OrdinaryITPostAd

টাক মাথায় চুল গজানোর তেলের নাম বিস্তারিত জানুন

অল্প বয়সে মাথার চুল পড়ে গিয়ে টাক খাওয়ার অবস্থায় চলে এসেছে। নতুনভাবে চুল গজাচ্ছে না। তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমরা টাক মাথায় চুল গজানোর তেলের নাম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবো। এছাড়াও আমরা জানতে পারবো টাক মাথায় চুল গজানোর উপায় সম্পর্কে। 

ছবি

আরো জানবো টাক মাথায় চুল গজানোর প্রাকৃতিক উপায়, নতুন চুল গজানোর জন্য কোন তেল ভালো, ছেলেদের টাক মাথায় চুল গজানোর উপায় এবং কত বছর বয়স পর্যন্ত নতুন চুল গজায় সেই বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা থাকছে আজকের এই আর্টিকেলটিতে। তাই আপনি যদি টাক মাথা নিয়ে চিন্তিত থাকেন তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

পোস্ট সূচীপত্রঃটাক মাথায় চুল গজানোর তেলের নাম বিস্তারিত জানুন

ভূমিকা

বর্তমান সময়ের ছেলে ও মেয়েদের একটি সাধারণ সমস্যা হচ্ছে অতিরিক্ত চুল পড়া। অতিরিক্ত পরিমাণ চুল পড়ে মাথায় টাক হওয়ার পর্যায়ে চলে আসে। অতিরিক্ত চুল পড়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ,হরমোনের ভারসাম্য এবং বিভিন্ন ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে চুল পড়তে পারে। এছাড়াও চুল পড়ার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে জিনগত বৈশিষ্ট্য। 

সাধারণত চুল পড়ার জন্য দায়ী ভিটামিন এ, ভিটামিন সি,ভিটামিন ডি ও ভিটামিন ই। ভিটামিন এ আমাদের চুলের স্বাস্থ্য ধরে রাখতে এবং চুল পড়া বন্ধ করতে দূর করে। ভিটামিন সি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও কোলাজেন আমাদের চুলের ফলিকলগুলোকে শক্তিশালী করতে এবং চুল পড়া রোধ করতে সাহায্য করে। 

ভিটামিন ডি চুলের গোড়া মজবুত করতে এবং চুলের ফলিকল গুলোর ক্ষতি এড়াতে কাজ করে। ভিটামিন ই আমাদের মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং চুল পড়া বন্ধ করে। কিন্তু আপনার শরীরে যদি এ সকল ভিটামিনের অভাব হয় তাহলে অতিরিক্ত চুল পড়ে মাথায় টাক হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। 

ভিটামিনের অভাব ছাড়াও অতিরিক্ত মানসিক চাপ চুল পড়ার জন্য অন্যতম একটি কারণ ধরা হয়। এছাড়াও যাদের থাইরয়েডের সমস্যা রয়েছে তাদের হরমনের ভারসাম্য অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে যার কারণে অতিরিক্ত চুল পড়ে মাথায় টাক খাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। 


আজকের এই আর্টিকেলটিতে উপরোক্ত সকল সমস্যাগুলোর সমাধান রয়েছে তবে যদি বংশগত কারণে আপনার চুল পড়ে যায় তাহলে সেই চুল নতুনভাবে গজানো প্রায় অসম্ভব বললেই চলে। তাই চুল পড়া রোধ করতে এবং নতুন চুল গজানোর উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

টাক মাথায় চুল গজানোর তেলের নাম

চিকিৎসকদের মতে,একজন মানুষের প্রতিদিন 50 থেকে 100 টি চুল পড়া স্বাভাবিক কিন্তু সেই চুল পড়ে যদি নতুন চুল না গজায় তাহলে মাথায় টাক হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা এক মাথায় চুল গজানোর কিছু কার্যকারী তেলের নাম সম্পর্কে জানব যেগুলো আপনি ব্যবহার করলে পুনরায় আপনার টাক মাথায় নতুন গজাতে সাহায্য করবে।

ক্যাস্টর অয়েল: টাক মাথায় নতুন চুল গজাতে এবং অতিরিক্ত চুল পড়া রোধ করতে বিশ্বজুড়ে ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহারতো হয়ে থাকে। ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহারের ফলে এটি চুলের গোড়ায় পুষ্টি জোগাতে এবং চুলের প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করতে সাহায্য করে। 

আপনি যদি নিয়মিত বিশুদ্ধ নারিকেল তেলের সঙ্গে কয়েকফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে মাথার স্কাল্পে মালিশ করতে পারেন তাহলে আপনার অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ হবে এবং নতুন ভাবে টাক মাথায় চুল গজাতে সাহায্য করবে। 

এই মিশ্রণটি আপনি সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করবেন এতে খুব তাড়াতাড়ি আপনার মাথা কুচকুচে কালো চুলে ভরে উঠবে। ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করার পর অবশ্যই শ্যাম্পু করে ভালোভাবে চুল ধুয়ে নেওয়ার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন।

নারিকেল তেল: টাক মাথায় নতুন চুল গজানোর জন্য এবং চুলের স্বাস্থ্য উপকারিতায় নারিকেল তেল অব্যর্থ ধরা হয়। নারিকেল তেলের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন এবং এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা আমাদের চুলের ঝরে পড়া রোধ করতে রুক্ষ চুলকে আর্দ্র করে তুলতে সাহায্য করে। 

প্রতি সপ্তাহে যদি আপনি তিন থেকে চার দিন পরিমাণ মতো নারকেল তেল নিয়ে চুলের গোঁড়ায় ও মাথার স্কাল্পে ভালোভাবে মালিশ করতে পারেন এবং তেল লাগানোর দু'ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলতে পারেন তাহলে খুব দ্রুত আপনার ঝরে পড়া চুল নতুন ভাবে গজাতে শুরু করবে পাশাপাশি আপনার চুলকে উজ্জ্বল ঝলমলে রাখতেও নারিকেল তেল সাহায্য করে।

আমন্ড অয়েল: চুলের গোড়া মজবুত করতে এবং চুলের ফলিকলগুলোকে শক্তিশালী করতে আমন্ড অয়েলের মধ্যে থাকা ভিটামিন ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান কাজ করে। এটি ক্ষতিগ্রস্ত চুলকে ভেতর থেকে মজবুত করতে,চুলের আদ্রতা ধরে রাখতে এবং টাক মাথায় নতুন চুল গজাতে নিয়মিত ব্যবহার করুন।

অলিভ অয়েল: মাথার স্ক্যাল্প থেকে চিরতরে খুশকি দূর করতে এবং টাক মাথায় নতুনভাবে চুল গজাতে নিয়মিত অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন। অলিভ অয়েল চুল পড়া কমাতে এবং টাক মাথায় নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে এছাড়াও চুলকে উজ্জ্বল ঝলমলে ও স্বাস্থ্যবান করে তুলতে এটি দারুণ উপকারী। 

তাই যাদের চুল পড়ে মাথায় টাক হওয়ার প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে তারা চুলের গোড়ায় ও মাথার স্কেলপে অলিভ অয়েল তেল ব্যবহার করে মালিশ করার পর দুই ঘন্টা রেখে ভালোভাবে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার চুল হবে উজ্জ্বল ঝলমলে এবং ঘন। অলিভ অয়েল আপনি প্রতি সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ বার ব্যবহার করতে পারেন।

অনিয়ন অয়েল: অনিয়ন অয়েল বা পেঁয়াজের তেল প্রাচীনকাল থেকে প্রাকৃতিক ভাবে চুল পড়া দূর করতে এবং টাক মাথায় নতুন চুল গজাতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অনিয়ন অয়েল বা পেঁয়াজের তেলের মধ্যে থাকা সালফার চুল পড়া রোধ করতে,চুলের ভেঙে যাওয়া ও আগা ফাটা দূর করে এবং টাকমাথায় নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। 


বর্তমান বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির অনিয়ন অয়েল পাওয়া যায় আপনি চাইলে সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন এছাড়াও ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করে খুব সহজে পেঁয়াজের তেল বানানো যায়। 

এর জন্য আপনাকে পেঁয়াজের রস বের করে নিয়ে এর সাথে পরিমাণ মতো নারিকেল তেল ভালোভাবে মিশিয়ে কিছুক্ষণ ফুটিয়ে নিতে হবে এরপর যদি ছেকে নেন তাহলে খুব সহজেই ঘরোয়া উপায়ে পেঁয়াজের তেল বানিয়ে মাথার স্কেলপে ব্যবহার করতে পারেন।

টাক মাথায় চুল গজানোর উপায়

প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আমরা টাক মাথায় নতুন চুল গজানোর বিভিন্ন তেলের নাম সম্পর্কে জানলাম। আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা টাক মাথায় নতুন চুল গজানোর বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে জানব।

নিম পাতার ব্যবহার: যারা দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত চুল পড়া সমস্যায় ভুগছেন এবং মাথায় টাক পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তারা চাইলে নিম পাতার ব্যবহার করতে পারেন। নিম পাতা শুধুমাত্র ত্বকের জন্যই নয় চুলের যত্নেও ভালো কাজ করে। একমুঠো নিমপাতা কে ভালোভাবে পরিষ্কার করার পর এক লিটার পানিতে ফুটিয়ে নিতে হবে। 

এরপর ফুটন্ত পানি কিছুক্ষণের জন্য ঠান্ডা করতে রেখে দিলে যখন নিম পাতার মিশ্রণটি ঠান্ডা হয়ে আসবে তখন তা পরিষ্কার বোতলে সংরক্ষণ করবেন। এরপর যখনই মাথায় শ্যাম্পু করবেন শ্যাম্পু করার পর নিম পাতার এই পানি ব্যবহার করে ভালোভাবে চুল ধুয়ে নেবেন। 

আপনি যদি প্রতি সপ্তাহে একবার করেও নিম পাতার এই মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনার মাথার ত্বকের যাবতীয় সংক্রমণের সমস্যা দূর হবে এবং চিরতরে খুশকি থেকেও মুক্তি পাবেন। চুল পড়া দূর করবে চুলের গোড়া মজবুত করবে এবং টাক মাথায় নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করবে।

পেঁয়াজের রসের ব্যবহার: চুলের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রাচীনকাল থেকেই পেঁয়াজের রস ব্যবহার হয়ে আসছে। যদিও পেঁয়াজের রসের ঝাঁঝালো গন্ধ অনেকেই পছন্দ করেন না কিন্তু চুলের যত্নে এবং নতুন ভাবে চুল গজাতে নিয়মিত পেঁয়াজের রস ব্যবহার করতে পারেন। 

পেঁয়াজের রসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ সালফার যা আমাদের চুলের ফলিকলগুলো মজবুত করতে এবং নতুনভাবে ফলিকল সৃষ্টি করতে সাহায্য করে। পরিষ্কার একটি পেঁয়াজকে ভালোভাবে বেটে তা থেকে রস বের করে নিয়ে সেই রস মাথায় আধা ঘন্টা মতো রেখে দিন। 


এরপর হালকা কুসুম গরম পানির ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলুন। এইভাবে যদি প্রতি সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার আপনি পেঁয়াজের রস ব্যবহার করেন তাহলে টাক মাথায় নতুন চুল গজানো ঠেকাই কে।

মেথির ব্যবহার: মেথিতে রয়েছে হাজারো পুষ্টিগুণ যা আমাদের শরীরের জন্য উপকারী হওয়ার পাশাপাশি চুলের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করে। নতুনভাবে চুল গজানোর জন্য ভালোভাবে মেথি পরিষ্কার করে ভিজে সারারাত রেখে দিন। পরদিন সকালে উঠে ভেজানো মেথি ভালোভাবে ব্লেন্ড করে মিশ্রণটি সরাসরি চুলে ব্যবহার করুন। 

মেথির কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য এর সাথে দই অথবা মধু মিশিয়ে নিতে পারেন। এটি আপনার টাক মাথায় নতুন চুল গজাতে এবং অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করবে। ঘন্টাখানেক অপেক্ষা করার পর যখন মিশ্রণটি শুকিয়ে আসবে তখন শ্যাম্পু ব্যবহার করে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে একবার যদি এই মিশ্রণটি ব্যবহার করতে পারেন তাহলে খুব দ্রুত আপনার টাকমাথা কুচকুচে কালো চুলে ভরে উঠবে।

কালোজিরার ব্যবহার: মেথির পাশাপাশি কালোজিরাও নতুন চুল গজাতে এবং টাকমাথা দূর করতে সাহায্য করে। প্রথমে কালোজিরা ও মেথি ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে নিয়ে এর গুড়ো করে নিন। 

এরপর এর সঙ্গে পরিমাণ মতো নারিকেল তেল মিশিয়ে ফুটিয়ে নিতে হবে যখন মিশ্রণটি ঠান্ডা হয়ে যাবে তখন কাচের বোতলে সংরক্ষণ করুন। সপ্তাহে তিন দিন এই তেল ব্যবহার করলে টাক মাথায় নতুন চুল গজাবে এবং চুল পড়া দূর হবে।

মেহেদির ব্যবহার: চুল পড়া দূর করতে,চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে এবং চুলের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে নিয়মিত মেহেদীর ব্যবহার করতে পারেন। যাদের মাথার চুল উঠে টাক হয়ে গেছে তারা নিয়মিত মেয়েদের পাতা ভালোভাবে বেটে এর সঙ্গে সরিষার তেল মিশিয়ে সপ্তাহে দুইবার থেকে তিনবার ব্যবহার করলে খুব দ্রুত আপনার টাক মাথায় নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে,চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে এবং চুলকে গোড়া থেকে মজবুত করবে।

টাক মাথায় নতুন চুল গজানোর প্রাকৃতিক উপায়

প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আমরা টাক মাথায় নতুন চুল গজানোর বিভিন্ন উপায় গুলো সম্পর্কে জানলাম। আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা টাক মাথায় নতুন চুল গজানোর আরো কিছু প্রাকৃতিক উপায় সম্পর্কে জানব।

নারিকেল দুধ এবং তেল: মাথার ক্যাল্প ভালো রাখতে এবং চুলের গোড়া মজবুত করে চুল পড়া বন্ধ করতে নারিকেলের দুধ খুবই উপকারী। যারা দীর্ঘদিন ধরে চুল পড়ার সমস্যায় ভুগছেন তারা নারিকেল দুধ এর সাথে তেল ব্যবহার করে চুল পড়া দূর করতে পারেন। 

প্রথমে নারিকেল ভালোভাবে কুরিয়ে এর সাথে সামান্য পরিমাণ পানি মিশিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে দুধ বের করে নিতে হবে এই দুধের সাথে নারিকেলের তেল,আমলকির তেল কিংবা আমন্ড অয়েল ব্যবহার করে যদি মাথার স্কাল্পে লাগাতে পারেন তাহলে প্রাকৃতিকভাবে চুল পড়া দূর করতে এবং চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করবে।

মেথি ও তেল: প্রাকৃতিকভাবে চুল পড়া দূর করতে এবং চুলের গোড়া মজবুত করে টাক মাথায় নতুন চুল গজাতে নারিকেল তেলের সঙ্গে মেথি ব্যবহার করে এই মিশ্রণটি যদি আপনার মাথায় লাগাতে পারেন তাহলে চুল পড়া দূর হবে মাথায় নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে। 

প্রথমে মেথি ভালোভাবে গুঁড়ো করে নিয়ে এর সঙ্গে নারিকেলের তেল মিশিয়ে মাথায় লাগিয়ে কিছুক্ষণ মাসাজ করার পর ভালোভাবে শ্যাম্পু ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার চুল পড়া দূর হবে এবং টাক মাথায় নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে।

মধু ও অলিভ অয়েল: মধু ও অলিভ অয়েল এর এই মিশ্রণ প্রাকৃতিকভাবে চুলের গোড়া মজবুত করতে ,চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যারা দীর্ঘদিন ধরে টাক মাথার সমস্যা এবার অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যায় ভুগছেন তারা সমপরিমাণ মধু ও অলিভ অয়েল ভালোভাবে মিশিয়ে পেস্ট করে যদি পুরো মাথায় ১৫ মিনিট রেখে মাসাজ করতে পারেন তাহলে ৩ থেকে ৪ মাসের ব্যবহার করার ফলে আপনার নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে।

আমলকি ও নারিকেল তেল: টাক মাথায় নতুন চুল গজাতে, চুলের আগা ভাঙ্গা দূর করতে এবং চুলকে উজ্জ্বল ও ঝলমলে রাখতে আমলকিকে শুকিয়ে নারিকেল তেলের সঙ্গে কিছুক্ষণ ফুটিয়ে নিতে হবে এরপর মিশ্রণটি ঠান্ডা হয়ে আসলে বোতলের সংরক্ষণ করে নিয়মিত ব্যবহার করলে চুল পড়া দূর হবে,টাক মাথায় প্রাকৃতিক উপায়ে নতুন চুল গজাবে।

পেয়ারা পাতার ব্যবহার: চুলের যত্নে পেয়ারা পাতা খুবই উপকারী। এর জন্য আপনাকে কয়েকটি পেয়ারা পাতা পানির সঙ্গে মিশিয়ে কিছুক্ষণ গরম করে যখন মিশ্রণটি ঠান্ডা হয়ে আসবে তখন বোতলে সংরক্ষণ করে নিতে হবে। এরপর সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার এই পেয়ারা পাতার পানি চুলে ব্যবহার করে মাসাজ করলে দ্রুত চুল পড়া দূর হবে এবং টাক মাথায় প্রাকৃতিক উপায়ে নতুন চুল গজাবে।

ডিম ও অলিভ অয়েল: অলিভ অয়েল তো চুলের জন্য অনেক উপকারী পাশাপাশি এর সাথে যদি আপনি ডিম ব্যবহার করতে পারেন তাহলে এর কার্যকারিতা ও গুনাগুন কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়। 

অলিভ অয়েল তেলের সঙ্গে একটি দিন ভালোভাবে মিশিয়ে মাথার স্কাল্পে লাগিয়ে ফেলুন এতে আপনার চুল হবে ঘন ও উজ্জ্বল। এই মিশ্রণটি যদি সপ্তাহে অন্তত একবার ব্যবহার করতে পারেন তাহলে পাক মাথায় নতুন চুল গজাতে প্রাকৃতিকভাবে সাহায্য করবে।

নতুন চুল গজানোর জন্য কোন তেল ভালো

প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আমরা টাক মাথায় নতুন চুল গজানোর বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপায় গুলো সম্পর্কে জানলাম। আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা টাক মাথায় নতুন চুল গজানোর জন্য কোন তেল গুলো ভালো সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।

কাঠবাদাম তেল: চুলে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ই ও ভিটামিন ডি পৌঁছাতে কাঠবাদাম তেল সাহায্য করে। কাঠবাদাম তেলের মধ্যে থাকা ভিটামিন ই ও ভিটামিন ডি টাক মাথায় নতুন চুল গজাতে ও চুল পড়া দূর করতে সাহায্য করে। তাই যারা দীর্ঘদিন ধরে চুল পড়ার সমস্যায় ভুগছেন কিংবা চুল পড়ে পড়ে মাথায় টাক হয়ে গেছে তারা দেরি না করে দ্রুত কাঠদামের তেল ব্যবহার করতে পারেন।

লেভেন্ডার অয়েল: আন্টি ইনফ্লামেটরি ও এন ডি মাইক্রোবিয়াল উপাদান সমৃদ্ধ ল্যাভেন্ডার অয়েল ব্যবহারের ফলে দ্রুত চুল পড়া দূর হয় এবং নিয়মিত লেভেন্ডার অয়েল ব্যবহার করলে টাক মাথায় নতুন চুল গজানো নিয়ে কোন চিন্তা করতে হয় না।

কালোজিরার তেল: যাদের চুল খুব পাতলা হয়ে গেছে এবং অতিরিক্ত চুল পড়ে তারা চুলের যত্নে এবং চুল পড়া রোধ করতে কালোজিরা তেল ব্যবহার করতে পারেন। চিকিৎসকদের মতে,যারা নিয়মিত কালোজিরার তেল চুলে ব্যবহার করেন তাদের অকালে চুল পেকে যাওয়া এবং কাক হয়ে যাওয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

টি ট্রি অয়েল: চাঁদের মাথায় অতিরিক্ত খুশকি ও তেলতেলে ভাব তারা এই দলটি ব্যবহার করে দেখতে পারেন। ভেষজ এটি একটি আপনার মাথার খুশকি চিরকালের জন্য দূর করবে এবং মাথার ত্বক থেকে সেবাম ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে।

রোজমেরি অয়েল: মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে নতুন চুল গজাতে এবং টাকমাথা দূর করতে রোজ মেরী অয়েল নিয়মিত মাথার স্কেলপে ব্যবহার করুন। নিয়মিত ব্যবহারে খুব দ্রুত আপনার টাক মাথা থেকে মুক্তি পাবেন।

আর্গান ওয়েল: হাজারো ভিটামিন,মিনারেলস ও ফ্যাটি এসিডে ভরপুর আর্গান অয়েল চুলকে ভেতর থেকে পুষ্টি যোগাতে এবং চুল পড়া দূর করতে সাহায্য করে। মরক্কোর আরগান গাছ থেকে আর্গান অয়েলের উৎপত্তি। অনেকেই একে লিকুইড গোল্ড নামে চিনে। 

আর্গান ওয়েল চুলের গভীরে গিয়ে পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে এবং চুলের ড্যামেজ কমাতে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। নিয়মিত আর্গান অয়েল ব্যবহার করলে এর মধ্যে থাকা পুষ্প উপাদানগুলো পাক মাথায় নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে এবং চুলকে করে তুলবে ঘন,মজবুত, সুন্দর ও স্বাস্থ্যেজ্জ্বল।

জোজোবা অয়েল: চুলের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন বি,সি,ই কপার ও জিংক সমৃদ্ধ জোজোবা অয়েল মাথায় নতুন চুল গজাতে,মাথার স্কেলপে পেয়ে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে এবং চুলের ফলিক্যাল গুলোকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। 

তাই যারা দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত চুল পড়া সমস্যায় ভুগছেন তারা নতুনভাবে চুল গজাতে এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে প্রতিদিন মাথার স্কেলপে জোজোবা অয়েল ব্যবহার করে ৩০ মিনিট মাসাজ করার পর ভালোভাবে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। আপনি যদি সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করতে পারেন তাহলে খুব সহজেই তফাৎটা বুঝতে পারবেন।

ছেলেদের টাক মাথায় চুল গজানোর উপায়

ছেলেদের টাক পরা সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি দেখা দেয়। তাই ছেলেদের টাক পরার ব্যাপারে এবং চুল পড়া বন্ধ করার ব্যাপারে আরও বেশি সচেতন হওয়া জরুরী। ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করে টাক মাথায় নতুন চুল গজানোর জন্য ভিটামিন ই অয়েল ব্যবহার করা যায়।

ভিটামিন ই অয়েল ব্যবহারের উপকারিতা

১/ভিটামিন ই অয়েল চুলের গোড়া শক্ত করে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ফলে খুব দ্রুত চুল বেড়ে ওঠে।

২/মাথার যে অংশে চুল উঠে টাক পড়া শুরু হয়েছে সেই অংশে ভিটামিন ই অয়েল ব্যবহার করলে খুব দ্রুত চুল বাজাতে সাহায্য করে।

৩/ভিটামিন ই অয়েল ব্যবহারে চুলের গোড়া মজবুত হয় এবং চুলের ফলিকলের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে ভিটামিন ই অয়েল খুবই কার্যকরী।

যেভাবে ব্যবহার করবেন

১/প্রথমেই ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর নির্যাস বের করে এর সঙ্গে পরিমাণ মতো নারিকেল তেল ভালোভাবে মিশিয়ে রাতে ঘুমানোর আগে মাথার স্কেলপে ব্যবহার করে কিছুক্ষণ মাসাজ করতে হবে এবং পরের দিন ভেষজ শ্যাম্পু ব্যবহার করে ভালোভাবে ধুয়ে নিলে ছেলেদের টাক মাথায় দ্রুত চুল গজাতে সাহায্য করবে।

২/এছাড়াও ছেলেদের টাকমাথা সমস্যা দূর করতে তিনটি ভিটামিন ই ক্যাপসুলের নির্যাস এর সঙ্গে এক টেবিল চামচ পরিমাণ মধু ও একটি কলা ভালো হবে মিশিয়ে পেস্ট করে মাথার স্কেলপে ব্যবহার করার এক ঘন্টা পর শ্যাম্পু ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলুন। এতে ছেলেদের টাক মাথা সমস্যা দূর হবে এবং দ্রুত চুল গজাতে সাহায্য করবে।

৩/অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিয়ে মাথার স্কেলপে মাসাজ করে ঘন্টাখানেক পর শ্যাম্পু ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলুন। এতে ছেলেদের মাথার যাবতীয় সমস্যা দূর হবে এবং টাক মাথায় নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে।

৪/আপনি চাইলে সরাসরি ভিটামিন ই ক্যাপসুলের নির্যাস বাতিল চুলের গোড়ায় ব্যবহার করে সারা রাত রেখে দিন এরপর সকালে ঘুম থেকে উঠে ভালোভাবে শ্যাম্পু করে গোসল করে নিন। এতে আপনার অতিরিক্ত চুল পড়া দূর হবে এবং নতুনভাবে চুল গজাতে সাহায্য করবে।

কত বছর বয়স পর্যন্ত চুল গজায়

চুল নিয়ে কম বেশি এখন সব বয়সের মানুষেরাই চিন্তিত। অনেকের চুল পাতলা হয়ে যায় কিংবা অনেকের মাথায় টাক গজিয়ে থাকে। একজন মানুষের প্রতিদিন ৫০ থেকে ১০০ টি চুল পড়া স্বাভাবিক। কিন্তু এই পরিমাণ চুল পড়ার পর যদি নতুনভাবে চুল না গজায় তাহলে দেখা দেয় টাক পড়ার সমস্যা। 

চিকিৎসকদের মতে একজন মানুষের সার্বিক গঠনভেদে কত বছর বয়স পর্যন্ত চুল গজাতে পারে কিংবা ঝরে যেতে পারে সেটি নির্ভর করে। তবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে বৃদ্ধ বয়সেও অনেকের মাথায় নতুন ভাবে চুল গজাচ্ছে। এটা নির্ভর করে আপনি কি ধরনের খাবার খাচ্ছেন এবং কেমন জীবন যাপন করছেন তার উপরে। 

একজন শিশু যখন জন্মগ্রহণ করেন সেই সময় থেকেই চুল ঝরে পড়া এবং নতুন ভাবে চুল গজানোর প্রক্রিয়া চলতে থাকে। কিন্তু একটা নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পর অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপন এবং অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে চুল ঝরে পড়ার সমস্যাটাই বেশি দেখা যায়। যার কারণে মাথায় টাক হয়ে যায় কিংবা চুল পাতলা হয়ে যায়। 

পুষ্টিবিজ্ঞানীদের ধারণা চুল নতুনভাবে গজানোর নির্দিষ্ট কোন বয়স নেই এটা নির্ভর করে আপনি কেমন জীবন যাপন করছেন এবং কতটা পুষ্টিকর খাবার খাচ্ছেন সে বিষয়ের উপর। একজন মানুষের চুল পড়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে এ কারণগুলো যদি জেনেটিক না হয় তাহলে অন্যান্য কারণগুলো চিকিৎসা করার মাধ্যমে আপনার টাক মাথায় নতুন চুল গজানো সম্ভব। 

তাই যারা জানতে চান কত বছর বয়স পর্যন্ত চুল গজায় তারা অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যা নিয়ে চিন্তিত না থেকে নিয়মিত উপরের নিয়ম গুলো ফলো করে যান। আশা করি নিয়মিত ব্যবহার করলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে আপনার চুল পড়া সমস্যা দূর হবে।এর পাশাপাশি আপনাকে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে এবং জীবন যাপনে কিছু পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে। আশা করি এতে আপনার চুলের যাবতীয় সমস্যা দূর হবে।

লেখকের মন্তব্যঃটাক মাথায় চুল গজানোর তেলের নাম বিস্তারিত জানুন

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আর্টিগাডি পড়ার মাধ্যমে যদি আপনার কোন উপকার হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুবান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন। আরো কোন বিষয় সম্পর্কে যদি জানার আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করতে পারেন। আর্টিকেলটি সম্পর্কে যদি আপনার কোন মতামত বা মন্তব্য থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই যোগাযোগ করুন। সকলে ভালো থাকবেন। আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজিটাল ব্লগ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪