ডিম কিভাবে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়
আপনি যদি নিয়মিত ডিম খেয়ে থাকেন কিংবা চুলের যত্নে ডিমের ব্যবহার করে থাকেন তাহলে অবশ্যই ডিম খাওয়ার সঠিক নিয়ম এবং ডিম চুলের যত্নে ব্যবহারে সঠিক পদ্ধতি আপনাকে মেনে চলতে হবে। অন্যথায় আপনি বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। আজকের এই আর্টিকেলটিতে ডিম কিভাবে খেলে উপকার বেশি সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে।
এছাড়াও এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আমরা ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারব, চুলের যত্নে ডিম ও লেবুর ব্যবহার, চুলের যত্নের ডিম ও মেথির ব্যবহার, চুলের যত্নে দিন ও নারকেল তেলের ব্যবহার, চুলের যত্নে ডিম ও পেঁয়াজের ব্যবহার।
এছাড়াও আমরা আরো জানতে পারবো চুলের যত্নে ডিম ও অ্যালোভেরার ব্যবহার এবং চুলের যত্নের ডিম ও ত্বক দই কিভাবে ব্যবহার করা যায় সেই সম্পর্কে। তাই সম্পূর্ণ বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচীপত্রঃডিম কিভাবে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়
ভূমিকা
ডিম আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য একটি উপকারী উপাদান। একে অনেকেই সুপার ফুড বলে থাকেন। ডিমের মধ্যে রয়েছে উচ্চমাত্রায় প্রোটিন,ভিটামিন ও খনিজ যা আমাদের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করে। কিন্তু যারা উচ্চ কোলেস্টেরলের ভয়ে ডিম খেতে ভয় পান তারাও ডিম খেতে পারেন। কেননা ডিমে রয়েছে 186 মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল যা মোটেও আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।
কিন্তু অবশ্যই ডিম খাওয়ার আগে ডিম খাওয়ার সঠিক নিয়ম এবং চুলের যত্নে ডিমের ব্যবহার সম্পর্কে আপনার সঠিক ধারণা থাকা উচিত। চিকিৎসকদের মতে একজন ব্যক্তি যদি প্রতিদিন একটি করে ডিম খেতে পারে তাহলে অনেক ধরনের মহামারী রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও শরীরের সার্বিক পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতেও ডিম সাহায্য করে।
শুধুমাত্র শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে এমনটি নয় চুলের যত্নেও ডিমের ব্যবহার করা যায়। এটি চুলের গোড়া মজবুত করতে এবং চুলকে উজ্জ্বল ও ঝলমলে রাখতে সাহায্য করে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক বেশি উপকার পাওয়ার জন্য ডিম কিভাবে খাবেন কিংবা ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা কি এবং চুলের যত্নে কিভাবে ডিমের ব্যবহার করা যায়।
ডিম কিভাবে খেলে উপকার বেশি
ডিম খাওয়ার ফলে আমাদের বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি চাহিদা। কিন্তু অনেকে আছেন যারা বিভিন্ন রোগা আক্রান্ত কিংবা ডিম খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানেন না। আর্টিকেল্টের এই অংশে আমরা কিভাবে ডিম খেলে বেশি উপকার পাবেন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
১/যারা উচ্চ ক্যালরি,ওজন নিয়ন্ত্রণ,কোলেস্টেরল কমানো কিংবা ফ্যাটি লিভারের জন্য ডিম খেতে চান না তারা চাইলে পানিতে সিদ্ধ করে কিংবা পানিতে পোচ করে খেতে পারেন। এখানে তেল ব্যবহার করা যাবে না। এভাবে যদি আপনি খেতে পারেন তাহলে আপনার সকল সমস্যা দূর হবে এবং বেশি উপকার পাবেন।
২/ডিম খাওয়ার ফলে যারা বেশি উপকার পেতে চান তারা যথা সম্ভব ডিমকে হালকা তাপমাত্রায় রান্না করে খেতে পারেন।
৩/যারা উচ্চ রক্তচাপের রোগী, যাদের হৃদরোগের সমস্যা রয়েছে তারা প্রচলিত ডিমের বাইরে দেশি মুরগির ডিম খেতে পারেন। এতে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায় এবং অন্যান্য ডিমের তুলনায় প্রায় তিনগুণ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। এছাড়া দেশি মুরগির ডিমে উপকারী চর্বির পরিমাণ বেশি তাই নিঃসংকোচে আপনি দেশি মুরগি ডিম খেতে পারেন।
৪/যখন ডিম রান্না করবেন তখন অবশ্যই ভালো তেল নির্বাচন করবেন। রান্নার জন্য তেল হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন অ্যাভোক্যাডো কিংবা এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল।
৫/ডিমে যেহেতু ফাইবার থাকে না তাই ডিমের সাথে ফাইবারের চাহিদা পূরণ করতে পালং শাক,বাঁধাকপি,ব্রকলি,ক্যাপসিকাম, পেঁয়াজ অথবা মরিচ ব্যবহার করে খেতে পারেন।
৬/ডিমে চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন বেশি হওয়ায় অল্প পরিমাণ তেল ব্যবহার করে ডিম রান্না কিংবা পোচ করলে শরীরে বেশি সহজে শোষিত হয়। তবে অবশ্যই তেল দিয়ে ডিম দীর্ঘক্ষণ ভাজা যাবেনা।
ডিম খাবার ব্যাপারে সতর্কতা
১/যাদের হাফ বয়েল ডিম কিংবা কাঁচা ডিম খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে তারা আজ থেকেই তা পরিত্যাগ করুন। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী ও শিশুদের ক্ষেত্রে এটি মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। হাফ বয়েল ডিম কিংবা কাঁচা ডিমের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই এটি না খাওয়াই ভালো।
২/যদি আপনার কোলেস্টেরল কিংবা হৃদরোগের ঝুঁকি না থাকে তাহলে আপনি চাইলে ডিমকে অল্প তেল ব্যবহার করে ভেজে খেতে পারেন। সিদ্ধ করে খাওয়ার পরিবর্তে ডিম ভেজে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। বিশেষ করে শিশুদের খাবার সময় ডিম ভেজে দিলে এতে ভিটামিনের চাহিদা পূরণ হয়।
৩/ডিমের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন,ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি ও অন্যান্য সকল পুষ্টি উপাদান। তাই ডিম খাওয়ার পর অবশ্যই চা,চিনি যুক্ত খাবার,দুধ কিংবা সয়া জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
৪/ডিম প্রোটিনের একটি ভালো উৎস তাই যাদের প্রোটিনের চাহিদা কিংবা ভিটামিনের ঘাটতি রয়েছে তারা এই ঘাটতি পূরণের জন্য ডিমের উপর নির্ভর হতে পারেন।
৫/ডিমে খুব সহজে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ দেখা যায়। তাই ডিম ধরার পর অবশ্যই ভালো হবে সাবান পানি ব্যবহার করে হাত ধুয়ে নেবেন।
ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা
প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আমরা ডিম কিভাবে খেলে উপকার বেশি পাওয়া যায় সে সম্পর্কে এবং ডিম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা ডিম খাওয়ার সকল উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানব। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
ডিম খাওয়ার উপকারিতা
দেহের শক্তি যোগান দেয়: সারাদিনের কাজকর্মে আমাদের প্রচুর পরিমাণ শক্তি ও এনার্জি ক্ষয় হয়। ডিমের মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের সার্বিক শক্তি প্রদানে সাহায্য করে। তাই চিকিৎসকরা দুর্বল স্বাস্থ্যের অধিকারী ব্যক্তিদের প্রতিদিন সকালে ডিম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
আরো পড়ুনঃপালং শাকের সকল উপকারিতা ও অপকারিতা
প্রোটিনের ভালো উৎস: আমাদের দেহের সকল কাজকর্ম সঠিকভাবে সম্পূর্ণ হওয়ার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন দরকার। কিন্তু অনেক সময় আমাদের প্রোটিনের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। ডিমের মধ্যে রয়েছে উচ্চ প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম যা আমাদের প্রোটিনের অভাব দূর করে এবং ডিমের মধ্যে থাকে ক্যালসিয়াম আমাদের হাড়কে মজবুত করে শক্তি যোগাতে সাহায্য করে।
শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে: অনেকের মধ্যে ডিম সম্পর্কে একটি ভুল ধারণা রয়েছে যে ডিম খেলে ওজন বৃদ্ধি পায়। কিন্তু চিকিৎসকদের মধ্যে এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। ডিমের সাদা অংশে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন কিন্তু কোন প্রকার ফ্যাট নেই। যার কারণে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি বা ফ্যাট জমা হওয়ার সম্ভাবনাও কম। তাই যারা শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তারা নিয়মিত ডিম খেতে পারেন।
হাড় শক্ত ও মজবুত করে: ক্যালসিয়ামের একটি ভালো উৎস হিসেবে ডিমকে ধরা হয়। এর মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের হাড়ের ব্যথা দূর করে হাড়কে শক্তিশালী ও মজবুত করতে সাহায্য করে।
দৃষ্টিশক্তির বৃদ্ধি করে: বয়সের একটি নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পর আমাদের দৃষ্টি শক্তি ক্ষীন হতে থাকে আবার অনেকের অল্প বয়সেও দৃষ্টি শক্তি কমে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। নিয়মিত ডিম খেলে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায় এবং দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে ডিমের মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো সাহায্য করে।
তাই যারা চোখের সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত ডিম খাওয়ার অভ্যাস করুন এতে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যাবে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে: ডিমের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ও লিউটিন নামক উপাদান যা ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে এবং নতুন কোষ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
হার্ট ভালো রাখে: যারা হার্টের সমস্যায় ভুগছেন কিংবা হৃদরোগের ঝুঁকি রয়েছে তারা নিয়মিত ডিম খেতে পারে। নিয়মিত ডিম খাওয়ার ফলে আপনার হৃৎপিণ্ডে রক্তচলাচল বৃদ্ধি পাবে এবং রক্ত জমাট বাধার সম্ভাবনা কমে আসবে।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে: আপনারা অনেকেই হয়তো জানবেন আমাদের চলবে দুই ধরনের কোলেস্টেরল থাকে একটি ভালো আর অন্যটি খারাপ। ডিমের মধ্যে থাকা পোস্ট উপাদান গুলো আমাদের শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
ত্বক মস্তিষ্ক ভালো রাখে: স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে এবং ত্বকের যত্নে ডিম খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যারা নিয়মিত ডিম খায় বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে প্রতিদিন একটি করে ডিম খাওয়ালে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং ডিমের মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো ত্বক ভালো রাখতেও সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় ডিমের ভূমিকা: শিশুর মস্তিষ্কের গঠন ও শারীরিক গঠন ঠিক রাখতে এবং শিশুর জন্মের পর মা ও শিশু সুস্থতার জন্য গর্ভাবস্থায় ডিম খাওয়া জরুরী। এতে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: ডিমের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন মিনারেল ও খনিজ উপাদান যেগুলো আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইউনিয়ন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
ডিম খাওয়ার অপকারিতা
প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আমরা ডিম খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা গুলো সম্পর্কে জানলাম। কিন্তু ডিম খাওয়ার যে শুধু উপকারিতায় রয়েছে এমনটি কিন্তু নয় ডিম খাওয়ার ফলে অনেক ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক অতিরিক্ত ডিম খাওয়ার ফলে কি কি ধরনের অপকারিতা প্রকাশ পায়।
কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়: এর আগের অংশে আমরা জেনেছি ডিমের মধ্যে মাত্র 186 মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে। কিন্তু আপনি যদি প্রতিদিন অতিরিক্ত মাত্রায় ডিম খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএল এর মাত্রা বৃদ্ধি পাবে যা আপনার হৃদরোগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এছাড়াও অতিরিক্ত ডিম খাওয়ার ফলে আপনার স্ট্রোকের সমস্যা হতে পারে। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ ডিম খাওয়া উচিত।
শরীর ফোলার সমস্যা: কিছু কিছু লোকের ক্ষেত্রে দেখা গেছে অতিরিক্ত ডিম খাওয়ার ফলে পেটে গ্যাস কিংবা ফোলাভাব দেখা দেয়। অতিরিক্ত ডিম খাওয়ার ফলে পাচনতন্ত্রের সমস্যা হয় এবং পেটে ব্যথার উদ্বেগ দেখা দিতে পারে। যার কারণে বমি বমি ভাব কিংবা বমি হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়।
হার্টের জন্য ক্ষতিকর: প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ ডিম খাওয়ার ফলে এটি যেমন স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং হার্টের সুরক্ষা প্রদান করে তেমনি অতিরিক্ত পরিমাণ ডিম খেলে এটি হার্টের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই যারা হার্টের রোগী রয়েছেন তারা অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণ ডিম খাওয়ার অভ্যাস করুন অতিরিক্ত খাবেন না।
ওজন বৃদ্ধি করে: ডিমের সাদা অংশে তেমন ক্যালরি না থাকলেও ডিমের কুসুম আমাদের ওজন বৃদ্ধি করতে পারে। তাই যারা অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগছেন কিংবা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তারা প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ ডিম খেতে পারেন অন্যথায় বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।
এলার্জির সমস্যা: অনেকের ক্ষেত্রে ডিম খাওয়ার ফলে চুলকানি কিংবার্্যাশ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। তাই যারা আগে থেকে এলার্জি সমস্যায় ভুগছেন তারা ডিম এড়িয়ে চলুন।
ডায়রিয়ার সমস্যা: যদিও ডিমের মধ্যে আঁশ এর পরিমাণ খুবই কম কিন্তু যদি আপনি অতিরিক্ত পরিমাণ ডিম খান তাহলে পাচনতন্ত্রের সমস্যা দেখা দিতে পারে যার কারণে বমি বমি ভাব কিংবা ডায়রিয়া হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায়।
ডায়াবেটিস এর সমস্যা: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ডিম খাওয়ার ফলে ডিমের কুসুম ইনসুলিন উৎপাদনের মাত্রা কে কমিয়ে দেয় যার কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায়। যা ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের জন্য মোটেও ভালো বিষয় নয়।
তাই শরীর সুস্থ রাখতে এবং শরীরের সঠিক পরিমাণ পুষ্টি চাহিদা পূরণের জন্য প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই থেকে তিনটির বেশি ডিম খাওয়া উচিত না।
চুলের যত্নে ডিম ও লেবু
দিন যেমন আমাদের শরীরের জন্য উপকারী তেমনি এটি চুলের যত্ন ব্যবহার করা যায়। নিয়মিত চুলের যত্নে ডিমের সাদা অংশ ও এর সাথে লেবু ব্যবহার করলে এটি চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করে।
ব্যবহার পদ্ধতি
১/প্রথমেই দুটি ডিম ভেঙে ডিমের সাদা অংশ নিয়ে হলুদ অংশটুকু বাদ দিয়ে দিতে হবে।
২/দিনে এই সাদা অংশের সঙ্গে এক টেবিল চামচ পরিমাণ লেবুর রস ভালোভাবে মিশিয়ে নাড়তে হবে।
৩/এরপর সম্পূর্ণ মিশ্রণটি সম্পূর্ণ চুলে ব্যবহার করতে হবে তবে অবশ্যই একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যেন মিশ্রণটি মাথার ত্বকে না লাগে।
৪/ঘন্টাখানেক অপেক্ষা করার পর শ্যাম্পু করে ভালোভাবে ধুয়ে নিলে দারুণ উপকার পাওয়া যায়।
৫/লেবু ও ডিমের মিশ্রণটি আপনি সবচেয়ে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করলে চুলের যাবতীয় সমস্যা দূর হবে।
চুলের যত্নে ডিম ও মেথি
চুলের যত্নে ডিম খুবই উপকারী একটি উপাদান। এর সাথে যদি মেথি মেসি ব্যবহার করতে পারেন তাহলে এর কার্যকারিতা আরো কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়।
ব্যবহার পদ্ধতি
১/রাতের বেলা মেথি ভিজে রাখুন।
২/পরের দিন সকালে ভেজানো মেথি ভালোভাবে ব্লেন্ডারে পেস্ট করে এর সঙ্গে একটি দিন মিশিয়ে নিন।
৩/মিশ্রণটি সম্পূর্ণ চুলে লাগিয়ে রাখুন।
৪/৩০ মিনিট পর ভালোভাবে মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল পরিষ্কার করে নিন।
৫/সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন এই হেয়ার প্যাকটি ব্যবহার করুন এতে আপনার চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে এবং চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করবে।
চুলের যত্নে ডিম ও নারকেল তেল
আমাদের চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে প্রতিদিন নারকেল তেল ব্যবহার করা উচিত। এর সাথে যদি আপনি দিন মিশ্রিত করে ব্যবহার করতে পারেন তাহলে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়।
ব্যবহার পদ্ধতি
১/প্রথমেই আপনার পরিমাণ মতো ডিম ফাটিয়ে এর সঙ্গে সামান্য পরিমাণ নারকেল তেল মিশিয়ে নিন।
২/এরপর মিশ্রণটি ভালোভাবে মাথার স্কেলপে ব্যবহার করে কিছুক্ষণ মাসাজ করুন।
৩/৩০ মিনিট রাখার পর হালকা শ্যাম্পু ব্যবহার করে মাথা পরিষ্কার করে নিন।
৪/বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিম ও নারকেল তেলের এই হেয়ার প্যাকটি আপনার চুল পড়া কমাতে সাহায্য করবে এবং চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে তা মজবুত করবে।
৫/সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ দিন এই হেয়ার প্যাকটি ব্যবহার করলে খুব দ্রুত আপনার চুলের সমস্যা দূর হবে।
চুলের যত্নে ডিম ও পেঁয়াজ
পেঁয়াজের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ সালফার যা আমাদের চুল পড়া রোধ করতে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। এর সঙ্গে যদি আপনি একটি দিন মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন তাহলে এর গুনাগুন অনেক দ্রুত সময়ের মধ্যে আপনার চুল পড়া রোধ করতে সাহায্য করবে।
ব্যবহার পদ্ধতি
১/প্রথমে একটি পেঁয়াজকে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে অথবা পাটায় বেটে এর রস বের করে নিন।
২/এরপর এর সাথে একটি ডিম ফাটিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
৩/মিশ্রণটি আপনার চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ভালোভাবে লাগিয়ে নিন।
৪/মিশ্রণটি চুলে ব্যবহারের পর 40 মিনিট অপেক্ষা করুন এবং মাইল্ড সেম্পু ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলুন।
৫/আপনি যদি এই মিশ্রণটি ২ থেকে ৩ দিন এই মিশ্রণটি ব্যবহার করেন তাহলে আপনার চুলের যাবতীয় সমস্যা দূর করতে এবং চুলের আগা ফাটা রোধ করে চুলকে ভেতরে থেকে মজবুত ও শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে।
চুলের যত্নে ডিম ও অ্যালোভেরা
চুলের আদ্রতা দূর করতে এবং চুলের জেলার নতুনভাবে ফিরিয়ে আনতে ডিমের সাথে এলোভেরা জেল এবং অলিভ অয়েল মিশিয়ে ব্যবহার করলে খুব বেশি উপকার পাওয়া যায়।
ব্যবহারবিধি
১/প্রথমেই অ্যালোভেরা জেলকে বের করে নিতে হবে।
২/এরপর এর সাথে ডিমের কুসুম ও এক চামচ পরিমাণ অলিভ অয়েল ভালো হবে নিচে পেস্ট তৈরি করতে হবে।
৩/এই পেস্টটি আপনার চুলে ঘণ্টাখানেক রেখে মাইল শ্যাম্পু ব্যবহার করে ধুয়ে নিতে হবে।
৪/আপনি যদি সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন এই পেজটি ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনার চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং চুল পড়া দূর করতে সাহায্য করবে।
চুলের যত্নে ডিম ও টক দই
টক দইয়ের কথাতো আমরা অনেকেই শুনেছি। কিন্তু চুলের যত্নে যে টক দই ব্যবহার করা যায় এ সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা।
ব্যবহার পদ্ধতি
১/প্রথমেই একটি ব্লেন্ডারে একটি ডিম,আধা কাপ টক দই ও এক চামচ পরিমাণ অলিভ অয়েল ভালোভাবে মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে।
২/এরপর এই মিশ্রণটি আপনার চুলে 40 থেকে 45 মিনিট রেখে ভালোভাবে শ্যাম্পু করে নিতে হবে।
৩/এতে আপনার চুলের প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করবে এবং চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে চুলকে সুন্দর ও ঝলমলে করে তুলবে।
৪/যাদের চুলের আদ্রতা নষ্ট হয়ে গেছে এবং চুল রুক্ষ হয়ে গেছে তারা ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করে চুলের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে পারেন।
৫/৩০ মিনিট ব্যবহার করলে ডিমের সাদা অংশ আপনার চুলের প্রাণ ফিরিয়ে আনবে এবং চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে।
লেখকের মন্তব্যঃডিম কিভাবে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে যদি আপনার কোন উপকার হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন। আর্টিকেলটি সম্পর্কে যদি আপনার কোন মতামত বা মন্তব্য থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করতে পারেন। চুলের যত্নে আরো অন্য ব্যবহার সম্পর্কে জানতে চাইলে অবশ্যই যোগাযোগ করবেন। সকলে ভালো থাকবেন।আসসালামু আলাইকুম।
ডিজিটাল ব্লগ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url