সারের কারণ মদ্যপান হতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখে গেছে যারা মদ্যপান করে কি নয় যাদের মধ্যপানের অভ্যাস রয়েছে তাদের মাথা যন্ত্রণা হয়ে থাকে।
সঠিক পরিমাণ ঘুম: আমাদের শরীরকে সুস্থ এবং সকল ধরনের রোগ থেকে বাঁচার প্রধান মাধ্যম হল পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম। সারাদিনের ক্লান্তির সকল ধরনের সমস্যা রাতে ঘুমানোর মাধ্যমে সেরে যায়। কিন্তু আপনার যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হয় সে ক্ষেত্রে আপনার মাথা যন্ত্রণা সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। ন্যাশনাল লাইব্রেরী অফ মেডিসিনের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যাদের ইনসোমেনিয়ার সমস্যা রয়েছে কিংবা যাদের ঘুম কম হয় তাদের মাথা ব্যথার আশঙ্কা কিংবা মাথা যন্ত্রণা হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি।
হিস্টামাইন যুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকুন: হিস্টামাইন হলো এক ধরনের রাসায়নিক উপাদান। যা আমাদের শরীরে প্রথম থেকে উপস্থিত থাকে। কিন্তু এর পরিমাণ যদি আমাদের শরীরে বেড়ে যায় তাহলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন ইমিউনিটি কমে আসা পেট খারাপ এবং স্নায়ুতন্ত্রের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা। এছাড়াও আরো যে সমস্যাটি হতে পারে সেটি হচ্ছে প্রচন্ড মাথা যন্ত্রণা। তাই অবশ্যই এ সকল খাবার থেকে আমাদের দূরে থাকতে হবে।
বিশ্রাম নিন: অতিরিক্ত কাজের প্রেসার ও মানসিক চাপের কারণে ও আমাদের মাথা ব্যথা কিংবা মাথা যন্ত্রণা অনুভব হয়। এই সময় যদি আপনি কোন অন্ধকার রুমে চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে পারেন তাহলে কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনার মাথা যন্ত্রণা কমে আসবে।
কোল্ড কমপ্রেস নিন: অতিরিক্ত মাথা যন্ত্রণা কিংবা মাথা ব্যাথা থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায় গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে অতিরিক্ত মাথা যন্ত্রণার সময় মাথার সামনের অংশে কোল্ড কমপ্রেস বা ঠান্ডা জাতীয় কিছু চেপে ধরা। এতে দ্রুত মাথা যন্ত্রণা কমে আসে।
অ্যারোমা থেরাপি: অ্যারোমা থেরাপি হিসেবে ল্যাভেন্ডার, পেপার মিন্ট কিংবা ইউক্যালিপটাস এর মত তেল মাথায় ব্যবহার করতে পারেন এতে দ্রুত মাথা যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এমনকি এর সুবাস নিলেও অনেকটা মাথা যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
দারচিনি: দারচিনিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান যা আমাদের স্নায়ুর প্রদাহ কমিয়ে মাথা যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে। আপনি যদি প্রচন্ড মাথা যন্ত্রণা সমস্যা থেকে থাকেন তাহলে দারুচিনি দেওয়া যা কিংবা দারুচিনি তেল মাথায় মালিশ করলে দ্রুত মাথা যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
লবঙ্গ: ঘরোয়া উপায়ে মাথা যন্ত্রণা থেকে মুক্তির আরও একটি খাবার হচ্ছে লবঙ্গ মেশানো চা। এর জন্য আপনি লবঙ্গ কে হালকা থেঁতো করে চায়ের সাথে মিশিয়ে খেলেও দ্রুত মাথা যন্ত্রণা দিয়ে মুক্তি পাওয়া যায় আপনি চাইলে লবঙ্গ নাকের কাছে ধরে গন্ধ শুকলেও ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা: ঠান্ডা আবহাওয়া কিংবা মাইগ্রেনের সমস্যা থেকে যে মাথা যন্ত্রণা সমস্যার সৃষ্টি হয় এমনটি কিন্তু নয় অনেক সময় অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণেও মাথা যন্ত্রণা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে মানসিক চাপ থেকে দূরে রাখার জন্য নিয়মিত যোগব্যায়াম,শরীরচর্চা বা প্রাণায়াম করা যেতে পারে।
মাথার তালুতে ব্যথার কারণ
আমাদের মধ্যে অনেকেই মাথার বিভিন্ন ধরনের ব্যথার সমস্যায় ভুগে থাকি। তার মধ্যে একটি হচ্ছে মাথার তালুতে ব্যথা। অনেকেই হয়তো জানে না মাথার তালুতে ব্যথা কেন হয়। আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আমরা মাথার তালুতে ব্যথার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারব।
মাথা যন্ত্রণা কিংবা মাথা ব্যাথার বিভিন্ন ধরনের কারণ রয়েছে। মাথার তালুতে ব্যথা তার মধ্যে একটি।
অতিরিক্ত মানসিক চাপ কিংবা উদ্বেগের কারণে সাধারণত আমাদের মাথার তালুতে ব্যথা হয়ে থাকে। মানসিক চাপ কিংবা অতিরিক্ত চিন্তা করার ফলে মাথার তালুতে তীব্র থেকে মাঝারি ধরনের ব্যাথা অনুভব হয়। অত্যাধিক পরিমাণ মানসিক চাপ কাজের প্রেসার এবং অতিরিক্ত উদ্বেগের কারণে মাথার তালু ব্যথা করতে পারে। সঠিক পরিমাণ ঘুম এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিলেই এ ধরনের সমস্যা দূর হয়। যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম এবং বিশ্রাম নেওয়ার পরেও আপনার মাথার তালুতে ব্যথা না কমে সেক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
মাথার তালুতে ব্যথা হলে করণীয়
মাথার তালুতে ব্যথা সাধারণত মানসিক চাপ কিংবা উদ্বেগের কারণে হয়ে থাকে। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের পাশাপাশি বিশ্রাম নেওয়ার ফলে মাথার তালুতে ব্যথা কমে যায়। আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা মাথার তালুতে ব্যথা কমানোর বা মাথার তালুতে ব্যথা হলে কি কি করা যায় বা করনীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে জানব।
১/মাথার তালুতে ব্যাথা হলে ব্যথা কমানোর জন্য ব্যথা উপশমকারী ঔষধ যেমন আইবুপ্রোফেন বা অ্যাসিস্ট আমিনও ফেন এর মত ঔষধ ব্যবহার করতে পারেন এতে মাথার তালুতে ব্যথা কমবে।
২/পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম এবং মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকুন।
৩/মাথার তালুতে ব্যথা কমাতে নারিকেল কিংবা জলপাইয়ের তেল ব্যবহার করে মাসাজ করতে পারেন এতে মাথার রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় এবং মাথার তালুতে ব্যাথা কমে আসে।
৪/অনেক সময় মাথায় খুশকি বা মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার কারণেও মাথার তালুতে ব্যথা হতে পারে সেক্ষেত্রে অবশ্যই মাথার খুশকি দূর করার কিংবা মাথার ত্বক এর শুষ্কতা দূর করার বিভিন্ন শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন।
৫/মাথার ত্বকে যেকোনো ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকুন এতে মাথার ত্বক শুকিয়ে যেতে পারে এবং মাথার তালুতে ব্যথা সহ চুলকানি ও ফ্লাকিং হতে পারে।
৬/মাথার তালুতে কিংবা ঘাড়ের কাছে কিছুক্ষণ আঙ্গুলের ডগা দিয়ে মাসাজ করলে মাথার তালুতে ব্যথা কমে আসবে এবং ক্লান্তির কারণে মাথা ধরলে তা থেকে আরাম পাওয়া যায়।
৭/পুদিনা পাতার রস মাথার তালুতে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। পুদিনা পাতার মধ্যে থাকা ম্যানথল ও ম্যানথন মাথার তালুতে ব্যথা কমানো ক্ষেত্রে কার্যকারী ভূমিকা রয়েছে। পরিমাণ মতো পুদিনা পাতা ডিটে সেই বাটা পুদিনা পাতার রহস্য কপালে লাগে দিলে কিংবা মাথার তালুতে লাগালে দ্রুত মাথার তালুতে ব্যথা কমে যায়। এমনকি পুদিনা পাতা চায়ের সাথে খাওয়া যায়।
৮/মাথার তালুতে ব্যাথার ক্ষেত্রে এলোভেরা ব্যবহার করা যেতে পারে। এলোভেরার পুষ্ট উপাদান গুলো মাথায় তালতো বেথা কমাতে এবং মাথাকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
৯/অনেক সময় আবহাওয়ার পরিবর্তন কিংবা বিভিন্ন ধুলাবলির কারণে মাথায় তালুতে ব্যথা হতে পারে সে ক্ষেত্রে কাঠবাদাম খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। কাঠ বাদামের মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো মাথা তালুকে ঠান্ডা রাখতে এবং মাথার তালুতে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
১০/অতিরিক্ত পরিমাণ কম্পিউটার ল্যাপটপ বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণেও মাথায় তালুতে ব্যাথা হতে পারে। সেক্ষেত্রে এগুলো থেকে দূরে থাকাই ভালো তবে আপনি আর যদি ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়ে সে ক্ষেত্রে আপনারা এ সকল ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির ক্ষতিকর রশ্মি থেকে বাঁচার জন্য বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টি ব্লু রিফ্লেক্ট চশমা ব্যবহার করতে পারেন।
ঘন ঘন মাথা ব্যথার কারণ কি
মাথা ব্যথার বিভিন্ন ধরনের কারণ রয়েছে। অনেকের ক্ষেত্রে ঘন ঘন মাথাব্যথা দেখা যায়। আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা ঘন ঘন মাথা ব্যথার সকল কারণগুলো সম্পর্কে জানতে পারবো।
১/ঘনঘন মাথা ব্যথার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে মাইগ্রেনের সমস্যা। মাইগ্রেনের মাথা ব্যথা হিসেবে প্রথমে মাথার চারপাশে ব্যথা শুরু হতে পারে এবং ধীরে ধীরে এই ব্যাথা পুরো মাথায় ছড়িয়ে পড়ে। যার কারনে একে আধ কপালি মাথা ব্যথা বলা হয়। এছাড়াও মাইগ্রেনের কারণে চোখের চারপাশেও ব্যথা সৃষ্টি হতে পারে।
২/অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা টেনশনের কারণেও পুরো মাথা জুড়ে ব্যথার হতে পারে। অতিরিক্ত কাজের প্রেসার এবং মানসিক চাপ এর কারণে ঘন ঘন মাথা ব্যথা কিংবা মাথা ভারী লাগার মত অনুভব হয়।
৩/ঘন ঘন মাথা ব্যাথার আরো একটি কারণ হচ্ছে ক্লাস্টার হেডেক। এ ধরনের মাথা ব্যাথা সাধারণত দিনের নির্দিষ্ট একটা সময় বা বছরের নির্দিষ্ট কোন একটা সময় হয়ে থাকে। এই ব্যথা নির্দিষ্ট সময়ে হয়ে থাকলেও যখন এ ব্যথা শুরু হয় তখন বারবার যন্ত্রণার সৃষ্টি করে।
৪/মস্তিষ্কের ভেতরে যদি রক্তপাত হয় সে ক্ষেত্রে ঘন ঘন মাথা ব্যথা দেখা দিতে পারে। এ ধরনের ব্যাথা সাধারণত মাথার পেছন দিক থেকে শুরু করে ঘাড় পর্যন্ত হয়ে থাকে।
৫/ব্রেন ইনফেকশন বা মেনিনজাইটিস এর কারণেও ঘন ঘন মাথা ব্যথা হয়ে থাকে। এ সময় পুরো মাথা জুড়ে ব্যথা অনুভব হয় এবং ঘাড়ে ব্যথা থাকতে পারে।
৬/যাদের চোখের সমস্যা রয়েছে এবং যারা চশমা ব্যবহার করে তাদের ক্ষেত্রে চোখের পাওয়ার কমবেশি হলেও ঘন ঘন মাথাব্যথা দেখা দিতে পারে।
৭/ঘন ঘন মাথা ব্যাথার আরো একটি কারণ হচ্ছে ভেনাস সাইনাস। মাথার ভেতরের অংশে ভেনাস সাইনাস ক্লট করলেও ঘন ঘন মাথা যন্ত্রণা দেখা দিতে পারে।
৮/ঘন ঘন মাথা ব্যথার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে ব্রেন টিউমার বা মাথার টিউমার। সাধারণত যাদের ব্রেনে টিউমার হওয়ার লক্ষণ রয়েছে কিংবা যাদের ড্রেনে অলরেডি টিউমার হয়ে গেছে তাদের ঘন ঘন মাথা ব্যথা সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং এই ব্যথা আরো জোরালো হতে পারে।
৯/আমাদের কানের পেছনের অংশে টেম্পেরিয়াল আর্টারি নামে একটি অংশ থাকে। এই অংশে টেম্পেরাল আর্টারাইটিস বলে এক ধরনের অসুখ হতে পারে যার কারণে তীব্র মাথা যন্ত্রণা এবং এই যন্ত্রণা বারবার ফিরে আসতে পারে। সাধারণত এ ধরনের মাথা ব্যাথা বয়স্কদের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে।
১০/সাইনাস ইনফেকশন এর কারণেও ঘন ঘন মাথা যন্ত্রণা এবং মুখমন্ডলে ব্যথা সৃষ্ট হতে পারে।
১১/যারা অতিরিক্ত আলোতে বেশি থাকে তাদের ক্ষেত্রেও ঘন ঘন মাথাব্যথা দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই রাতের বেলা পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের পাশাপাশি ঘরের সকল আলোক বন্ধ করে দিয়ে ঘুমাতে হবে।
১২/মেয়েদের ক্ষেত্রে ঘন ঘন মাথা ব্যাথার একটি কারণ হচ্ছে শক্ত করে চুল বাঁধা। যার কারণে মাথা যন্ত্রণা কিংবা মাথা ব্যথার সমস্যা দেখা দেয়। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই চুল খুলে রাখা অথবা আলগা করে বেঁধে রাখা উচিত।
১৩/যারা দীর্ঘক্ষণ ধরে চুইংগাম চিবিয়ে থাকে তাদের ঘন ঘন মাথা যন্ত্রণা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই পর্যাপ্ত সময়ের বেশি ক্ষণ চুইংগাম চাবানো উচিত না।
১৪/যাদের বাতের ব্যথা রয়েছে বিশেষ করে বয়স্কদের ক্ষেত্রে ঘন ঘন মাথা ব্যথার একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে বাতে ব্যথা।
মাথা ব্যথা কোন রোগের লক্ষণ
আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা মাথা ব্যাথা কোন ধরনের রোগের লক্ষণ কিংবা কোন ধরনের মাথাব্যথা আপনার জীবনের জন্য হুমকি স্বরূপ সে সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করব। মাথা ব্যাথা ভোগেননী এমন অনেক কম লোকই রয়েছি। জীবনের কোন না কোন সময় আমরা মাথা ব্যথার সমস্যায় ভুগে থাকি।
এখন কোন ধরনের মাথাব্যথা আপনার জন্য হুমকি স্বরূপ এবং কোন ধরনের মাথাব্যথা সাধারণ মাথা ব্যাথার মতই সেগুলো এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি বিস্তারিত জানতে পারবেন। সাধারণ ক্ষেত্রে দুই ধরনের মাথাব্যথা দেখতে পাওয়া যায় একটি হচ্ছে মাইগ্রেনের সমস্যা আর অন্যটি হচ্ছে মাসেল স্ট্রেস বা মস্তিষ্কের মধ্যে চাপ সৃষ্টি করা মাথাব্যথা। প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে ১০০ জনের মধ্যে ৯৫ মানুষজন এর জন্য এ সকল মাথাব্যথা খুবই সাধারণ এবং এতে আপনার জীবনের জন্য কোন হুমকি নেই।
এই লক্ষণগুলো সবার ক্ষেত্রে কোন না কোন সময় প্রকাশ পায়। তবে মাথা ব্যথার কিছু লক্ষণ রয়েছে সে লক্ষণ গুলো যদি আপনার মধ্যে প্রকাশ পায় তাহলে সেগুলো আপনার জীবনের জন্য হুমকি স্বরূপ হতে পারে। জেনে নিন কোন ধরনের মাথা ব্যথার লক্ষণ প্রকাশ পেলে আপনার নিউরো সার্জেন্টের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
১/হঠাৎ করে অতিরিক্ত বজ্রপাতের মত তীব্র মাথাব্যথা।
২/যদি আপনার মাথা ব্যাথার সাথে তীব্র জ্বরে লক্ষণ প্রকাশ পায়।
৩/হঠাৎ তীব্র মাথা ব্যাথা ও শরীরের কোন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ প্যারালাইসিস বা দুর্বল বা অবশ হয়ে যাওয়ার মত লক্ষণ প্রকাশ পেলে
৪/মাথা ব্যাথার সময় ছাড়া চোখে ঝাপসা দেখা, চোখে ডাবল দেখা কিংবা চোখে কম দেখার মত লক্ষণ প্রকাশ পেলে
৫/এছাড়া অতিরিক্ত মাথা ব্যথার পাশাপাশি খাওয়াতে অরুচি এবং শরীরের ওজন কমে যাওয়া লক্ষণ প্রকাশ পেলে।
৬/তীব্র মাথা ব্যাথার পাশাপাশি কথা বলতে অসুবিধা কিংবা কথা আটকে যাওয়ার মত লক্ষণ দেখা দিলে।
৭/প্রচন্ড মাথা ব্যথার সাথে আচরণগত পার্থক্য প্রকাশ পেলে।
৮/রাতের বেলা অতিরিক্ত মাথা যন্ত্রণার কারণে ঘুম ভেঙে যাওয়া এবং ঘুম আসতে অসুবিধা হওয়া লক্ষণ প্রকাশ পেলে।
তবে এ সকল কারণগুলো দেখা দিলে যে আপনার মাথায় বিভিন্ন ধরনের রোগ এর লক্ষণ প্রকাশ পাবে এমনটি কিন্তু নয়। তবে এগুলো যদি অতিরিক্ত পরিমাণ হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার নিউরো সার্জেন্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত। মাথা ব্যাথার বিভিন্ন রোগের লক্ষণগুলো সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে এই ভিডিওটি দেখতে পারেন।
লেখক এর মন্তব্যঃ প্রচন্ড মাথা যন্ত্রণা কমানোর সকল ঘরোয়া উপায়
এ আর্টিকেলটি শুধুমাত্র সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য লেখা। যেকোনো ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহনের পূর্বে অবশ্যই কোন বিশেষজ্ঞ নিউরো সার্জেন্টের পরামর্শ নেবেন। এই আর্টিকেলটি যদি আপনার কোন উপকারে এসে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন। এই আর্টিকালি সম্পর্কে যদি আপনার কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করতে পারেন। এরকম আরো শিক্ষনীয় ও মজার মজার বিষয় জানতে ও পড়তে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। সকলে ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।
ডিজিটাল ব্লগ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url