চিনা বাদাম খাওয়ার সকল নিয়ম ও উপকারিতা বিস্তারিত জানুন
আমাদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা সকালে কিংবা রাতে চিনা বাদাম খেয়ে থাকেন। কিন্তু আপনি কি চিনা বাদাম খাওয়ার সঠিক নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে জানেন। কিংবা অতিরিক্ত বাদাম খাওয়ার ফলে কি ধরনের ক্ষতি হতে পারে সে সম্পর্কে আপনার ধারণা রয়েছে। আপনি যদি চেনা বাদাম খাওয়ার নিয়ম উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য।
আজকের এ আর্টিকেলটিতে আমরা চিনা বাদাম খাওয়ার সকল উপকারিতা খাওয়ার নিয়ম এবং খাওয়ার সঠিক সময় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। এছাড়াও আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা খালি পেটে বাদাম খেলে কি হয় কিংবা কি ধরনের ক্ষতি হতে পারে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচীপত্রঃচিনা বাদাম খাওয়ার সকল নিয়ম ও উপকারিতা
ভূমিকা
বাদাম খুবই সুস্বাদু ও পুষ্টিকর একটি খাবার। যারা নিয়মিত বাদাম খেয়ে থাকেন তাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। চিকিৎসকদের মতে নিয়মিত বাদাম খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী হয়। বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ মন ও পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট প্রোটিন ও ডায়েট্রি ফাইবার।
যা আমাদের খারাপ কলেস্টরলের মাত্রা কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া চিনা বাদামের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ই,ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এবং মিনারেলস এর মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম,ফসফরাস,ম্যাগনেসিয়াম,আয়রন,জিংক,কপার, সেলিনিয়াম সহ হাজারো পুষ্টি গুনাগুন।
আরো পড়ুনঃডিম কিভাবে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়
তাই শরীরের সার্বিক উন্নতির জন্য চিকিৎসকরা নিয়মিত বাদাম খেতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে অবশ্যই বাদাম খাওয়ার পূর্বে বাদাম খাওয়ার সঠিক নিয়ম এর উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাবারের নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পর্কে জানতে হবে। অন্যথায় আপনার বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ক্ষতি হতে পারে।
রাতে বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
রাতে ভিজিয়ে বাদাম খাওয়ার ফলে শরীর বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায়। আর্টিকেলটির এবং চামড়া রাতে ভিজে বাদাম খাওয়ার কিছু উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব।
১/রাতে নিয়মিত ভিজে বাদাম খেলে তা রক্তের কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং হৃদপিণ্ড ভালো রাখে।
২/যারা নিয়মিত রাতে বাদাম খেয়ে থাকেন তাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে।
৩/বাগানে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন যা আমাদের চোখ, ত্বক,হাড় ও দাঁতের গঠন মজবুত করতে সাহায্য করে।
৪/বাদামের মধ্যে থাকা উচ্চমাত্রার ফাইবার হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে।
৫/যারা নিয়মিত রাতের বেলা ঘুমাতে যাওয়ার আগে বাদাম খেয়ে থাকেন তাদের মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে তুলে।
৬/রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে নিয়মিত বাদাম খেলে এর মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
৭/যারা নিয়মিত রাতে বাদাম খেয়ে থাকেন তাদের রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে বাদাম সাহায্য করে।
৮/বাদামের মধ্যে থাকা ফাইবার হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে রক্তের মাধ্যমে খাদ্য থেকে পুষ্ট উপাদান শরীরের বিভিন্ন কোষে পৌঁছে দিতে সাহায্য করে এবং অতিরিক্ত চর্বি কমিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৯/বাদামের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিফাঙ্গাল ও এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা ফাংগাল ও ভাইরাল ইনফেকশনের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
১০/যারা নিয়মিত রাতের বেলা ভিজিয়ে বাদাম খেয়ে থাকেন তাদের ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধির হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
চিনা বাদাম খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
বাদামের মধ্যে রয়েছে হাজারো পুষ্টি গুনাগুন যেগুলো আমাদের শরীরে সার্বিক উন্নতিতে সাহায্য করে। কিন্তু তার জন্য আপনাকে অবশ্যই চিনা বাদাম খাওয়ার সঠিক নিয়ম ও উপকারিতা গুলো সম্পর্কে জানতে হবে। আর্টিকেলটির এ অংশে আমরা চিনা বাদাম খাওয়ার সকল নিয়ম ও উপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
চিনা বাদাম খাওয়ার নিয়ম
চিনা বাদাম আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য যতটুকু উপকারী যদি আপনি সঠিক পরিমাণ ও নিয়ম না জেনে খান তার চেয়ে বেশি পরিমাণ ক্ষতি করতে পারে। অনেকেই রয়েছে যারা কাচা বাদাম খেলে হজমের সমস্যা দেখা দেয়। আবার অনেকেই ভাঁজা বাদাম খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু আপনি কি জানেন বাদামের উপরের পাতলা আবরণ সহজে হজম হতে চাই না।
এবং ভাজা বাদাম খেলে তার পেটের গ্যাসের সমস্যা কিংবা হার্টের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই চিকিৎসকেরা চিনা বাদাম খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই 10 থেকে 15 মিনিট বাদাম ভিজে তারপর উপরের পাতলা আবরণ উঠিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এতে আপনার পেটের সমস্যা হবে না এবং নিয়মিত রাতের বেলা বাদাম খাওয়ার ফলে এর সকল উপকারিতা গুলো আপনি পেয়ে যাবেন।
চিনা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়: চিনা বাদামের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ই,মনসাচুরেটেড ফ্যাট ও ফাইটোস্টেরল যা আমাদের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
বাদাম আমাদের লোহিত রক্ত কণিকার কোষগুলোতে ভিটামিন ই এর পরিমাণ বৃদ্ধি করে এবং বাদামের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান কোলেস্টেরল গঠনে প্রতিরোধ সৃষ্টি করে। আপনি যদি প্রতিদিন একমুঠো বাদাম রাতে ভিজে খেতে পারেন তাহলে আপনার কোলেস্টেরলের বৃদ্ধির ঝুঁকি কমে আসবে।
হার্টের সুরক্ষা প্রদান করে: বাদামের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ চর্বি,ভিটামিন ই,ফাইবার,ম্যাগনেসিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান। যেগুলো আমাদের হার্টের সুরক্ষা প্রদান করে এবং কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। তাই হার্টের সুরক্ষার জন্য এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত রাতের বেলা ভিজে বাদাম খাওয়ার চেষ্টা করুন।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে: বাদামের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম যা আমাদের রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে। বাদামের মধ্যে থাকা ম্যাগনেসিয়াম রক্তের সরকারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্তকে স্থিতিশীল পর্যায়ে নিয়ে আসে। এছাড়াও বাদামের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার ও স্বাস্থ্যকর চর্বি যা আমাদের রক্তের শর্করার স্পাইক নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
ভিটামিন ই প্রদান করে: বাদামের মধ্যে রয়েছে উচ্চমাত্রায় ভিটামিন ই ও এন্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান যা আমাদের কোষগুলোকে ক্ষতি হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এছাড়াও ভিটামিন ই আমাদের এলজাইমার,ক্যান্সার, হৃদরোগের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে বেশ কার্যকারী। তাই শরীরে ভিটামিন ই এর ঘাটতি পূরণের জন্য নিয়মিত রাতের বেলা ভিজিয়ে বাদাম খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে: বাদামে রয়েছে উচ্চমাত্রায় প্রোটিন ফাইবার ও কার্বোহাইড্রেট যা খাদ্য থেকে ক্যালরির পরিমাণ গ্রহণ কমাতে সাহায্য করে এবং নিয়মিত বাদাম খাওয়ার ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে আসে। চিকিৎসকদের মতে যারা নিয়মিত বাদাম খেয়ে থাকেন তাদের শরীরের BMI কমিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে: বাদামের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম যা আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে হার্টের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয় এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে আনে। তাই যারা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন তারা দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় চিনা বাদাম যুক্ত করতে পারেন।
আরো পড়ুনঃপালং শাকের সকল উপকারিতা ও অপকারিতা
চোখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী: বাদামের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ই যা আমাদের দৃষ্টি শক্তি উন্নত করতে এবং ছানি পড়া দূর করতে সাহায্য করে। গাজর খেলে আমাদের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং বাদামের মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদানগুলো আমাদের চোখের সুরক্ষার জন্য কাজ করে।
চিকিৎসকদের মতে যারা নিয়মিত বাদাম খান বাদামের মধ্যে থাকা ভিটামিন ই চোখের ঝিলি রক্ষা করতে এবং ম্যাকুলার অবক্ষয় প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে: বাদামের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ই ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান যা আমাদের প্রদাহ,ক্যান্সার,বার্ধক্য ও মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত ৮৪ গ্রাম বাদাম খেয়ে থাকেন তাদের শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী হয় যার কারণে বিভিন্ন ধরনের রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সুবিধা হয়।
ত্বকের জন্য পুষ্টিকর: ত্বকের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এবং সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মির থেকে রক্ষার জন্য আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ই ও ফ্ল্যাভোনয়েড এন্টিঅক্সিডেন্ট প্রয়োজন। যা নিয়মিত বাদাম খাওয়ার ফলে পাওয়া যায়। তাই যারা ত্বকের সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত তারা ত্বকের সুরক্ষার জন্য প্রতিদিন রাতে ভিজে বাদাম খেতে পারে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে: বাদামের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার,ভিটামিন ই ও ফ্ল্যাভোনয়েড উপাদান। যা হজমের সমস্যা সমাধান করে মলাশায়ের ক্যান্সার,স্তন ক্যান্সার এর ঝুঁকি কমিয়ে আনে। এবং ক্যান্সারের কোষগুলোকে শরীরে বৃদ্ধি পাওয়া থেকে প্রতিরোধ করে।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে: বাদামের মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে স্নায়ুতন্ত্রের কার্যক্ষমতা কে বাড়িয়ে তোলে। এছাড়াও নিয়মিত বাদাম খেলে এল-কারনিটাইন ও রিবোফ্লোবিন মস্তিষ্কের কোচের পরিমাণ বৃদ্ধি করে স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। বাদামের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফেনাইল্যালানাইন যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে তোলে।
বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা
প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আমরা চিনা বাদাম খাওয়ার বিভিন্ন নিয়ম ও উপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা বাদামের আরো কিছু উপকারিতা ও অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানবো।
বাদামের উপকারিতা
ক্লান্তি দূর করে: বাদাম কে শক্তির একটি ভালো উৎস হিসেবে ধরা হয়। বাদামের মধ্যে থাকা পুষ্প উপাদান গুলো আমাদের শরীরকে এনার্জি ঠিক রাখতে এবং কাজে মনোযোগ বসাতে সাহায্য করে। তাই যারা নিয়মিত বাদাম খেয়ে থাকেন তারা সারাদিনের কাজ কর্মের কারণে যে ক্লান্তি অনুভব হয় তা দ্রুত দূর করে।
মেজাজ ভালো রাখে: নিয়মিত বাদাম খেলে বাদামের মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদানগুলো বিষন্নতা দূর করে মানসিক অবস্থা ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং অতিরিক্ত খাবার প্রবণতা কমিয়ে আনে।
দাঁতের যত্নে: বাদামের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম যা আমাদের দাঁতের ক্ষয় হওয়া রোধ করে দাঁতকে মজবুত ও শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। তাই যারা দীর্ঘদিন ধরে তাদের সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত চিনা বাদাম খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।
চুলের যত্নে: যারা দীর্ঘদিন ধরে চুল ঝরে পড়ার সমস্যায় ভুগছেন কিংবা মাথায় খুশকির সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত বাদাম খাওয়ার অভ্যাস করুন। এটি আপনার চুলকে ঘন ও ঝলমলে করতে সাহায্য করবে।
হার্ট ও জয়েন্টের ব্যথায়: বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের হাড়ের এবং জয়েন্টের নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বাগানের মধ্যে রয়েছে প্রদাহ বিরোধী উপাদান যা আমাদের হাড়ের ও জয়েন্টের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
পিত্তথলির পাথর রোধ করে: চিকিৎসকদের মতে যারা নিয়মিত ভিজিয়ে চিনা বাদাম খেয়ে থাকেন তাদেরকে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে আসে। এছাড়াও বাদামের মধ্যে থাকা প্রদাহনাশক উপাদান ত্বকের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
বাদাম খাওয়ার অপকারিতা
১/প্রতিদিন অতিরিক্ত পরিমাণ বাদাম খাওয়ার ফলে ক্ষুধামন্দা ভাব দেখা দিতে পারে।
২/বাদামের উপরের স্তর সহজে হজম হয় না। আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণ বাদাম খাওয়া শুরু করেন তাহলে বদহজম কিংবা বমি বমি ভাবের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৩/অতিরিক্ত পরিমাণ বাদাম খাওয়ার ফলে শরীরে খনিজ ও মিনারেল এর শোষণে বাধাগ্রস্থ হতে পারে।
৪/যারা বাদামের সাত বাড়ানোর জন্য বাদামের সাথে লবণ মিশিয়ে খান তাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা হতে পারে।
৫/অনেকের ক্ষেত্রে বাদাম খাওয়ার ফলে এলার্জি সমস্যা দেখা দেয়। তাই যারা এলার্জির সমস্যায় ভুগছেন তারা অতিরিক্ত বাদাম খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুন।
চিনা বাদাম খাওয়ার সঠিক সময়
আপনি যেকোনো সময় চিনা বাদাম খেতে পারেন। তবে সঠিক সময় ও সঠিক পরিমাণ মেনে চেনা বাদাম খেলে এর উপকারিতা অনেক গুণ বেশি বৃদ্ধি পায়। আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা চিনা বাদাম খাওয়ার সঠিক নিয়ম সঠিক সময় ও খাওয়ার কিছু নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
চিনা বাদাম খাওয়ার সঠিক সময়
চিনা বাদাম আপনি সকালে খালি পেটে খেতে পারেন কিংবা আপনি চাইলে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগেও চিনা বাদাম খেতে পারেন। দুটি নিয়ম অনুসরণ করে খেলে চিনা বাদামের সকল উপকারিতা গুলো আপনি সঠিক পরিমাণে পাবেন।
এছাড়া অনেকেই মুখরোচক খাবার হিসেবে ভাজা কিংবা কাঁচা চিনা বাদাম খেয়ে থাকেন। সেক্ষেত্রে ও অনেক উপকার পাওয়া যায়। তবে চিনা বাদাম সকালে খালি পেটে ও রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে খেলে এটি শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
প্রতিদিন কতটুকু পরিমাণ চিনা বাদাম খাবেন
চিনা বাদাম আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী ও সুস্বাদু একটি খাবার। কিন্তু অবশ্যই আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ খেতে হবে। আপনি যদি প্রয়োজনের অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন এতে আপনার বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে একজন সুস্থ ব্যক্তির প্রতিদিন 30 গ্রাম এর বেশি চিনা বাদাম খাওয়া উচিত না। এর চেয়ে বেশি পরিমাণে খেলে অনেক ধরনের শারীরিক সমস্যার শিকার হতে পারেন। তাই অবশ্যই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ এবং সঠিক নিয়ম মেনে খাওয়া উচিত।
চিনা বাদাম খাওয়ার বিভিন্ন নিয়ম
দৈনন্দিন বিভিন্ন খাদ্য তালিকায় সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাবার বাদাম যুক্ত করে খেতে পারেন। এতে খাবারের স্বাদ যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনি এর পুষ্টিগুণ বজায় থাকবে।
বাদামের ওপর স্ন্যাক: দ্রুত ও সহজ নিয়ম অনুসরণ করে একমুঠো কাঁচা অথবা ভাজা বাদাম খাওয়া যেতে পারে।
বাদামের মাখন: টোস্টের সাথে বাদামের মাখন মিশিয়ে অথবা ওটমিলের একসাথে বাদামের মাখন যুক্ত করে খেতে পারেন। এছাড়াও বিভিন্ন ফল ও শাক সবজির সাত বৃদ্ধির জন্য ডিপ হিসেবে ব্যবহার।
স্নুদি: সঠিক পরিমাণ প্রোটিন ও টেক্সচারের জন্য স্মোদির সাথে বাদাম কিংবা বাদামের মাখন ব্লেন্ড করে খেতে পারেন।
সালাদ: ফল কিংবা সবজির সালাদের স্বাধ তুলতে এর ওপর বাদাম ছিটিয়ে খেতে পারেন।
বেকিং: অতিরিক্ত ক্রাঞ্চি এবং পুষ্টির জন্য কেক,মাফিন কিংবা গ্রানোলায় বাদামের গুরু মেশাতে পারেন।
বাদাম দুধ: রাতের বেলা খাবার শেষ করার পর চা,কফি কিংবা দুধের সাথে বাদাম গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে এতে যেমন শারীরিক পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয় তেমনি খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।
প্রাতঃরাশের খাবার: সকালে ঘুম থেকে উঠে দৈই,সিরিয়াল বা ওটস এর সাথে বাদাম মিশিয়ে খেলে এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।
নাড়ুন-ভাজা: মুখের চোখ খাবার হিসেবে নাড়ুন-ভাজা কিংবা বাটিতে বাদাম মিশিয়ে খেল
বিকালের হালকা নাস্তা এবং পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয়।
প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা চিনাবাদাম খাওয়ার সকল উপকারিতা নিয়ম এবং অপকারিতা গুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন।
খালি পেটে বাদাম খেলে কি হয়
সকালে খালি পেটে বাদাম খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। আর্টিকেলটির এই অংশে সকালে খালি পেটে বাদাম খেলে কি হয় এ সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানবো।
সকালে খালি পেটে বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
ভালো ঘুম: প্রতিদিন সকালে খালি পেটে রাতের ভেজানো বাদাম খাওয়ার ফলে দ্রুত ঘুম আসতে সাহায্য করে এবং অনিদ্রার সমস্যা গুলো দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার প্রতিরোধ: বাদামের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার যা পাকস্থলীর প্রাচীর থেকে অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিক হরমোন ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এবং এর মধ্যে থাকা ফাইবার খাদ্যকে সঠিকভাবে হজম করে রক্তের মাধ্যমে প্রতিটি কোষে পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে।
ট্যানিন এর পরিমাণ কমায়: কাঁচা বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফ্যানোলিক যৌগ ট্যানিন যা সহজে হজম হয় না। কিন্তু আপনি যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কাঁচা বাদাম খেতে পারেন তাহলে শরীরের ক্ষতিকারক উপাদান ট্যানিন এর পরিমাণ কমিয়ে হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করবে।
টিউমার প্রতিরোধ করে: বাদামের মধ্যে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েড উপাদান শরীরে টিউমারের কোষগুলোকে বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করে এবং টিউমার প্রতিরোধ করে।
গর্ভাবস্থায় উপকারী: গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী নারী ও শিশুর শারীরিক সুস্থতার জন্য এবং শিশুর মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে নিয়মিত বাদাম খাওয়া উচিত। এটি গর্ভবতী নারীর শারীরিক পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয় এবং শিশুর মস্তিষ্কের গঠন ভালো থাকে।
টক্সিক দূর করে: বাদামের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফ্যাটি এসিড,ওমেগা ৩ এবং ওমেগা ৬ যা আমাদের শরীরে জমে থাকা ক্ষতিকারক টক্সিক দূর করতে সাহায্য করে।
কিডনির স্বাস্থ্য রক্ষায়: বাদামের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি উপাদান,ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন যেগুলো আমাদের কিডনিতে পাথরের সমস্যা হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
খালি পেটে বাদাম খাওয়ার অপকারিতা
১/বাদাম যেমন আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী তেমনি অতিরিক্ত পরিমাণ বাদাম খাওয়ার ফলে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক দেখা দেয়। বাদামের মধ্যে রয়েছে পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট যার প্রধান উপাদান হচ্ছে ওমেগা-৬। এটি যদি আমাদের শরীরে অতিরিক্ত মাত্রায় বৃদ্ধি পায় তাহলে ওমেগা-৩ শরীরের টক্সিক বৃদ্ধি করে।
২/ওমেগা-৬ ফ্যাটি এসিডের পরিমাণ শরীরে অতিরিক্ত হলে হার্টের রোগ,আর্থ্রাইটিস কিংবা ডায়াবেটিস সহ এলার্জি ও অ্যাজমার মত সমস্যাগুলো দেখাবে।
৩/ওমেগা-৬ ফ্যাটি এসিডের পরিমাণ শরীরের বৃদ্ধি পেলে এটি ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডকে অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি হরমোন এ পরিবর্তন করে। যার কারনে শরীরের বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ ও সৃষ্ট হতে পারে।
৪/বাদামের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ফাইটিক এসিড যা সহজে হজম হতে চাই না তাই আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণ বাদাম খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার শরীরে ফাইটিক এসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে এবং হজম প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করবে।
৫/যাদের কিডনিতে সমস্যা কিংবা কিডনিতে পাথর ও গলব্লাডার কে সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা চিনা বাদাম খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক হতে পারে। কেননা চিনা বাদামের মধ্যে থাকা অক্সালেট ও ক্যালসিয়াম কিডনিতে পাথরের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
৬/বাদামে অতিরিক্ত ক্যালরি থাকার কারণে যদি আপনি বেশি পরিমাণ খেয়ে ফেলেন তাহলে সেটি শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমিয়ে ওজন বৃদ্ধি করবে।
লেখকের মন্তব্যঃচিনা বাদাম খাওয়ার সকল নিয়ম ও উপকারিতা
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আর্টিকেলটি পাড়ার মাধ্যমে যদি আপনার কোন উপকার হয় তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধব মাঝে শেয়ার করবেন। আর্টিকেলটি সম্পর্কে যদি আপনার কোন মতামত বা মন্তব্য থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন। সকলে ভালো থাকবেন।আসসালামু আলাইকুম।
ডিজিটাল ব্লগ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url