কোন ভিটামিনের অভাবে মুখের চামড়া উঠে বিস্তারিত জানুন
শরীরের বিভিন্ন ভিটামিনের অভাবে আমরা বিভিন্ন ধরনের রোগের শিকার হই। মুখের চামড়া ওঠা তার মধ্যে একটি। এছাড়াও ভিটামিনের অভাবে চামড়া কুঁচকে যাওয়া চর্মরোগ ও মুখের ব্রণের সমস্যায় ভুগে থাকেন অনেকেই। আপনিও যদি এ সকল সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
আজকের এ আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি কোন ভিটামিনের অভাবে মুখে চামড়া উঠে, কোন ভিটামিন খেলে চেহারা সুন্দর হয়, কোন ভিটামিন ত্বক ফর্সা করে, চামড়া কুঁচকে যায় কোন ভিটামিনের অভাবে, কোন ভিটামিনের অভাবে চর্মরোগ হয় এবং কোন ভিটামিনের অভাবে মুখে ব্রণ হয় সে সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাই আপনি যদি এ সকল সমস্যার স্বীকার হয়ে থাকেন তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরুতে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃকোন ভিটামিনের অভাবে মুখের চামড়া উঠে
ভূমিকা
আমাদের শরীরের সকল কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য প্রয়োজন সঠিক পরিমাণ ভিটামিন ও পুষ্টি। সঠিক পরিমাণ ভিটামিন ও পুষ্টি শরীরের এবং ত্বকের সুরক্ষায় কাজ করে পাশাপাশি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।
কিন্তু যদি আপনার ভিটামিনের অভাব দেখা দেয় কিংবা শরীরের আদ্রতা কমে যায় তাহলে মুখের, হাতের,পায়ের চামড়া ওঠা থেকে শুরু করে চেহারার লাবণ্য কমে যাওয়া সহ বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ ও বার্ধক্যের ছাপ দেখা যায়। সাধারণত এই সমস্যা গুলো অপর্যাপ্ত ভিটামিন এবং কিছু ক্ষেত্রে পানির পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণে দেখা যায়।
আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা কোন কোন ভিটামিনের অভাবজনিত কারণে এ সকল সমস্যা গুলো সৃষ্টি হয় সে বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। তাহলে আপনি খুব সহজেই উপরোক্ত রোগের কারণগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবেন।
কোন ভিটামিনের অভাবে মুখের চামড়া উঠে
আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের অবস্থা দিন দিন বেহাল হয়ে পড়ে। অনেকের ক্ষেত্রে ত্বক রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে পড়ে যার কারণে মুখের এবং হাত-পায়ের চামড়া উঠতে দেখা যায়। এ সমস্যা মূলত রোদে পড়ার কারণে এবং অনেক সময় শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে দেখা যায়।
মূলত শরীরে কিছু ভিটামিনের অভাব এবং অপর্যাপ্ত পানির কারণে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় এবং মুখের ও হাত পায়ের চামড়া উঠতে শুরু করে। এই সমস্যা প্রথমে হাতের তালু থেকে শুরু হয় কেননা হাতের তালু সবসময় কোন না কোন কাজে ব্যস্ত থাকে এবং ধীরে ধীরে তা পায়ের ও মুখের বিভিন্ন অংশের ছড়িয়ে পড়ে।
এর জন্য আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খেতে হবে পাশাপাশি যে সকল ভিটামিনের ঘাটতি আপনার শরীরের রয়েছে সেগুলো পূরণের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার গ্রহণ করতে হবে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন কোন ভিটামিনের অভাবে মুখের চামড়া উঠে বা ত্বক সুস্থ হয়ে যায়।
ভিটামিন এ: প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করার পাশাপাশি মুখের এবং ত্বকের চামড়া টানটান রাখতে এবং নতুন কোষ তৈরিতে ভিটামিন এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যদি শরীরে ভিটামিন এ এর ঘাটতি দেখা যায় তাহলে মুখের চামড়া উঠা সহজ একজিমা এমনকি আরো ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ভিটামিন বি: ভিটামিন বি এর অভাবেও মুখের চামড়া ওঠা সহ মুখে ব্রণ,ফুসকুড়ি,ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া ,ঠোঁটফাটা ও বার্ধকের ছাপ পড়তে দেখা যায়। যদি শরীরে ভিটামিন বি এর ঘাটতি দেখা দেয় তাহলে সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি ত্বককে ড্যামেজ করতে পারে যার কারণে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যায় এবং মুখের ও হাত পায়ের চামড়া উঠে দেখা যায়।
ভিটামিন বি আমাদের ত্বকের জন্য এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান হিসেবে কাজ করে যার কারণে একজিমা,ব্রণ ও ত্বকের জ্বালাপোড়া সমস্যা দূর হয়।
ভিটামিন সি: সুস্থ ও সতেজ ত্বকের জন্য ভিটামিন সি প্রতিরক্ষামূলক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান হিসেবে কাজ করে। এটি আমাদের ত্বকের সংস্পর্শে আসা সকল ক্ষতিকারক অধ্যুষিত পদার্থগুলোকে দূরে রাখতে সাহায্য করে পাশাপাশি ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদন এর কাজও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যা আমাদের ত্বকের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
ভিটামিন ডি: ত্বকের নতুন কোচ তৈরিতে এবং মৃত কোষ গুলো মেরামতের কাজে ভিটামিন ডি আবশ্যক। এটি ত্বকের শুষ্কতা দূর করে এবং ত্বককে ক্ষতিকারক রোগ জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। যার কারণে আমাদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে পড়ে না এবং মুখের চামড়া উঠার সম্ভাবনা কমে আসে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে ভিটামিন ডি এর অভাবজনিত কারণে একজিমা এবং সোরিয়াসিস এর মত রোগ হতে পারে।
ভিটামিন ই: ত্বকের নিস্তেজ হয়ে যাওয়া ও মুখের চামড়া উঠার অন্যতম একটি কারণ হিসেবে ভিটামিন ই কে ধরা হয়। ভিটামিন ই এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান আমাদের ত্বকের ক্ষতিকারক ফ্রি রেডিক্যাল গুলোকে দূর করতে এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।
এছাড়াও ভিটামিন ডি আমাদের কোচের কার্যকারিতা বাড়িয়ে তুলতে এবং ত্বককে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ই থাকলে মুখের ও ত্বকের চামড়া উঠা কিংবা নিস্তেজ হয়ে যাওয়ার মত সমস্যা গুলো দূর হয় এছাড়াও ত্বকের জ্বালাপোড়া ও বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ কমাতেও ভিটামিন ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
যদিও ত্বকের শুষ্কতা বা মুখের চামড়া ওঠার অন্যতম কারণ হিসেবে ভিটামিন ই এর ঘাট থেকে ধরা হয় কিন্তু উপরোক্ত সকল ভিটামিন গুলো যদি আপনার শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ পাওয়া যায় তাহলে ত্বকের যাবতীয় সমস্যা প্রতিরোধে কাজ করবে এবং ত্বককে সুস্থ ও নিস্তেজ হয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে পাশাপাশি আপনাকে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি গ্রহণ করতে হবে সমস্যা দ্রুত দূর হবে।
কোন ভিটামিন খেলে চেহারা সুন্দর হয়
ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষায় এবং সুস্থ শরীর পেতে হলে আপনার শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন এর থাকা আবশ্যক। কিন্তু যদি ভিটামিন এর ঘাটতি দেখা যায় তাহলে আপনার চেহারার লাবণ্য ও সৌন্দর্য ধীরে ধীরে কমতে শুরু করবে। আর্টিকেটির এ অংশে আমরা কোন ভিটামিন খেলে চেহারা সুন্দর হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারব। তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
ভিটামিন এ: আমাদের চেহারা সুন্দর করতে এবং চেহারা লাবণ্য ধরে রাখতে ভিটামিন এ এর গুরুত্ব অপরিসীম। এটি ত্বকের মৃত কোষ গুলোর পুনর্জন্মে সহায়তা করে পাশাপাশি ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
যদি আপনার শরীরে ভিটামিন ই এর ঘাটতি দেখা যায় তাহলে ত্বক শুষ্ক,খসখসে ও অমসৃণ হয়ে পড়ে। এছাড়াও ভিটামিন এ অভাবজনিত কারণে ত্বকের তৈলাক্ততা ও ব্রণের সমস্যা বৃদ্ধি পায়। ভিটামিন এ ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বাড়াতে এবং ত্বককে টানটান করে রাখতে সাহায্য করে এমনকি বলিরেখা দাগ দূর করতেও ভিটামিন এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ভিটামিন বি কমপ্লেক্স: ভিটামিন বি ত্বকের এবং স্বাস্থ্যের সুরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন নিয়ে গঠিত। যেমন:
ভিটামিন বি-৭(বায়োটিন): এটি ত্বক চুল ও নখের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করে। এর অভাব দেখা দিলে অতিরিক্ত চুল পড়া এবং ত্বক সুস্থ হয়ে চামড়া উঠার মত সমস্যা গুলো দেখা দেয়।
ভিটামিন বি-৩ (নিয়াসিন): ত্বকের সৌন্দর্য এবং চেহারা সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ রক্ত চলাচল জরুরী। এই ভিটামিন ত্বকে সঠিক পরিমাণ রক্ত চলাচল বাড়িয়ে ত্বকের উজ্জ্বলতা ও ঝকঝকে করে তুলতে সাহায্য করে এছাড়াও ভিটামিন বি-৩ ত্বকের শুষ্কতা দূর করে আদ্রতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং চেহারাকে সুন্দর করে তোলে।
ভিটামিন বি-৫(প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড): ত্বকের যাবতীয় ব্যথা বা প্রদাহ কমাতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ভিটামিন বি-১২(কোবালামিন): ত্বকের মৃত কোষ গুলোর পুনর্জন্মে এবং প্রাকৃতিক ভাবে ত্বকের রঙ ফিরিয়ে আনতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে পাশাপাশি চেহারা সুন্দর করে তুলতেও কাজ করে।
ভিটামিন সি: ভিটামিন সি ত্বকের জন্য শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং ত্বককে বিভিন্ন ক্ষতিকারক পদার্থ থেকে দূরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন সি কোষের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে, বার্ধক্যের ছাপ,বলিরেখা দাগ দূর করে চেহারা সুন্দর করতে এবং মুসলিম করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ভিটামিন ডি: ভিটামিন ডি ত্বকের জন্য সানশাইন ভিটামিন নামে বেশি পরিচিত। এটি সূর্যের আলোতে বেশি উৎপাদিত হয় যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এবং দাগহীন ত্বক পেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও হাড়ের ও দাঁতের সুরক্ষায় এবং চেহারা সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলতে ভিটামিন ডি এর তুলনা হয় না।
ভিটামিন ই: ভিটামিন ই আমাদের ত্বকের জন্য শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে যা পক্ষে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে এবং ত্বকের আদ্রতা ধরে রেখে চেহারা সুন্দর করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া ভিটামিন ই সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে আমাদের ত্বকে রক্ষা করে এবং ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়িয়ে তুলে যার কারনে চেহারা সুন্দর হয় এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে আসে।
ভিটামিন কে: ভিটামিন কে রক্ত জমাট বাধাতে এবং ত্বকের ক্ষত ও কাটা অংশ সারিয়ে তুলতে কাজ করে। এছাড়াও এটি ডার্ক সার্কেল দাগ ও ব্রণের যাবতীয় সমস্যা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পাশাপাশি ত্বকের প্রাকৃতিক রং ফিরিয়ে আনতে এবং ত্বকের টোন উন্নত করতে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
বায়োটিন: এটি ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের একটি অংশ যা আমাদের ত্বক চুল ও নখের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শরীরে বায়োটিনের অভাব দেখা দিলে অতিরিক্ত চুল পড়া চুলের বৃদ্ধি কমে যাওয়া চেহারা সৌন্দর্য ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাওয়ার সমস্যাগুলো বেশি দেখাবে।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড: যদিও এটি ভিটামিন নয় কিন্তু ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে এবং প্রদাহ কমাতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ফ্যাটি আসিফটি ত্বকের শুষ্কতা দূর করে ত্বককে আদ্র ও স্থিতিস্থাপক করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও এটি চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় এবং চুল পড়া দূর করতে কাজ করে থাকে।
কোন ভিটামিন ত্বক ফর্সা করে
আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য এবং প্রাকৃতিকভাবে ত্বক ফর্সা করতে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন,পানি ও মিনারেল এর প্রয়োজন রয়েছে। সাধারণত প্রাকৃতিকভাবে ত্বক ফর্সা করতে ভিটামিন ই খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শরীরে ভিটামিন ই এর অভাব দেখা দিলে ত্বকের উজ্জ্বলতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে এবং ত্বক কালচে রংয়ের হয়ে যায়।
শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন-ই না থাকলে তকে বলিরেখা দাগ,ভাঁজ পড়া কিংবা ম্যাড়মেড়ে দেখা যায়। এছাড়াও শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ই না থাকলে ত্বক শুষ্ক ও নিস্তেজ হয়ে পড়ে। ভিটামিন ই এর অভাব দেখা দিলে ত্বকের জ্বালাপোড়া এবং প্রদাহ হওয়ার সমস্যা দেখা দেয় এমনকি ত্বক বিবর্ণ হয়ে যেতে পারে।
শরীরে ভিটামিন ই এর ঘাটতি পূরণের জন্য বাদাম জলপাই এবং উদ্ভিজ্জ তেল ছাড়াও শাকসবজি এবং সূর্যমুখীর বীজ খেলে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ই পাওয়া যায়। এগুলো আপনার শরীরে ভিটামিন ই এর ঘাটতি পূরণ করে ত্বককে প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা করে তুলতে সাহায্য করবে।
ভিটামিন ই এর পাশাপাশি আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যাতে উপরোক্ত ভিটামিন গুলোর ঘাটতি আপনার শরীরে না পড়ে। তাই প্রাকৃতিকভাবে ত্বকে ফর্সা করে তুলতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ও মিনারেলস সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন।
চামড়া কুঁচকে যায় কোন ভিটামিনের অভাবে
সুস্থ ত্বকের জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ও মিনারেল। পাশাপাশি সঠিকভাবে ত্বকের যত্ন নিতে হবে। তা না হলে হতে পারে ত্বকের নানা ধরনের ক্ষতি। মূলত ভিটামিন বি-১২ এবং ভিটামিন এ এর ঘাটতিজনিত কারণে অকালে চামড়া কুঁচকে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়।
ভিটামিন বি-১২: ত্বকের টানটান ভাব দূর করতে ত্বকে পর্যাপ্ত পরিমাণ রক্ত চলাচল জরুরী।ভিটামিন বি-১২ এর ঘাটতি দেখা দিলে ত্বকে সঠিক পরিমাণ রক্তকণিকা উৎপাদন ও চলাচল বাধাগ্রস্ত হয় যার কারণে অল্প বয়সে চামড়া কুঁচকে যায় বার্ধক্যের ছাপ দেখা যায়। এছাড়াও ত্বকের কোষ গুলোকে স্বাস্থ্যকর রাখতে এই ভিটামিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
শরীরে এই ভিটামিনের অভাব দেখা দিলে একাধিক শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যাদের শরীরে ভিটামিন বি-১২ এর ঘাটতি রয়েছে তাদের হাইপার পিগমেন্টেশন এর মত ত্বকের সমস্যা দেখা দেয় যার কারণে অল্প বয়সে চামড়া কুঁচকে যাওয়া কিংবা বার্ধক্যের ছাপ দেখা যায়।
এছাড়াও এই ভিটামিনের অভাবে ত্বকে কালচে দাগ ছোপ এমনকি একজিমার মত সমস্যাগুলো মাথা ছাড়া দিয়ে ওঠে। শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন বি-১২ না থাকলে ত্বকের প্রাকৃতিক জেলা ধীরে ধীরে নষ্ট হতে শুরু করে এবং কোচের সংখ্যাও কমে আসে। যার কারণে হাটু,কনুই,বগল ও গলায় কালচে দাগ ছোপ দেখা যায়।
ভিটামিন বি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করার মাধ্যমে শরীরে ভিটামিন বি এর ঘাটতি পূরণ করা যায় পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করে ভিটামিন বি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করলেও শরীরে ভিটামিন বি এর ঘাটতি পূরণ হয়।ভিটামিন বি-১২ এর ঘাটতি পূরণের জন্য ডিম,বিনস,শুঁটি ও ডাল জাতীয় খাবার খাদ্য তালিকায় যুক্ত করতে পারেন।
এছাড়াও চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে যদি শরীরে ভিটামিন বি ১২ এর ঘাটতি দেখা যায় তাহলে ভিটামিন বি সমৃদ্ধ সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করলেও এর অভাব পূরণ হয়। তাই যদি অকালে চামড়া কুঁচকে যায় তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন এবং ভিটামিন ডি ১২ সমৃদ্ধ খাবারগুলো গ্রহণ করুন।
ভিটামিন এ: বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে ভিটামিন এ এর ঘাটতি জনিত কারণে ও চামড়া কুঁচকে যায় কিংবা বার্ধকের ছাপ পড়ে। এছাড়াও ভিটামিন এ এর কারনে রাতকানা রোগ সহ একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। ভিটামিন এ এর ঘাটতি পূরণের জন্য আটা,ডিম,দুধ,মাছ,মাংস,গাজর, লেটুস,শাক আপনার দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় যুক্ত করুন।
কোন ভিটামিনের অভাবে চর্মরোগ হয়
ভিটামিন এবং মিনারেল আমাদের ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষায় এবং ত্বককে যাবতীয় ক্ষতিকারক পদার্থ থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু যদি আপনার শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি বা অভাব দেখা যায় তাহলে দেখা দিতে পারে চর্ম রোগের মত সমস্যা। মূলত ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ডি এর অভাবজনিত কারণে চর্মরোগ বেশি দেখা যায়।
ভিটামিন এ ও ভিটামিন ডি এর অভাবে খোসপাঁচড়া বা স্ক্যাবিস। এছাড়াও ভিটামিন ডি এর অভাব হলে একজিমা এবং সোরাসিসের মত রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। ভিটামিন এ আমাদের নতুন কোষ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। পাশাপাশি ভিটামিন ই ত্বকের শুষ্কতা দূর করে ত্বককে আদ্র রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এছাড়া ভিটামিন এ এর অভাবে ত্বক খসখসে হয়ে যায় এবং চামড়া কুঁচকে যাওয়া কিংবা অকাল বাধ্যকের সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও ভিটামিন এ এর অভাব দেখা দিলে জেরুসিস কার্টিস নামের এক ধরনের ত্বকের রোগ হয় যাকে হাইপারক্যারাটোসিস বলে। যার কারণে ত্বকের মসৃণতা ও প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা হারিয়ে চর্ম রোগের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।
অন্যদিকে ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা দিলেও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। যার কারণে অল্প বয়সে বার্ধকের ছাপ পড়ে এবং ত্বকের বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা যায়। ভিটামিন এ ও ভিটামিন ডি ত্বককে ছত্রাক জনিত রোগ থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে পাশাপাশি ভিটামিন ই ভিটামিন সি এবং ভিটামিন বি ৩ ত্বকের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কাজ করে থাকে।
এগুলোর অভাব দেখা দিলেও চর্মরোগ হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। এগুলোর অভাব পূরণ করার জন্য ভিটামিন সমৃদ্ধ ফলমূল ও শাকসবজি গ্রহণ করুন পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে সঠিক ভিটামিনের ঘাটতি নির্ণয় করে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন।
দ্রুত এগুলোর ঘাটতি পূরণ না করলে ধীরে ধীরে সৌন্দর্য হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে পরবর্তীতে স্কার্ভি কিংবা অ্যাটপিক ডার্মাটাইটিস রোগ থেকে শুরু করে পরবর্তীতে একজিমার মত চর্মরোগ দেখা দিতে পারে। তাই যত দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
কোন ভিটামিনের অভাবে মুখে ব্রণ হয়
মুখে ব্রনের দাগ ধীরে ধীরে সৌন্দর্যকে নষ্ট করে দেয় যার কারণে আত্মবিশ্বাস কমে আসে এবং অনেকেই লোকজনের সাথে কথা বলতে কিংবা দেখা করতে লজ্জা বোধ করে। শরীরে ব্রণ বিভিন্ন কারণে দেখা যায়। অনেক ক্ষেত্রে এটি হরমোনের পরিবর্তনের কারণে বিশেষ করে যখন মানুষ কৈশোর পার করে তখন এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়।
আবার যারা অতিরিক্ত ডায়েট গ্রহণ করার ফলে শরীরে বিভিন্ন ভিটামিনের ঘাটতি দেখা দেয় তাদের ক্ষেত্রে মুখে অতিরিক্ত ব্রণের সমস্যা দেখা যায়। আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা মুখে ব্রনের জন্য কোন ভিটামিন এর অভাব রয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
ভিটামিন এ: ভিটামিন এ এর অভাবে মুখের এবং ত্বকের সৌন্দর্য ধীরে ধীরে নষ্ট হয় এবং কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভিটামিন এ ত্বকের জন্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে যা ত্বকের ফ্রি রেডিকেলগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে শক্তি যোগায়।
যদি শরীরে ভিটামিন এ এর ঘাটতি দেখা দেয় তাহলে মুখে ব্রণসহ শরীরে প্রদাহের সমস্যা বাড়তে পারে। ভিটামিন এ এর ঘাটতি পূরণের জন্য নিয়মিত টাটকা টমেটো, কাঁচা লঙ্কা ও গাজর খেতে পারে।
ভিটামিন বি-৩: মুখে ব্রণ এবং ত্বকে দাগ সৃষ্টি হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে ভিটামিন বি ৩ এর ঘাটতি। এটি ত্বকের জন্য অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান হিসেবে কাজ করে যা ব্রণ নিরাময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যদি শরী রে ভিটামিন বি ৩ এর ঘাটতি দেখা যায় তাহলে ধীরে ধীরে ত্বকের উজ্জ্বলতা কমে আসবে পাশাপাশি মুখে ব্রনের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা যাবে।
ভিটামিন ডি: ভিটামিন ডি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং মুখের ব্রণ দূর করে মুখের ফোলা ভাব নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে। এছাড়াও ভিটামিন ডি আমাদের হাড় মজবুত করতে এবং দাঁত শক্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা দিলে অকালভার্ধক্য, কালচে দাগ ঝোপ ও ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়। ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণের জন্য সকালবেলা অথবা বিকাল বেলা হালকা সূর্যের আলোতে দাঁড়ালে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক বিভিন্ন ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করলে দ্রুত এর ঘাটতি পূরণ করা যায়।
ভিটামিন ই: এটি প্রদাহ নাশক হিসেবে কাজ করে। ভিটামিন ই ত্বকের জন্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে যা ত্বককে হাইড্রেট রাখতে এবং উপকারী কোলজেন উৎপাদন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও মুখে ব্রনের দাগ কমিয়ে মুখের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে তুলতে এবং প্রাকৃতিকভাবে চেহারা সুন্দর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে ভিটামিন ই এর।
লেখকের মন্তব্যঃকোন ভিটামিনের অভাবে মুখের চামড়া উঠে
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে যদি আপনার কোন উপকার হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন। আর্টিকেলটি সম্পর্কে যদি আপনার কোন মতামত বা মন্তব্য থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করতে পারেন। সকলে ভালো থাকবেন। আসসালামু আলাইকুম।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুধুমাত্র সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। এটি কোন মতেই শতভাগ চিকিৎসা নির্ধারণ করে না। বিস্তারিত তথ্য জানতে এবং সঠিক পরামর্শ নিতে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হন। আবেগবশত কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে তার জন্য আমরা দায়ী নয়।
ডিজিটাল ব্লগ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url