ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে চুল লম্বা করার উপায়। বিস্তারিত জানুন
আপনি কি ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে চুল লম্বা করার উপায় কিংবা ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম গুলো সম্পর্কে জানতে চান। পাশাপাশি চুল পড়া বন্ধ করার জন্য ভিটামিন ই ক্যাপসুল কিভাবে ব্যবহার করা উচিত এবং ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর দাম কত।এ সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে যদি জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্য। আজকের এই আর্টিকেলটিতে এ সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
আশা করছি আর্টিকেলটি পড়ার পর আপনি ভিটামিন ই ক্যাপসুল চুল ও মুখে ব্যবহারের বিস্তারিত নিয়ম গুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাহলে ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে চুল লম্বা করার ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম গুলো বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরুতে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচীপত্রঃভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে চুল লম্বা করার উপায়
ভূমিকা
আপনার চুলের রং কি দিন দিন ফিকে হয়ে যাচ্ছে। মুখের যাবতীয় সমস্যায় ভুগছেন। চুল লম্বা করার, চুল পড়া বন্ধ করা এবং মুখে যত্নের জন্য ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করার চিন্তা ভাবনা করছেন। তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে সম্পূর্ণ পড়ুন। মুখের যত্নে এবং চুল লম্বা করার পাশাপাশি চুল পড়া বন্ধ করার জন্য আমরা কত রকম বাজারে পণ্য ব্যবহার করি।
যেগুলো আমাদের ত্বকের এবং চুলের ক্ষতির কারণও হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু আপনি কি জানেন অল্পদামের একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল আপনার চুল লম্বা করার পাশাপাশি চুল পড়া বন্ধ করবে এবং মুখে ব্যবহার করলেও ভালো উপকারিতা দিবে। জি হ্যাঁ। ভিটামিন ই ক্যাপসুল চুল লম্বা করার পাশাপাশি চুল পড়া বন্ধ করতে এবং মুখে ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভালো উপকারিতা পাওয়া যায়।
এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে চুল পড়া বন্ধ করতে কিংবা চুল লম্বা করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল কতটুকু কার্যকারী কিংবা এর ব্যবহার কিভাবে করা যায়। আপনাদের এ সকল যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আজকের এই আর্টিকেলটি লেখা।
আশা করি এই আর্টিকেলটি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে পারেন তাহলে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করে চুল লম্বা করার এবং চুল পড়া বন্ধ করার পাশাপাশি মুখে ব্যবহারের নিয়ম বিস্তারিত জানতে পারবেন। এছাড়াও ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর দাম কত সে বিষয়ে সম্পর্কেও থাকছে আজকেরে আর্টিকেলটিতে।
চুল পড়া বন্ধ করার ভিটামিন ই ক্যাপসুল
চুলের যত্নে, চুল পড়া বন্ধ করতে এবং চুল লম্বা করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভীষণ উপকারী। ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারে আপনার চুল পড়া কমে আসবে এবং চুল লম্বা ও ঝলমলে হবে। তাই অনেকেই ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পাশাপাশি ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করে থাকেন। চুল পড়া বন্ধ করতে এবং চুল লম্বা করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর জুড়ে মেলা ভার। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক চুল পড়া বন্ধ করার পাশাপাশি ভিটামিন ই ক্যাপসুল চুলের জন্য কতটুকু উপকারী।
১/ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারের ফলে চুল পড়া বন্ধ হয় এবং নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে। এর পাশাপাশি ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারের ফলে আমাদের ত্বকের ফ্রি রেডিক্যাল গুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করে মাথার স্ক্যাল্পকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
২/নিয়মিত ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারের ফলে চুলের ফলিকলগুলো ক্ষতি হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায় এবং চুলের গোড়ায় রক্ত চলাচল বাড়িয়ে তুলতেও ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করা যায়।
৩/চুলের গোড়া মজবুত করে চুল পড়া বন্ধ করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর বিকল্প নেই।
৪/সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মির কারণে যাদের চুল ড্যামেজ হয়ে গেছে কিংবা অতিরিক্ত চুল পড়া সমস্যা দেখা দিয়েছে তারা চাইলে নিয়মিত ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করতে পারেন। এটি সূর্যের ক্ষতিকারক অধিবেগুনি রশ্মি থেকে চুলকে রক্ষা করবে পাশাপাশি মাথার ত্বক কে ধুলা ময়লা থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করবে।
৫/যাদের চুলের ডগা ফাটার সমস্যা রয়েছে তারাও চাইলে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করতে পারেন এতেও ভালো উপকারিতা পাওয়া যায়।
৬/চুলের আদ্রতা ধরে রাখতে এবং মাথার ত্বকে রক্ত চলাচল বাড়িয়ে তুলতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করা উচিত।
৭/মাথার ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল মিশ্রণের পরিমাণ কমিয়ে চুল পড়া বন্ধ করে এবং মাথার ত্বকে জ্বালা কিংবা চুলকানির সমস্যা দূর করতে এটি বেস্ট কার্যকারী।
৮/যাদের চুল এর রং ফিকে হয়ে গেছে কিংবা ফ্রিজে চুলের হাল ফিরে আনার ক্ষেত্রেও ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করা যায়। মাথার ত্বকে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারের ফলে এটি চুলের উপর একটি সুরক্ষা স্তর তৈরি করে যা আমাদের ত্বককে রুক্ষ ও শুষ্ক হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে এবং চুল পড়া বন্ধ করে।
৯/ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য আমাদের মাথার ত্বকের এন্ড অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে।
১০/চুলে সঠিক পরিমাণ পুষ্টি যোগায় এবং চুলের ভাঙ্গা রোধ করার পাশাপাশি চুলের স্থিতিস্থাপকতা ধরে রাখতে এবং উজ্জ্বলতা ক্ষতিগ্রস্ত চুল ও মাথার ত্বক মেরামত করতেও ভিটামিন এই ক্যাপসুল দারুন কার্যকারী।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে চুল লম্বা করার উপায়
চুল পড়া বন্ধ করতে এবং চুল লম্বা করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর সঠিক ব্যবহারের উপায় গুলো সম্পর্কে জানা উচিত। আপনি যদি চুলের যত্নে সঠিকভাবে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনার চুল পড়া বন্ধ হবে এবং চুল লম্বা করার পাশাপাশি চুলের যাবতীয় পুষ্টি জোগাতে ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল সাহায্য করে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে চুল লম্বা করার বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে।
অ্যালোভেরা ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল
দ্রুত চুল পড়া বন্ধ করতে এবং চুল লম্বা করতে আপনি অ্যালোভেরার সঙ্গে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করে হেয়ার মাস্ক তৈরি করতে পারেন। এই হেয়ার মাস্কটি তৈরি করতে আপনাকে পরিমাণ মতো এলোভেরা জেল এর সঙ্গে ভিটামিন ই ক্যাপসুলের নির্যাস বের করে নিয়ে একসাথে নিচে ভালোভাবে পেস্ট তৈরি করতে হবে।
যদি আপনার চুল লম্বা কিংবা ঘন হয় তাহলে আপনি একাধিক ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করতে পারেন। এরপর এই পেজটি আপনার মাথার ত্বকে এবং চুলে ১ ঘন্টা লাগিয়ে রাখুন। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার দ্রুত চুল পড়া বন্ধ হবে এবং চুল লম্বা করতেও সাহায্য করবে।
আমন্ড অয়েল বা নারিকেল তেলের সঙ্গে ভিটামিন ই ক্যাপসুল
চুল পড়া বন্ধ করতে এবং দ্রুত চুল লম্বা করতে আপনি চাইলে আমন্ড অয়েল কিংবা নারিকেল তেলের সঙ্গে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর নির্যাস একসাথে মিশিয়ে সেই তেল আপনার মাথার ত্বকে লাগাতে পারেন এবং কিছুক্ষণ মালিশ করার পর 30 মিনিট ধরে রেখে দিন। নির্দিষ্ট সময় পার হলে ভালোভাবে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। এই হেয়ার মাস্কটি আপনার চুল পড়া বন্ধ করবে,চুল লম্বা করবে এবং মাথার ত্বকে সঠিক পরিমাণ পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করবে।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল ও জোজোবা অয়েল
ভিটামিন ই ক্যাপসুল ও জোজোবা অয়েল একসঙ্গে ব্যবহার করলে আপনার চুল পড়া বন্ধ হবে এবং চুল লম্বা হবে এটা এক প্রকার নিশ্চিত করে বলা যায়। এর জন্য আপনাকে একটি পরিষ্কার পাত্রে একটি ডিম ফাটিয়ে নিতে হবে।
এরপর এর সঙ্গে এক চামচ পরিমাণ জোজোবা অয়েল ও একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর নির্যাস একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট বানাতে হবে। এখন এই পেজটি এক ঘণ্টা আপনার চুলে লাগিয়ে রাখার পর ভালোভাবে শ্যাম্পু করে ধুয়ে নিতে হবে। চুলের যত্নে এই হেয়ার মাক্সটি দারুন কাজ করে।
কলা ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল
কলা এবং ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর পেস্ট আপনার চুলের যাবতীয় সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে। এর জন্য আপনাকে একটি কলা ভালোভাবে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিতে হবে এবং এর সাথে এক টেবিল চামচ পরিমাণ মধু মেশালে ভালো উপকারিতা পাওয়া যায় এবং ৩ টি ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর নির্যাস ব্যবহার করে পেস্ট তৈরি করতে হবে। এই মিশ্রণটি এক ঘণ্টা আপনার চুলে ব্যবহারের পর ভালোভাবে শ্যাম্পু করে ধুয়ে নিলে চুল প্রাকৃতিকভাবে ঝলমলে হবে, চুল পড়া বন্ধ হবে এবং চুল লম্বা হবে।
আরো পড়ুনঃশরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব হলে করণীয়
টক দই ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল
দুই টেবিল চামচ পরিমাণ টক দইয়ের সঙ্গে পরিমাণ মতো ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর নির্যাস ব্যবহার করে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন এবং এই মিশ্রণ আপনার মাথার ত্বক থেকে শুরু করে চুলের আগা পর্যন্ত ব্যবহার করে ৪০ মিনিট পর্যন্ত রেখে দিন। নির্দিষ্ট সময় পর মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ফেলুন। এতে আপনার চুল দ্রুত লম্বা হবে এবং চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করবে।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল,ডিম এবং বাদামের তেল
চুলকে দ্রুত লম্বা করতে এবং দ্রুত চুল পড়া বন্ধ করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর সঙ্গে ডিম ও বাদামের তেল ব্যবহার করে চুলে লাগাতে পারেন। এই মিশ্রণটি বানানোর জন্য প্রয়োজন হবে একটি ডিম, চারটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল এবং এক চামচ পরিমাণ বাদামের তেল ভালোভাবে মিশিয়ে মাথার ত্বক থেকে শুরু করে চুলের আগা পর্যন্ত লাগান এবং এক ঘন্টা রাখার পর শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুইবার এই হেয়ারমাক্সটি ব্যবহার করলে দ্রুত আপনার চুল পড়া বন্ধ হবে এবং চুল লম্বা হবে।
এছাড়াও আপনারা চাইলে সরাসরি ভিটামিন ই ক্যাপসুল থেকে নির্যাস বের করে মাথার ত্বকে ঘষতে পারেন এবং কিছুক্ষণ মেসেজ করতে পারেন। এতে করে সরাসরি ভিটামিন ই ক্যাপসুল আপনার ত্বকের যত্নে যাবতীয় পুষ্টি এবং চুলের ডগা দূর করে চুলের গোড়া মজবুত করবে এবং চুল দ্রুত লম্বা করতে এবং চুল পড়া রোধ করতে সাহায্য করবে।
সিরাম
চুলের যত্নে এবং চুল পড়া রোধ করতে ও দ্রুত চুল লম্বা করতে সিরাম এর ব্যবহার অপরিহার্য। আপনি যদি নিয়মিত সিরাম এর ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনার চুল পড়া বন্ধ হবে চুল হবে মসৃণ ও চকচকে। সবচেয়ে ভালো হয় আপনি যদি ভিটামিন ই সমৃদ্ধ সিরাম আপনার চুলের যত্নে ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার চুলের রুক্ষ ও শুষ্ক ভাব দূর হবে এবং চুলের গোড়ায় যাবতীয় পুষ্টি সরবরাহে ভিটামিন ই সমৃদ্ধ সিরাম বেস কার্যকরী।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম
চুলের পাশাপাশি মুখের যত্নেও ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করা যায়। মুখে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারের বিভিন্ন নিয়ম রয়েছে এবং ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন উপকারিতা পাওয়া যায়।
উপকারিতা
১/ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান যা আমাদের মুখের এবং ত্বকের যাবতীয় সমস্যার সমাধান করে থাকে।
২/ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখের এবং ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারের ফলে প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে।
৩/মুখের বলিরেখা দাগ দূর করতে এবং বয়সের ছাপ কমাতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান বেশ কার্যকরী।
৪/শীতে মুখ ফেটে যাওয়া কিংবা ঠোঁট ফেটে যাওয়ার সমস্যা গুলো দূর করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করা যেতে পারে। ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারের ফলে মুখ ও ত্বক নরম থাকে এবং উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
৫/মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর করতে এবং ব্রণের সমস্যা দূর করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর নির্যাস মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ মাসাজ করুন।
৬/চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতেও ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করতে পারেন।
৭/গোলাপি মসৃণ ও সুন্দর ঠোঁট পেতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল দারুন কার্যকারী।
৮/অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ভিটামিন ই ক্যাপসুল আমাদের ত্বকের রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে এবং অকাল বার্ধক্য দূর করতে সাহায্য করে।
সতর্কতা: তবে যাদের ত্বক খুবই সংবেদনশীল তারা সরাসরি ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে কিংবা ত্বকে লাগাবেন না এতে প্রদাহের সৃষ্টি হতে পারে এছাড়াও মুখে এবং ত্বকে র্্যাশ ফুসকুড়ি ও এলার্জির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ব্যবহারের নিয়ম
ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের বিভিন্ন নিয়ম রয়েছে। ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম গুলো সম্পর্কে জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইলো।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল ও গোলাপজল
ভিটামিন ই ক্যাপসুল সরাসরি মুখে ব্যবহারের পরিবর্তে আপনি চাইলে গোলাপ জল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য আপনাকে দুই চামচ পরিমাণ গোলাপ জলের সাথে একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর নির্যাস বের করে ভালোভাবে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। এই মিশ্রণটি আপনার মুখে ৩০ মিনিট রাখার পর ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন এতে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল ও অ্যালোভেরা
ত্বকের যত্নে এলোভেরা খুবই ভালো কাজ করে। এর সঙ্গে যদি আপনি ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে নিতে পারেন তাহলে এর গুণাগুণ আরো কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে। এর জন্য আপনাকে দুইটা টেবিল চামচ পরিমাণ এলোভেরা জেল একটি পরিষ্কার পাত্রে নিতে হবে এর সঙ্গে এক চামচ পরিমাণ গোলাপ জল ও একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর নির্যাস একসঙ্গে মিশিয়ে ভালোভাবে পেস্ট তৈরি করুন। খেয়াল রাখবেন মিশ্রণটি যেন খুব পাতলা না হয়। মিশ্রণটি আপনার মুখে লাগিয়ে 15 থেকে 20 মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার মুখ ও ত্বক নরম থাকবে এবং উজ্জ্বল দেখাবে।
টি ট্রি ওয়েল ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল
মুখের এবং ত্বকের অ্যাকনের সমস্যা দূর করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর সঙ্গে মিশিয়ে নিতে পারেন টি ট্রি অয়েল। এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান গুলো আপনার ত্বকের যত্নে খুব ভালো কাজ করবে।
মিশ্রণটি বানানোর জন্য আপনার প্রয়োজন হবে দুই চামচ পরিমাণ গোলাপ জল দুই থেকে তিন ফোঁটা টি ট্রি ওয়েল এবং ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর নির্যাস ভালোভাবে মিশিয়ে 15 মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখার পর ধুয়ে ফেলুন। এতে মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে মুখের ডেড সেল গুলো দূর হবে এবং ত্বক নরম রাখতে সাহায্য করবে।
গ্রিন টি ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল
এক কাপ গ্রিন টি ঠান্ডা করে এর সঙ্গে এক চামচ পরিমাণ মধু এবং দুইটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর নির্যাস একসাথে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এরপর সেটি মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দেওয়ার পর ঠান্ডা পানি ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলুন এতে আপনার ত্বক ভালো থাকবে এবং ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখবে।
লেবুর রস,টক দই ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল
মুখের কালো দাগ দূর করতে এবং উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে এই মিশ্রণটি আপনার ভালো কাজে আসবে। এই মিশ্রণটি বানানোর জন্য আপনার প্রয়োজন হবে ছোট একটি পাত্রে দুই চামচ পরিমাণ টক দইয়ের সাথে কয়েক ফোটা লেবুর রস এবং একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর নির্যাস।
ভালোভাবে মিশিয়ে নেওয়ার পর দশ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখুন এবং এরপর ঠান্ডা জল ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলুন। আপনি যদি সপ্তাহে দুইবার এই মিশ্রণটি মুখে লাগাতে পারেন তাহলে আপনার ত্বকের দীর্ঘদিনের কালো দাগ চোখ দূর করবে এবং মুখে ত্বকে প্রয়োজনীয় পরিমাণ প্রদান করবে।
মধু ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল
ত্বকের টানটান ভাব দূর করতে এবং ত্বক সুস্থ রাখতে আপনি চাইলে এক চামচ পরিমাণ মধুর সঙ্গে কিছুটা দুধ এবং দুটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর নির্যাস একসঙ্গে মিশিয়ে পেজ তৈরি করে সেই পেস্ট মিনিট ১৫ আপনার মুখে লাগিয়ে নিতে পারেন। এই মিশ্রণটি সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করলে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে বলিরেখা দাগ কমে যাবে এবং আপনি হবেন সুন্দর ত্বকের অধিকারী।
পেঁপে ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল
পরিষ্কার একটি পাত্রে দুই চামচ পরিমাণ পাকা পেঁপের সঙ্গে অল্প পরিমাণ গোলাপ জল এবং একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর নির্যাস ভালোভাবে মিশিয়ে নিন এবং ১৫ থেকে ২০ মিনিট মিশ্রণটি আপনার মুখে ব্যবহার করে অপেক্ষা করুন এরপর পরিষ্কার পানি ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলুন এতে দারুন উপকারিতা পাওয়া যায়।
মুখের ক্রিম বা বডি লোশনের সঙ্গে ভিটামিন ই ক্যাপসুল
আপনি রূপচর্চায় যে মুখের ক্রিম বা বডি লোশন ব্যবহার করেন এর সঙ্গে কয়েকটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর নির্যাস একসঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করলে ত্বকের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।
তেল ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল
হাতের কনুই কিংবা হাঁটুর কালো দাগ এর পাশাপাশি চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর সঙ্গে অল্প পরিমাণ তেল আপনি চাইলে বাদামের তেল ব্যবহার করতে পারেন একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে এবং ত্বকে ব্যবহার করুন এতে দারুন উপকার মিলে।
মাছের তেল ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল
মুখের ক্ষত বা কেটে যাওয়া দাগ দূর করতে মাছের তেলের সঙ্গে পরিমাণ মতো মধু এবং একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর নির্যাস ভালোভাবে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন এবং 15 থেকে 20 মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখার পর গরম জল দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন এতে আপনার মুখের শুষ্ক ভাব দূর হবে পাশাপাশি আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে তুলতেও সাহায্য করবে।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল দাম কত
বন্ধুরা এতক্ষণ আমরা ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে চুল লম্বা করার উপায়, চুল পড়া বন্ধ করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর ব্যবহার এবং মুখে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। সকল বিষয়গুলো জানার পর আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর দাম কত।
আপনারা চুলের এবং মুখের যত্নে যে সকল কসমেটিক্স ব্যবহার করে থাকেন এগুলো তুলনায় একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর পাতার দাম অনেক অনেক কম। আপনি যদি বিভিন্ন ফার্মেসিতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর নাম জিজ্ঞেস করেন তাহলে হয়তো তারা এর দাম কিছুটা বাড়িয়ে চাইতে পারে তাই অবশ্যই আপনাদের ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর নাম কত সেটা জানা উচিত।
বিভিন্ন ফার্মেসিতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর সাধারণ দাম প্রতি পিচ ৩০ টাকা করে। তবে আপনি যদি পুরো পাতা নিতে চান তাহলে হয়তো কিছুটা কম বেশি হতে পারে। এছাড়াও আপনারা চাইলে ইন্টারনেটে খোঁজাখুঁজি মাধ্যমে ভিটামিন ই ক্যাপসুলের দাম এবং বিভিন্ন অনলাইন শপিং মল থেকে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর দাম জেনে সেখান থেকেও কিনে নিতে পারেন। আশা করি আপনার দামি দামি কসমেটিক্স এর তুলনায় ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর দাম অনেকটাই কম এবং বেশি উপকারী হবে।
লেখকের মন্তব্যঃভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে চুল লম্বা করার উপায়
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে যদি আপনার কোন উপকার হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আর্টিকেলটি শেয়ার করতে ভুলবেন না। এই আর্টিকেলটি সম্পর্কে যদি আপনার কোন মতামত বা পরামর্শ কিংবা কোন কিছু জানার আগ্রহ থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করতে পারেন। সকলেই ভালো থাকবেন। আসসালামু আলাইকুম।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: পোস্টটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। তাই আপনার যদি অন্য কোন ত্বকের সমস্যা কিংবা মাথার সমস্যা থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই ভিটামিন ই ক্যাপসুল চুলের ক্ষেত্রে এবং মুখে ব্যবহারের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।
ডিজিটাল ব্লগ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url