প্রচন্ড ঠান্ডায় নাক বন্ধ হলে করণীয়
প্রচন্ড ঠান্ডার কারণে কি আপনার নাক বন্ধ হয়ে যায়? নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা হয়? রাতের বেলা বিছানায় শোয়া মাত্রই একপাশে নাক বন্ধ হয়ে যায়। ঘুমাতে অস্বস্তি বোধ লাগে? বিভিন্ন ওষুধ ও নাকের ড্রপ ব্যবহার করার পরও মুক্তি পাচ্ছেন না। তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য। এই পোস্টটিতে নাক বন্ধ হলে কিভাবে আপনি ঘরোয়া উপায়ে খুব সহজেই বন্ধ নাক স্বাভাবিক করবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
এছাড়াও নাক বন্ধ হলে আপনার কি ড্রপ ব্যবহার করা উচিত এবং নাকের ড্রপ কতদিন ব্যবহার করা উচিত সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। এছাড়াও আরো জানতে পারবেন Antazol 0.5 এর কাজ কি বন্ধ না খোলার ক্ষেত্রে এই ড্রপ ব্যবহার করা কতটা উপকারী।আপনি কিংবা আপনার পরিবারের কেউ যদি নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যা রয়ে থাকে তাহলে এই ঘরোয়া উপায় গুলো ব্যবহার করে খুব সহজে আপনি আরাম পেতে পারেন। তাই ঘরোয়া উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ধৈর্য সহকারে সম্পন্ন আর্টিকেলটি পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃপ্রচন্ড ঠান্ডায় নাক বন্ধ হলে করণীয়
ভূমিকা
শীতকাল আসলে আমরা ঠান্ডা জনিত বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় ভুগে থাকি। যার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া। যার কারনে আমাদের নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয় এবং ঘুমাতে অস্বস্তি বোধ লাগে। এছাড়া অনেকের এলার্জিজনিত কারণে ধুলাবালি থেকে ফুসফুসের যাবতীয় সমস্যার কারণে ঠান্ডা লেগে নাক বন্ধ হয়ে যায়। যার কারণে অনেকেই ডিকনজেস্টন নেজাল ড্রপ ব্যবহার করে থাকেন।
যাতে তাৎক্ষণিক কিছু উপকার পাওয়া গেলেও সমস্যাটিকে মূল থেকে উৎপাত করতে পারে না। আবার নাকের ড্রপ দীর্ঘদিন ব্যবহারে নাকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তাই চিকিৎসকরা বিভিন্ন ঘরোয়া উপায়ে বন্ধ না খোলার উপায় সম্পর্কে রোগীদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যাতে আপনার নাকের ড্রপ ব্যবহারের প্রয়োজন না পারে এবং এর দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহার থেকে মুক্তি পান খুব অনায়াসে।
আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমরা সে সকল ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করতে যাচ্ছি। যেগুলো আপনি যদি অনুসরণ করেন তাহলে খুব সহজেই আপনার বন্ধনাক খুলে আপনি স্বস্তি লাভ করবেন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক বন্ধনা খোলার ঘরোয়া উপায় গুলো সম্পর্কে।
নাক বন্ধ হলে ঘরোয়া উপায়
একেক জনের ক্ষেত্রে নাক বন্ধ হওয়ার কারণ এটি কি রকম হয়ে থাকে। সাধারণত নাসা পথে ঝিলিক গুলোর প্রদাহ বা অস্বস্তির ফলে নাকের মধ্যে যে গুমোট ভাব সৃষ্টি হয় তাকে নাক বন্ধ হওয়া বলে। অনেকের ক্ষেত্রে আবার নাকের রক্ত প্রবাহ গুলো ফুলে যাওয়ার কারণে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এগুলো সাধারণত প্রচন্ড ঠান্ডা লাগলে কিংবা অ্যালার্জি ও সাইনাসের আক্রমণের কারণে হয়ে থাকে। আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা বন্ধ না খোলার ঘরোয়া উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো।
স্টিম বা ভাপ নেওয়া
বন্ধ নাক খোলার ঘরোয়া উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে স্টিম বা ভাব নেওয়া। এই পদ্ধতি সাধারণত প্রাচীনকাল যুগে ব্যবহার করা হতো কিন্তু এর কার্যকারিতা খুবই ভালো এবং খুব দ্রুত বন্ধ না খোলার ক্ষেত্রে সাহায্য করে।
সে ক্ষেত্রে আপনি একটি হাড়িতে পরিমাণ মতো পানি গরম করে সেই পানি থেকে যখন বাষ্প বের হতে শুরু করবে তখন একটি পরিষ্কার কাপড় বা তোয়ালে জড়িয়ে ফুটন্ত গরম পানি থেকে উঠে আসা ভাব নাক ও মুখের সাহায্যে খুব জোরে নিজের ভেতরে টেনে নিন। এতে করে শুধু আপনার বন্ধ নাক খুলে যাবে না পাশাপাশি আপনার বুকে কফ জমে থাকে তাহলে সেই কফ কে বেরিয়ে আনতেও সাহায্য করবে।
আদা খাওয়া
বন্ধ নাক খোলার ক্ষেত্রে আদা খুবই ভালো কাজ করে। বিশেষ করে আদার মধ্যে থাকার অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান বন্ধ নাক খোলার ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে। এছাড়াও সর্দি-কাশি লাগলে এক টুকরো আদা চিবিয়ে খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। আপনারা চাইলে আধা ও লেবু মিশানোর চা খেতে পারে এতে সর্দি কাশি চিরতরে দূর হবে।
আরো পড়ুনঃশরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব হলে করণীয়
মধু
প্রাচীন কাল থেকেই সর্দি-কাশি বা ঠান্ডা লাগার কারণে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ঘরোয়া উপায় গুলোর মধ্যে মধু ব্যবহার করা হয়ে আসছে। মধুর মধ্যে থাকা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান বন্ধ নাক খোলার পাশাপাশি সর্দি-কাশির প্রকোপ কমাতে সাহায্য করে।
কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করা
প্রচন্ড ঠান্ডার কারণে কিংবা সর্দি কাশি লেগে যদি আপনার নাক বন্ধ হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে আপনি হালকা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করে গোসল করতে পারেন। চিকিৎসকদের মতে ভেতরে কফ জমে থাকার কারণে ঠান্ডা লেগে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কিন্তু আপনি যখন হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করে তখন নিঃশ্বাসের সাথে সেই কুসুম গরম পানির ভাব ভেতরে প্রবেশ করে এবং ভেতরে জমে থাকা কফ তরলে পরিণত করে বাইরে বের করে দেয় যা আপনার বন্ধ নাক খোলার পাশাপাশি আপনার শ্বাসকার যুগে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আনতে সাহায্য করে।
ওয়ারম কম্প্রেস
বন্ধ না খোলা এবং নাকের প্রদাহ হ্রাসের ক্ষেত্রে ওয়ারম কমপ্রেস খুব ভালো কাজ করে। বাইরে থেকে নাকের ওপর গরম চাপ প্রয়োগ করতে হবে এতে বন্ধ নাক থেকে অনেকটা আরাম পাওয়া যায়।
রসুন
বন্ধ নাক খুব তাড়াতাড়ি খোলার ক্ষেত্রে ঘরোয়া উপায়ে আপনি রসুন খেতে পারেন। রসুনের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান আমাদের শ্বেত রক্তকণিকা বৃদ্ধি করে ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। এছাড়াও প্রতিদিন রসুন খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয় যা আমাদের শ্বাসযন্ত্রের সুস্থতার জন্য কাজ করে। এর জন্য আপনারা প্রতিদিন গরম সুপের সাথে দুই কোয়া রসুন খেতে পারেন এতে রসুনের ঝাঁঝালো স্বাদ আপনার বন্ধ নাক খুলতে সাহায্য করবে।
পেঁয়াজ
ঘরোয়া উপায় বন্ধ নাক খোলার ক্ষেত্রে আপনি পেঁয়াজের ব্যবহার করতে পারেন। পেঁয়াজের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন যা আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি এর ঝাঁঝালো গন্ধ বন্ধ না খুলতে তৎক্ষণাৎ সাহায্য করবে।
গোল মরিচ
ঘরোয়া উপায়ে বন্ধ না খোলার ক্ষেত্রে গোলমরিচ এবং মধু একসাথে মিশিয়ে খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। এর জন্য এক টেবিল চামচ পরিমাণ গোলমরিচ এবং সমপরিমাণ মধু একসাথে পানিতে মিশিয়ে হালকা কুসুম গরম করে সেই মিশ্রণটি খেলে খুব দ্রুত বন্ধ নাক থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
লবণ পানি
ঘরোয়া উপায়ে বন্ধ না খোলা এবং নাকের ভেতর পরিষ্কারের ক্ষেত্রে লবণ পানি খুবই ভালো কাজ করে। দুই কাপ পরিমাণ পানিতে এক টেবিল চামচ পরিমাণ লবণ মিশিয়ে এবার হালকা কুসুম ভাবে গরম করুন এবং লবণ পানি মেশানো জল আপনার এক নাক বন্ধ করে অন্য নাক দিয়ে টানার চেষ্টা করুন এবং জল মুখ দিয়ে বের করে দিন এতে খুব দ্রুত বন্ধ নাক খুলে যায় এবং আপনার নাকে যদি কোন ব্যাকটেরিয়া কিংবা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে থাকে তাহলে দ্রুত পরিষ্কার হয়ে চলে আসে।
জোয়ান বা আজওয়াইন
বন্ধ নাক খোলার ক্ষেত্রে ঘরোয়া উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে জোয়ান বা আজওয়াইন। এর জন্য আপনাকে একমুঠো জোয়ান শুকনো তাওয়াতে ভালোভাবে ভেজে নিতে হবে এবং ততক্ষণ পর্যন্ত ভাবতে হবে যতক্ষণ না জোয়ানের রং গারো হয়ে আসছে এবং এর থেকে সুগন্ধ বের না হচ্ছে।
এরপর জোয়ান থেকে সুগন্ধ বের হওয়া শুরু করলে তা শুকনো পাত্রে অথবা পরিষ্কার কাপড়ে রেখে তা নাকের সামনে ধরুন এবং ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করুন যাতে করে জোয়ানের গরম ভাবটা আপনার নিঃশ্বাসের সাথে ভেতরে প্রবেশ করতে পারে এতে খুব দ্রুত বন্ধ নাক এর সমস্যা থেকে স্বস্তি পাওয়া যায়।
সর্দিতে নাক বন্ধ হলে করণীয়
নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার সকল কারণগুলোর মধ্যে একটি কারণ হচ্ছে সর্দি কিংবা প্রচন্ড ঠান্ডার কারণে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া কিংবা নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া। আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা সর্দিতে নাক বন্ধ হলে কি কি করণীয় রয়েছে সে বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করতে যাচ্ছি। আপনার যদি এ ধরনের সমস্যা থেকে থাকে কিংবা আপনার পরিচিত কারো যদি এ ধরনের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়তে পারেন।
ইউক্যালিপটাস
সর্দিতে নাক বন্ধ হয়ে গেলে ইউক্যালিপটাস এর তেল ব্যবহার করে খুব সহজেই বন্ধ নাক এর সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। পরিষ্কার একটি পাত্রে পরিমাণ মতো জল ভালোভাবে ফুটিয়ে এতে কয়েক ফোটা ইউক্যালিপটাস তেল মিশিয়ে নেওয়ার পর ইউক্যালিপটাস এর এবং পানির মিশ্রণ থেকে যে ভাব বের হবে সে ভাবটা যদি নাকের সাহায্যে নেওয়া যায় তাহলে খুব দ্রুত বন্ধ নাক থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে এ সময় বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে যাতে গরম ভাব আপনার চোখের মধ্যে না যায় অবশ্যই ভাব নেওয়ার সময় চোখ বন্ধ রাখার চেষ্টা করবেন না হলে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।
আদা ও পুদিনা পাতার চা
আপনার যদি ঠান্ডা লেগে কিংবা সর্দিতে নাক বন্ধ হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে আপনি আদা ও পুদিনা পাতা চাও একসাথে খেতে পারেন। এটি নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া দূর করতে দ্রুত কাজ করে। এর জন্য আপনাকে পরিমাণ মতো পানি কয়েক টুকরা আদা এবং কয়েকটি পুদিনা পাতা একসাথে গরম করে চা বানিয়ে খেতে হবে আপনি চাইলে আগা থেঁতো করে নিতে পারেন এতে এর গুনাগুন গুলো বেশি পাওয়া যায়।
ন্যাজাল স্প্রে
সর্দিতে নাক বন্ধ হয়ে গেলে বন্ধনাগ পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে ন্যাজাল স্প্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি আপনি বিভিন্ন ফার্মেসিতে পেয়ে যাবেন কিংবা আপনি চাইলে বাড়িতেও বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
তরল জাতীয় খাবার
বন্ধ না খোলার ক্ষেত্রে আপনাকে প্রচুর পরিমাণ পানি খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। যারা কম পরিমাণ পানি খেয়ে থাকে তাদের সাধারণত শরীরে পানির ঘাটতি দেখা যায় যার কারণে ভেতরে কফ জমে থাকে। আপনি যদি প্রতিদিন পরিমাণ মতো পানি কিংবা তরল খাবার যেগুলোতে পানির মাত্রা বেশি পাওয়া যায় সেগুলো খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার শরীর হাইড্রেট থাকবে এবং আপনার ভেতরে কফ বা শ্লেষ্মা জমতে পারবে না। এছাড়াও আপনারা বিভিন্ন তরল জাতীয় ফলও খেতে পারে।
ঝাল জাতীয় খাবার
সর্দি লেগে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আপনি ঝাল জাতীয় খাবার খেতে পারেন। বিশেষ করে ঝাল মরিচ বা কাঁচা মরিচ যার মধ্যে থাকা ক্যাপসেসিন নাসা পদক্ষে পরিষ্কার করতে এবং জমে থাকা কফ তরলে পরিণত করতে সাহায্য করে।
লেবু
নাকের মধ্যে জমে থাকা শ্লেষ্মা দূর করে বন্দনা খোলার পাশাপাশি নাকের সকল ধরনের ইনফেকশন দূর করার কাজে লেবু,গরম জল ও মধু মেশানো পানি খুবই ভালো কাজ করে। অর্ধেক পরিমাণ কাগজি লেবু,এক গ্লাস পানি এবং এক চামচ পরিমাণ মধু একসাথে মিশিয়ে হালকা কুসুম গরম করে খেলে খুব দ্রুত নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
তেজপাতা
তেজপাতার মধ্যে থাকা অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান বন্ধ নাক খুলতে এবং সর্দি কাশি থেকে মুক্তি দিতে ভাল কাজ করে। পরিমাণ মতো পানি এবং কয়েকটি তেজপাতা 15 মিনিট হালকা আঁচে ফুটাতে হবে এরপর ঝাকুনি দিয়ে সেই পানি ছেঁকে পান করলে দ্রুত বন্ধ নাক খুলে যাই।
মেন্থল
বন্ধ নাক খোলার ক্ষেত্রে মেন্থল খুব ভালো কাজ করে। একটি পাত্রে পরিমাণ মতো পানি এবং কয়েক ফোঁটা মেন্থল ফেলে সেই পানিকে কুসুম গরম করে সে পানির ভাব নিলে খুব দ্রুত নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যা সমাধান হয়।
উঁচু হয়ে সোয়া
প্রচন্ড সর্দিতে নাক বন্ধ দূর করতে রাতের বেলা ঘুমানোর সময় মাথা নিচে ডবল বালিশ ব্যবহার করা। যাতে করে আপনার মাথা কিছুটা উঁচু থাকে এতে আপনার মিউকাস কম তৈরি হবে ভালো হয় আপনি যদি ছাদ বা সিলিং এর দিকে মুখ করে শুতে পারেন।
অ্যাপেল সিডার ভিনেগার
আপনার যদি প্রচন্ড সর্দি লেগে থাকে এবং সর্দির কারণে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয় সে ক্ষেত্রে আপনি অ্যাপেল সিডার ভিনেগার মেশানো পানি পান করতে পারেন। এর মধ্যে থাকা অ্যাসিটিক উপাদান ও পটাশিয়াম বন্ধ না খোলার পাশাপাশি আপনার বুকের মধ্যে জমে থাকা কফ ও ভাইরাস দূর করতে সাহায্য করবে।
বন্ধ নাক খোলার উপায়
বন্ধুরা এতক্ষণ আমরা বন্ধ না খোলার বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে যা যা খাওয়া প্রয়োজন এবং যা যা করা প্রয়োজন সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানলাম। আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা বন্দনা খোলার আরো কিছু উপায় এবং কিছু নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব যেগুলো আপনার বন্ধ না খোলার ক্ষেত্রে খুবই ভালো কাজ দেবে।
গ্রিন টি
নাকের ভেতরে নিউ কাজ রোধ করতে গ্রীন টি খুব ভালো কাজ করে। এটি নাগ পরিস্কার করার পাশাপাশি শরীরের ভেতরে জমে থাকা টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে।
টমেটোর সালাদ
বন্ধ না খোলার ক্ষেত্রে টমেটো সালাদ খুবই ভালো কাজ করে। দুইটা টমেটো পরিমাণ মতো রসুন কুচি, লেবুর রস, ঝাল শস, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ এবং লবণ ব্যবহার করে টমেটোর সালাত বানিয়ে দিনে দুইবার খেতে পারলে ঠান্ডা কাশি ও নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যা গুলো দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে।
মেথি
বন্ধ নাক খুলতে এবং সর্দি কাশি থেকে পুরোপুরিভাবে মুক্তি দিতে মেথি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এক গ্লাস পানিতে ২ থেকে ২.৫ চামচ মেথি মিশিয়ে হালকা কুসুম গরম করে ছেঁকে নেওয়ার পর সেই গরম পানি পান করলে দ্রুত ফলাফল পাওয়া যায়।
স্যালাইন ড্রপ দিয়ে নাক পরিষ্কার করা
প্রচন্ড সুর দিতে নাক বন্ধ হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে স্যালাইন ড্রপ ব্যবহার করে নাক পরিষ্কার করলে দ্রুত ফলাফল পাওয়া যায়। কখনোই সর্দি আটকে রাখার চেষ্টা করবেন না। নাক ঝেড়ে ফেলুন। পারলে নাকে এবং কপালে গরম শেক নিন তবে খেয়াল রাখবেন যেন ত্বক পুড়ে না যায়।
এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ
প্রচন্ড সর্দি-কাশি কিংবা এলার্জির কারণে যদি আপনার নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয় তাহলে এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ গ্রহণ করতে পারেন। তবে অবশ্যই যেকোনো ধরনের ঔষধ গ্রহণের পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া জরুরী।
কালোজিরা ও কাঁচা সরষের তেল
আপনি যদি প্রতিদিন কালোজিরা বাটা এবং কাঁচা সর্ষের তেল একসাথে মিশিয়ে ভাতের সাথে খেতে পারেন তাহলে এর ঝাঁজালো গন্ধ দ্রুত বন্ধ না খুলতে সাহায্য করবে।
তুলসী
সর্দি কাশি ভালো করতে তুলসী পাতার রস খুবই ভালো কাজ করে। প্রতিদিন সকালবেলা খালি পেটে তুলসী পাতা রস চিবিয়ে খেলে বন্ধ নাক দ্রুত খোলে এছাড়াও তুলসী পাতার রসের সাথে সামান্য পরিমাণ মধু ব্যবহার করা যেতে পারে এমনকি তুলসী পাতার মেশানো চাও খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
সরষে তেল
বন্ধ না খুলতে সরষের তেল খুবই ভালো কাজ করে। পরিমাণ মতো কিছুটা সর্ষে তেল হালকা কুসুম গরম করে তা নাকের সাহায্যে ভেতরে টানলে খুব দ্রুত বন্ধ না খুলে যায়।
নাক বন্ধ হলে ড্রপ নাম
বন্ধুরা এতক্ষণ আমরা নাক বন্ধ হলে বিভিন্ন ঘরোয়া উপায় ও করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা নাক বন্ধ হলে কোন ড্রপ ব্যবহার করা যায় সেই সম্পর্কে আলোচনা করব। বন্ধনা খোলার ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা যে সকল ড্রপের পরামর্শ দিয়ে থাকেন সেগুলো সম্পর্কে আর্টিকেল আলোচনা রয়েছে।
Antazol .1% নাকের ড্রপ(জাইমোমেটাজলিন হাইড্রোক্লোরাইড)
এই ড্রপটি সাধারণত ঠান্ডা, এলার্জেনিক রাইনাইটিস এবং বন্ধনাক খোলার ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
মাত্রা
- জাইমোমেটাজলিন হাইড্রোক্লোরাইড .১%
- জাইমোমেটাজলিন হাইড্রোক্লোরাইড .০৫%
ব্যবহারবিধ
১/ জাইমোমেটাজলিন হাইড্রোক্লোরাইড .১% এই ড্রপটি প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে প্রতি নাকে দুই অথবা তিন ফোঁটা করে দিনে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করা যাবে। এই ড্রপটি ১২ বছরের কম বয়সের কোন শিশুর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা উচিত না।
২/জাইমোমেটাজলিন হাইড্রোক্লোরাইড .০৫% এই ড্রপটি শুধুমাত্র 6 থেকে 12 বছর বয়সের শিশুদের ব্যবহারের উপযুক্ত। প্রতিটি নাকে ২ থেকে ৩ ফোটা করে দিনে ২ থেকে ৩ বার ব্যবহার করা যেতে পারে।
৩/জাইমোমেটাজলিন হাইড্রোক্লোরাইড .০৫% ৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে এই ড্রপটি প্রতি নাকে একফোঁটা করে দিনে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করা যেতে পারে।
৪/তিন মাসের কম বয়সী কোন শিশুর ক্ষেত্রে নাকের কোন ড্রপ ব্যবহার করা যাবে না।
ন্যাটাজল(অক্সিমেটাজোলিন হাইড্রোক্লোরাইড .০২৫%)
ব্যবহারবিধি
(অক্সিমেটাজোলিন হাইড্রোক্লোরাইড .০২৫%) স্প্রে-
১/প্রাপ্তবয়স্ক বা ৬ বছরের অধিকের ক্ষেত্রে প্রতি নাকে ২ থেকে ৩ বার করে দিনে ৩ থেকে ৫ বার পর্যন্ত ব্যবহার করা যেতে পারে।
২/বয়স্কদের ক্ষেত্রেও একইভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে মাত্রা কমানোর বা বাড়ানোর প্রয়োজন নেই।
৩/৬ বছরের কম বয়সী কোন শিশুর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা উচিত না।
(অক্সিমেটাজোলিন হাইড্রোক্লোরাইড .০৫%) ড্রপ-
১/প্রাপ্তবয়স্ক কিংবা ৬ বছরের অধিক বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে প্রতিমাকে দুই থেকে তিন ফোঁটা করে সকালবেলা ও সন্ধ্যাবেলা দুইবার ব্যবহার করা যেতে পারে।
২/দুই থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে প্রতি নাকে দুই থেকে তিন ফোটা করে(অক্সিমেটাজোলিন হাইড্রোক্লোরাইড .০২৫%) সকালে এবং সন্ধ্যায় ব্যবহার করা যাবে।
নাকে ড্রপ কতদিন ব্যবহার করা যায়
আমরা অনেকেই ঠান্ডা জনিত কারণে কিংবা এলার্জির কারণে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার মত সমস্যার মুখোমুখি হই। যা থেকে বাঁচার জন্য আমরা অনেক সময় বিভিন্ন ন্যাজাল ড্রপ বা নাকের ড্রপ ব্যবহার করে থাকি। যা আমাদের তাৎক্ষণিকভাবে নাক বন্ধ হওয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। সর্দি-কাশি কিংবা ঠান্ডা জনিত কারণে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যায় নেজাল ড্রপ বা ন্যাজাল স্প্রে বা নাকের ড্রপগুলো ৭ থেকে ১০ দিনের বেশি ব্যবহার করা ঠিক নয়।
এর দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে তা আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয় তখন ন্যাজাল দ্রব্য নেজাল স্প্রে ছাড়া চলা সম্ভব হয় না। এছাড়াও নাকে ড্রপের দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে তা আমাদের নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে। এছাড়া নাকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে দীর্ঘদিন ধরে নাকের ড্রপ ব্যবহার করা। এরপরেও যদি আপনার নাকের ড্রপ ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন।
নাকের ড্রপ দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে তা আমাদের খারাপ অভ্যাস হয়ে দাঁড়াতে পারে তখন আমরা নাকের ড্রপ ব্যবহার না করলে অস্বস্তি বোধ হতে পারে কিংবা নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া সমস্যা বেশি প্রকাশ পেতে পারে। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত যথাসম্ভব নাকের ড্রপ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা যদি প্রয়োজন পড়ে সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক ব্যবহার করা যেতে পারে।
লেখকের মন্তব্যঃপ্রচন্ড ঠান্ডায় নাক বন্ধ হলে করণীয়
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরুতে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে যদি আপনার কোন উপকার হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আর্টিকেলটি অন্যদের পড়ার সুযোগ করে দিবেন শেয়ার করার মাধ্যমে। এয়ার্টিকালিটি সম্পর্কে যদি আপনার কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করতে পারেন। এরকম আরো মজার মজার অশিক্ষণের বিষয় সম্পর্কে জানতে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। ভালো থাকবেন ধন্যবাদ।
ডিজিটাল ব্লগ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url