OrdinaryITPostAd

শরীরের কোন ভিটামিন চুল গজাতে সাহায্য করে

আপনি কি চুলের সমস্যায় ভুগছেন? অকালে আপনার চুল পড়ে যাচ্ছে। অল্প বয়সে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আপনার শরীরে কোন ভিটামিনের অভাবে এরকম হচ্ছে না তো? তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমরা কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যায়, কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পেকে যায় সেই সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারব। 

ছবি

এছাড়াও আমরা জানবো কোন ভিটামিন চুল গজাতে সাহায্য করে পাশাপাশি চুল পড়া বন্ধ করার জন্য ভিটামিন ই ক্যাপসুল কতটুকু কার্যকারী। এ সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

পোস্ট সূচীপত্রঃশরীরের কোন ভিটামিন চুল গজাতে সাহায্য করে

ভূমিকা

আমাদের মধ্যে অনেকেই চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যায় ভুগে থাকি। এর বিভিন্ন কারণ হতে পারে। যার মধ্যে অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে ভিটামিনের অভাব। প্রতিদিন ১০০ থেকে ১২৫টি চুল পড়া স্বাভাবিক কিন্তু সেই চুল পড়ে যদি নতুন চুল না গজায় তাহলে আমাদের মাথায় চুল পড়া সমস্যা আমরা বুঝতে পারি।

আপনার শরীরে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ও খনিজ না থাকে তাহলে আপনার চুল পড়ার সমস্যা সহ চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। যা বর্তমানে তরুণ তরুণীদের একটি সাধারণ সমস্যায় পরিণত হয়েছে।

আপনি যদি সঠিক সময়ে অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যাগুলো সম্পর্কে জানতে না পারেন বা কোন ভিটামিনের অভাবে আপনার চুল পেকে যাচ্ছে সেগুলো বুঝতে না পারেন তাহলে অল্প বয়সে আপনার টাক পড়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আজকে এ আর্টিকেলটিতে আমরা কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যায় এবং কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পেকে যায় এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানবো এছাড়াও আমরা জানবো কোন ভিটামিন গুলো আপনার চুল গজাতে সাহায্য করবে পাশাপাশি চুল পড়া বন্ধ করার জন্য ভিটামিন ই ক্যাপসুল কতটুকু কার্যকারী। তাই সম্পূর্ণ বিষয়গুলো বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরুতে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো।

কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যায়

পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন বি৭ এর অভাবে চুল পড়ে যায়। বিশেষ করে মেয়েদের চুল পড়া সমস্যা অতিরিক্ত পরিমাণে দেখা যায়। মেয়েদের এই চুল পড়া সমস্যা কে অ্যান্ড্রোজেনেটিক অ্যালোপিসিয়া বলে। এছাড়াও বর্তমানে অনেক ছেলেদের ক্ষেত্রেও চুল পড়ার সমস্যা দেখার দিচ্ছে।

ভিটামিন ডি: আমাদের শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি ভিটামিন ডি আমাদের চুলের স্বাস্থ্যের যত্ন কার্যকারী। ভিটামিন ডি কে চুলের সানশাইন ভিটামিন বলা হয়ে থাকে। ভিটামিন ডি এর অভাবে আমাদের চুলের ফলিকলগুলো বন্ধ হয়ে যায়। যার কারণে চুলের ফলিকল গুলো থেকে নতুন চুল গজায় না এবং আমাদের চুল ধীরে ধীরে পাতলা হয়ে আছে যাকে আমরা চুল পড়ে যা বলি।

ভিটামিন ডি এর অভাবে চুলের গোড়া নষ্ট হয়ে যায় এবং অতিরিক্ত চুল পড়া সমস্যা দেখা দেয়। ভিটামিন ডি এর অভাবে চুল পড়ে যাওয়া সমস্যা ছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন:

  1. হাড়ের এবং পেশীতে ব্যাথা সৃষ্টি হওয়া
  2. অস্বাভাবিক ক্লান্তি অনুভব হওয়া
  3. ধীরে ধীরে ত্বকের জেল্লা হারিয়ে যাওয়া
  4. চুল পাতলা হতে থাকা বা চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা
  5. অতিরিক্ত পরিমাণ চুল উঠা
  6. চুলের পুষ্টি কমে যাওয়া এবং মাঝখান থেকে চুল ভেঙে যাওয়া সমস্যা দেখা দেওয়া
  7. মানসিক অবসাদ ও বিষন্নতার লক্ষণ প্রকাশ হওয়া
এছাড়াও ভিটামিন ডি এর অভাবে শারীরিক বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ডার্মাটোলজির মতে ভিটামিন ডি এর অভাবে আমাদের মাথার ত্বকের পুষ্টি ঘাটতি দেখা যায় যার কারণে অতিরিক্ত পরিমাণ চুল ঝরে যাওয়ার সমস্যা কিংবা পড়ে যাওয়া সমস্যা দেখা দেই। 


ভিটামিন ডি এর কারণে আমাদের চুলের ফলিকলগুলো সুস্থ থাকে কিন্তু যদি আপনার শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা দেয় তাহলে চুলের নতুন ও পুরাতন ফলিকল গুলোর পুষ্টি মাত্রা কমে যাওয়ার কারণে অতিরিক্ত পরিমাণ চুল পড়ার সমস্যা দেখা দেয়।

ভিটামিন ডি এর অভাবে পূরণে করণীয়

ভিটামিন ডি আমাদের শরীরের চুলের স্বাস্থ্যের পাশাপাশি শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে থাকে। কিন্তু ভিটামিন ডি এর অভাব হলে আমাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়। শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাবে নানা ধরনের রোগ দেখা দিতে পারে।


সুর্যের আলোতে ভালো পরিমাণ ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণে সকালে অথবা বিকেলে কিছু কোন সূর্যের আলোতে সময় কাটান এতে আপনার শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি কিছুটা পূরণ হবে। এছাড়াও আপনি চাইলে ভিটামিন ডি যুক্ত বিভিন্ন খাবার আপনার খাদ্য তালিকায় যুক্ত করতে পারেন। যেমন:

কড লিভার অয়েল: কড লিভার অয়েলে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। আপনার যদি মাছ খেতে ভালো না লাগে তাহলে আপনি কড লিভার অয়েল খেতে পারেন। তবে যদি আপনার কোন এলার্জির কিংবা অন্য সমস্যা থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।

মাছ: মাছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। যা আপনার শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাবে হওয়া বিভিন্ন রোগকে প্রতিহত করতে সাহায্য করবে। তাই কিছু সামুদ্রিক মাছ আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় যুক্ত করতে পারেন এতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ডি পাওয়া যাবে।

ডিমের কুসুম: মাছের মতই ডিমের কুসুমও ভিটামিন ডি এর একটি ভালো উৎস। এর জন্য আপনি গোটা ডিম খেতে পারেন অথবা ডিমের কুসুম খেলেও ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণ হবে। এছাড়াও ডিমের কুসুমে প্রচুর পরিমাণ মিনারেল ও খনিজ রয়েছে যেগুলো আপনার শরীর ও চুলের বেশ উপকারে লাগবে।

মাশরুম: শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণে মাশরুম হতে পারে আপনার খাদ্য তালিকার অন্যতম একটি খাবার। পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে মাশরুমে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ডি পাওয়া যায় যা আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাবে যে সকল রোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তা কমিয়ে আনে।

দুধ: গরুর খাঁটি দুধ ভিটামিন ডি এর একটি ভালো উৎস। এছাড়াও দুধে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম থাকে যা আপনার হাড়ের সুরক্ষায় ভালো কাজ করবে।

পালং শাক: ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণের জন্য আপনার খাদ্য তালিকায় পালং শাক রাখতে পারেন। এটি ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম এর একটি ভালো উৎস ধরা হয়।

বায়োটিন বা ভিটামিন বি৭:ভিটামিন বি৭ হচ্ছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের একটি অংশ যা বায়োটিন নামে পরিচিত কিংবা ভিটামিন এইচ নামে পরিচিত। বায়োটিনের অভাবে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কেননা বাড়িটি আমাদের শরীরের প্রত্যেকটি কোষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং বায়োটিনের অভাবে আমাদের চুল পড়ার সমস্যা সহ ত্বকে অ্যাকনের সমস্যাও বাড়তে পারে।
 

এছাড়া পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে শরীরে বায়োটিনের অভাবে নখ ভেঙে যাওয়া সহ ত্বকের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি লক্ষ্য করা যায়। শরীরে বায়োটিনের অভাব পূরণ করতে পারে আপনার দৈনন্দিন খাদ্য তালিকা। এর জন্য আপনাকে নতুন করে কোন বায়োটিন ট্যাবলেট গ্রহণ করা প্রয়োজন হবে না।

তবে যদি নিতানতই বায়োটিন ট্যাবলেট গ্রহণের প্রয়োজন পরে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করবেন।বায়োটিন বা ভিটামিন বি৭ এর ঘাটতি পূরণে আপনার খাদ্য তালিকা যে সকল খাবার গুলো যুক্ত করতে হবে তা হলো।

বাদাম: বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ই,ফাইবার, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড ও বায়োটিন বা ভিটামিন বি৭। এছাড়াও মনোস্যাচুরেটেড উপাদান যা আমাদের চুলের ফলিকল গুলোকে বাড়িয়ে তুলতে এবং চুলের গোড়ায় সঠিক পরিমাণ পুষ্টি সরবরাহ করতে সাহায্য করে। তাই আপনার খাদ্য তালিকায় বাদাম যুক্ত করতে পারেন।

বীজ:বায়োটিন বা ভিটামিন বি৭ এর একটি ভালো উৎস হচ্ছে বীজ এছাড়াও বীজ রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফ্যাটিয়া সিড খনিজ পদার্থ,ভিটামিন,আয়রন,ম্যাগনেসিয়াম,ক্যালসিয়াম‌ ও ফসফরাস। যা আমাদের চুলের জন্য একটি ভালো উৎস। এছাড়াও বীজকে সুপারফুড ও বলা হয়।

ডিম: ডিম হতে পারে আপনার বায়োটিনের একটি প্রাকৃতিক উৎস। যা আপনার চুলকে সুস্থ রাখতে এবং চুল পড়া কমাতে সাহায্য করার পাশাপাশি আপনার শরীরে প্রয়োজনীয় ঘাটতি পূরণেও এটি ভালো কাজ দেয়।

বাজরা: বাজরাকে পুষ্টির ভান্ডার ধরা হয়‌। যা আপনার চুলের পুড়ে যাওয়া রোধ করতে এবং শরীরে প্রয়োজনে পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করবে। তাই আপনি চাইলে আপনার খাদ্য তালিকায় বাজরার আটা দিয়ে তৈরি রুটি যোগ করতে পারেন। এছাড়াও আপনার খাদ্য তালিকায় এমন খাবার যুক্ত করতে হবে যাতে আপনার শরীরে ভিটামিনের অভাব বা ঘাটতি না দেখালে।

ভিটামিন বি১২: এই ভিটামিন টি আমাদের লোহিত রক্তকণিকা এবং ডিএনএ সংশ্লেষনের জন্য কাজ করে থাকে। এছাড়াও আমাদের চুলের ত্বকে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে চুল পড়ে যাওয়া রোধ করতে সাহায্য করে।

ভিটামিন এ: আপনার শরীরে যদি ভিটামিন এ এর অভাব দেখা দেয় তাহলে আপনার ত্বক শুষ্ক হয়ে যাবে এবং চুল পড়ে যাওয়া সমস্যা সৃষ্টি হবে। তাই ভিটামিন এ এর অভাবে চুল পড়া রোধ করতে আপনি চাইলে খাদ্য তালিকা ভিটামিন এ যুক্ত খাবার যোগ করতে পারেন অথবা চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন।

ভিটামিন ই: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এই ভিটামিন আপনার ত্বকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট স্ট্রেস কমাতে এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি ত্বকের ফ্রি রেডিক্যাল গুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করে চুলের দুর্বল হওয়া রোধ করবে এবং চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা থেকে আপনাকে মুক্তি দেবে।

উপরোক্ত ভিটামিনের অভাবে আপনার চুল পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে কিন্তু আরো কিছু কারণেও আপনার চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা সৃষ্টি হয় যেমন:

  1. কিছু ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
  2. হরমোন জনিত পরিবর্তনের কারণে
  3. চুল বাধার ধরনের কারণে
  4. বিভিন্ন রোগবালয়ের কারণেও চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।

কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পেকে যায়

বয়স বাড়ার সাথে সাথে চুল পেকে যাওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু অল্প বয়সে চুল পেকে গেলে সেটার বিভিন্ন কারণ হতে পারে। যেমন:

  1. ভিটামিনের অভাব
  2. বংশগত কারণে
  3. বিভিন্ন রোগ জনিত কারণে
  4. বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
  5. দুশ্চিন্তা ও হতাশার কারণে
  6. জিনগত কারণে
  7. শরীরে হরমোনের তারতম্যের কারণে
ভিটামিনের অভাবে চুল পেকে যাওয়া বর্তমানের একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছ। বিশেষ করে ২০ থেকে ২৫ বছর বয়সী তরুণ তরুণীদের এই সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে। সাধারণত ত্বকের মিলনোসাইট নামক কোষ থেকে মিলানির নামক এক ধরনের রঞ্জক পদার্থের কারণে ত্বকের রং নির্ধারিত হয়ে থাকে। 

যাদের শরীরে মেলানিনের ঘনত্ব বেশি থাকে তাদের রং অপেক্ষাকৃত কালো হয় এবং যাদের শরীরে মেলানিনের ঘনত্ব কম থাকে তারা মোটামুটি ফর্সা হয়। তেমনি চুলের গোড়ার জায়গায় মেলা নিয়ে উৎপাদন ক্ষমতার ওপর চুলের রং নির্ধারিত হয়। আপনার চুলের গোড়ায় যদি মেলানিনের পরিমাণ কমতে থাকে তাহলে অকালে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যাগুলো বেশি দেখা দেয়।

এর বিভিন্ন কারণ থাকলেও ভিটামিন জনিত কারণ অন্যতম। আপনার শরীরে যদি ভিটামিন বি১২,ডি৩,ইং, এবং বায়টিনের ঘাটতি থাকে তাহলে অকালে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও চুল পেকে যাওয়ার আরো বিভিন্ন ভিটামিনের অভাব হতে পারে যেমন কপার,আয়রন ,জিঙ্ক।

২০১৬ সালের এক গবেষণায় জানা গেছে যাদের শরীরে ভিটামিন ১২ এর ঘাটতি দেখাবে তাদের ২৫ বছরের কম বয়সেও চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়াও আরো যে সকল ভিটামিনের অভাবে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয় তা হচ্ছে।

ভিটামিন সি: বিশেষজ্ঞদের মতে আমাদের অল্প বয়সে চুল পেকে যাওয়ার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে ভিটামিন সি এর অভাব। ভিটামিন সি আমাদের শরীরে কোলাজেন উৎপাদন করে যার কারণে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা সৃষ্টি হয় না।

কিন্তু আপনার শরীরে যদি ভিটামিন সি এর অভাব দেখা দেয় তাহলে চুলের রং ধূসর হতে শুরু করে এবং অকালে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা বৃদ্ধি পায়। তাই অকালে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আপনার খাদ্য তালিকায় ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল ও শাকসবজি যুক্ত করুন।

ভিটামিন বি: ভিটামিন বি এর অভাবেও চুল পড়ে যাওয়া কিংবা চুলের পেকে যাওয়ার মত সমস্যা দেখা দেয়। দীর্ঘদিন ধরে আপনার শরীরে যদি ভিটামিনের ঘাটতি থেকে থাকে তাহলে আপনার টাক পড়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। বিশেষ করে ভিটামিন বি ১২,৬,৭। তাই আপনাকে ভিটামিন বি এর ঘাটতি পূরণের জন্য দুগ্ধ জাত খাবার আপনার খাদ্য তালিকায় যুক্ত করতে হবে যেগুলো আপনার ভিটামিনের অভাবকে পূরণ করতে সাহায্য করবে।

ভিটামিন ডি: ভিটামিন ডি এর অভাবেও আমাদের অকালে চুল পড়ে যাওয়া কিংবা চুল পেকে যাওয়ার মত সমস্যাগুলো দেখা দেয়। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে ভিটামিন ডি এর অভাবে অল্প বয়সে চুল পাকতে শুরু করে এবং অকালে চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। তাই ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণে ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারেন অথবা সূর্যের আলোতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।

প্রোটিনের ঘাটতি: চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও সুস্থ চুলের জন্য অবশ্যই প্রয়োজনে পরিমাণ প্রোটিন থাকা আবশ্যক। শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন থাকলে চুল লম্বা ও ঘন হতে সাহায্য করে এবং চুলের অকালে পড়ে যাওয়া কিংবা পেকে যাওয়ার সমস্যা গুলো দূরে রাখে। তাই আপনার শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে হবে।

বিশেষ করে ক্যারাটিন হল এক ধরনের প্রোটিন যা চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় এবং চুলের অকালে পড়ে যাওয়া ও পেকে যাওয়ার সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। যেটি চুলের কোষে থাকে। প্রোটিনের ঘাটতির কারণে আপনার চুল দুর্বল হয়ে যায় এবং ভেঙে যাওয়ার সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার আপনার খাদ্য তালিকায় যুক্ত করুন।

ভিটামিন বি৯ ও ভিটামিন বি৫ এগুলো চুলের রং প্রাকৃতিক ভাবে ধরে রাখতে সাহায্য করে তাই আপনাকে এ ভিটামিন গুলোর দিকেও বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। আশা করি এতে আপনার অকালে চুল পেকে যাওয়া কিংবা পড়ে যাওয়ার সমস্যাগুলো দূর হবে।

কোন ভিটামিন চুল গজাতে সাহায্য করে

ভিটামিন আমাদের শরীরের সুস্থতার জন্য যতটা জরুরী তেমনি স্বার্থপর চুলের জন্য ভিটামিন এর গুরুত্ব রয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিনের অভাব পূরণ করে চুল গজাতে সাহায্য করে ভিটামিন বি৭ ও ভিটামিন১২ এছাড়াও আপনার শরীরের পর্যাপ্ত পরিমাণ অন্যান্য সকল ভিটামিন গুলো থাকা জরুরী। 

এই দুটি ভিটামিন আপনার চুলের গোড়ায় কেরাটিনের পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে এবং চুলের ফলিকলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। যার কারণে নতুনভাবে চুল গজাতে সাহায্য করে।ভিটামিন বি৭ ও ভিটামিন১২ চুলের নতুন কোষ তৈরি করতে এবং চুলের ফলিকল গুলোকে উদ্দীপ্ত করতে এই দুটি ভিটামিনের কার্যকারিতা অনেক। যার কারণে তাড়াতাড়ি নতুন চুল গজায়।

বায়োটিন বা ভিটামিন বি ৭: এই ভিটামিন টি চুলের সার্বিক উন্নতির কাজ করে থাকে। পাশাপাশি চুলের গোড়া মজবুত করে চুল পড়ে যাওয়া আটকাতে এবং নতুন চুল গজাতে এবং চুলের লম্বা হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন সরবরাহ করে। তাই ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে নতুন চুল গজাতে বায়োটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিমের কুসুম, বাদাম চিনা, বাদাম,সোয়াবিন আপনার খাদ্য তালিকায় যুক্ত করতে পারেন এছাড়াও এই ভিটামিন ইনোসিটোল লিভারকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে যার কারণে আমাদের চুলের বৃদ্ধি বেশি হয়।

ভিটামিন এ: ভিটামিন এ আমাদের স্ক্যাল্প কে সুস্থ রাখতে এবং চুল পড়ে যাওয়া কমিয়ে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। এছাড়াও সেবামের ভারসাম্য বজায় রাখতেও আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন এ জরুরী। ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার গুলোর মধ্যে আপনার খাদ্য তালিকায় গাজর,ফিস লিভার অয়েল,পালং শাক যুক্ত করতে পারেন।

ভিটামিন ই: নতুন চুল গজাতে এবং চুলের গোড়া স্বাস্থ্যকর রাখতে ভিটামিন ই খুবই কার্যকরী। ভিটামিন ই আমাদের স্ক্যাল্পে রক্ত চলাচলের মাত্রা কে বাড়িয়ে তুলে এবং চুলের গোড়ায় প্রয়োজনীয় পরিমাণ পুষ্টি সরবরাহ করতে সাহায্য করে। তাই অকালে চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে এবং নতুন চুল গজাতে আপনার খাদ্য তালিকায় ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার যেমন বাদাম,বিট জার্ম অয়েল, দুধ ও ডিম যুক্ত করতে পারেন।

ভিটামিন সি: ভিটামিন সি আমাদের শরীরে কোলাজেন সংশ্লেষণ বাড়ায় এবং চুলের দ্রুত বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এছাড়াও এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান আমাদের চুলের ফলিকলগুলোকে তরতাজা রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি ভিটামিন সি আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়ির তুলে।

ভিটামিন ডি: চুলের গোড়ায় সঠিক পরিমাণ পুষ্টি সরবরাহ করতে ভিটামিন ডি এর তুলনা হয় না। এটি চুলের ফলিকল গুলোকে তরতাজা রাখতে এবং নতুন ভাবে চুল গজাতে সাহায্য করে। এছাড়াও ভিটামিন ডি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি নতুন চুল গজাতে ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার আপনার খাদ্য তালিকায় যুক্ত করুন।

যদিও চুলের যাবতীয় সমস্যা দূর করে নতুন চুল গজাতে এবং চুলের পড়ে যাওয়া রোধ করতে ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন বি কার্যকারী কিন্তু আপনার শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ধরে রাখার জন্য এবং নতুন ভাবে চুল গজাতে সকল পুষ্ট উপাদান গুলো নির্ধারিত মাত্রায় থাকা উচিত। এতে আপনার সার্বিক সমস্যা অনেকটা কমে আসবে।

আপনি চাইলে ভিটামিনের অভাব পূরণ করে নতুন চুল গজাতে কিংবা চুলের পড়ে যাওয়া রোধ করতে চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক বিভিন্ন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন। পাশাপাশি আপনার খাদ্য তালিকায় ভিটামিন সমৃদ্ধ এবং প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ করে এমন খাদ্যগুলো যুক্ত করতে পারেন।

চুল পড়া বন্ধ করার ভিটামিন ই ক্যাপসুল

বন্ধুরা এতক্ষণ আমরা কোন ভিটামিন গুলো নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে সে সম্পর্কে জানলাম। আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা জানবো চুল পড়া বন্ধ করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল কতটুকু কার্যকারী। চুল পড়া বন্ধ করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা

১/ভিটামিন ই ক্যাপসুল চুলের জন্য খুবই উপকারী। সুস্থ ও সুন্দর চুলের জন্য ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারের তুলনা হয় না।

২/ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারে চুলের যাবতীয় সমস্যা দূর হয় এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি ফ্রী রেডিক্যাল গুরুর বিরুদ্ধে লড়াই করে চুলের ফলিকলগুলোকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও চুল পড়া বন্ধ করে ভিটামিন ই ক্যাপসুল চুলের গোড়ায় রক্ত চলাচল বাড়িয়ে তুলে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।

৩/চুলে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টির ঘাটতি পূরণে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করা যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে চুলের গোড়া মজবুত করতে এবং অতিরিক্ত চুল পড়ে যাওয়া সমস্যা বন্ধ করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল বেস কার্যকারী।

৪/সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি থেকে চুলকে রক্ষা করতে এবং মাথার ত্বক থেকে ধুলাবালি ও ময়লা পরিষ্কার করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুলের জুরি মেলা ভার।

৫/যাদের চুলের ডগা ফেটে যায় তারা চাইলে চুলের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করতে পারেন।

৬/পাশাপাশি মাথার স্ক্যাল্প সুস্থ রাখে এবং চুলের আদ্রতা ধরে রাখতেও ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করা যায়। এছাড়াও অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ কমিয়ে চুলের জেলা ধরে রাখতে এবং অকালে চুলের থেকে যাওয়া দূর করতেও ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করা যায়।

যেভাবে ব্যবহার করবেন

১/ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর যাবতীয় উপকারিতা গুলো পেতে অবশ্যই আপনাকে কিছু নিয়ম অনুসরণ করে ব্যবহার করতে হবে। যেমন: ভিটামিন ই ক্যাপসুল হেয়ার প্যাক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য আপনাকে পরিমাণ মতো এলোভেরা জেল এর সঙ্গে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর নির্যাস বের করে একসঙ্গে মিশে নিতে হবে।

আপনার চুল যদি লম্বা কিংবা ঘন হয় সে ক্ষেত্রে আপনি একের অধিক ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করতে পারেন। এই দুটি উপকরণ একসঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে মাথার ত্বকে লাগিয়ে এবং এক ঘন্টা রাখার পর ভালোভাবে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার অকালে চুল পেকে যাওয়া কিংবা চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা গুলো সমাধান করার পাশাপাশি এবং নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করবে।

২/আমন্ড অয়েল কিংবা নারিকেল তেল এর সঙ্গে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর নির্যাস ভালোভাবে মিশিয়ে মাথার ত্বকে লাগিয়ে নিন এবং কিছুক্ষণ মালিশ করার পর 30 মিনিট পরে শ্যাম্পু ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার চুলের যাবতীয় সমস্যা দূর হবে এবং নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করবেযদি আপনার মাথার ত্বকে কোন ধরনের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন তেল কিংবা ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করবেন না।

লেখকের মন্তব্যঃশরীরের কোন ভিটামিন চুল গজাতে সাহায্য করে

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এ আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে যদি আপনার কোন উপকার হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুবান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন। এই আর্টিকেলটি সম্পর্কে যদি আপনার কোন মতামত বা মন্তব্য থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন। আশা করি আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার পর আপনার চুলের যাবতীয় সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে। সকলে ভালো থাকবেন।আসসালামু আলাইকুম।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: আর্টিকেলটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। অবশ্যই যে কোন ধরনের কেমিক্যাল প্রোডাক্ট ব্যবহারে ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা পালন করবেন প্রয়োজনের চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজিটাল ব্লগ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪