ডায়াবেটিস চিরতরে নিরাময় হবে-ডায়াবেটিস এর লক্ষণ
আপনি কি ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছেন? ডায়াবেটিস কে কিভাবে চিরতরে নিরাময় করা যায় সেই বিষয় নিয়ে চিন্তিত? তাহলে আজকের এ আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি যে সকল বিষয়গুলো জানতে পারবেন তা হচ্ছে কিভাবে চিরতরে ডায়াবেটিস নিরাময় করা যায়, ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা দেখা দেয়।
কোন কোন লক্ষণ গুলো আপনার মধ্যে প্রকাশ পেলে বুঝবেন আপনার ডায়াবেটিস হয়েছে, ডায়াবেটিস কত হলে বিপদের সম্ভাবনা রয়েছে, ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় কোন কোন খাবারগুলো যুক্ত করা উচিত এবং আরো জানতে পারবেন ডায়াবেটিস কমানোর প্রাকৃতিক উপায় গুলো সম্পর্কে।
আপনি কিংবা আপনার পরিচিত কেউ যদি ডায়াবেটিসের সমস্যায় আক্রান্ত হয় তাহলে কিভাবে ডায়াবেটিস থেকে চিরতরে মুক্তি পাওয়া যায় তার সকল উপায়গুলো জানতে সম্পন্ন আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচীপত্রঃডায়াবেটিস চিরতরে নিরাময় হবে-ডায়াবেটিস এর লক্ষণ
ভূমিকা
বর্তমানে সময়ের সবচেয়ে সাধারণ ও ভয়াবহ একটি রোগ হচ্ছে ডায়াবেটিস। শুধু বয়স্করাই নয় তরুণরাও ধীরে ধীরে এ রোগের শিকার হতে শুরু করেছে। একটি গবেষণায় জানা গেছে আগামী ২০ বছরের মধ্যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকবে। যার কারনে বর্তমানে ডায়াবেটিস সবার আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ডায়াবেটিস হচ্ছে এক ধরনের মেটাবলিক ডিসঅর্ডার। আপনার শরীরে ইনসুলিন আছে কিন্তু সে ইনসুলিন যদি খাদ্য থেকে গ্রহণ করা গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে না পারে তাহলে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা দেখা দেয়। সাধারণত চার ধরনের ডায়াবেটিস রয়েছে। টাইপ-১,টাইপ-২,জেস্টেশনাল এবং অন্যান্য। যখন আমরা খাবার খাই তখন আমাদের শরীরের মধ্যে প্যানক্রিয়াস থেকে ইনসুলিন মিশ্রিত হয়।
যা খাদ্য থেকে গ্রহণ করা গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু যখন এই ইনসুলিন আপনার অতিরিক্ত গ্লুকোজ কে কমিয়ে রাখতে না পারে তখন ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। সাধারণত আমাদের খাদ্যাভাস এর কারণে ডায়াবেটিসের সমস্যা দেখাবে। বিশেষ করে ফাস্টফুড ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার ফলে ইনসুলিন তার কাজ ঠিকমতো করতে পারেনা।
যার কারনে আমাদের শরীরে অতিরিক্ত গ্লুকোজ জমে এবং ডায়াবেটিসের লক্ষণ গুলো প্রকাশ পায়। এ সময় যদি কৃত্তিমভাবে রোগীর শরীরে ইনসুলিন না দেওয়া হয় তাহলে রোগী মারা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমরা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর কি ধরনের সমস্যা হয় এবং কিভাবে চিরতরে ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পাওয়া যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই আপনি যদি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয়
ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ হলে নানা ধরনের সমস্যার শিকার হতে হতে পারে। আর্টিকেটির এই অংশে আমরা ডায়াবেটিসের কারণে যে সকল সমস্যা দেখা দিতে পারে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
হাইপোগ্লাইসেমিয়া: ডায়াবেটিস হলে অনেক সময় রক্তে শর্করার মাত্রা অতিরিক্ত পরিমাণ কমে যায়।
এটি সাধারণত ডায়াবেটিস রোগীর অতিরিক্ত ওষুধ খাবার ফলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় এমনকি খাদ্যাভাসে পরিবর্তন না আনার কারণে হয়ে থাকে। যার কারণে অনেক রোগী হাইপোগ্লাইসেমিয়ার শিকার হন। যার কারণে মাথা ঘোরা,দুর্বলতা,কাঁপুনি কিংবা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মত লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়।
হাইপারগ্লাইসেমিয়া: পর্যাপ্ত পরিমাণ শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন না হওয়ার কারণে এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এর কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা অতিরিক্ত পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। যার ফলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর অতিরিক্ত পিপাসা,প্রস্রাবের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করার মতো লক্ষণগুলো দেখা দেয়।
হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধি: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর যে সকল সমস্যা হয় তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে হৃদরোগ বাই স্টকের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাওয়া। ডায়াবেটিস হৃদরোগের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলে।
ডায়াবেটিসের কারণে উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয় না যার কারণে রক্তনালীগুলোতে প্লাক জমে যায় এবং হার্ট অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোকের সম্ভাবনা দেখা দেয়। চিকিৎসকদের মতে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা একজন সাধারন মানুষের চেয়ে দুই থেকে চার গুণ বেশি।
কিডনি রোগ: দীর্ঘমেয়াদী ডায়াবেটিস এ আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে নেফ্রোপ্যাথি বা কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। যার ফলে ডায়ালাইসিস কিংবা কিডনি প্রতিস্থাপনের মত অস্ত্রোপচারের মত বড় চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে।
নিউরোপ্যাথি বা স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা: দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে নিউরোপ্যাথি বা স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যার কারনে হাত-পা, আঙ্গুল কিংবা পায়ের আঙ্গুলে ঝিন ঝিন ভাব ও অসাড় হয়ে যেতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত থাকলে আমাদের মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্র গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় যার কারণে শরীরের অন্যান্য অঙ্গের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
রেটিনোপ্যাথি এবং চোখের সমস্যা: যারা দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছেন তারা একটা বিষয় খেয়াল লক্ষ্য করেছেন যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে কমে যায়। এটি সাধারন ধরে ডিনার ছোট রক্তনালী গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে দেখা দেয়। এছাড়াও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর গ্লুকোমা এবং ক্যাটারাক্টের ঝুঁকি বেশি থাকে।
গ্যাস্ট্রোপেরেসিস: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর খাবার হজম হতে সময় বেশি লাগে যার কারণে পেটে ব্যথা,বমি ভাব ও হজমের সমস্যা সৃষ্টি হয়।
ত্বকের সমস্যা: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সংক্রমণ দেখা যায় যেমন ব্যাকটেরিয়াল এবং ফাংগাল ইনফেকশন। এছাড়া অনেকের ক্ষেত্রে ত্বকের শুষ্কতা ও চুলকানির লক্ষণ দেখা দিতে পারে। আবার ত্বকে ফাটল সৃষ্টিও হতে পারে।
দাঁত ও মুখের সমস্যা: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে দাঁত ও মাড়ির সমস্যা একজন ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। যার কারণে বাড়িতে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ যেমন নারীর প্রদাহ এবং দাঁত উঠে যাওয়ার মত লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এছাড়াও মুখে শুষ্কতা ও ছত্রাক জনিত ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
আরো পড়ুনঃদ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর ঘরোয়া উপায়
ডায়াবেটিক কিটোএসিডোসিস:টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে রক্তে শর্করার মাত্রা অতিরিক্ত পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে শরীরে কিটোন জমতে থাকে যার কারণে রক্তে অতিরিক্ত অম্লীয় ভাব দেখা যায়। রক্তে অতিরিক্ত অম্লীয়ভাব এর দ্রুত চিকিৎসা না করলে রোগীর প্রাণহানীর সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।
যৌন সমস্যা: দীর্ঘমেয়াদী ডায়াবেটিসের কারণে আমাদের শরীরের নার্ভ এবং রক্তনালী গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যার কারনে পুরুষদের মধ্যে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন এবং মহিলাদের যৌন ইচ্ছা কমে যাওয়া কিংবা অস্বস্তির মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
হজমে সমস্যা: ডায়াবেটিসের কারণে মন্ত্রের নার্ভ গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় যার ফলে ডায়রিয়া,কোষ্ঠকাঠিন্য কিনবা হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ওজন হ্রাস বা বৃদ্ধি পাওয়া: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে ইনসুলিন সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না যার কারণে হঠাৎ ওজন বৃদ্ধি পাওয়া কিংবা অতিরিক্ত হারে ওজন কমে যাওয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মূত্রনালীর সংক্রমণ: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের একটি সাধারণ সমস্যা হচ্ছে মূত্রনালীর সংক্রমণ। যার ফলে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া,ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ কিংবা প্রস্রাবের সাথে রক্তের উপস্থিতি দেখা দিতে পারে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগের পাদুর ভাব দেখা দিতে পারে যেমন সর্দি,জ্বর কিংবা ফ্লু হতে পারে।
মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা: অনেক সময় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা মানসিক অবসন্নতা, বিষন্নতা কিংবা মানসিক চাপে ভুগে থাকেন। যার কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় না।
ডায়াবেটিস এর লক্ষণ
আপনার শরীরের যে সকল লক্ষণগুলো দেখলে নিশ্চিত হবেন যে আপনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত কিনা তা আর্টিকেলটির এই অংশে আলোচনা করা হবে। তাই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে কি ধরনের লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় তা জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন।
ক্ষত শুকাতে দেরি হওয়া: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর অন্যতম একটি লক্ষণ হচ্ছে ক্ষত শুকাতে দেরি হওয়া। যদি ছোটখাটো ক্ষত আপনার শুকাতে সপ্তাহ খানেক এর বেশি লেগে যায় তাহলে বুঝবেন আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। যা ডায়বেটিসে আক্রান্ত হওয়ার প্রথম লক্ষণ।
ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ: যদি অতিরিক্ত পানি না খাওয়ার পরেও আপনার ঘনঘন প্রস্রাবে চাপ আছে তাহলে এই লক্ষণ এড়িয়ে চলবেন না।এটি ডায়াবেটিসের লক্ষণ হতে পারে।
অতিরিক্ত পিপাসা: কোনরকম পরিশ্রম না করার পরেও যদি আপনার অতিরিক্ত পিপাসা বা গলা শুকিয়ে যাওয়ার মত সমস্যা দেখা দেয় তাহলে বুঝবেন আপনার রক্তের শর্করার ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণে নেই। যা ডায়বেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আরো একটি লক্ষণ।
ক্লান্তি: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর অতিরিক্ত প্রস্রাবের চাপ আসার কারণে এবং প্রস্রাবের সাথে শর্করা ও খনিজ বের হওয়ার জন্য শরীর অল্প পরিশ্রমে অতিরিক্ত পরিমাণ ক্লান্তি অনুভব করে। যা ডায়বেটিসের লক্ষণ হতে পারে।
সারাক্ষণ খিদে পাওয়া: পেট ভরে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাওয়ার পরেও যদি আপনার কিছুক্ষণ পরপর খিদে পাই তাহলে বুঝতে হবে আপনার রক্তের শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। রক্তে সরকারের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে কিছুক্ষণ পরপর খিদে পাওয়ার লক্ষণ প্রকাশ দেখা দেই।
আরো পড়ুনঃমেয়েদের হার্টের সমস্যার সকল লক্ষণ সমূহ
ত্বকের দাগছোপ: যদি আপনার ঘাড়,গলা কিংবা দুই বাহুর মূলে কালো দাগছোপ দেখা দেয় এবং তার ঘরোয়া টোটকায় দূর না হয় তাহলে আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি থাকতে পারে। যার কারণে এই লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়।
যৌনাঙ্গে সংক্রমণ: রক্তে সরকারের মাত্রা অতিরিক্ত পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে ঘন ঘন প্রস্রাব এবং যৌনাঙ্গে সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঝাপসা দৃষ্টি: রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে চোখের লেন্সগুলোর কাজে বিঘ্ন ঘটে যার কারনে দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে হ্রাস পায় কিংবা ঝাপসা হতে শুরু করে।
ওজন হ্রাস: প্রস্রাবের মাধ্যমে অতিরিক্ত গ্লুকোজ শরীর থেকে বের হয়ে যাওয়ার ফলে শরীরে সঠিক পরিমাণ পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয় না যার কারণে হঠাৎ করেই অতিরিক্ত ওজন কমে যাওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে।
পেটে ব্যথা: ডায়াবেটিসের কারণে রক্তে কিটো এসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় যার কারণে হুটহাট করে পেটে ব্যথা দেখা দিতে পারে। যা টাইপ-১ ডায়াবেটিসের অন্যতম লক্ষণ।
ডায়াবেটিস কত হলে বিপদ
অনেকেই ডায়াবেটিসের স্বাভাবিক মাত্রা জানেন না কিংবা ডায়াবেটিস কত হলে বিপদ হতে পারে সেই সম্পর্কেও হয়তো কেউ কেউ জানেন আবার কেউ কেউ জানে না। চিকিৎসকদের মতে একজন সুস্থ স্বাভাবিক ব্যক্তির খালি পেটে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ৫.৫(mmol/l) এর মধ্যে থাকা কিংবা এর আশপাশে থাকা স্বাভাবিক।
কিন্তু বিপদ হবে যদি খালি পেটে আপনার রক্তে সুগারের মাত্রা ৬.১-৬.৯(mmol/l) হয়ে যায় তখন। এটি সাধারণত টাইপ-২ ডায়াবেটিসের বিপদ সংকেত প্রদান করে। এই অবস্থায় আপনার উচ্চ রক্তচাপ কিংবা হৃদরোগের বিপদ হতে পারে। আবার যদি ভরা পেটে কিংবা খাবারের ১ থেকে ২ ঘন্টা পর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ৭.৮(mmol/l) এর বেশি হয় তাহলেও টাইপ-২ ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা রয়েছে।
আর যদি আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা ১১.১(mmol/l) পর্যন্ত চলে যাই তাহলে আপনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত এটা নিশ্চিত। এ সময় আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে এবং চিকিৎসকের দেওয়া নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে।
তা না হলে আপনি দীর্ঘমেয়াদী বিপদ এর সম্মুখীন হতে পারেন। আশা করছি আপনারা জানতে পেরেছেন রক্তের শর্করার মাত্রা কত হলে বিপদ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে আর রক্তে শর্করা স্বাভাবিক মাত্রা কত। আশা করি আপনারা এখন খুব সহজে বুঝতে পারবেন রক্তে সরকার মাত্রা কত হলে বিপদ হতে পারে।
ডায়াবেটিস চিরতরে নিরাময় হবে কিভাবে
ডায়াবেটিস থেকে চিরতরে মুক্তি পেতে বা নিরাময় করতে আপনাকে কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে এবং কিছু বিষয়ে মাথায় রাখতে হবে। তাহলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে আপনার দীর্ঘমেয়াদী ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসবে এবং নিরাময় হবে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন বিষয়গুলো আপনাকে মাথায় রেখে চলতে হবে।
১/প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খাওয়া।
২/ভাত খাওয়ার পরিবর্তে রাতে এবং সকালে রুটি খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে এবং অবশ্যই অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া যাবে না। অল্প অল্প করে খেতে হবে।
৩/আঁশযুক্ত খাবারগুলো বেশি পরিমাণে খেতে হবে। রুটির জন্য ছাটা চালের বদলে লাল আটা রুটি অথবা ঢেঁকি ছাটা চালের ভাত খেতে পারেন। পাশাপাশি যতটা সম্ভব আলু খাওয়া বন্ধ করতে হবে এছাড়া আপনি অন্যান্য শাকসবজি খেতে পারেন।
৪/অতিরিক্ত পরিমাণ লবণ ও চর্বি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে এবং প্রতিদিন সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
৫/ফাস্টফুড ও কোমল পানীয় পরিত্যাগ করতে হবে এবং প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে।
৬/ডায়াবেটিস চিরতরে নিরাময় করতে বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানের অস্বাস্থ্যকর খাদ্য এড়িয়ে চলতে হবে।
৭/নিয়মিত শরীর চর্চা করতে হবে এবং ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
৮/একটানা অনেক সময় বসে কাজ করা যাবে না। কাজের অতিরিক্ত চাপ থাকলে কিছু সময় গ্যাপ দিয়ে দিয়ে কাজ কমপ্লিট করতে হবে। অতিরিক্ত ক্ষুধা লাগলে শসা খেতে পারেন।
৯/ধূমপান ও মধ্যপানের অভ্যাস থাকলে ত্যাগ করতে হবে।
১০/নিয়মিত ডায়াবেটিস পরীক্ষা করে রক্তের গ্লুকোজ,লিপিড, রক্তচাপ ওজন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে কিনা সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।
আশা করি এ সকল নিয়মগুলো যদি আপনি অনুসরণ করেন তাহলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে চিরতরে ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পাবেন। যদি চিরতরের ডায়াবেটিস নিরাময় করতে চান তাহলে অবশ্যই নিয়ম গুলো অনুসরণ করতে পারেন।
ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা
একজন ডায়াবেটিস এ আক্রান্ত রোগীর খাদ্য তালিকায় যে সকল খাবারগুলো থাকা আবশ্যক সেই সকল খাবার বা খাদ্য সম্পর্কে আর্টিকেলটির এই অংশে আলোচনা করা হবে। তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
খেজুর: উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ খেজুর আপনার খাদ্য তালিকায় যুক্ত করলে চিরতরে ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অনেকেই মনে করেন খেজুর মিষ্টি স্বাদ হওয়ার কারণে এটি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।
কিন্তু চিকিৎসকদের মতে খেজুরের মধ্যে ঢাকা প্রাকৃতিক চিনি ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর রক্তে শর করার মাত্রা বৃদ্ধি করে না বরং ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগী প্রতিদিন খেজুর খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস চিরতরে প্রতিরোধ করা যায় এবং রক্তের সরকারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে এটি দারুন কাজ করে।
খেজুরের মধ্যে থাকা ফাইবার আমাদের রক্তের গ্লুকোজ এর মাত্রাকে স্থির রাখতে সাহায্য করে এবং শরীরে গ্লুকোজের শোষণকে ধীরগতি করে।
তিসি: তিসিতে রয়েছে উচ্চমাত্রায় ফাইবার ওমেগা-৩, ওমেগা-৬ ফ্যাটি এসিড যা ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে এবং চিরতরে ডায়াবেটিসের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে তিসি বিজ এক গ্লাস পানির সাথে খেতে পারে তাহলে রক্তে চিনির মাত্রা কমে আসে এবং এর মধ্যে থাকা ফাইবার হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে পাশাপাশি রক্তে শর্করার মাত্রা স্থির রাখতেও এর কার্যকারিতা রয়েছে।
দুধ: দুধ একটি পুষ্টিকর খাবার যাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি। যা আমাদের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
তবে দুধ খাওয়ার ফলে পেটে গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে এর জন্য দুগ্ধ জাত খাবার আপনার খাদ্য তালিকায় যুক্ত করতে পারেন যেমন টক দই পেটের যাবতীয় সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে এবং ডায়াবেটিস কে নিয়ন্ত্রণে রাখে।
তুলসী: আয়ুর্বেদিক এই গাছ প্রাচীনকাল থেকেই প্রাকৃতিক ইনসুলিন উৎপাদন করে শরীরে রক্তের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তুলসির মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে রক্তে প্রাকৃতিকভাবে ইনসুলিন তৈরিতে সাহায্য করে। আপনি চাইলে তুলসী পাতার রস খেতে পারেন।
কিন্তু তুলসী পাতা তিক্ত সাধ হওয়ার কারণে অনেকেই খেতে পছন্দ করেন না তারা চাইলে চায়ের সঙ্গে তুলসী পাতা মিশে খেতে পারেন তবে কখনোই চিনি খাওয়া যাবে না। এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান আপনার রক্তের শর্করার স্তর নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে এবং ডায়াবেটিস থেকে চিরতরে মুক্তি দেবে।
মটরশুঁটি: ডায়াবেটিস অভিদ রোগের সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে মটরশুটি ভালো কাজ করে। প্রতিদিন ২০০ গ্রাম মটরশুঁটির খাবার ফলে উচ্চ রক্তচাপ,হৃদরোগ ও টাইপ-২ ডায়াবেটিসের আশঙ্কা কমে আসে। এছাড়াও শারীরিক পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে মটরশুটি খাওয়া যায়।
এতে রয়েছে উচ্চমাত্রায় প্রোটিন,ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজ যা ডায়বেটিস থেকে চিরতরে মুক্তি দেয় এবং হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের সম্ভাবনা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও মটর শুটির মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো রক্তে চিনির পরিমাণ কমিয়ে আনে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তাই ডায়াবেটিসের সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তি পেতে চাইলে খাদ্য তালিকায় মটরশুঁটি যুক্ত করুন।
কার্বোহাইড্রেট: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট থাকা উচিত। যদিও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে কার্বোহাইড্রেট সেবন এর ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত কিন্তু কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত সবজি ফল কিংবা শস্য খাওয়া যেতে পারে এতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে কার্বোহাইড্রেট সাহায্য করে।
প্রোটিন: মানবদেহের কোষ গঠনে এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষ গুলোকে মেরামত করতে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার যুক্ত করা উচিত। প্রোটিন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে এবং পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করে। তাই খাদ্য তালিকায় প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন লিনমিট, মাছ, ডাল ,টক ,দই ও নাটস যুক্ত করতে পারেন।
ফ্যাট: চর্বি বা ফ্যাট শরীরের ক্রিয়া-কলাপ এর জন্য অপরিহার্য এবং শক্তির দীর্ঘস্থায় একটি উৎস ধরা হয়। এছাড়াও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তাই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর খাদ্য তালিকায় অলিভ অয়েল, বাদাম ও ফ্যাটি মাছ যুক্ত করা যায়।
পানীয়: মানবদেহের জন্য এবং কোষের সুরক্ষার ও সুস্থতার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খাওয়া উচিত। বিশেষ করে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খাওয়ার ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ডিহাইড্রেশনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
শ্বেতসার সমৃদ্ধ খাবার: স্বেচ্ছার সমৃদ্ধ খাবার গুলোর মধ্যে যেগুলো উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত যেমন আলু,রুটি,পাস্তা,পাউরুটি,কাঁচা কলা এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।এতে রক্তের সরকারের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।
গ্লাইসে মিক্স ইনডেক্স কম এরকম খাবার যেমন লাল চাল,লাল আটা রুটি,লাল আটার পাউরুটি এগুলো খেতে হবে এগুলোতে আঁশের পরিমাণ বেশি এবং গ্লুকোজের পরিমাণ কম যার কারণে এসব খাবারগুলো ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর খাদ্য তালিকায় যুক্ত করলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। আশা করি বুঝতে পেরেছেন ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় কোন কোন খাবার গুলো থাকা জরুরি।
ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
এর আগের অংশে আমরা ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় কোন কোন খাবারগুলো যুক্ত করা উচিত সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা জানবো ডায়াবেটিস কমানোর বিভিন্ন উপায় গুলো সম্পর্কে।
ডায়াবেটিস কমানোর জন্য পেঁয়াজ
গবেষণায় দেখা গেছে পেঁয়াজের রস রক্তের শর্করা কমানোর সবচেয়ে সস্তা ও কার্যকারী পদ্ধতি। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের রক্তের ৫০ শতাংশ শর্করার মাত্রা কমাতে পেঁয়াজের রস সাহায্য করে। বিশেষ করে পেঁয়াজের রস অ্যালিয়াম সিপা ও মেটফরমিন ডায়াবেটিস কে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তাই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের প্রতিদিন পেঁয়াজের রস খাওয়া উচিত এতে দ্রুত রক্তের শর্করা কমে আসে।
নয়ন তারা উদ্ভিদ
নয়নতারা উদ্ভিদের ফুল ও মূল ডায়াবেটিস থেকে চিরতরে মুক্তি দিতে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে। যদি নয়নতারা গাছের ফুল ও মূল শুকনো হয় তাহলে ১ গ্রাম আর যদি কাঁচা হয় তাহলে ২ গ্রাম এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই পানিটা ছেঁকে হালকা কুসুম গরম করে পান করলে দ্রুত রক্তের শর্করা কমে আসে এবং ডায়াবেটিস কমানো যায়।
পনির ফুল
প্রাকৃতিকভাবে ইনসুলিনের পরিমাণ বাড়াতে পনির ফুল অব্যর্থ হিসেবে কাজ করে। বিশেষজ্ঞদের মতে পনির ফুল অগ্নাশয়ের বিটা কোষ গুলোকে সারিয়ে তুলতে এবং ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে। ইনসুলিনের ভারসাম্য বজায় রাখতে প্রতিদিন রাতের বেলা ঘুমাতে যাওয়ার আগে 10 থেকে 12 টি ফুল এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে ছেঁকে পান করলে তা ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস কমানোর জন্য করলা
রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কমানোর জন্য ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় করলা যুক্ত করা যায়। করলা রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং ইনসুলিন নিঃসরণের মাত্রা বৃদ্ধি করতে প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে করলার রস খাওয়া যায়।
ডায়াবেটিস কমানোর জন্য দারচিনি
টাইপ-২ ডায়াবেটিস কমানোর জন্য দারচিনি খাওয়া যেতে পারে। এটি অগ্নাশয় থেকে ইনসুলিন উৎপাদন প্রক্রিয়াকে উদ্দীপ্ত করতে সাহায্য করে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে। আপনি চাইলে দারচিনির গুঁড়ো চা অথবা গরম পানি সাথে মিশিয়ে পান করতে পারেন এতে দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসবে।
অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরা জেলের মধ্যে রয়েছে ফাইটোস্টেরলস নামক উপাদান যা ডায়াবেটিস রোগীদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে।ফাইটোস্টেরলস এর মধ্যে থাকা অ্যান্টি হাইপার গ্লাইসেমিক প্রভাব টাইপ-২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এলোভেরা জেল এর সঙ্গে যদি হলুদ ও তেজপাতা একসঙ্গে করে পানি দিয়ে মিশিয়ে খাওয়া যায় তাহলে দারুন উপকার মেলে।
আম পাতা
ডায়াবেটিস কমানোর জন্য প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ টি আম পাতা জলে ফুটিয়ে অথবা শুকিয়ে গুঁড়ো করে পান করলে দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আছে এবং রক্তের শর্করার মাত্রা কমতে থাকে।
মেথি
ডায়াবেটিস কমানোর সবচেয়ে কার্যকরী উপায় গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে মেথি ভেজানো জল। প্রতিদিন রাতের বেলা ১ গ্লাস পানির সঙ্গে ২ চামচ পরিমাণ মেথি ভিজে সারা রাত রেখে সকালে খালি পেটে বীজসহ পানি পান করলে এটি প্রাকৃতিকভাবে ইনসুলিন উৎপাদন করতে সাহায্য করে এবং এর মধ্যে টাকা ফাইবার স্টার্চকে গ্লুকোজ এ পরিণত করতে সাহায্য করে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে।
চর্বিযুক্ত মাছ
যেসব মাঝে ডিএইচএ এবং ইপিএ ভালো পাওয়া যায় সেগুলো ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এছাড়াও চর্বিযুক্ত মাছ যেমন স্যালমন,সারডিন ও হেরিং মাছ খাবার ফলে এর মধ্যে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ডায়াবেটিসের নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
ডুমুর
চিকিৎসকদের মতে ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা কমানোর জন্য ডুমুর খাওয়া উচিত। ডুমুরের রয়েছে উচ্চমাত্রায় ফাইবার যা আমাদের রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে। এছাড়াও নিয়মিত ডুমুর পাতা খেলে ইনসুলিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাই ডায়াবেটিস কমানোর জন্য ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় ডুমুর ফল যুক্ত করা যায়।
লেখকের মন্তব্যঃডায়াবেটিস চিরতরে নিরাময় হবে-ডায়াবেটিস এর লক্ষণ
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনার উপকার হয়েছে। অবশ্যই আর্টিকেলটি আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আর্টিকেলটি সম্পর্কে যদি আপনার কোন মতামত বা পরামর্শ থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করতে পারেন। সকলেই ভালো থাকবেন। আসসালামু আলাইকুম।
ডিজিটাল ব্লগ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url