OrdinaryITPostAd

লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা-লবঙ্গ কখন খাওয়া উচিত

লবঙ্গ বা লং মসলাটির নাম শুনেন নি এমন অনেক কমই লোক রয়েছে। প্রতিদিনের রান্নাবান্না থেকে শুরু করে সর্দি-কাশি ঠিক করানোর ক্ষেত্রে চায়ের সাথেও আমরা অনেকেই লবঙ্গ বা লং খেয়ে থাকি। কিন্তু আপনি কি লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানেন। হয়তো কেউ কেউ জানে আবার অনেকেই জানে না। 

ছবি

আপনি যদি লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা, লবঙ্গ কখন খাওয়া উচিত, লবঙ্গের ক্ষতিকর দিক, লবঙ্গ খাওয়ার নিয়ম, রাতে লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা এবং লবঙ্গের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। 

আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমরা লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়ার সকল উপকারিতা এবং এর অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। তাই লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

পোস্ট সূচীপত্রঃলবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা-লবঙ্গ কখন খাওয়া উচিত

ভূমিকা

রান্নাঘরে থাকা লবঙ্গ খাবারের স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি মশলাটি ঔষধি গুনাগুন সম্পূর্ণ। এর মধ্যে থাকা ইউজেনল নামক উপাদানের কারণে লবঙ্গ থেকে মিষ্টি এক ধরনের সুগন্ধ পাওয়া যায়। এই মসলাটি সর্দি-কাশি কমানোর পাশাপাশি আমাদের শারীরিক অনেক উপকার করে থাকে। চিরসবুজ লবঙ্গ গাছের ফুল এর কুঁড়ি থেকে লবঙ্গ উৎপন্ন হয়। 

লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা গুলো জানলে আপনি অবাক হবেন। খুব সাধারন এই মসলাটি আমরা দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে থাকলেও আমাদের মধ্যে অনেকেই এর উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে অবগত নয়। সুদূর প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় লবঙ্গের ব্যবহার করা হয়ে আসছে। 

এটি রান্নার সুগন্ধ বৃদ্ধির পাশাপাশি আমাদের বিভিন্ন ক্ষতিকারক রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। ১০০ গ্রাম লবঙ্গের মধ্যে ৬৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট,৬ গ্রাম প্রোটিন,১৪ গ্রাম টোটাল লিপিড,৩ গ্রাম শর্করা,২৭৫ কিলো ক্যালরি শক্তি এবং ৩৪ গ্রাম ডায়েটারি ফাইবার পাওয়া যায়। 

এছাড়াও লবঙ্গের মধ্যে ক্যালসিয়াম,আয়রন,ম্যাগনেসিয়াম,পটাশিয়াম,ফসফরাস, সোডিয়াম,জিংক সহ সকল ধরনের পুষ্টি গুনাগুন রয়েছে। শুধু মাত্র খনিজ উপাদান নয় ভিটামিনের অন্যতম একটি ভালো উৎস হচ্ছে লবঙ্গ। এছাড়াও এর মধ্যে রয়েছে রোগ প্রতিরোধকারী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য। 

কি এতটুকু উপকারিতা শুনেই আশ্চর্য হচ্ছেন? এছাড়াও আরো অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে লবঙ্গের চিবিয়ে খাওয়ার মাধ্যমে। তাই আপনি যদি সম্পূর্ণ বিষয় ও উপকারিতা এবং অপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন।

লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা

আপনি যদি প্রতিদিন সকালে অথবা রাতে ২-৩ কি করে লবঙ্গ চিবিয়ে খেতে পারেন তাহলে যে সকল উপকারিতা গুলো আপনার শরীরে অনুভব করবেন সেগুলো নিচে দেওয়া হলো।


ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে। লবঙ্গের মধ্যে রয়েছে নাইজেরিসিন নামক উপাদান যেটি রক্তের শর্করার পরিমাণ কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তাই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি করে লবঙ্গ চিবিয়ে খেতে পারেন।

সাইনাস দূর করে: লবঙ্গের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও আন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান যা আমাদের দাঁতের ব্যথায় দারুন কাজ করে। এছাড়াও লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়ার ফলে কিংবা লবঙ্গের তেল মাথায় ব্যবহার করলে সাইনাসের সমস্যা দূর হয় এবং বুকে ব্যথার ক্ষেত্রেও লবঙ্গ চিবিয়ে খেতে পারেন অথবা লবঙ্গের তেল মালিশ করলেও বেশ উপকার পাওয়া যায়।

দাঁত ও মাড়ির ব্যথায়: লবঙ্গের মধ্যে থাকা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও আন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান দাঁতের ব্যথা দূর করতে এবং মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। দাঁতের ক্ষয় রোধ করতে এবং দাঁতের ব্যথা থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে দুই থেকে তিনটি লবঙ্গ চিবিয়ে খেতে পারেন অথবা লবঙ্গ মেশানো পানি হালকা গরম করে কুলকুচি করলেও ভালো উপকারিতা পাওয়া যায়।

আলসার প্রতিরোধ করে: লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়ার ফলে পাকস্থলীতে আলসারের সমস্যা দূর হয়। লবঙ্গের মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো পাকস্থলীতে মিউকাস উৎপাদন করতে সাহায্য করে যার কারণে এই উৎপাদিত মিউকাস পাকস্থলীকে অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের কারণে সৃষ্টি আলসার হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। তাই পাকস্থলীর আলসারের সমস্যা থেকে দূর করতে প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন।

সর্দি কাশি ও ঠান্ডা লাগা কমায়: সর্দি-কাশি ও ঠান্ডা লাগার সমস্যা দূর করতে লবঙ্গ চিবিয়ে রস গিলে খেতে পারেন অথবা লবঙ্গ মুখে রেখে চুষে খেলে ও দীর্ঘমেয়াদি ঠান্ডা লাগা ও সর্দি-কাশি সমস্যা দূর করতে এবং এজমা ও গলা ফুলে ওঠার সমস্যা সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে।

লবঙ্গ কখন খাওয়া উচিত

লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা গুলো সম্পর্কে জানার পর অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে লবঙ্গ খাওয়ার সঠিক সময় কখন বা লবঙ্গ কখন খাওয়া উচিত। আপনার মনেও যদি এই প্রশ্নটি এসে থাকে তাহলে অবশ্যই আর্টিকেলটির এই অংশটুকু সম্পন্ন করুন। চিকিৎসকদের মতে প্রতিদিন সকালে অথবা বিকেলে খালিপেটে দুটি করে লবঙ্গ চিবিয়ে খেলে পেটের যাবতীয় সমস্যা সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। 

আপনি চাইলে সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে দুটি লবঙ্গ চিবিয়ে খেতে পারেন। এছাড়াও রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে একটি লবঙ্গ ও এক গ্লাস গরম জল একসাথে পান করতে পারেন অথবা একটি থেকে দুইটি লবঙ্গ চিবিয়ে খেলেও শারীরিক অনেক উপকার পাওয়া যায়। 


তবে আপনি যদি জানতে চান লবঙ্গ কখন খাওয়া উচিত বা কখন খেলে এর সকল উপকারিতা গুলো সঠিক মাত্রায় পাবেন তাহলে আপনাদের জানা উচিত লবঙ্গ খাওয়ার উপযুক্ত সময় হচ্ছে সকাল বেলা খালি পেটে। আপনি যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে লবঙ্গ খেতে পারেন তাহলে লবঙ্গের যাবতীয় উপকারিতা গুলো আপনি অনুভব করতে পারবেন। 

তাই শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে এবং সকল ধরনের অসুখ-বিসুখ থেকে দূরে থাকতে প্রতিদিন সকালে একটি থেকে দুটি লবঙ্গ চিবিয়ে খেতে পারেন। এছাড়াও দৈনন্দিন রান্নাবান্নায় তরকারি,স্যুপ,বেকারি আইটেম,পায়েস কিংবা মাছ মাংস রান্না করার কাজও লবঙ্গ ব্যবহার করে খাওয়া যায়। তবে সকালে খালি পেটে চিবিয়ে খাওয়ার ফলে এটি দারুন উপকার দিয়ে থাকে।

লবঙ্গের ক্ষতিকর দিক

লবঙ্গের উপকারিতা গুলো পেতে গিয়ে অতিরিক্ত পরিমাণ লবঙ্গ খাওয়ার চেষ্টা করবেন না। গবেষণায় দেখা গেছে অতিরিক্ত পরিমাণ লবঙ্গ খাওয়ার ফলে ঔষধি গুনাগুন সম্পূর্ণ লবঙ্গ আপনার মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। বিশেষ করে একজন সুস্থ ব্যক্তি যদি প্রতিদিন দুই থেকে তিনটির বেশি লবঙ্গ প্রতিদিন খেয়ে থাকে তাহলে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর দিক প্রকাশ পেতে পারে।

ডায়াবেটিসের সমস্যা: লবঙ্গের মধ্যে থাকা নাইজেরিসিন উপাদানটি যেমন আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে চায় সাহায্য করে তেমনি আপনি যদি প্রতিদিন অতিরিক্ত মাত্রায় লবঙ্গ চিবিয়ে খান তাহলে রক্তে শর্করার মাত্রা অতিরিক্ত পরিমাণে কমে যেতে পারে যার কারণে লো সুগারের সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

তাই যারা ডায়াবেটিসের সমস্যায় রয়েছেন তারা প্রতিদিন একটি থেকে দুইটির বেশি লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক হয়ে যান। তা না হলে এর বিভিন্ন উপকারিতা বা ক্ষতিকর দিকগুলো প্রকাশ পেতে পারে।

হিমোফিলিয়া রোগ: যারা হিমোফিলিয়া রোগে আক্রান্ত তাদের ক্ষেত্রে লবঙ্গ খাওয়ার ফলে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এ রোগে আক্রান্ত রোগীদের অতিরিক্ত পরিমাণ লবঙ্গ খাওয়ার ফলে রক্ত অতিরিক্ত পাতলা হয়ে যেতে পারে।

ক্ষত শুকাতে দেরি হয়: যদি আপনি প্রতিদিন অতিরিক্ত মাত্রায় লবঙ্গ খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার রক্তের অনুচক্রিকা গুলোর কাজ ধীরে ধীরে কমতে থাকবে যার কারণে আপনার কোন অঙ্গে যদি ক্ষতের সৃষ্টি হয় তাহলে অনুচক্র জালের বেরি তৈরি করতে পারবেনা যার কারণে আপনার ক্ষত শুকাতে অনেক সময় লাগতে পারে।

হাইপোগ্লাইসেমিয়া রোগ: যাদের লো সুগারের সমস্যা রয়েছে তারা যদি অতিরিক্ত পরিমাণ লবঙ্গ চিবিয়ে খান তাহলে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার মতো অবস্থার আবির্ভাব ঘটতে পারে। তাই লো সুগারের ব্যক্তিরা অতিরিক্ত পরিমাণ লবঙ্গ খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন।

বিষক্রিয়া: অনেকেই মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে মুখের মধ্যে অনেকক্ষণ ধরে লবঙ্গ রাখে কিংবা অনেকেই অতিরিক্ত পরিমাণ লবঙ্গ চিবিয়ে রস খেয়ে ফেলেন এতে করে দীর্ঘদিন খাওয়ার ফলে পেটে বিষক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যার কারণে বমি বমি ভাব কিংবা অনেক ক্ষেত্রে বমি হওয়ার সম্ভাবনা ও দেখা দেয়।

লবঙ্গ খাওয়ার নিয়ম

খাবারের সুগন্ধ বৃদ্ধির জন্য আমরা লবঙ্গ ব্যবহার করে থাকি। রান্নার স্বাদ বৃদ্ধি ছাড়াও আরো যে সকল নিয়ম ব্যবহার করে লবঙ্গ খাওয়া যায় সে সম্পর্কে আর্টিকেলটির এ অংশে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।


১/প্রতিদিন সকালে অথবা বিকেলে একটি থেকে দুটি লবঙ্গ আপনি খালি পেটে চিবিয়ে খেতে পারেন।

২/রাতে খাওয়ার জন্য যে নিয়মটি অনুসরণ করবেন সেটি হচ্ছে একটি লবঙ্গ ও এক গ্লাস গরম পানি একসঙ্গে কিছুক্ষণ ফুটিয়ে খেতে পারেন।

৩/সর্দি কাশি কিংবা ঠান্ডা লাগার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চায়ের সাথে একটি অথবা দুটি লবঙ্গ পিষে অথবা ফুটিয়ে খেতে পারেন এতে দ্রুত ঠান্ডা লাগা ও সর্দির কাছে সমস্যা দূর হয়।

৪/লবঙ্গ খাওয়ার আরো একটি নিয়ম হচ্ছে এক গ্লাস গরম পানির সাথে একটি থেকে দুটি লবঙ্গ দিয়ে কিছুক্ষন ফুটিয়ে সেই পানি পান করলেও দারুন উপকারিতা পাওয়া যায়।

৫/আপনি চাইলে গলার খুসখুসে কাশি দূর করার জন্য মধুর সঙ্গে লবঙ্গ খেতে পারেন।

৬/তবে সকালবেলা একটি থেকে দুটি লবঙ্গ চিবিয়ে খেলে বেশি উপকারিতা পাওয়া যায়।

৭/যাদের এজমা কিংবা শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে তাদের অল্পতেই ঠান্ডা কিংবা সর্দি কাশি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। তার ক্ষতিকারক হিসেবে পাঁচ থেকে ছয়টি লবঙ্গ চায়ের সঙ্গে ফুটিয়ে পান করলে দ্রুত নিরাময় পাওয়া যায়।

আশা করছি আপনারা লবঙ্গ খাওয়ার নিয়ম গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ধারনা পেয়েছেন। লবঙ্গ খাওয়ার উপরোক্ত সকল নিয়ম গুলো আপনার অনুসরণ করতে পারেন তবে সকল রোগ বলাই থেকে শরীরকে দূরে রাখতে চাইলে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়ার এই নিয়মটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হবে।

রাতে লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা

আপনি রাতে খান অথবা সকালে খালি পেটে খান। লবঙ্গ চিবিয়ে খান অথবা উপরোক্ত বিভিন্ন নিয়ম গুলো অনুসরণ করে খান। সকল ক্ষেত্রে আপনি স্বাস্থ্য উপকারিতা পাবেন। কিন্তু অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে রাতে লবঙ্গ খাওয়ার ফলে কি কি উপকারিতা পাওয়া যেতে পারে। আর্টিকেডিট এবং সে আমরা জানবো রাতে লবঙ্গ খাওয়ার ফলে কি কি উপকারিতা পাওয়া যায়।

মানসিক চাপ কমায়: রাতের বেলা বিছানায় ঘুমাতে যাওয়ার আগে যদি আপনি একটি থেকে দুইটি লবঙ্গ চিবিয়ে রস খান অথবা মুখে নিয়ে চুষতে থাকেন তাহলে মানসিক চাপ কমে আসবে এবং অবসাদগ্রস্থতা দূর হবে। তবে আপনি চাইলে লবঙ্গ চায়ের সাথেও খেতে পারেন এতেও দারুন উপকারিতা পাওয়া যায়।

হজমের সহায়তা করে: লবঙ্গের মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান ও এনজাইমগুলো খাদ্য হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ লবঙ্গ খাওয়ার ফলে পাকস্থলীর হজমের সহায়ক এসিড গুলো ক্ষরণের বৃদ্ধি করে হজম প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। এছাড়াও রক্ত পরিষ্কার করতে এবং শরীরে সঠিক পরিমাণ রক্ত প্রবাহ বজায় রাখতে রাতে লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়া যায়।

শ্বাসকষ্ট কমায়: দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানির সমস্যা দূর করতে রাতের বেলা একটি থেকে দুটি লবঙ্গ চিবিয়ে খেতে পারেন অথবা চায়ের সঙ্গে খেলেও দ্রুত হাঁপানের টান থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং শ্বাসকষ্ট দূর হয়। এছাড়াও আপনি চাইলে রাতের বেলা পানিতে কয়েকটি লবঙ্গ ফুটিয়ে সেই বাষ্প নিঃশ্বাস এর মাধ্যমে গ্রহণ করলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা দূর হয়।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করে: লবঙ্গের মধ্যে থাকা আন্টি ব্যাকটেরিয়াল ও আন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান ক্যান্সারের কোষগুলোকে শরীরে বাসা বাঁধতে দেয় না। আর যদি আপনার শরীরে ক্যান্সারের কোষগুলো বাসা বেধে থাকে তাহলে এগুলোর বৃদ্ধি ঠেকাতে প্রতিদিন রাতের বেলা একটি থেকে দুটি লবঙ্গ চিবিয়ে খেতে পারেন। 

বিশেষ করে স্তন ক্যান্সার ও ওভারিয়ান ক্যান্সার এর সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে রাতের বেলা লবঙ্গ খাওয়া যেতে পারে। আশা করি আপনারা রাতে লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা গুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন।

বিষাক্ত পদার্থ দূর করে: লবঙ্গের মধ্যে থাকা এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান আমাদের শরীরের মধ্যে জমে থাকা ক্ষতিকর টক্সিক পদার্থগুলো দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও রক্ত পরিষ্কার করতে এবং লিভারের কার্যকারিতা বাড়িয়ে তুলে লিভারকে সুস্থ রাখতেও প্রতিদিন লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়া যায়।

লবঙ্গের উপকারিতা ও অপকারিতা

প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আমরা লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। এছাড়াও আমরা জেনেছি লবঙ্গ খাওয়ার সঠিক সময় এবং লবঙ্গ খাওয়ার বিভিন্ন নিয়ম সম্পর্কে। আর্টিকেলটিতে অংশ আমরা লবঙ্গের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানবো। তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইলো। উপকারিতা

মুখের দুর্গন্ধ দূর করে: অস্বাস্থ্যকর খাবার এবং সঠিকভাবে মুখের যত্ন না নেওয়ার কারণে মুখে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। এবং বিভিন্ন খাবার দাঁতে জমে থাকার কারণে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়ে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। 

লবঙ্গের মধ্যে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান মুখের সকল ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে। তাই মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে প্রতিদিন একটি অথবা দুইটি লবঙ্গ চুষে রস খেয়ে ফেলুন। এতে দ্রুত মুখের দুর্গন্ধ দূর হবে।

হার্টের সুরক্ষায়: লবঙ্গের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান আমাদের শরীরের ফ্রি রেডিক্যাল গুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে এবং ত্বকের ফ্রী রেডিক্যাল গুলোর মাত্রা কমিয়ে আনে এবং হার্টকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে।

প্রদাহ কমাতে: লবঙ্গের মধ্যে থাকা অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। তাই যাদের জয়েন্টে ব্যথা,হাটু অথবা পিঠে ব্যথার সমস্যা রয়েছে তারা চাইলে প্রতিদিন এক থেকে দুইটি লবঙ্গ চিবিয়ে খেতে পারেন। এছাড়াও আর্থ্রাইটিসের প্রকোপ কমাতে প্রতিদিন লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করা উচিত।

ত্বকের যত্নে: প্রাচীন কাল থেকেই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় লবঙ্গ ব্যবহার হয়ে আসছে। বিশেষ করে ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক দাওয়াই হিসেবে লবঙ্গ ব্যবহার করা যায়। যাদের ব্রণ,ফুসকুড়ি কিংবা মাথার ত্বকে খুশকির সমস্যা রয়েছে তারা লবঙ্গ ব্যবহার করতে পারেন এতে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়।

বমি বমি ভাব দূর করে: অনেক সময় আমাদের বমি বমি ভাব হয় কিংবা অনেক ক্ষেত্রে বমিও হতে দেখা যায়। বিশেষ করে যাত্রাপথে এবং গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি প্রকাশ পায়। আপনারা চাইলে যাত্রা পথে অথবা গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে বমি বমি ভাব দূর করতে মুখে লবঙ্গ নিয়ে চুষতে পারেন এতে বমি বমি ভাব দূর হয়।

মাথা ব্যথা কমাতে: দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজের কারণে আমরা অত্যাধিক পরিমাণ মানসিক চাপের সমস্যায় ভুগে থাকি। যার কারনে প্রচন্ড মাথা ব্যাথা কিংবা মাথা যন্ত্রণা সমস্যা দেখা দেয়। লবঙ্গ মাথা যন্ত্রণা কমাতে এবং মাথা ব্যাথা দূর করতে চায়ের সাথে ব্যবহার করা যায়।

পেট ফাঁপা ও পেটের অসুখ নিরাময়ে: লবঙ্গের মধ্যে থাকা খনিজ ও ভিটামিন উপাদান গুলো পেট ব্যথা অজীর্ণ, বদহজম,ক্ষুদামন্দা,গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যাগুলো দূর করতে সাহায্য করে।

পিপাসা জনিত রোগ দূর করতে: যাদের অতিরিক্ত পরিমাণ পিপাসা পায় কিংবা বারবার পানি খাওয়ার ইচ্ছা হয় তারা চাইলে প্রতিদিন সকালে অথবা বিকেলে লবঙ্গ চিবিয়ে অথবা চায়ের সঙ্গে খেতে পারেন এতে আপনার পানি পানির বিড়ম্বনা দূর করতে সাহায্য করবে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: লবঙ্গের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ,ই এবং কে যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইউনিয়ন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ প্রতিরোধ করতে কাজ করে থাকে।

ত্বকের ফলা ভাব কমাতে: অনেক সময় বিভিন্ন হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে অথবা অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগার কারণে শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে যাওয়ার মত সমস্যা দেখা দেয়। এ সমস্যা দূর করতে লবঙ্গ চিবিয়ে অথবা চায়ের সঙ্গে খাওয়া যায়।

হাড়ের সুরক্ষায়: লবঙ্গের মধ্যে থাকে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন গুলো হাড়ের মজবুতির কাজ করে থাকে এবং অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। বিশেষ করে বয়জেষ্ঠদের মধ্যে এই সমস্যাগুলো বেশি দেখা দেয়। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে লবঙ্গের মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো হাড়ের জোড় ও বোন ডেনসিটি বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।

রক্ত পরিষ্কার করে: লবঙ্গ আমাদের রক্তের ক্ষতিকারক উপাদান গুলো দূর করতে এবং রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। যা আমাদের শারীরিক সুস্থতার জন্য একান্ত জরুরী।

ইনসুলিন এর মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে: প্রতিদিন লবঙ্গ খাওয়ার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে এবং কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। এছাড়াও যারা ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছেন তারা প্রতিদিন একটিতে দুইটি লবঙ্গ চিবিয়ে খেতে পারেন এতে থাকা পোস্ট উপাদানগুলো শরীরে প্রাকৃতিক ভাবে ইনসুলিন উৎপাদন করতে সাহায্য করে।

যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে: লবঙ্গের মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো নারী ও পুরুষের যৌন হরমোন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং লবঙ্গের মিষ্টি সুগন্ধ অবসাদ দূর করে শরীর ও মনের ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করে।

মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে: লবঙ্গের মধ্যে থাকা ইউজএনল নামক পুষ্টি উপাদান আমাদের মস্তিষ্কের কোষগুলোর চাপ কমাতে এবং স্নায়বিক রোগের ঝুঁকি দূর করতে সাহায্য করে।

খাবারের রুচি বৃদ্ধি করে: অনেক সময় অতিরিক্ত জোয়ার কিংবা সর্দি-কাশির পর ক্ষুধা মন্দা কিংবা খিদে কম পাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। এ সময় সকালে খালি পেটে অথবা দুপুরে খাবার পর যদি একটি থেকে দুইটি লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়া যায় তাহলে মুখের স্বাদ ফিরে আছে এবং খাবারে রুচি বৃদ্ধি পায়।

রক্তকণিকা বৃদ্ধি করে: লবঙ্গের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান। যা আমাদের শরীরে রক্তের কোষগুলোকে বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে এবং ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত রোগ গুলো থেকে প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: প্রতিদিন সকালে খালি পেটে একটি থেকে দুটি লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়ার ফলে মুখে পর্যাপ্ত পরিমাণ লাল আর সৃষ্টি হয় যা আমাদের হজমে সহায়তা কারী উৎসেচক গুলোকে বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে এবং পরিপাকতন্ত্রের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

মাইগ্রেনের সমস্যা দূর করে: লবঙ্গের মধ্যে থাকা ইউ‌জেনাল এর মধ্যে রয়েছে অ্যানালজেসিক গুন ও বেদনানাশক ক্ষমতা। যা আমাদের মাইগ্রেনের সমস্যা দূর করার পাশাপাশি শরীরে যাবতীয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের প্রদাহ দূর করতে সাহায্য করে।

পুরুষের শুক্রাণু বাড়িয়ে তুলে: পুরুষদের জীবনযাত্রার বিভিন্ন খারাপ অভ্যাসের কারণে দিন দিন শুক্রাণু সংখ্যা কমে যায় কমে যায়। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যদি একটি অথবা দুটি করে লবঙ্গ যুক্ত করা যায়।

তাহলে লবঙ্গের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানগুলো আমাদের শরীরের ফ্রি রেডিকেলগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করে প্রজনন অঙ্গের ক্ষতি আর হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি শুক্রানুর গুণগতমান বৃদ্ধি করে এবং শুক্রাণু সংখ্যা বৃদ্ধি করতে এবং গতিশীলতা উন্নত করতে সাহায্য করে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে করে: চিকিৎসকদের মতে একজন নারীর তুলনায় পুরুষের উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা বেশি দেখা দেয়। লবঙ্গের মধ্যে থাকা কার্ডিও প্রটেকটিভ অ্যাক্টিভিটি পুরুষদের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে এবং ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা কমানোর জন্য জরুরী।

ক্ষতিকর পোকামাকর থেকে রক্ষা করে: লবঙ্গের মধ্যে রয়েছে ইউজএনল নামক যৌগ যা ক্ষতিকর পোকামাকড় গুলোকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। এর জন্য লবঙ্গের তৈরি তেল এবং পরিমাণ মতো লেবু একসাথে মিশিয়ে শরীরে মাখলে ক্ষতিকর পোকামাকড় গুলো ধারের কাছে ঘেঁষতে পারে না।

লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়ায়: লবঙ্গের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান যা দেহের ক্ষতিকারক পদার্থগুলো দূর করতে সাহায্য করে এবং লিভারের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এছাড়াও এই প্রাকৃতিক উপাদানটির মধ্যে রয়েছে একাধিক পরিমাণ হেপাটোপ্রটেকটিভ প্রপার্টিজ যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।

ব্রণের সমস্যা দূর করে: ত্বকের ক্ষেত্রে যুগ যুগ ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে লবঙ্গ। বিশেষ করে ব্রণের সমস্যা দূর করতে লবঙ্গের পেস্ট বানিয়ে ব্রণের ওপর লাগে কিছুক্ষণ রাখার পর মুখ পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এতে ব্রণের সমস্যা দ্রুত দূর হয়ে যাবে।

যকৃতের সুরক্ষা: লবঙ্গের মধ্যে রয়েছে উচ্চমাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান যাদের ফ্রি রেডিকেল গুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে এবং ফ্রী রেডিকেলগুলোর পরিমাণ কমিয়ে আনে পাশাপাশি লিপিডের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। আর লবঙ্গের রস তাদের ক্ষতিকর প্রভাব গুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।

জ্বরের প্রকোপ কমায়: লবঙ্গ তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন কে এবং ই যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন ভাইরাল ফিভারের প্রকোপ কমাতে লবঙ্গের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান গুলো কাজ করে।

ত্বকের সংক্রমণ সাড়াতে: লবঙ্গের মধ্যে উপস্থিত ভোলাটাল অয়েল শরীরের মধ্যে জমে থাকা ক্ষতিকর পদার্থগুলো বের করতে সাহায্য করে। ত্বকে যদি কোন ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে সেই সংক্রমণ দূর করতে এটি বেশ কার্যকরী। এছাড়াও ঘা এবং পচড়ার মত সমস্যা দূর করতে লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়া যেতে পারে।

প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আমরা লবঙ্গ খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। এখন আমরা আর্ট লবঙ্গ খাওয়ার বিভিন্ন অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। অপকারিতা

১/অতিরিক্ত পরিমাণ লবঙ্গ খাওয়ার ফলে বিভিন্ন ধরনের অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিকগুলো প্রকাশ পায়। যার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে এলার্জি সমস্যা।অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় লবঙ্গ খাওয়ার ফলে ত্বকে চুলকানি কিংবা ফোলা ভাব এর মত সমস্যাগুলো দেখা দেয়। 

তাই যদি আপনার কোন খাবার থেকে এলার্জি হওয়ার লক্ষণ আগে থেকে প্রকাশ পেয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই লবঙ্গ খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না। 

২/এছাড়াও অনেকের ক্ষেত্রে দেখা গেছে অতিরিক্ত পরিমাণ লবঙ্গ খাওয়ার ফলে বমি বমি ভাব কিংবা মাথা ঘোরার মত সমস্যা গুলোর মাত্রা বেড়ে যেতে। যা মোটেও স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নয়।

৩/অতিরিক্ত পরিমাণ লবঙ্গ খাওয়ার ফলে এর মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো মারাত্মক ক্ষতি কারণ হতে পারে। বিশেষ করে কিডনির ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তাই অতিরিক্ত লবঙ্গ খাওয়ার আগে অবশ্যই সতর্ক থাকবেন।

৪/যারা লবঙ্গের তেল ব্যবহার করেন তারা কখনোই লবঙ্গে তেল মুখে ব্যবহার করবেন না।এটি আপনার ত্বকের মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।

৫/লবঙ্গের তেল কখনো সরাসরি শিশুদের ত্বকে লাগাবেন না। এতে করে খিঁচুনি,যকৃতের ক্ষতি এবং হরমোনাল পরিবর্তনের মত সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। আশা করি আপনারা লবঙ্গ খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন।

লেখকের মন্তব্যঃলবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা-লবঙ্গ কখন খাওয়া উচিত

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আশা করি আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। আর্টিকেলটি সম্পর্কে আপনার কোন মতামত বা মন্তব্য থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করতে পারেন। 

যদি আপনার অন্য কোনো বিষয় সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই যোগাযোগ করবেন। পরবর্তীতে আমরা সে বিষয়টি সম্পর্কে আর্টিকেলের মাধ্যমে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব। সকলে ভালো থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজিটাল ব্লগ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪